হৃদয়ের অনুভূতি

হৃদয়ের অনুভূতি Biker Robi

05/02/2025

দখলদাররা লেবাননের সীমান্তে হিজবুল্লাহর একটি টাওয়ারকে লক্ষ্য করে।

মীলাদ-কিয়াম নিয়ে চলমান অস্থিরতায় আমার কিছু কথা- (২য় পর্ব)মুহা: আলাউদ্দীন ছালেহ*******আরবের উলামায়ে কেরামের মধ্য হতে যারা...
04/02/2025

মীলাদ-কিয়াম নিয়ে চলমান অস্থিরতায় আমার কিছু কথা- (২য় পর্ব)
মুহা: আলাউদ্দীন ছালেহ
*******

আরবের উলামায়ে কেরামের মধ্য হতে যারা ওহাবী প্রভাবমুক্ত, এমন আলেমদের মধ্য থেকে এমন ব্যক্তি কমই খুঁজে পাবেন, যারা মিলাদ-কিয়াম বা মিলাদ মাহফিল করেন না। বা এটাকে নাজায়েজ, বিদআত বলেন। আমরা অত্যন্ত অবাক হয়েছি, যারা কিনা সারাদিন ইনসাফ-ই‘তিদালের যিকির তুলেন, সারা পৃথিবীর আহলে হক উলামার কাছে স্বীকৃত মিলাদ-কিয়ামের প্রসঙ্গ আসলে তাদের ই‘তিদালের আসল রূপ প্রকাশ পায়।

এমনকি ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী র., সাখাবী র., সুয়ুতী র., মোল্লা আলী কারী র., ইবনু নাসিরুদ্দীন দিমাশকী র., শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দেস দেহলভী র., আব্দুল হক মুহাদ্দেস দেহলভী র., আব্দুল আযীয মুহাদ্দেস দেহলভী র. যারা কিনা সবসময় মিলাদের পক্ষে ছিলেন, উম্মাহকে নিজের পক্ষে নেওয়ার জন্য তাদের বক্তব্যকে কাট-ছাট করে পেশ করতেও তারা দ্বিধাবোধ করছেন না। তাদের বক্তব্যের খন্ডিত অংশকে উপস্থাপন করে তাদেরকে মিলাদ-কিয়ামের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে চান। নাউযুবিল্লাহ। এটাই যদি হয় ই‘তিদালের পরিচয়, তবে এমন ই‘তিদাল থেকে আল্লাহর পানাহ চাই।

এইতো সেদিন এক আলেম ইবনু তায়মিয়ার বক্তব্য উপস্থাপন করলেন, ইবনু তায়মিয়া তাঁর বক্তব্যের যে অংশে বলেছেন, মীলাদ মাহফিলে নবীজির মহব্বতের কারণে সওয়াব পাওয়া যাবে, অনুবাদে সেই অংশটুকু গায়েব করে দিয়েছেন। এটা তাদের কাছে কাম্য নয়। এটা ইনসাফ নয়। বলতেছিলাম বর্তমান বিশ্বর প্রখ্যাত যত আলেম আছেন, দেওবন্দী ও নজদী ব্যতীত প্রায় সকলেই মিলাদ-মাহফিল, মিলাদ কিয়ামের পক্ষের মানুষ।

বর্তমান বিশ্বের প্রসিদ্ধ আলেম আল্লামা শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামা হাফিযাহুল্লাহ, এখনও তিনি হায়াতে আছেন। আমাদের উস্তাদে মুহতারাম মুফতী মাওলানা মনিরুল ইসলাম সাহেব হুজুর দা.বা. গত কয়েক বছর আগে তিনি শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামাকে মদীনা শরীফে প্রচলিত মিলাদ মাহফিল সম্পর্কে প্রশ্ন করেছেন, তিনি জবাব দিয়েছেন, মুনকারাত মুক্ত হলে জায়েজ, কোন সমস্যা নাই। শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামা আপনাদের মহলেও বরেণ্য ব্যক্তিত্ব, যাকে আপনার ইলমী অঙ্গনে মাথার তাজ মনে করেন।

