
25/06/2025
⛔বরিশালের কাশিপুর এতিমখানা ⛔
আসসালামু আলাইকুম।
আমি আপনাদের পেজের একজন নিয়মিত ফলোয়ার। আপনাদের প্রত্যেকটি গল্প পড়ি এবং শেয়ার করি। তবে কিছু ব্যক্তিগত কারণে আমি আমার পরিচয় গোপন রাখতে চাই। আপনাদের পেজের প্রতিটি গল্পই অসাধারণ, আর আমি জানি, এগুলো সংগ্রহ করতে আপনাদের অনেক কষ্ট করতে হয়।
আমার বন্ধু আদিত্য আপনাদের পেজের একজন বড় ফ্যান। সে একবার আপনাদের একটি গল্প পাঠিয়েছিল, যা আপনারা পোস্ট করেছিলেন। সেই থেকেই আমি ভাবছিলাম, আমাদের বরিশালে ঘটে যাওয়া এক ভয়ঙ্কর সত্য ঘটনা আপনাদের কাছে শেয়ার করব।
আমি জানি, আপনাদের কাছে অনেক গল্প আসে, এবং আপনারা সবার গল্প পোস্ট করতে পারেন না। তবে যদি গল্পটি আপনাদের ভালো লাগে, দয়া করে আপনাদের পেজে শেয়ার করবেন।
চলুন, শুরু করা যাক...
---
বরিশালের কাশিপুর এলাকায় একটা পুরনো এতিমখানা আছে, যা এখন প্রায় পরিত্যক্ত। অথচ কয়েক দশক আগে এটি ছিল এতিম শিশুদের জন্য আশ্রয়ের জায়গা। স্থানীয় মানুষরা বলে, একসময় এখানে প্রায় ৪০-৫০ জন অনাথ শিশু থাকত। তাদের দেখাশোনা করতেন এক বৃদ্ধ তত্ত্বাবধায়ক, যার নাম ছিল মাওলানা খালেক মিয়া।
তিনি এতিম শিশুদের ঠিক নিজের সন্তানের মতো দেখতেন। শিশুদের খাবার, পড়াশোনা ও ধর্মীয় শিক্ষা দিতেন। আশেপাশের গ্রামের লোকেরা বলত, খালেক মিয়া খুব ভালো মানুষ ছিলেন। কিন্তু তার চোখের গভীরে যেন একটা অদ্ভুত শূন্যতা ছিল, যেন তিনি কোনো অজানা দুঃখ বয়ে বেড়াচ্ছিলেন।
এই এতিমখানায় থাকা প্রতিটি শিশুই ছিল সমাজের অবহেলিত, অনাথ বা হারিয়ে যাওয়া সন্তান। কিন্তু ধীরে ধীরে তাদের সংখ্যা কমতে শুরু করল।
লোকজন বলতে শুরু করল, "শিশুরা একে একে নিখোঁজ হচ্ছে!"
---
১৯৮৭ সালের এক রাতে একেবারে অদ্ভুত একটা ঘটনা ঘটল।
সেদিন গভীর রাতে এতিমখানার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন জাফর মোল্লা নামের এক ব্যক্তি। হঠাৎ তিনি দেখলেন, এতিমখানার ভিতর থেকে যেন আলো ঝলমল করছে! মনে হচ্ছিল, ভেতরে কারা যেন ব্যস্ত রয়েছে।
তিনি কৌতূহলী হয়ে এগিয়ে গেলেন। তখনই হঠাৎ ভেতর থেকে শোনা গেল একসঙ্গে অনেক শিশুর আর্তনাদ! যেন কেউ তাদের চিৎকার করে ডাকছে!
জাফর মোল্লা ভয় পেয়ে গেলেন। তবুও সাহস করে জানালার কাছে গেলেন। কিন্তু ভেতরের দৃশ্য দেখে তিনি আতঙ্কে পেছনে পড়ে গেলেন!
শিশুরা সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন মাওলানা খালেক মিয়া। তার চোখে এক অদ্ভুত আলো! আর তার হাতে এক বিশাল ছুরি!
