Kamrul's Poem

Kamrul's Poem মানুষই সাহিত্য, সাহিত্যই মানুষ।
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর শব্দ কবিতা।

08/05/2025

তুমি আমার ব্যক্তিগত অপেক্ষা

টানা দুইদীন ভাত না খাওয়া ক্ষুধা।
এ শহরে পেটভরে এক বেলা ভাত খেতে
৬০ টাকা হলে চলে।
তুমি আমার সেই ৬০ টাকা, আমি শেষমেশ পেরেছি খেতে।
আর আকাশের দিকে মুখ করে
জল চেপে রেখেছি চোখে।
তুমি আমার সেই চেপে রাখা অশ্রুও!

আমি প্রখর রোদ্রে যখন প্রচন্ড তৃষ্ণার্ত
পেতে চাই বরফ-ছোঁয়া,
রাস্তার ধারের এক গ্লাস আখের রশ কিংবা বিউটি লাচ্চির ২০ টাকার লেবুর শরবত
তুমি সেই আমার ২০ টাকা!

আমি যখন তিন কিলোমিটার পায়ে হেঁটে কোচিং এ যাই
নাম মাত্র টাকায় ক্লাস নেই, এরপর অবসন্ন ফেরা
আমার দম বন্ধ হয়ে আসে, পা চলেনা
রাস্তার পাশেই এক গ্লাস গরম দুধ খাই
দাম- ৩০ টাকা!
কখনো একটু বসি, শ্বাস ফেলি আবার হাঁটি
তুমি আমার সেই ৩০ টাকা,
একটুখানি জিরিয়ে নেয়া সেই অবসর।

লোকাল বাস, মানুষের শরীরের ভেপসা গরম, আমার ক্লান্ত প্রাণ,
আমি আনমনে মাথা হেলাই নোংরা সিটে,
ইচ্ছে করেই নেই জানালার পাশ,
তুমি আমার সেই ঘুমিয়ে পড়া বিশ্রাম,
কাঙ্ক্ষিত জানালার পাশ!

আমার প্রবল দহন হৃদয়ে যখন
কানে ইয়ারফোন, একটাই বিরহ বাজছে
টানা তিনদিন,
তুমি সেই স্নিগ্ধ বিরহ আমার।

বুড়িগঙ্গার তীর, উদাস মনে বসে আমি
এত রোদ, চুলহীন তুলি গলে যাচ্ছে
আমার দুঃখবিলাস, স্তব্ধ, নির্বাক দৃষ্টি
কালো বিশ্রী জলে নরম রোদের চিকচিক আভার মতন,
তুমিতো সেই দুঃখ আমার, সেই নিস্তব্ধতা, নির্বাক দৃষ্টি!

আস্ত ক্লাসরুম, মনোযোগী ছাত্র আমি
চারপাশে এত সহপাঠী, তবু আমি একা, এত ভীঁড়ের মাঝেও আমি ভীষণ একা– নিজের ব্যক্তিগত।
তুমি সেই আমার অনাকাঙ্ক্ষীত একা।

মায়ের গর্ভের যখন ছিলাম আমি, এদিকওদিক ছোটাছুটি করছি– আর ভাবছি কত আর অপেক্ষা! যাব জগতকুলে, দেখব বসুন্ধরা।
তুমি সেই অপেক্ষা আমার, আমি অবশেষে এসেছি ধরায়।

এরপর থেকে আমি নিজের সাথে নিজে কত লড়েছি, লড়ছি, লুকোচুরি খেলছি কত, জুয়ো খেলছি নিজের সাথে নিজে,
তুমি আমার সেই লড়াই, লুকোচুরি, জুয়োখেলা
এক কাঙ্ক্ষিত অপেক্ষা দীর্ঘ!
তুমি প্রিয় হে আমার, অনাঙ্ক্ষিত এক বিস্ময় হয়ে
চলে এসো– আমার, হে প্রিয়, এক ব্যক্তিগত অপেক্ষা!