এবার বলুন তিনি কি বিদয়াতী না হক্বপন্থী? আর যদি বলেন, তিনি এমন কথা বলেন নাই, তবে সেটা প্রমাণ করুন। মাও: আব্দুল মালেক সাহেব হুজুর, আব্দুল মতীন সাহেব হুজুর, আবু সাবের আব্দুল্লাহ সাহেব দামাত বারাকাতুহুম সহ বাংলাদেশের বহু কওমী আলেমের সাথে শায়েখ মুহাম্মাদ আওয়ামা দা. এর সরাসরি যোগাযোগ আছে, তাদের মাধ্যমে শায়েখ আওয়ামার অবস্থান জেনে নিন।

উস্তাদে মুহতারাম এ প্রসঙ্গে শায়খ আওয়ামা দা.বা. কে শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ র. এর অবস্থান জানতে চেয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, তাঁরও সিদ্ধান্তও এরকমই ছিল। অর্থাৎ তিনিও মুনকারাতমুক্ত মিলাদ-কিয়ামকে জায়েজ মনে করেন। যারা মিলাদের কথা শুনলেই নাক সিটকান, বা মিলাদ-কিয়ামের কথা শুনলেই গায়ে জ্বালা ধরে যায়, তারা এবার কি জবাব দিবেন? বুকে সৎসাহস থাকলে শায়খ আওয়ামাকে বিদয়াতী বলে দিন কিংবা তিনি মিলাদের বিপক্ষে সেটা প্রমাণ করুন। আপনাদের তো আবার অভ্যাস আছে, মৃতদেরকে টেনে হিঁচড়ে নিজের দলে নেওয়ার। শায়খ আওয়ামা এখন জিন্দা থাকা অবস্থাতেই এ বিষয়ে তার অবস্থান জেনে নিন। ইন্তিকালের পর আবার মিথ্যা প্রোপাগান্ডা করার আশায় থাইকেন না।

আল্লামা আলাবী র. ‘আলফাতাওয়া আলআলাম’ এ তো বলেই দিয়েছেন, আরব বিশ্বে আহলুস সুন্নাহর অন্যতম একটা শিয়ার হয়ে গেছে মিলাদ মাহফিল করা বা মিলাদ কিয়াম করা। এটাকে আপনি কিভাবে খন্ডন করবেন? আজকে আমরা আকিদার ক্ষেত্রে হোক, হাদিসের ক্ষেত্রে হোক যে সকল আরব্য আলেমদেরকে অনুসরণ করি, তাদের কে আছে মিলাদের বিরুদ্ধে? শায়খ কাউসারী র. এর প্রসিদ্ধ ছাত্র আমিন সিরাজ র. তিনিও মিলাদের পক্ষের মানুষ।

কয়েক বছর আগে উস্তাদে মুহতারাম তাঁর সাথে সাক্ষাত করে এসেছেন। তুরস্কের প্রখ্যাত আলেম, যাকে তুরস্কবাসী মুজাদ্দিদ মনে করেন আল্লামা মাহমুদ আফেন্দী র., তিনিও মিলাদের পক্ষীয় মানুষ ছিলেন। নিজে মিলাদ মাহফিল করেছেন, প্রমাণ পেতে ফেসবুক, ইউটিউবে একটু সার্চ দিন, তাহলেই ভুরি ভুরি প্রমাণ পেয়ে যাবেন।

সিরিয়ার প্রখ্যাত আকিদা বিশারদ ড. সাঈদ আব্দুল লতীফ ফুদাহ হাফিযাহুল্লাহ, তিনি তো ঈদে মিলাদুন্নবীর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পুরা উম্মাহকে। এখন বলে দিন লোকটা বিদয়াতী। ইয়ামেনের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা ড. সাইফ আল আসরী দা.বা., ইতিমধ্যে যিনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রচনা দ্বারা আহলে ইলমদের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন। তিনি তো তাঁর আল বিদআতুল ইযাফিয়্যাহ তে এ বিষয়ে বিস্তর আলোচনা করেছেন।

শায়খ আব্দুল মালেক সাহেব দা.বা. সহ অনেক কওমী আলেমদের কিতাবেই আব্দুল্লাহ বিন সিদ্দীক আলগুমারী, আব্দুল আযীয বিন সিদ্দীক আলগুমারী হতে রেফারেন্স উদ্ধৃত করে থাকেন। মরক্কোর অধিবাসী প্রখ্যাত এই ইলমী পরিবার, তাদের ভক্ত-অনুরক্ত সকলেই মিলাদ-কিয়াম করে থাকেন। শায়খ আব্দুল্লাহ বিন সিদ্দীক আলগুমারী তাঁর ‘আলইতকানুস সুনআহ ফি তাহকিকি মা’নাল বিদআহ’ কিতাবে মিলাদ কিয়ামের কথা