হঠাৎ করেই আলো নিভে গেল। এরপর আর কিছু দেখা যায়নি।
পরদিন সকালে স্থানীয়রা এসে দেখে, এতিমখানার ভেতরে একজনও নেই!
খালেক মিয়াও নেই, শিশুরাও নেই! কিন্তু ভেতরে রয়েছে কেবল রক্তের ছোপ এবং কিছু ছেঁড়া জামাকাপড়!
---
এরপর থেকে এই এতিমখানাটি বন্ধ হয়ে যায়। কেউ আর কখনো এর দরজা খোলেনি।
কিন্তু রাতে যারা আশেপাশে দিয়ে যায়, তারা বলে—
"এতিমখানার ভেতর থেকে কান্নার শব্দ আসে..."
"শিশুরা যেন এখনো সেখানে আছে..."
"একজন বৃদ্ধের ছায়ামূর্তি জানালার পাশে দেখা যায়..."
কিছু যুবক একবার সাহস করে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। তাদের একজন—সামীউল ভাই, যিনি ভূতপ্রেত বিশ্বাস করতেন না, তিনি একদিন বন্ধুদের সাথে এই এতিমখানার ভেতরে ঢোকার সিদ্ধান্ত নেন।
যেই না তারা দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলেন, তখনই তাদের মনে হলো যেন শত শত চোখ তাদের দিকে তাকিয়ে আছে!
সামীউল ভাই বলেছিলেন, "হঠাৎ করেই একটা ঠান্ডা বাতাস আমাদের চারপাশে বইতে লাগল। মনে হচ্ছিল, কেউ পেছন থেকে নিঃশ্বাস ফেলছে।"
হঠাৎ জানালার পাশে একটা ছোট্ট ছায়া দেখা গেল—একটা শিশু! অন্ধকারে দাঁড়িয়ে, ফ্যাকাশে চোখে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে!
বন্ধুরা চিৎকার করে দৌড় দিল, কিন্তু দরজাটা যেন আপনা-আপনি লক হয়ে গেল!
পরদিন সকালে, লোকজন সামীউল ভাইকে অচেতন অবস্থায় এতিমখানার সামনে পেল। কিন্তু তার সাথে যাওয়া আরেক বন্ধু নূরুল আর কখনো পাওয়া যায়নি!
তবে সামীউল ভাই যখন জ্ঞান ফিরে পেলেন, তখন তার মুখ থেকে একটা কথাই বের হচ্ছিল—
"ওরা এখনো এখানে আছে... ওরা চলে যেতে দেবে না..."
এরপর থেকে আর কেউ ওই এতিমখানার ধারে কাছে যায় না।
---
এখনও কেউ যেতে সাহস করে না...
কেউ এখনো ওই এতিমখানার ধারে কাছে যায় না। বরিশালের মানুষ বলে, রাত গভীর হলে ওই পথের পাশ দিয়ে গেলেই শিশুদের কান্না শোনা যায়। কেউ কেউ নাকি সেখানে ছায়ামূর্তি দেখেছে, যারা করুণ স্বরে ফিসফিস করে কিছু বলতে চায়।
এক বৃদ্ধ একদিন বলেছিলেন, "ওরা ফিরে আসতে চায়। ওদের আত্মারা মুক্তি পায়নি..."
তাহলে কি সেই শিশুদের আত্মারা এখনো এতিমখানার চারপাশে ঘুরে বেড়ায়?
আপনি যদি কখনো বরিশালের কাশিপুরে যান, তবে একবার রাতের বেলা ওই এতিমখানার সামনে দাঁড়িয়ে দেখবেন... হয়তো আমিই সত্য বলছি!
---
এই ছিল বরিশালের কাশিপুর এতিমখানার ভয়ঙ্কর গল্প। আপনি কি কখনো এর আশেপাশে গেছেন?
#যন্ত্রনা___________ওয়ালা
#পৃষ্ঠা_১৩২১