03/03/2025

বুনোফুলের দর্শন

রাস্তার ধারে অযত্নে বেড়ে ওঠা বুনোফুল, ভাট ফুল। কদর নেই। রাস্তাপারে মানুষ ফিরে তাকায় না। বিচিত্র যান্ত্রিক গাড়ি, তীব্র গতি, ভারে– রাস্তার বুক কেঁপে উঠলে এদের কম্প্রবক্ষও কাঁপে। রাজ্যের ধুলো এসে জমে, ধুসর হয় পাপড়িগুলো। কেউ নাকের কাছে এনে ঘ্রাণ শুঁকেনা। একটু আদর দিয়ে ছুঁয়ে দেখেনা। তবুও আপন সাজ-সাজ রবে তারা বেড়ে ওঠে, প্রকৃতিকে ঋণি করে। অনাদর, অবহেলায় এরা ফুটে, আবার ঝরে যায়।

এদের রাজ্যে ভ্রমর আসেনা, ডাকলেও ফিরে তাকায় না। কখনো এলেও– এরা অভিমান মনে মুখ ফিরিয়ে নেয়। ফাগুন রাঙা কোন বিকেলে কোন প্রেমিকমন এ ফুলগুলোকে সখার কালো দীঘল রেশমি চুলে গুঁজে দেয়না, প্রেয়সীও এসব সস্তা ফুলে ভুলমনেও রোমাঞ্চিত হয়না। নিয়ম করে ফোটেনা এইসব বুনোফুল, ভাট ফুল, হরহামেশাই দেখা মিলে গ্রামের পথে-প্রান্তরে, শহুরে নগররাজ্যেও দেখা মেলে কখনো।

কালেভদ্রে আগন্তুক কেউ আসে অকস্মাৎ। যাঁর মনে নির্মোহ প্রেম, সে প্রেমের রোশনাই রঙধনু হয়ে সভ্যতার আকাশে অত্যুজ্জ্বল সরল আনন্দ হেসে ওঠে। যে তাঁদের ছিঁড়ে না, ছুঁয়ে দেখে, ঘ্রাণও শুঁকে। তিনি সাধারণ নন– তিনি কবি। এক চিলতে প্রেম, এক চিম্পটি নির্লোভ মমতার ছোঁয়া, একটুখানি নির্মোহ আদর– এ ফুলগুলোর হৃদয়ে আনন্দের ঢেউ খেলে যায়।

জীবনের মঞ্চে কত বিচিত্র শিল্পী, স্বকীয় ঢঙে কেউ গান গাচ্ছে, কারো ভরাট কন্ঠে কবিতার পঙক্তি জীবন্ত, অভিনয় করছে কেউ দারুণ-করুণ-কোমল প্রাণে, কল্পনায় কেউ লিখছে, রঙতুলিতে আঁকছে কেউ চিত্রমালা, ভীষণ ক্লান্ত, ঘর্মাক্ত গায়ে কেউ বাইছে তরী। কেউ হাততালি পায় ঢের, কেউ পায় করুণা। কেউ উত্তেজিত দর্শকের সমস্বরে, “ওয়ান্স এগেইন মোর” শুনে, কেউ শুনে, “বিদেয় হও হে শিল্পী।” অথচ জগতে প্রথম পদক্ষেপে প্রতিটি প্রাণ ছিল নিষ্পাপ-নির্মোহ, মিষ্টি-কোমল ফুল। সবারই ছিল সৌকর্য, সৌন্দর্য, রঙ আর ঘ্রাণ। পৃথিবী সবাইকে একটি নির্মোহ হাসি হেসে অভিবাদন জানিয়েছিল সেদিন।

কিন্তু কালের হাওয়ায় কেউ হয় বুনোফুল-ভাট ফুল, কেউ হয় মিষ্টি বকুল, রজনীগন্ধা বা গোলাপ। আবার– নিয়তির গুপ্ত খামে কারো অবধারিত লেখা থাকে বুনোফুলে, ভাট ফুলে সে হাসবে, সাজবে রব রব সাজে!

এই রামাদানে সব মন ফুল হোক। সরল, শুচি হোক সব চোখ, আঁখিজল। পৃথিবীর সব প্রাণিমন হোক একেকটা নির্মোহ কবি– আগন্তুক নন, যিনি সর্বদা বিরাজমান! মানুষে মানুষে ভেদাভেদ, হিংসা, হানাহানি, পরশ্রীকাতরতা, আমিত্ব-অহংবোধ ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাক। আমরাত ঝরেই যাব, পুরোনোই হবো, মুসড়েই যাব– সে বুনোফুল হই বা মিষ্টি গোলাপ!

23/02/2025

ফুটবে খুন আরও

যত্রতত্রে ছিনতাই, চলছে ঢাকাতি-যজ্ঞ,
ধর্ষণ মাটি, ফুল– সুবিধাবাদের নষ্ট মুখ– লুটছে সর্বস্ব!
শহরটা আজ ত্রাসের নগর, শয়তানেরই শ্বাস,
ফুটছে বারুদ, নামছে তিমির, পাপিষ্ঠ বাতাস!