03/02/2025

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকাকে মাটির সাথে ধ্বসিয়ে দিয়ে এখন পশ্চিম তীরের জেনিনে একই ধরণের কার্পেট বোম্বিং শুরু করেছে পশ্চিমা মদদপুষ্ট দখলদার জায়নিস্ট সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরায়েল😡😡😡

03/02/2025

মীলাদ-কিয়াম নিয়ে চলমান অস্থিরতায় আমার কিছু কথা-
মুহা: আলাউদ্দীন ছালেহ
*******

মীলাদ মাহফিল বা মিলাদ কিয়ামের বর্তমান আকার-আকৃতি তথা সুরত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যামানায় ছিল না, এটা স্বত:সিদ্ধ একটি ব্যাপার। তবে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিংবা সাহাবা, তাবেয়ীদের যামানায় না থাকলেই যে তা বিদআত হয়ে যাবে, এটা একটা প্রসিদ্ধ প্রোপাগান্ডা। যে প্রোপাগান্ডার শিকার হয়ে বর্তমানে আমাদের পার্শ্ববর্তী অনেক ভাই-বেরাদর, আলেম-উলামা জ্ঞাতে-অজ্ঞাতে খারেজিয়্যাত চর্চায় লিপ্ত।

রাসুল, সাহাবা, তাবেয়ীদের যুগে ছিলনা বলেই যদি বিদআত হয়ে যায়, তবে প্রচলিত অনেক বিষয়ই বিদআত হয়ে যাবে। আলোচনা দীর্ঘ হয়ে যাওয়ার ভয়ে আমি সেদিকে যাচ্ছি না। তবে বিদআতের প্রসিদ্ধ যে হাদিস হাদিসটি লক্ষ্যণীয়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فهو رد . ‘আমার এই দ্বীনে যে এমন কোন বিষয়ের আবিষ্কার করল, এই দ্বীনে যার কোন অস্তিত্ব নেই, বা ভিত্তি নেই, তথা যার মূল এই দ্বীনের অংশ নয়, তা প্রত্যাখ্যাত।’ সহীহ মুসলিম।

এবার এই হাদিসকে সামনে রেখে মীলাদ-কিয়ামের দিকে একটু দৃষ্টি দিন। মিলাদ কিয়ামের মজলিসে যা হয়-
ক. তাওয়াল্লুদ তথা নবীজির জন্মের সময়কার ঘটনা,
খ. কুরআন তিলাওয়াত,
গ. দুরুদ শরীফ,
ঘ. দাঁড়িয়ে সালাম প্রদান,
ঙ. রাসুলের শানে বিভিন্ন কাসীদা,
চ. সর্বশেষে দুআ।

আচ্ছা ভাই ইনসাফের দৃষ্টিতে বলুন তো এই কাজগুলো থেকে কোন বিষয়টার অস্তিত্ব এই শরীয়তে নেই? হ্যাঁ, আপনার আপত্তির সুযোগ এক জায়গাতে, সেটা হলো দাঁড়িয়ে সালাম প্রদান। দাঁড়িয়ে সালাম প্রদানের বিষয়ে আমি বিস্তারিত কোন আলোচনায় না যেয়ে সংক্ষেপে বলব, সুফিয়ায়ে কেরাম, যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিসীনে কেরাম নবীজিকে রওজা শরীফ থেকে দূরে থেকে রওজা শরীফের খেয়াল করে দাঁড়িয়ে সালাম আত্মতৃপ্তি পেয়েছেন, ফলে তাঁরা নবীকে সালাম দেওয়ার সময় দাঁড়িয়ে সালাম দেওয়ার প্রচলনটা করে গেছেন। এখানে হাজির-নাজির, ইলমে গাইব ইত্যাদি কোন আকিদার সংমিশ্রণ নেই। তারা এই কাজটাকে ফরজ, ওয়াজিব কিংবা সুন্নাত কোনটাই বলেন নি, বরং বলেছেন এই কাজটি ভাল কাজ। আমাদের কাছে এটা ভাল লাগে। ব্যাস, এতটুকুই। এখন আপনি বলবেন, যে কাজটি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা সাহাবারা কেউ করেনি, যে পদ্ধতিতে তারা কেউ ভালবাসেনি, সেই পদ্ধতি নতুন করে কেন অনুসরণ করতে যাব? আমি বলব, আপনার সেই পদ্ধতি অনুসরণ করার দরকার নেই। আপনার যেভাবে ভাল লাগে সেভাবে করুন। তবে আমি যেটা করছি, এটা আমার কাছে ভাল লাগে। শরীয়তে যদি এ ব্যাপারে কোন নিষেধাজ্ঞা থাকে তবে তা নিয়ে আসুন।

