01/10/2024
বেদআত সম্পর্কে আলোচনা,,,!!
ইসলামে শিরকের পর সবচেয়ে নিকৃষ্ট হল বিদআত ।
*বেদায়াতের আভিধানিক অর্থ: পূর্ব নমুনা বিহীন কোন জিনিস তৈরি করা, আবিষ্কার করা, ইত্যাদি।
*বেদায়াতের পারিভাষিক সংজ্ঞা:
১. শরীয়তের পরিভাষায় বেদাত বলা হয়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের জামানায় যা ছিল না, এমন বিষয়ে প্রবর্তন করা।
২. বেদাত হলো: এমন বিষয় প্রবর্তন করা, যা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের জামানায় ছিল না।
৩.দ্বীনের মধ্যে এমন প্রবর্তিত পদ্ধতি যা শরীয়ত বিরোধী, যে পদ্ধতি চলার দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন উদ্দেশ্য হয়। তাই বিদআত।
*বেদআত সম্পর্কে রাসূল সাঃ বলেছেন,যে ব্যক্তি এমন কোন কর্ম করলো যাতে আমাদের নির্দেশনা নেই, তা প্রত্যাখ্যাত হবে। (মুসলিম -৪৩৮৫)
জান্নাতের নিকটবর্তী করবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে, এমন কোন কাজ নাই যে রাসূলুল্লাহ সাঃ বর্ণনা করেন নাই ।
অন্যস্থানে ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্যে যারা বেঁচে থাকবে শীঘ্রই তারা অনেক মতানৈক্য দেখতে পাবে, তোমাদের উপর আবশ্যক হলো। আমার সুন্নত ও খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নত মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরা, তোমরা দ্বীনের মধ্যে নতুন বিষয় চালু করা থেকে বিরত থাকো কেননা নতুন বিষয় চালু করা বেদআত।আরكل بدعة ضلالة অর্থ: প্রত্যেক বেদায়াত গুমরাহী বা পথভ্রষ্টতা।(আবু দাউদ -৪৬০৭)
উপরোক্ত হাদিস থেকে বোঝা যায় সকল বিদআত পরিত্যাজ্য ,, অথচ কেউ কেউ বিদআতকে ভাগ করেছেন ১. বিদআতে হাসানা(উত্তম বেদাত) ২. বিদআতে সায়্যিয়াহ(খারাপ বেদাত)
হাদিস শরীফে রাসূলুল্লাহ সাঃ সকল বিদাআতকে অনিষ্ঠ বলেছেন । এমন কোন শব্দ হাদিসে খুঁজে পাওয়া যায় না, যার দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, বেদায়াতের কোন বিষয় এমন আছে যে গোমরাহী বা অনিষ্ঠ নয়। এমন কথা কোথাও পাওয়া যাবে না। (ইংশাআল্লাহ)
আল্লাহ তাআলা আমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন, যেমন তিনি বলেন, اليوم اكملت لكم دينكم ،অর্থ: আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম।(মায়েদা -৩)
সূরা হাশরের ৭ নং আয়াতে বলেন, রসুল তোমাদের যা দেয় তা গ্রহণ করো, আর তোমাদের যা থেকে নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাকো।
তাহলে যেখানে আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূল দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন, সেখানে বেদআতে হাসানাহ বলার অর্থ হলো শরীয়ত এখনো পরিপূর্ণ হয়নি।(নাউজুবিল্লাহ)।
আর কোনটা বেদআতে হাসানা কোনটা বেদাতে সায়্যিয়াহ তার নির্ণয় করাও অসম্ভব।
কেননা প্রবর্তিত বিষয়টা হয়তো দলিল নির্ভর হবে, অর্থাৎ, তার পক্ষে সুন্নতে রাসুল, সুন্নতে সাহাবা, অন্যদের খোলাফায়ে রাশেদীন থাকবে অথবা তার বিপক্ষে থাকবে। তখন তো আর সেটা বেদাতের অন্তর্ভুক্তই থাকবে না । বরং শরয়ী হুকুম ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত,মোস্তাহাব, হারাম মাকরুহ বা মুবাহ এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। আর যখন তার পক্ষে বা বিপক্ষে কোন দলিল থাকবে না তখন সেটা বেদআত হয়ে যাবে।
তাহলে কিভাবে আমরা মাপকাঠি করি কোন টা বেদআতে হাসানাহ আর কোনটা বেদআতে সায়্যিয়াহ?
আর যদি বলেন, বাহ্যিক দৃষ্টিতে যেটা ভালো সেটা বেদাতে হাসানা আর যেটা খারাপ সেটা বেদাতে সায়্যিয়াহ ।
তাহলে বলব এমনো বিষয় আছে যা বাহ্যিক দৃষ্টিতে ভালো হলেও বাস্তবে তা মন্দ। যেমন নামাজ পড়া ভালো কাজ কিন্তু নিষিদ্ধ সময় নামাজ পড়া কি ভালো? (এরকম বহু আছে)
*সম্মানিত দ্বীনী ভাই ও বোনেরা আসেন আমরা বেদআতকে বন্ধ করে সুন্নতকে আঁকড়ে ধরি,,
কেননা যতক্ষণ পর্যন্ত বেদআত বর্জন না করবো, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের তৌবা কবুল হবে না।
একটা বিষয় দেখেন আমরা তো সবাই অজু করি তিনবার করে অঙ্গ গুলো ধৌত করি,,কেউ যদি চারবার করে ধৌত করে সেটা যদি অন্যায়, সীমা লঙ্ঘন,যুলুম হয়। তাহলে দেখেন শুধু এই ক্ষুদ্র বিষয় নয় আরো কত যে বড় বড় কাজ করি যা শরীয়তে প্রমাণিত নয়। তাহলে সেগুলোর জন্য কত বড় অপরাধ করতেছি একটাবার ভেবেছি কি?
যাই হোক,
আল্লাহ আমাদের সবাইকে কুরআন হাদীস অনুযায়ী সহিহ আমল করার তৌফিক দান করুন,আর বেদআতি আমল থেকে দূরে রাখুন আমীন 🤲
বিঃদ্রঃ কোন বিষয়ে ভুল হলে অবশ্যই ভুল টা ধরিয়ে দিবেন, ইংশাআল্লাহ সংশোধন হয়ে যাবো।
লেখক, মোঃ আব্দুর রহমান
তারিখ:01- October -2024