10/03/2025
আজ ১০ মার্চ, কবি ও শিশুসাহিত্যিক এনাম আনন্দের আজ জন্মদিন।
১৯৮৫ সালের ১০ মার্চ তিনি কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত হোমনা উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। লেখালেখির প্রেরণা হিসেবে পেয়েছেন- স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সম্মাননা ও দৈনিক মুন্সীগঞ্জের খবর সাহিত্য পাতা সম্মাননা।
এনাম আনন্দ তার কবিতা, ছড়া ও গল্পের মাধ্যমে সমসাময়িক বিষয়গুলোকে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পাঠকের কাছে উপস্থাপন করেন। এনাম আনন্দের প্রথম লেখা প্রকাশ হয় দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকায়। তিনি জাতীয় পত্রিকা ও ছোট কাগজে সমানভাবে সক্রিয়।
এনাম আনন্দ দেশের শীর্ষস্থানীয় ওয়েবম্যাগ 'কাব্যশীলন' এর পরিচালক (অর্থ) ও সোনার বাংলা সাহিত্য পরিষদ (এসবিএসপি'র) সাধারণ সম্পাদক। তার জন্মদিনে কাব্যশীলনের শুভেচ্ছা-
পুষ্পকলির ঘৃণায়ভরা চিৎকার
এনাম আনন্দ
আমি বসুমতির আদম বাগের- পুষ্পকলি
বদলে যাওয়া এক সভ্যসমাজে ছিল আমার বসবাস
প্রজাপতির মতছিল মখমল রঙ্গিন ডানা।
ফুলের পরাগ গায়ে মেখে- এপাড়া ওপাড়া উড়ে বেড়াতাম
তোমাদের মতই ছিল আমার আকাশ ছোঁয়া অযুত স্বপ্ন।
আদম কানুনে কলি ফোটার আগে-
হরিণীর তুলতুলে মাংস খেকো হিংস্র হায়েনাদের থাবায় পড়ে
দিনেরপর দিন যন্ত্রনার সাথে পাঞ্জা লড়ে
রক্তাক্ত দেহ নিয়ে আমি এখন তারার দেশে।
প্রতি অমাবস্যায় ছেঁড়া আঁচড়া গুপ্তাঙ্গের ব্যথা নিয়ে
বজ্রপাতের ন্যায় করি চিৎকার!
আমার আত্মচিৎকারে কেঁপে ওঠে পরিত্যক্ত বাড়িটির ধূলিকণা
হে বসুমতীর সন্তান! তোমরা শুনতে কি পাও?
আমার ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত শরীরের ঘৃণায়ভরা বিভৎস চিৎকার!
স্বপ্নের নকশিকাঁথা
এনাম আনন্দ
যেদিক তাকাই দেখি নিসর্গ নীরবতা
কচি পাতাদের মন ভালো নেই।
অজগরের মতো হা করে আছে বিদঘুটে অন্ধকার
যেন মুহুর্তেই গিলেফেলবে সবকিছু !
বর্ষণমুখর প্রভাতে
ঋতু রাজের কন্ঠে শুনি গোপন বিষাদের সুর!
কিশোরী বাতাস-
উদাসী হয়ে পা বাড়ায় অচেনা পথে,
গোধূলির বলাকা ডানা ঝাপটিয়ে করে নক্ষত্রপুঞ্জের বন্দনা।
জ্যোৎস্নার সুতোয় সেলাই হলো না আমার স্বপ্নের নকশিকাঁথা।
বান্দর খেলা
এনাম আনন্দ
ঢুলি দাদু ঢোল বাজাইয়া বান্দর উঠায় ঘাড়ে
লালমুখ বান্দর মাথায় নাচে কে থামাবে তারে!
তাকধিনাধিন! তাকধিনাধিন! তাকধিনাধিন তাক্
সীতা-রামের দোহাইর পরও চেপে ধরলো নাক!
চোখে খামচায় মুখে খামচা কামড় দিলো পাছায়
ঢুলি দাদু পৌষা পাগলা নাগিন নাগিন নাচায়।
ডাক্তার ডাকো হেকিম ডাকো, ডাকো তোমরা বৈদ্য
পাগল হয়ে দাদু গুনে তিন-দ্বগুণে চৌদ্দ!
ডুগডুগিটা হাতে নিয়ে ধরলো বেহুলার গান
তাতে কী আর বান্দর থামে! কও দেখি ফুলচাঁন!
বান্দর- দাদুর কানে চুলকায় গালে দিলো চুমা
ভয়ে চোটে দাদু ডাকে অ-মা! অ-মা! অ-মা!
ওরে বান্দর তুই ভাই সুন্দর মাথা থাইক্কা নাম
দোহাই লাগে রাবণ-লংকার দুগ্গা! দুগ্গা! রাম!
বলার পরে লালমুখ বান্দর মাথা দিলো ঝাঁকি
যা ঘটনার তা ঘটে গেলো ইতিহাসটা বাকি!