যাহোক মোট কথা হল, মীলাদ-কিয়ামের মজলিসে উল্লেখিত কাজগুলোর আশা করি কোনটাকেই শরীয়তের অকাট্য নস দ্বারা হারাম, মাকরূহ প্রমাণ করার সুযোগ নেই। তাহলে মীলাদ-কিয়ামের কথা শুনলেই আপনার গা জ্বলে উঠে কেন? এখানে আরেকটি বিষয় ইদানিং লক্ষ্য করছি, সেটা হলো- অনেকে আবার মীলাদুন্নবীর মাহফিলকে কিয়াম থেকে আলাদা করতে চান, কিন্তু এটা এক অনর্থক চেষ্টা। হ্যাঁ, প্রচলিত কিয়াম চালু হওয়ার আগের যুগে ফিরে গেলে সেখানে হয়তো কিয়াম ছাড়া মীলাদ মাহফিল খুঁজে পাবেন, কিন্তু কিয়ামের সূচনা হওয়ার পর থেকে কিয়ামটি মীলাদ মাহফিলে অবিচ্ছেদ্য অনুসঙ্গে পরিণত হয়। আপনি যদি মীলাদ মাহফিল বলে সেখান থেকে কিয়াম কে আলাদা করতে চান তবে এমন কোন দলীল নিয়ে আসুন, যা দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, মিলাদ মাহফিল থেকে কিয়াম ভিন্ন জিনিস।

আমাদের দেশে উলামায়ে দেওবন্দের একচেটিয়াভাবে সকলেই আগে মিলাদের কথা শুনলেই তাদের গা গরম হয়ে যেত, ইদানিং মিডিয়ার সুবাদে সারা পৃথিবীর মিলাদ-কিয়ামের চিত্র দেখে কাওমী আলেমদের এক শ্রেণি মোটামুটি মিলাদ শব্দের প্রতি তাদের বি:দ্বেষ কেটেছে, যা কিছু কওমী আলেমদের পোস্ট, মীলাদুন্নবী উপলক্ষ্যে ইফাবা কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় প্রোগ্রামে বেশ কিছু কওমী আলেমদের পদচারণায় স্পষ্ট। তবে কিয়ামের প্রতি তাদের বিদ্বেষ যেন স্বভাবগত। আলমুহান্নাদ আলাল মুফান্নাদ যা আকায়েদে উলামায়ে দেওবন্দ নামে খ্যাত, সেখানেও দেখুন কেয়ামের কথা আছে আলহামদুলিল্লাহ।
আমরা এখানে উলামায়ে দেওবন্দগণের কিছু দ্বিচারিতা নিয়ে এখানে আলোকপাত করতে চাই। তারা একদিকে আরবের বহু আলেমকে সম্মান করেন, মাথায় তুলেন, ইলমী মুরব্বী মানেন, অপরদিকে মিলাদ-কিয়াম প্রসঙ্গ আসলেই ঠিক তারা উল্টো দিকে পোল্ট্রি মারেন। এই কাজটা তারা কেন করেন বোধগম্য নয়। মীলাদ-কিয়ামের মজলিস যদি সকল প্রকার মুনকারাত থেকে মুক্ত হয়, তবে তা জায়েজ বর্তমান দেওবন্দী আলেম ছাড়া সারা পৃথিবীর আহলুস সুন্নাহর সিংহভাগ বরং প্রায় সকলেই এই ব্যাপারে একমত।
......... ইনশাআল্লাহ চলবে।