চলবে কদিন, আর কতদিন– এই অরাজকতা?
বসতঘরে অনিরাপদ যেন শ্রী, দ্বিধা-ভয়-শঙ্কা!
নাগরিকজীবনে বীভৎস ডর– এই কি সভ্যতা?
চেয়ার তুমি করছটা কি– মনে রেখ, দ্রোহই ক্ষমতা!

সমুদ্রের সুতীব্র স্রোত, জল হলো পাড়ের শক্ত মাটি,
জলের রাজ্যে জল হলো আরও কত রদ-খাল-নদী!
জলগুলো সব এসিড হলো, পুড়ল স্বৈরতন্ত্র, রদ,খাল,নদীর হাপিত্যেশ– ক্রেডিট কেন এত?

মনে পড়ে বিরান মনে সেই দুই হাজার বিশ,
খবরকাগজ সয়লাব– ধর্ষণের চিত্র দিবস-নিশীথ!
আজ জুলাই পরে, ভাই, চলছে এমন কেন?
সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ-ঔদ্ধত্য নিত্যদিন– রাষ্ট্র ঘুমোচ্ছে যেন!

দ্রোহের আগুন জলবে ফের চলে যদি আজও,
শ্রাবণ শ্মশান ফিরবে– তপ্ত সূর্য উঠবে;
ঝরবে বৃষ্টি, ধরবে আগুন, পুড়বে শশ্মার আরও....!
কৃষ্ণচূড়ায় ফুলের বদল ফুটবে খুন আরও...!

22/02/2025

যত্রতত্র হচ্ছে ছিনতাই, চলছে ঢাকাতি-যজ্ঞ,
ধর্ষণ হচ্ছে দিবস-রাত্রিবেলা- লুটছে সর্বস্ব!
শহরটা আজ ত্রাসের নগর, শয়তানেরই শ্বাস,
ফুটছে বারুদ, নামছে তিমির, পাপিষ্ঠ বাতাস!

চলবে কদিন, আর কতদিন– এই অরাজকতা?
বসতঘরে অনিরাপদ শ্রী, হৃদয়ে দ্বিধা-ভয়-শঙ্কা!
নাগরিকজীবন, বীভৎস ডর– এই কি সভ্যতা?
চেয়ার তুমি করছটা কি– মনে রেখ, দ্রোহই ক্ষমতা!

সমুদ্রের সুতীব্র স্রোত, জল হলো পাড়ের শক্ত মাটি,
জলের রাজ্যে জল হলো আরও কত রদ-খাল-নদী!
জলগুলো সব এসিড হলো, পুড়ল স্বৈরতন্ত্র, রদ,খাল,নদীর হাপিত্যেশ, ক্রেডিট কেন এত?

16/02/2025

আগুনের তাপে তাবার বুক পুড়ছে, চারকোণে বৃত্তাকার কিছু কালি কম। যে অংশ বেশি পুড়ে, সেটা বেশি কালি হয়– এ কালির কলঙ্ক নিয়ে তাবার বুকে পরোটারা সাজে!

14/02/2025

শবেবরাত

ছিল উৎসবও বটে, ইবাদত নয় কেবল,
পেঁয়াজের ঝাঁজে শ্রান্ত মা'র চোখের জল!
ছোট কুঁড়েঘর, আগুন, তেল-নুন-লাকড়ি,
মাংসের ঝোল, নরম-কোমল হালুয়া-রুটি!
মাথায় টুপি, পাঞ্জাবি গায় একত্রে নামাজ,
বন্ধুরা মিলে উৎসব কেলি– রাত্রির পর সাঁঝ!
চায়ের চুমুকে বেমালুম ঈদ, কত খুনসুটি আজ
বিচিত্র অনুভব রঙে এ উৎসব ছিল আশির্বাদ!
বড় হয়েছি ঢের, হারিয়ে গেল সেইসব দিন,
জীবনের তরে রয়ে গেল সময়ের কত ঋণ!

24/01/2025

গান: রক্তের ঋণ
সুরকার গীতিকার: মোঃ কামরুল হাসান

কালে কালে আসে কিছু দিন তারিখ বার সনের দৃশ্যপট,
দেয়ালে ঝুলে থাকা বর্ষপঞ্জি,
দেখি তাতে চিহ্নিত লাল ডট…।
কতশত প্রাণবিয়োগের তানে দ্রোহের অগ্নিরথ,
শোক কফিনে লাশের মিছিলে মিটে কারো হিংস্র মনোরথ!

বাছাধন হারিয়ে ধুকেধুকে কাঁদে থরোথরো বেদনায়– মা,
ক্ষতচিহ্ন মুছবে কি আদৌও
জাতির হৃদয়ে রক্তের ঋণ জমা!

