17/05/2025
আজ একটা খবর পড়লাম, যা বুকের গভীরে এক যন্ত্রণার চিহ্ন রেখে গেল। মাত্র ১৬ বছরের একটি ছেলে, এসএসসি পরীক্ষার্থী, নাম ছিল মো. আপন মিয়া। সে আর বেঁচে নেই। নিজের হাতে জীবনের সব আলো নিভিয়ে দিয়েছে। সে একটি চিরকুট লিখে গেছে ভালো না হতে পারার অভিযোগে, বাবা-মাকে কষ্ট দেওয়ার অপরাধবোধে, নিজের প্রতি হতাশায় ভরা আত্মপ্রবাদের এক কঠিন দলিল।
আমার বুকটা তখন থেকেই ভার হয়ে আছে। আমি যেন আমার নিজেরই এক বোনকে হারালাম কারণ এই সমাজে প্রতিটি আপন একেকটা আত্মার আত্মীয়, যদি আমরা সত্যিই একে অপরকে ভালোবাসতে জানি। তার চিঠিতে লেখা ছিল: "আমি খারাপ ছিলাম, ভালো হতে পারলাম না। বাবা-মা, দাদা, বন্ধুরা তোমাদের অনেক কষ্ট দিয়েছি।"
ভাই হয়ে বুক ফেটে কাঁদছি...
কে তাকে বুঝেছিল যে সে ভেতরে এতো ভেঙে পড়ছে? কে একবার জিজ্ঞেস করেছিল "তুই ভালো আছিস তো?" একটা শিশু, কিশোর, এমনকি বড়রাও কখনো কখনো নিজেকে “ভালো নয়” মনে করে। কিন্তু আমরা, পরিবার, বন্ধু, সমাজ আমরা যদি কেবল তার ভুল দেখি, তাহলে সে কীভাবে শিখবে ভালো হতে? আপন নেই, কিন্তু তার লেখা থেকে একটা প্রশ্ন রেখে গেছে আমরা কি সত্যিই একে অন্যের কষ্ট বুঝি?
আমার অনুরোধ, প্রার্থনা কেউ যদি নীরব হয়ে যায়, হঠাৎ করে চুপ করে যায়, একা থাকতে চায় তাকে সময় দিন, জিজ্ঞেস করুন, পাশে থাকুন। বাবা-মা, ভাই-বোন, বন্ধুরা ভালো হোক বা খারাপ, আমাদের সন্তান, আমাদের মানুষগুলোর পাশে থাকা আমাদেরই দায়িত্ব।
আজ আপন নেই, কিন্তু কাল যেন আর কেউ না হারিয়ে যায়...
এই পৃথিবী তোমার মতো কারো আর চোখের পানি না ঝরায় এই কামনা করছি।
একজন বোন হারানো ভাই
(মানসিক যন্ত্রনায় ভেঙে পড়া একজন মানুষের পক্ষ থেকে)
স্বপন মাহমুদ, সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৫ (সূত্র : সময়ের কন্ঠস্বর)