ছবির ক্রেডিট ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান সাহেবের।

02/02/2025

ছোট্ট সারাফ কত সুন্দর ভাবে বাংলাদেশের জাতীয় পাখি দোয়েল নিয়ে ইংলিশ বক্তব্য ,

02/02/2025

মাশায়েখে ফুরফুরা ও দেওবন্দী উলামাদের মধ্যকার সম্পর্ক (২য় পর্ব)
মুহা: আলাউদ্দীন ছালেহ
********

আমরা আলোচনা করতেছিলাম, মাশায়েখে ফুরফুরাদের সাথে আকাবিরে দেওবন্দদের সম্পর্ক ও ঘনিষ্ঠতা নিয়ে। ফুরফুরার মুজাদ্দিদে যামান র. এর এমন অনেক ভক্ত মুরীদান রয়েছেন, যারা দারুল উলূম দেওবন্দের ছাত্র কিংবা হযরত থানবী র. এর বায়আত অথবা মাযাহিরুল উলূম সাহারানপুর মাদরাসায় পড়াশোনা করেছেন।

বেশি দূর যাওয়ার দরকার নেই। ছারছীনা শরীফের মরহুম পীর সাহেব কেবলার কথাই বলি, তিনি এদেশে ইলমে দ্বীন অর্জন শেষে ভারতের ইউপি প্রদেশের সাহারানপুর জেলার বিখ্যাত মাযাহিরুল উলূম সাহারানপুর মাদরাসায় পড়াশোনা করতে গিয়েছেন। সেখান থেকে হাদিসের দাওরা শেষ করে দেশে ফিরে আসেন। হযরত শাইখুল হাদিস যাকারিয়্যা র. ছারছীনার মরহুম পীর সাহেব কেবলা র. কে ছাত্র হিসেবে অত্যন্ত কদর করতেন। কোন একবার বাইতুল্লাহ শরীফের প্রাঙ্গনে হযরত শাইখুল হাদিস যাকারিয়্যা র. বসা ছিলেন, ইতিমধ্যে ছারছীনার মরহুম পীর সাহেব কেবলা শাহ আবু জাফর মুহাম্মাদ ছালেহ র. সেখানে গিয়ে হাজির হন। শাহ আবু জাফর মুহাম্মাদ ছালেহ র. কে দেখে শাইখুল হাদিস দাঁড়িয়ে যান এবং বলেন কখনও ছাত্র উস্তাদের চেয়ে উঁচু মর্যাদায় পৌঁছে যেতে পারে।

** ফুরফুরার মুজাদ্দিদে যামান র. এর প্রসিদ্ধ খলিফা নোয়াখালীর অজিহুল্লাহ সন্দিপী র. (১৮৭২-১৯২৪ ঈ.) দারুল উলূম দেওবন্দের প্রথম সারির ছাত্র ছিলেন। বরং তিনি ছিলেন হযরত আনওয়ার শাহ কাশ্মিরী র. এর সহপাঠী। ক্লাসে অজিহুল্লাহ সন্দিপী র. এর রোল ছিল এবং কাশ্মীরী র. এর রোল ছিল। ১৩১৩ হিজরী সনে তিনি দেওবন্দ থেকে দাওরা পাশ করেন। দাওরার বার্ষিক পরীক্ষায় কাশ্মীরী র. ও সন্দিপী র. উভয়ে সমান নাম্বার পান। এবার কাকে প্রথম স্থান দেওয়া হবে এটা নিয়ে উস্তাদরা দ্বিধাদ্বন্দে পড়ে যান। তারা জানিয়ে দেন যে বুখারী শরীফের এক পারা আগে মুখস্ত শুনাতে পারবে, তাকেই প্রথম স্থান দেওয়া হবে। আশ্চরযের বিষয় হল অজিহুল্লাহ র. এক রাতেই কাশ্মিরী র. এর আগেই বুখারীর এক পারা মুখস্ত করে উস্তাদদেরকে শুনিয়ে দিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন।

এই অজিহুল্লাহ সন্দিপী র. ফুরফুরার মুজাদ্দিদে যামান র. এর অন্যতম শীর্ষস্থানীয় খলিফা ছিলেন। মুজাদ্দিদে যামান র. এর আদেশে তিনি অনেক বাহাস-মুবাহাসা, মুনাজারায় অংশগ্রহণ করেন। (মাশায়েখে ফুরফুরা, সৈয়দ বাহাউদ্দীন, ২৩-২৯পৃ.)

