21/12/2024
যাদের কল্যাণে ১৫ বছর পরে গর্ত বাস থেকে বের হইতে পারলেন, ম্যাডাম বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাইলেন, তারেক রহমানের সবচেয়ে ক্রিটিক্যাল মামলা বাতিল হইল, যারা আপনাদের রাজনীতি শুধু নয় বরং জীবনটাই ফিরিয়ে দিলেন, তাদেরকে 'আপনারা কারা' প্রশ্ন করা লজ্জাজনক শুধু নয়, এটা বিএনপি নেতাদের 'সম্ভাব্য গণবিলুপ্তির বার্তাও দেয়'!
এমনটা পরিবর্তিত বিএনপির বার্তা দেয় না! নিজের রাজনীতি পরিবর্তন না করলে বিএনপি নেক্সট টাইম ক্ষমতায় এসেও প্রবল গণ প্রতিরোধে এবং গণ ক্ষোভে পড়বে। পরিবর্তিত রাজনীতি বিএনপি কাদের দিয়ে করবে? এসব স্বল্প শিক্ষিত, নির্বোধ এবং অসৎ নেতাদের দিয়ে?
কথা ছিল, অনভিজ্ঞ ছাত্ররা ভুল করবে, বিএনপি অভিজ্ঞতার ঢালি দিয়ে তাদের ঢাল হয়ে উদ্ধার করবে।
মনে রাখবেন, সোসাইটির পলিটিক্যাল ম্যাচিউরিটি তুঙ্গে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থেকে ঘরের কাজের সাহায্যকারী, গাড়ির ড্রাইভার, রাস্তার ময়লা পরিষ্কারকারী সবাই বিএনপির স্থানীয় দখল চাঁদাবাজি কর্মকাণ্ডে ত্যক্ত বিরক্ত। আগেই বলেছি আওয়ামী লিগ এবং ভারত বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতিতে কতটা ভাল্ভাবে ফিরবে, সেটা যতটা না গণহত্যার বিচারের উপর তার চেয়ে বেশি ছাত্রদের, বিএনপির এবং জামায়াতের মিলিত সাফল্যের উপর নির্ভর করছে। পরবর্তী নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতা আসলে (ধরুন) এবং মানুষের জীবন ও অর্থনীতির বোধগম্য উন্নয়ন না করতে পারলে, অর্থাৎ বিএনপি ব্যর্থ হইলে আওয়ামি লীগের ফেরাটা সহজ হয়ে যাবে। তাতে সর্বোচ্চ সাহায্য করতে এক পায়ে খাড়া আছে আমাদের মিডিয়া, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবীদের বড় অংশ, এবং প্রতিবেশীরা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এখন পর্যন্ত সংস্কার ও নতুন রাজনীতির বিষয়ে ম্যাচিউর বার্তা দিচ্ছেন। উনার পলিটিক্যাল কারেক্টনেস অ্যামেইজিং, চমৎকার সব ন্যারেটিভ দিচ্ছেন। তা সত্ত্বেও সেনানিবাসের প্রোগ্রামে বেগম খালেদা জিয়া ছাত্রদের ম্যান্ডেট দিয়েছেন। বেগম জিয়া ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে, রাষ্ট্র সংস্কারের মনোনিবেশ করতে বলেছেন।
কিন্তু উনার নেতারা একদিকে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত অন্যদিকে লিপ্ত জুলাই অভ্যুত্থানের রক্তের দায় অস্বীকারে। আপোষহীন নেত্রীর ম্যান্ডেট অস্বীকার করা এসব বিএনপি নেতারা কারা? গত ১৫ বছর এরা কোথায় ছিল???
ম্যাডাম যেদিন 'মার্চ ফর ডেমোক্রেসি'র ঘোষনা দিলেন, এরা কই ছিল!
