09/08/2025
শাসন নাকি আদর?
নিউরোসায়েন্স অনুযায়ী, শিশুদের ব্রেইন চিৎকার (নেগেটিভ স্টিমুলাস) এবং আদর (পজিটিভ স্টিমুলাস) — এই দুই ধরনের অভিজ্ঞতার প্রতি সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে রেসপন্স করে।
যখন শিশুকে চিৎকার করা হয় বা ভয় দেখানো হয়, তখন তার ব্রেইনে কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ হয়। এটি শিশুর অ্যামিগডালা (ভয়ের প্রসেসিং এরিয়া) কে অত্যন্ত সক্রিয় করে তোলে। ফলে শিশু আতঙ্কগ্রস্ত হয়, নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করে এবং বারবার এমন অভিজ্ঞতা হলে ব্রেইনের এই অংশটি অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। এর ফলে ভবিষ্যতে শিশুর মধ্যে উদ্বেগ, আত্মবিশ্বাসহীনতা ও আচরণগত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এ ছাড়া, ক্রমাগত নেতিবাচক অভিজ্ঞতা নিউরনগুলোর সংযোগ (synapse) গঠনে বিঘ্ন ঘটায়, যার ফলে শেখার সক্ষমতা কমে যেতে পারে।
অন্যদিকে, যখন শিশুকে ভালোবাসা, আদর বা সহানুভূতির সঙ্গে আচরণ করা হয়, তখন ব্রেইনে অক্সিটোসিন ও ডোপামিন নামক “feel-good” হরমোন নিঃসৃত হয়। এটি ব্রেইনের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স (যেটি চিন্তা, বিচার, নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি পরিচালনা করে) কে সক্রিয় করে।
এতে শিশুর মধ্যে নিরাপত্তা, আত্মবিশ্বাস, শেখার আগ্রহ এবং ইতিবাচক সামাজিক আচরণ তৈরি হয়। এমন ভালোবাসাময় পরিবেশে নিউরনের মাঝে বেশি বেশি সংযোগ তৈরি হয়, যেটা ব্রেইনের বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চিৎকার শিশুর ব্রেইনে ভয় এবং নিরাপত্তাহীনতা গেঁথে দেয়, আর আদর তাকে শেখে ভালোবাসা, বিশ্বাস এবং আত্মনির্ভরতা— যার ভিত্তি তৈরি হয় আজীবন মানসিক বিকাশের জন্য। এজন্য সচেতন, স্নেহভরা এবং সহানুভূতিশীল আচরণই শিশুর ব্রেইনের স্বাস্থ্যকর বিকাশের মূল চাবিকাঠি।
আমারা অনেকেই ওদের অনেক আচরনে খুব বিরক্ত হই, চিৎকার করে ফেলি যা ঠিকনা, এখন থেকে সচেতন হবেন, ধৈর্যের বিকল্প কিছু নেই।