** আল্লামা মাওলানা ফসীহউদ্দীন র.- ফুরফুরার মুজাদ্দিদে যামান র. এর আরেকজন খলিফা। শেরপুর জেলার যোগিনীমুড়া গ্রামে তাঁর জন্মস্থান। ১৮৮২ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৩ সালে ১০১ বছর বয়সে তিনি ইন্তিকাল করেন। তিনি প্রথম জীবনে হুগলী মোহসেনীয়া মাদরাসায় পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে উচ্চ শিক্ষার জন্য উত্তর প্রদেশে হযরত থানবী র. প্রতিষ্ঠিত কানপুর জামেউল উলূম মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেন। তিনি সেখানে শাহ আব্দুল গণী মুজাদ্দেদী র. এর খলিফা আব্দুল হক এলাহাবাদী মুহাজিরে মক্কী র. এর হাতে বায়আত হন। পরবর্তীতে বাংলায় ফিরে আসার সময় তিনিই তাকে ফুরফুরার মুজাদ্দিদে যামান র. এর হাতে বায়আত হওয়ার পরামর্শ দেন।

** শাহ চট্রগ্রামের মিরসরাইয়ের হজরত নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী র. এর মাজার শরীফের অনতিদূরে অবস্থিত সূফিয়া ফাজিল মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা ফকিহ শাহ আব্দুল গনী র.। তিনি প্রথম জীবনে কোলকাতা মাদরাসায়ে আলিয়ার পাঠ সমাপ্ত করে দিল্লীর আমিনিয়া মাদরাসায় দু’বছর হাদিস অধ্যয়ন করে শায়খুল হিন্দ আল্লামা মাহমুদুল হাসান দেওবন্দী র. এর দরসে অংশগ্রহণ করেন। এক বছর তাঁর কাছে তিনি হাদিস অধ্যয়ন করে সনদ গ্রহণ করেন। তিনিও ছিলেন ফুরফুরার মুজাদ্দিদে যামান র. এর বিশিষ্ট খলিফা। প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফকীহ ছিলেন। ১১২ বছর হায়াতে ১৯৭৬ সালের ২৭ শে জুলাই তিনি ইন্তিকাল করেন।

** ফকিহ দার্শনিক ইবরাহীম জয়নগরী র. বাংলা ১২৯২ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৩৮ সালে ইন্তিকাল করেন। আল্লামা জয়নগরী র. ছিলেন হযরত থানবী র. এর বিশিষ্ট ছাত্র মুহাদ্দিস ইসহাক বর্ধমানী র. এর ছাত্র। মুহাদ্দিস ইসহাক র. কানপুরের জামেউল উলূম মাদ্রাসায় পড়াশোনা শেষ করলে হযরত থানবী র. এর পরামর্শে তিনি কানপুর মাদরাসায় কিছুদিন খেদমত করেন। হযরত যফর আহমদ উসমানীকে তাঁর কাছে থানবী র. অর্পন করেন, ইলমে দ্বীন শিক্ষা দেওয়া জন্য। আল্লামা ইবরাহীম জয়নগরী র. এই ইসহাক বর্ধমানী র. এর হাতে গড়া ছাত্র।

** দার্শনিক মুহাদ্দিস আব্দুল আযীয কনকপুরী র. (১৮৯৪-১৯৬৫ঈ.) ফুরফুরার মুজাদ্দিদে যামান র. এর অন্যতম খলিফা। হুগলী জেলার হরিপাল থানার অধিনে কনকপুর গ্রামের বাসিন্দা তিনি। তিনিও হযরত থানবী র. এর সোহবতধন্য ছাত্র আল্লামা ইসহাক বর্ধমানী র. এর সাহচর্য গ্রহণ করেছেন।

** মুজাদ্দিদে যামান র. এর অন্যতম খলিফা মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ র. (১৯০০-১৯৮৬ঈ.)। তিনি শেরপুরের অধিকাসী ছিলেন। এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে দারুল উলূম দেওবন্দে পাড়ি জমান। সেখানে তিনি দীর্ঘদিন পড়াশোনা করেন।