চাইলে অকাট্য প্রমাণ দিব। ৫ আগস্টের পরে আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কেন্দ্রিক একটি সোশ্যাল মিডিয়া সার্ভেইলেন্স স্ট্যাডি করেছি (আনফর্মাল)। তাতে দেখা যাচ্ছে, অনালাইনে বিএনপি আওয়ামি লীগের থেকে বেশুমার পিছিয়ে পড়ছে। বিষয়টি কি এমন যে, দখল চাঁদাবাজি আর ক্ষমতা প্রদর্শনে লিপ্ত হয়ে বিএনপির মিডিয়া উইং অরক্ষিত। আজকে লীগের কুত্তারা ছাত্র খুনে নেমেছে। এটা কি বিএনপির নির্বাচন কেন্দ্রিক অপরিনামদর্শী রাজনীতির ফল নয়? বিএনপির ট্রেডএবল নেতাদের টাকার বিনিময়ে কিনে রাজনীতিতে ফিরতে আওয়ামী লিগ ও ভারত মরিয়া, এটা বিএনপি বুঝে না!
আমরা বিএনপির মিডিয়া সেলের কার্যক্রমও স্ট্যাডি করেছি, তারা সেখানেও আগের চেয়ে অনেক বেশি নীরব হয়ে গেছে। প্রশ্ন হচ্ছে কেন? ডেটা মাইনিং নির্ভর গ্রাফ গুলো আমার কাছে আছে, লাগবে জানাবেন।
আমি প্রশ্ন করি, 'আপনারা কারা' প্রশ্ন তোলা এসব মধ্য ও নিম্ন পর্যায়ের হাজারে হাজারে বিএনপি নেতার যোগ্যতা কতটুকু? চাঁদাবাজি দখল, টকশোতে গলাবাজি ছাড়া তাদের কোর কম্পিটেন্সটা আসলে কী? তারা আওয়ামী পান্ডাদের চেয়ে ঠিক কোন কোন প্যারামিটারে ভিন্ন? সুযোগ পেলে তারা কোন কোন আকামটা করবে না? ব্যাংকিং সংস্কারে, রিজার্ভ সুরক্ষায়, অর্থনীতিতে সুবাতাস আনতে, দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চায়, মেরিটোক্রেসি প্রতিষ্ঠায়, বিদ্যুৎ খাতের সংস্কারে, আমলাতন্ত্র ও জনপ্রশাসন সংস্কারে, লুটপাট বন্ধে, জ্বালানি সমস্যার সমাধানে, কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা কিংবা ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশে কোন উল্লেখযোগ্য প্রস্তাব বিএনপি নেতারা দিয়েছেন? প্রশ্নটা ইকুয়ালি জামায়াতকেও?
একপাল অথর্ব নেতা দিয়ে বিএনপি জনপ্রত্যাশা মেটাবে কীভাবে? নতুন রাজনীতি দিতে ব্যর্থ হলে দেশে আগামী নির্বাচনের পরে নতুন দফা যে বিপ্লব হবে, তাতে অবধারিতভাবে বিএনপির সংকট গভীর হবে।
আওয়ামী বুদ্ধিজীবী হুমায়ুন আজাদের সাথে করা এক বাহাসে ছফা বলেছেন, শুয়োরের বাচ্চার দাঁত গজালে সবার আগে বাপের পাছায় কামড়ায়। বিএনপির মিড ও লোয়ার লেভেলের নেতারা জুলাই গণ-আন্দোলনের শক্তিকে 'আপনারা কারা' প্রশ্ন করে বাপের পাছায় কামড় দেয়ার মত কাজ করেছেন।
আমার প্রশ্ন, বিএনপির পলিটিক্যালি কারেক্ট চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সজ্জন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কিংবা সুচিন্তক রাজনীতিবিদ জনাব সালাউদ্দীন আহমদ, পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীরা, নজরুল ইসলাম খান, জ্ঞানী নেতা ড মোশাররফ এবং ড মঈন খানরা এসব অযোগ্য অথর্বদের দিয়ে দেশ বদলাবেন কীভাবে?
®️ফাইজ তাইয়েব আহমেদ
©️ জবিয়ান