01/05/2025
রাফি আর সায়মা। দেখা হয়েছিল এক মেলায়। বৃষ্টিভেজা একটা সন্ধ্যা, রাফি ছাতা ধরেছিল, আর সায়মা সেই ছাতার নিচে এসে দাঁড়িয়েছিল। তখন তারা জানতো না, এটা একটা চিরন্তন বন্ধনের শুরু।
সায়মা সহজ, হাসিখুশি মেয়ে। রাফি একটু চুপচাপ, কিন্তু গভীর। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব জমে, ফোনে কথা, লুকিয়ে দেখা, আর প্রথম ছোঁয়া।
একদিন রাফি বলে, “তুই না থাকলে আমার দিন শেষ হয় না।”
সায়মা হেসে বলে, “আমিও তোকে ছাড়া আধা হয়ে যাই।”
দুজনেই স্বপ্ন দেখে—একসাথে একটা ছোট সংসার, বাড়ির উঠোনে দোলনা, আর সন্ধ্যায় একসাথে চা খাওয়াহঠাৎ একদিন সায়মা জানায়, তার বাবার বদলি হয়েছে। তারা চলে যাবে শহরের বাইরে।
রাফি ভেঙে পড়ে। সায়মা কথা দেয়—"আমি আবার ফিরে আসবো, প্রতিদিন তোর চিঠির অপেক্ষায় থাকবো।"
রাফি লেখা শুরু করে চিঠি—প্রতিদিন একটা করে।
কিন্তু কোনো উত্তর আসে না। মাস গড়িয়ে যায়, তারপর বছর। সায়মা নেই, কোনো খোঁজ নেই।
রাফি হাল ছাড়ে না, একা পড়ে থাকে সেই ছোট্ট শহরে। গল্প লেখে, কবিতা লেখে—সব সায়মাকে ঘিরে।
একদিন রাফির মায়ের মৃত্যু হয়। রাফি একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। তখন সে একটা শেষ চিঠি লেখে:
"তুই যদি ফিরে না আসিস, আমি আর চিঠি লিখব না। এইটাই শেষ চিঠি—কারণ আমার হৃদয় আর কালি নেই।"দু’বছর পর, গ্রামের সেই পুরনো মেলায় ফের দেখা যায় এক মেয়েকে। মুখে ওড়না, চোখে জল।
সে সায়মা।
সায়মা বলে, “আমার বাবা চিঠিগুলো লুকিয়ে ফেলেছিল। আমাকে জোর করে বিয়ে দিয়েছিল বিদেশে। আমি পালিয়ে এসেছি।”
রাফি চুপ করে। তার চোখে কান্না, ঠোঁটে শুধু একটা কথা—“তুই ফিরেছিস, মানে আমার অপেক্ষা বৃথা যায়নি।”
শেষ চিঠি এখন আর শেষ নয়—সেটা একটা নতুন শুরু।ভালোবাসা কখনো হারায় না। হারিয়ে গেলেও, তার পথ ঠিক খুঁজে নেয়।
প্রেম মানে শুধু পাওয়া না—অপেক্ষা, বিশ্বাস, আর ফিরে আসার গল্প।
(লেখা: KLB Nahid)