28/01/2025

খতমে বোখারী নিয়ে আল্লামা ত্বকী ওসমানী দামাত বারকাতুহুম ,,

16/01/2025

মাশায়েখে ফুরফুরা ও দেওবন্দী উলামাদের মধ্যকার সম্পর্ক
মুহা: আলাউদ্দীন ছালেহ
********

ইলমে শরীয়ত ও মারেফতের সমন্বয়ে আধ্যাত্মিক শিক্ষার এক প্রাচীন কেন্দ্রভূমি ফুরফুরা শরীফ। এই পবিত্রভূমি আমাদের পশ্চিম বাংলা, পূর্ব বাংলা, আসাম, মুর্শিদাবাদ, ত্রিপুরা অঞ্চলে ইলমে মারেফাত শিক্ষার রাজধানী হিসাবে আখ্যায়িত করলে অত্যুক্তি হবে না ইনশাআল্লাহ। এই পবিত্রভূমি থেকে বাংলার সীমানা পেরিয়ে সুদুর মক্কা মুকাররামা এবং বুখারা পর‌্যন্ত এর আলো ছড়িয়ে পড়ে।

বাংলাদেশের ছারছীনা শরীফ, সোনাকান্দা দরবার, মাগুরা দরবার, চুতরা দরবার সহ নাম না জানা অসংখ্য আধ্যাত্মিক শিক্ষা কেন্দ্রের উৎপত্তি এই পবিত্র ভূমি থেকেই হয়েছে। এই সিলসিলার প্রধান মুরব্বী হলেন ফুরফুরার মুজাদ্দিদে যামান আবু বকর সিদ্দিকী র.। তিনি ইলমে তাসাওউফ শিক্ষা করেছেন রসুলনোমা হজরত সুফী ফতেহ আলী ওয়ায়সী র. (১৮৮৬ ঈ.) এর কাছে, যিনি কলকাতার মানিকতলায় শুয়ে আছেন। তিনি ইলমে তাসাওউফ শিক্ষা করেছেন চিটাগংয়ের মিরসরাইয়ের নিজামপুরে শায়িত হযরত নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী র. এর কাছে, যিনি ছিলেন শহীদে বালাকোট হযরত সাইয়্যেদ আহমদ বেরলভী র. এর অন্যতম খলিফা।

অপরদিকে জৈনপুরী সিলসিলার মহান প্রাণপুরুষ হযরত কারামত আলী জৈনপুরী (১৮৭৩ ঈ.) ও ছিলেন শহীদে বালাকোট হযরত সাইয়্যেদ আহমদ বেরলভী র. এর খলিফা। দারুল উলূম দেওবন্দের আকাবিরদের মধ্যে হযরত রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী র., কাসেম নানুতুবী র., আশরাফ আলি থানবী র., মাহমুদুল হাসান দেওবন্দী র. প্রমূখ সকলেই ছিলেন হযরত হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী র. এর খলিফা। তিনি ছিলেন নূর মুহাম্মাদ ঝানঝানভী র. এর খলিফা, যিনি ছিলেন হযরত সাইয়্যেদ আহমদ বেরলভী র. এর খলিফা।

তাহলে আমরা দেখলাম, উপমহাদেশের প্রসিদ্ধ তিনটি মাশরাব; ফুরফুরা, জৈনপুর ও দেওবন্দ তিনটি একই ঝর্ণাধারা থেকে উৎসারিত। আর এর ফলে তিন সিলসিলারই আকাবিরদের সাথে ছিল পারস্পরিক সৌহার্দ্য পূর্ণ ভালাবাসার সম্পর্ক। আল্লামা নেছারুদ্দীন আহমদ র. যখন ছারছীনা মাদরাসায় হাদিসের ক্লাস শুরু করবেন তখন হযরত মাদানী র. এর কাছে চিঠি লিখলে তিনি দারুল উলূম দেওবন্দের অন্যতম কৃতিসন্তান আল্লামা নিয়ায মাখদুম খোতানী র. কে মুহাদ্দিস হিসেবে ছারছীনা পাঠান। একই সাথে ছারছীনা মাদরাসার আরেকজন মুহাদ্দিস ছিলেন আল্লামা আব্দুস সাত্তার বিহারী র., তিনিও দারুল উলূম দেওবন্দের কৃতি সন্তান। ছারছীনার আল্লামা নেছারুদ্দীন আহমদ র. এ দেশীয় আকাবিরে দেওবন্দের শীর্ষস্থানীয় উলামাদের সাথে একত্রে চলেছেন, একসাথে বহু সভাসমাবেশ করেছেন।

