01/08/2025
দেশে যাওয়ার জন্য রিয়াদ থেকে মক্কায় এসে যেই দালালের কাছে টাকা দেয়, সেই দালালই টাকা নিয়ে উধাও। সঙ্গে থাকা যা ছিল, তা-ও শেষ। অসুস্থ শরীর নিয়ে কাজ করতে পারে না, খেতে পারে না ঠিকমতো। আশ্রয়হীন সাইফুল মিসফালা ব্রিজের নিচে পড়ে থাকে দিনের পর দিন। মাথার ওপরে আগুন ঝরা সূর্য, পেটের ভেতর শূন্যতা, হৃদয়ের ভিতর শুধুই দুঃখ আর অপমান।
এই খবর ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকের একটি প্রবাসী গ্রুপে। সেখানেই একজন মানবিক হৃদয়ের মানুষ, মোহাম্মদ শিপন, এগিয়ে আসেন। ব্রিজের নিচ থেকে সাইফুলকে তুলে এনে প্রাথমিক চিকিৎসা করান। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেন। আশা তৈরি হয়—এই বুঝি সে দেশে ফিরবে, মায়ের চোখে জল মুছে দেবে।
তাকে মক্কা থেকে আল কাছিম নিয়ে যাওয়া হয়, উদ্দেশ্য—দু–এক দিনের মধ্যেই দেশে পাঠানো হবে।
কিন্তু নিয়তি...
নিয়তি অন্য গল্প লিখে রেখেছিল।
সাইফুল আর দেশে ফিরে যেতে পারেনি।
চিরতরে বিদায় নিয়েছে এই পৃথিবী থেকে।
যে দেশে যাওয়ার জন্য এত আকুতি ছিল তার, সেই দেশও এখন কেবল একটি খবরের শিরোনামই জানতে পারবে—
"মক্কার মিসফালা ব্রিজের নিচে পড়ে থাকা সেই যুবক আর নেই
উপসংহার:
সাইফুল শুধু একজন নাম নয়, সে এক প্রতিচ্ছবি— হাজারো অসহায় প্রবাসীর কষ্টের, যাদের কোনো রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নেই, যারা অসুস্থ হলে ফেলে দেওয়া হয় ব্রিজের নিচে।
এটা কি শুধুই দালালের দায়?
না, এটা রাষ্ট্রীয় অবহেলা, আমাদের প্রবাসী ব্যবস্থাপনার চরম ব্যর্থতা।
আজ এক সাইফুল না ফেরার দেশে গেলো, কাল হয়তো আরও অনেকের নাম লেখা হবে এমন এক তালিকায়, যাদের জন্য কেউ দায় নেবে না।
জবাব চাই—আর কত সাইফুল হারাবে এইভাবে?
আর কত মায়ের বুক খালি হবে এভাবে/?