
19/03/2025
পুলিশের গাড়িতে এত রক্তের চিহ্ন কেন?
রাত নেমে এসেছে শহরে, কিন্তু খিলক্ষেতের বাতাস ভারী এক অদৃশ্য আতঙ্কে। রাস্তার ধুলোয় মিশে গেছে রক্তের দাগ।
পুলিশের গাড়ির গায়ে লেগে থাকা শুকনো রক্ত যেন নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক বিভীষিকাময় ঘটনার। ছেঁড়া পোশাক, ছিটকে পড়া পুলিশের হেলমেট, ভাঙা লাঠি—সব যেন চিৎকার করে প্রশ্ন করছে, এমনটা কি হওয়ার কথা ছিল?
একজন যুবকের বিরুদ্ধে উঠেছিল ধর্ষণের অভিযোগ। স্থানীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল, আইন-আদালতের তোয়াক্কা না করে হাতের কাছে যা পেয়েছে, তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তার ওপর। মুহূর্তের মধ্যেই রাস্তায় তৈরি হলো এক ভয়াবহ মব, যাদের চোখে শুধুই প্রতিশোধের আগুন।
খবর পেয়ে পুলিশ ছুটে এলো, কারণ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করাই তাদের দায়িত্ব। কিন্তু পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক যে পুলিশ বুঝতেই পারেনি, কখন গণপিটুনির সেই উন্মত্ততা তাদের দিকেও ঘুরে গেছে। পুলিশের গাড়ি ঘিরে ধরে শুরু হলো ধাক্কাধাক্কি, মুহূর্তের মধ্যে গাড়ির কাচ ভেঙে পড়ল, পুলিশের পোশাক ছেঁড়া হলো, লাঠির আঘাতে একের পর এক সদস্য লুটিয়ে পড়লেন রাস্তায়।
এই কি আমাদের সমাজ?
আমরা কি ভুলে গেছি, এই পুলিশই দিনের পর দিন আমাদের নিরাপত্তার জন্য নিজেদের জীবন বাজি রাখে? আমরা কি একবারও ভাবলাম না, বিচারের নামে এই নৃশংসতা যদি নিয়ম হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে আইনের প্রয়োজন কী?
অভিযুক্ত যুবক যদি সত্যিই অপরাধী হয়ে থাকে, তবে তার যথাযথ বিচার হওয়া উচিত। কিন্তু সেই বিচার করার দায়িত্ব কি আইন হাতে তুলে নেওয়া উত্তেজিত জনতার? যদি আজ আমরা নিজেরাই বিচারক হয়ে উঠি, তাহলে আগামী দিনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বটা কার হাতে থাকবে?
পুলিশ আহত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিল, তাদের গাড়িতে লেগে থাকা রক্তের দাগ জ্বলজ্বল করছিল অন্ধকার রাতে। কিন্তু একটা প্রশ্ন তখনো বাতাসে ভাসছিল—
যদি পুলিশের ওপর এমন হামলা হয়, তবে আমাদের নিরাপত্তা দেবে কে???