Oishe Rahman - ঐশী রহমান

Oishe Rahman - ঐশী রহমান কল্পনার এক অদৃশ্য উদ্দেশ্যহীন গন্তব্য আমার 🍁

১ম ইবুক: সখী তোমারে বাঁধিবো যতনে💗
(1)

01/08/2025

#দুটি_হৃদয়ের_সন্ধিতে! ই-বুক টি কবে আসছে?

উত্তর : মেলা শুরু হয়েছে আজ, আজ থেকে একে একে ইবুক গুলো আসতে শুরু করেছে। আমার ই-বুকটি কবে আসছে তার তারিখ বইটই কতৃপক্ষ এখনো জানাননি আমাকে। আমি জানলে অবশ্যই আপনাদের জানিয়ে দেবো!

২৫% ছাড়!মেলা কিন্তু শুরু হয়ে গেছে __সকল ই-বুকে চলছে ২৫ পারসেন্ট ছাড়! আমার ই-বুক  #সখী_তোমারে_বাধিবো_যতনে  আগের মূল্য ছিল...
01/08/2025

২৫% ছাড়!
মেলা কিন্তু শুরু হয়ে গেছে __
সকল ই-বুকে চলছে ২৫ পারসেন্ট ছাড়!
আমার ই-বুক #সখী_তোমারে_বাধিবো_যতনে আগের মূল্য ছিলো ৩৫ টাকা সেটি ২৫ পারসেন্ট ছাড়ে পাবেন মাত্র ২৭ টাকায়। শুধু মাত্র প্রমোকোড ব্যবহার করে জলদি জলদি এই সুযোগ লুপে নিন।
প্রোমোকোড : ebookmela25

1.পড়ুন ই-বুক "সখী তোমারে বাঁধিবো যতনে"
https://link.boitoi.com.bd/i1JZ

2.যেভাবে বইটই থেকে ই-বুক ক্রয় করবেন:
https://youtube.com/shorts/6NjaAveyh6A?feature=share

3.অন্য দেশ থেকে কিভাবে বইটই অ্যাপে ই-বুক ক্রয় করবেন:
https://youtube.com/shorts/Jteh6XU50tw?feature=share

4.যেভাবে বইটই থেকে প্রিয়জনকে বই গিফট করবেন:
https://youtube.com/shorts/b0Se9TiCy0U?feature=share1.পড়ুন ই-বুক "সখী তোমারে বাঁধিবো যতনে"
https://link.boitoi.com.bd/i1JZ

2.যেভাবে বইটই থেকে ই-বুক ক্রয় করবেন:
https://youtube.com/shorts/6NjaAveyh6A?feature=share

3.অন্য দেশ থেকে কিভাবে বইটই অ্যাপে ই-বুক ক্রয় করবেন:
https://youtube.com/shorts/Jteh6XU50tw?feature=share

4.যেভাবে বইটই থেকে প্রিয়জনকে বই গিফট করবেন:
https://youtube.com/shorts/b0Se9TiCy0U?feature=share

 #ফের_বসন্ত  #ঐশী_রহমান  #পর্ব_|১২(খ)|________________ওয়াসিফ বেশ সময় ধরে মেয়ের সঙ্গে কথা বলে, এই সময়টুকু তে আর অন্য কারো...
30/07/2025

#ফের_বসন্ত
#ঐশী_রহমান
#পর্ব_|১২(খ)|

________________

ওয়াসিফ বেশ সময় ধরে মেয়ের সঙ্গে কথা বলে, এই সময়টুকু তে আর অন্য কারো উপস্থিতি টেরই পেলোনা। ধারা পুরোই চুপচাপ। ফোনের ওপাশ থেকে ওয়াসিফ বলে।

' মুমতাহিনা! আপনি কি ঘুমিয়ে পড়েছেন'?

ধারা একটু নড়ে চড়ে বসে মাথায় গোমটা টানে, বলে।

' না, শুনছি। আপনি বলুন'

' কি শুনছেন'?

