01/06/2025
#মুসলিম_পারিবারিক_আইন_১৯৬১_এর_ধারা_৪
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১ এর ধারা ৪-এ ছেলের ঘরের সন্তান/মেয়ের ঘরের সন্তানের উত্তরাধিকার সম্পর্কে বলা হয়েছে।
''যার সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে বন্টিত হবে, তার পূর্বে তার কোন পুত্র বা কন্যা মারা গেলে এবং উক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি বন্টনের সময় উক্ত পুত্র বা কন্যার কোন সন্তানাদি থাকলে তারা প্রতিনিধিত্বের হারে সম্পত্তির ওই অংশ পাবে যা তাদের পিতা অথবা মাতা জীবিত থাকবে পেতো''
✅এই ধারাটিকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়ঃ✅
১. দাদা-দাদীর পূর্বে বাবা মারা গেলে তার ছেলে-মেয়ে সর্ব অবস্থায় দাদা-দাদীর মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি থেকে বাবা জীবিত থাকলে যতটুকু পেতো, ততটুকু পাবে।
২. নানা-নানীর পূর্বে মা মারা গেলে তার ছেলে-মেয়ে সর্ব অবস্থায় নানা-নানীর মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি থেকে মা জীবিত থাকলে যতটুকু পেতো, ততটুকু পাবে।
✅অধ্যাদেশের এই ধারাটিতে অনেক দিক থেকেই ইসলামী উত্তরাধিকার নীতিমালা সুস্পষ্টভাবে লংঘন করা হয়েছে।
১. দাদা দাদীর পূর্বে বাবা মারা গেলে, যদি দাদা দাদির মৃত্যুর সময় এক বা একাধিক চাচা বর্তমানে থাকে, তাহলে ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী পুত্রের পুত্র ও পুত্রের কন্যা কেউই দাদা-দাদির সম্পত্তি থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে মিরাস পাবে না। অথচ উপরোক্ত অধ্যাদেশটিতে সর্বাবস্থায় দাদা দাদীর সম্পত্তি থেকে পুত্রের পুত্র ও পুত্রের কন্যা মৃত বাবার প্রতিনিধিত্বের হারের সম্পত্তি পাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
২. আর যদি দাদা-দাদির মৃত্যুর সময় তাদের শুধু কন্যা সন্তানগণই জীবিত থাকে এবং পূর্বে মারা যাওয়া তাদের মৃত পুত্রের ছেলেমেয়েরা জীবিত থাকে, তাহলে এমত অবস্থায় কন্যাদের অংশ দেওয়ার পর বাকি অংশ ছেলের ছেলে এবং ছেলের মেয়ে আসাবা হিসেবে পাবে। এক্ষেত্রেও উপরোক্ত অধ্যাদেশটি শরীয়ত বিরোধী। কেননা অধ্যাদেশ অনুযায়ী ছেলে মেয়েরা মৃত বাবার প্রতিনিধিত্বের হারে অংশ পাবে যা উপরোক্ত অবস্থার সাথে সংগতিপূর্ণ নয়।
৩. যদি দাদা দাদির একটিমাত্র কন্যা বর্তমানে থাকে এবং মৃত্যু পুত্রের এক বা একাধিক কন্যা থাকে, তাহলে মৃত পুত্রের কন্যা/কন্যাগণ ছয় (১/৬) ভাগের এক ভাগ পাবে। কিন্তু উপরোক্ত অধ্যাদেশে ছেলে-মেয়েদেরকে মৃত বাবার প্রতিনিধিত্বের হারে অংশ দেওয়া হয়েছে, যা ইসলামী শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক।
৪. যদি দাদা-দাদীর একাধিক কন্যা বর্তমানে থাকে এবং মৃত পুত্রের একাধিক কন্যা থাকে, এমতাবস্থায় পুত্রের কন্যাগাণ কিছুই পাবে না। কিন্তু উপরোক্ত অধ্যাদেশে পুত্রের কন্যাদের মৃত বাবার প্রতিনিধিত্বের হারে অংশ দেওয়া হয়েছে, যা ইসলামী শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক।
৫. ইসলামী শরীয়তে আসাবা ও আসহাবুল ফুরূযের উপস্থিতিতে মেয়ের ঘরের ছেলেমেয়েরা নানা-নানীর সম্পত্তির ওয়ারিশ হবে না। অথচ উপরোক্ত অধ্যাদেশটিতে নানা-নানীর আগে মায়ের মৃত্যু হলে নাতি-নাতনিদেরকে মায়ের প্রতিনিধিত্বের হারে সম্পত্তি দেওয়া হয়েছে যা শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক।
#শরীয়তের_পরিভাষায় কন্যার সন্তানদেরকে বলা হয় #যাবিল_আরহাম । আত্মীয়দের মধ্যে যাবিল আরহাম আরো রয়েছেন তারা হলেন- বোনের সন্তানগণ, ভাইয়ের কন্যাগণ, মামা ও খালা প্রভৃতি। এরা আসহাবুল ফুরূয ও আসাবা থাকা অবস্থায় সর্বসম্মতি ক্রমে উত্তরাধিকারী হবে না।
#বিঃদ্রঃ স্বাধীন বাংলাদেশে উক্ত অধ্যাদেশ এখনো হুবহু চালু ও কার্যকর আছে যা সম্পূর্ণ শরীয়ত বিরোধী।
#সার্ভেয়ার: মাওলানা জাহিদুল ইসলাম
মীম ডিজিটাল সার্ভে
ভূমি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ - Ministry of Land, Bangladesh ভূমি সেবা Land Service