ছারছীনায় ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ঐতিহাসিক সম্মেলন এর এক উজ্জ্বল প্রমাণ। এ ছাড়াও কওমী মাদরাসার পাঠ্যবই ‘তাহরীকে উলামায়ে দেওবন্দ’ তথা দেওবন্দ আন্দোলন, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও অবদান শীর্ষক বইটি দেখুন। সেখানে এসেছে ১৯৫০ সালে ১৮-২০ শে ফেব্রুয়ারীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাছিহাতায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি নির্বাচিত হন ছারছীনার মাও: নেছারুদ্দীন আহমদ র. এবং তাঁর বার্ধক্যজনিত কারণে সহসভাপতি মাওলানা আতহার আলি সাহেব প্রথমে কার‌্যকরি সভাপতি ও পরে সভাপতি হিসেবে তাঁর দায়িত্ব পালন করেন। (দেওবন্দ আন্দোলন, ২৪০ পৃ.)

হযরত শামসুল হক ফরিদপুরী র. ফুরফুরার আবু বকর সিদ্দিকী র. এর হাতে বায়আত গ্রহণ করেন এবং তাঁর মৃত্যুর পর তিনি ছারছীনার আল্লামা নেছারুদ্দীন আহমদ র. এর সান্নিধ্য অর্জন করেন। ১৯৫২ সাল বা তার ২/১ বছর আগের কোন এক মজলিসে ছারছীনায় গমন করেন হযরত শামসুল হক ফরিদপুরী র.। তিনি নেছারুদ্দীন র. এর সুহবত গ্রহণ করেন। এই ঘটনাটির প্রত্যক্ষ দর্শী ছিলেন মাগুরার মরহুম পীর সাহেব মাওলানা রশিদ আহমদ সাহেব র.। আমি তাঁর মুখ থেকে এই ঘটনাটি শুনেছি।

মাগুরার মরহুম পীর সাহেব যখন জন্মগ্রহণ করেন, তখন তাঁর পিতা হাজী আব্দুল হামিদ সাহেব র. ছেলের নাম কি রাখা যায় এ প্রসঙ্গে স্বীয় পীর ফুরফুরার মুজাদ্দিদে যামান র. এর কাছে চিঠি লিখলে তিনি হিন্দুস্তানের প্রসিদ্ধ দেওবন্দী আলেম রশিদ আহমদ গাঙ্গুহি র. এর নামের সাথে মিলিয়ে তাঁর নাম রাখেন রশিদ আহমদ।

এ ছাড়াও হাজিগঞ্জে একবার আল্লামা বশিরহাটী র. এর সাথে জৈনপুরী মাওলানা হামেদ সাহেবের সাথে একটি বিষয় নিয়ে বাহাস অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বাহাসের বিচারক ছিলেন হযরত মাদানী র. এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী মাওলানা সাইদ আহমদ সাহেব। তাঁরা সেদিন ফুরফুরার পীর আবু বকর সিদ্দিকী র. এর পক্ষে বাহাস শেষে রায় প্রদান করেন।

এসকল ঘটনা প্রমাণ করে আমাদের আকাবিরদের সাথে আকাবিরে দেওবন্দদের সাথে কতটা হৃদ্যতা পূর্ণ সম্পর্ক ছিল। আমরা এখানে ফুরফুরা শরীফের মুজাদ্দিদে যামান র. এর কয়েকজন খোলাফার নাম তুলে ধরব, যারা স্বয়ং হযরত থানবী র. এর খলিফা বা মুরীদ ছিলেন, পরবর্তীতে আবু বকর সিদ্দিকী র. এর হাতে এসে বায়আত গ্রহণ করেন।

চলবে.........

25/12/2023

Address

Magura
Magura
7600

Telephone

+8801766626035

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when হৃদয়ের অনুভূতি posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to হৃদয়ের অনুভূতি:

Share