বাঙালি জাতি বীরের জাতি
রক্তের দামে যুগে যুগে কেনে স্বাধীনতা,
ধরনীর তরে কাতর মিনত স্বরে অনুরোধ
রক্ষা করো বিধাতা।

আমার টাকায় কেনা গুলি, বন্দুক আমার বুকেই ছুঁড়া হলো,
চট করে একাত্তর, বায়ান্নো হাউ-মাউ করে কেঁদে দিল!
লাশের কফিনে, রক্তস্রোত, শোকের জমিনে
এ চব্বিশ ইতিহাস হয়ে গেল!

একদিন ঘরে ফেরা হবে এ রেশ চুকে যাবে
শান্ত হবে বেগ-আবেগের এই স্বদেশ
ভুলে যাবে সবে, মুছে যাবে শোক
জনতার মাথায় কাঁঠাল ভেঙে হবে নি:শেস উপযোগ!

বাছাধন হারিয়ে ধুকেধুকে কাঁদে থরোথরো বেদনায়– মা,
ক্ষতচিহ্ন মুছবে কি আদৌও
জাতির হৃদয়ে রক্তের ঋণ জমা!

21/11/2024
09/11/2024

আজ পথিক নেই

ব্যস্ত, অবিশ্রান্ত শহর। ধুলো উড়ছে, বিষাক্ত মনোক্সাইড গিলছে, নাক ভারি হচ্ছে গন্ধে; চারপাশে গাড়ির বিরক্তের হর্ন– তবু ক্লান্তহীন হাঁটছে পথিক। উদ্দেশ্যহীন হাঁটা। অলিগলি ভুলে তালগোল পাকিয়ে একবার থামে, আবার হাঁটে। কাউকে জিগ্যেস করে নেয়, দূরত্ব বেশি হলে ভয় পায়না পথিক! এক হাঁটায় ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে যায়! পথিক হাঁটে, নিস্তব্ধ, নির্বাক, নিশ্চল পথিকের কল্পনার সমুদ্রে ঢেউ খেলে ওঠে। পথিক হাঁটে আর চুপসে থাকে! হুমায়ূন স্যারের হিমু নয়, এ পথিক অদ্ভুত স্বভাবের নিঃস্ব, নিঃসঙ্গ, নিরুদ্দেশ মানুষ! জীবন ও সময়ের অসংখ্য অগণিত চাপে পথিক কাঁদেনা, বলতে পারেনা, আহতও হয়না– কেবল হাঁটে। হুট করে কোথাও থামে, চা খায়। পথিমধ্যে হাবিজাবি সব খায়– সিগারেট ব্যতিত। একদিন পথিক হয়তো ধুম করে চলে যাবে প্রকৃতির নিয়মে, ততোদিনে পথিকের মগজের চাপগুলো, হৃদয়ের গভীর-ভারি দুঃখগুলো চিৎকার করে করে বলবে এ রাস্তা, এ ভোর, এ রাত, এ দীর্ঘ দিগ্বিদিক হাঁটার স্মৃতিচিহ্নগুলোকে– এ পথিক তাদের কতই না যত্ন করতো! আজ পথিক নেই!

30/10/2024

মানুষের মাঝে কেউ কেউ মুখোশ পরে। দুঃখ ঢেকে রাখার মুখোশ। এরা প্রায়ই একা থাকে। নিজের মতো করে জগতকে দেখে, আর চারপাশের আনন্দগুলো উপভোগ করার চেষ্টা করে। পৃথিবীতে যত মুখোশ আছে, তার মধ্যে দুঃখের মুখোশ বেশ শক্তিশালী, খুব সহজে উন্মোচন হয়না! একদিন পৃথিবী থেকেও নিরবে চলে যায় এ মুখোশ পরিহিত নিঃসঙ্গ, দুঃখি মানুষগুলি!

30/10/2024

মানুষের মাঝে অনেকেই দুঃখ ঢেকে রাখার মুখোশ পরে থাকে। এরা প্রায়ই একা। নিজের মতো করে জগতকে দেখে, আর চারপাশের আনন্দগুলো উপভোগ করার চেষ্টা করে। পৃথিবীতে যত মুখোশ আছে, তার মধ্যে এই মুখোশ বেশ শক্তিশালী, খুব সহজে উন্মোচন হয়না! একদিন পৃথিবী থেকেও নিরবে চলে যায় এ মুখোশ পরিহিত নিঃসঙ্গ, দুঃখি মানুষগুলি!

Address

Charjublee Road, Harich Chowdhury Bazar, Subornachar, Noakhali, Maijdee Court
Maijdee Court

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Kamrul's Poem posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Category