' এই যে আপনি ওয়াসিফার সঙ্গে যা যা বললেন'

' কি কি বললাম '

ধারা পড়লো মহা ঝামেলায়, সে তো বাপ মেয়েকে শুধু দেখেই চলেছিলো তাদের কথা কিছু ই মনোযোগ দিয়ে শোনেনি। এখন কি বলবে সে? এ যেনো শিক্ষক বইয়ের কোনো একটা টপিক পড়িয়ে পিছনের সিটে বসে থাকা অমনোযোগী -ছাত্রীকে ভরা ক্লাসের সামনে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার মতোন পরিস্থিতি। ' নেও এবার বলো, এতোক্ষণ যা যা পড়িয়েছি, বোঝাও আমাকে'
ধারা মিনিট খানেক ভেবে জবাব দেয়, ' ঐতো, ঐ জিজ্ঞেস করলেন ও খেয়েছে কিনা? ও কেনো ঘুমোয়নি এখনো? ও কি আজ খুব বেশি দুষ্টুমি করেছে কিনা? এইতো এইসবই'

ওয়াসিফ এখনো দেখেনা ধারাকে, কারন ফোনের ক্যামেরা এখনো ওয়াসিফার দিকে ঘুরিয়ে রাখা। ওয়াসিফ ও আর বলেনা ' আপনি ওভাবে কেনো লুকিয়ে থেকে আমার কথার জবাব দিচ্ছেন, সামনে আসতে সমস্যা কোথায় মুমতাহিনা আপনার '?

' আচ্ছা তারপর বলুন, আপনারা বাড়ির সবাই কেমন আছেন'?

' জি আলহামদুলিল্লাহ, আমরা সবাই ভালো আছি'

' আংকেলের শরীরের কি অবস্থা এখন'?

' মামা এখন অনেকটাই সুস্থ, উনারা আজ চলে গেছেন'?

' কেনো? আপনি জোর করেননি আরো দুটোদিন থেকে যেতে'?

' করেছি, শুধু আমি না, মা, ভাবিরা সবাই মিলে করেছি '

' আচ্ছা '

' জি'

ওয়াসিফ সময় দেখে, অনেক রাত, বলে।

' আর কিছু বলবেন মুমতাহিনা'?

ধারার মনে মনে ইচ্ছে করছে লোকটাকে জিজ্ঞেস করতে, ' আপনার ছুটি কবে হবে? আপনি কবে আসবেন'?

' হ্যালো'!

' জি'

' আমি কি তাহলে কল রাখবো এখন, আপনি কি আর কিছু বলতে চান'?

ধারা আস্তে করে বলে।

' জি, রাখুন। আল্লাহ হাফেজ '

' আল্লাহ হাফেজ। রাত অনেক হয়েছে আপনারা ও ঘুমিয়ে পড়ুন '

ওয়াসিফ কল কাটতেই ধারা ফোনটা বিছানা থেকে একটু দূরে রেখে ওঠে, ও একটু ওয়াশরুমে যাবে। বিছানা ছেড়ে দু'পা সামনে এগিয়ে থেমে আবার তাকায় ওয়াসিফার দিকে। সে বড়ো বড়ো চোখ করে তাকিয়ে আছে ধারা দিকে। ধারা ফিরে এসে ওকে কোলে তুলে কাঠের দোলনায় শুইয়ে দিলো। মেয়েটার বয়স পাঁচ মাসে পড়তেই এখন একা একা শোয়া থেকে উপুর হয়ে যায়, এদিকে ওদিকে ঠেস দিয়ে পিপড়ার মতো চলে। একটু চোখ এদিক ওদিক করলেই বিপত্তি। পরিবারে এতোগুলো মানুষ, সবসময় কেউ না কেউ ওকে সঙ্গ দেয়, কিন্তু এই মাঝরাতে ধারা এখন কাকে ডাকবে। ও আজ নিরুপায় হয়ে বুদ্ধি খাটিয়ে ওকে দোলনায় শোয়ালো। দোলনাটা মৃদু দোল দিয়ে ধারা গেলো ফ্রেশ হতে।

মিনিট তিনেক সময়ের ব্যবধানে যা ঘটার তা ঘটে গেলো। ধারা ওয়াশরুমে থাকলেও ওর কান ছিলো মেয়ের দিকে। সবে চোখ মুখে পানির ঝাঁপটা দিতেই কানে এলো ধুম করে কিছু একটা পড়ার শব্দ, তার ঠিক পাঁচ সেকেন্ডের মাথায় ওয়াসিফার গলা উঁচিয়ে চিৎকার। ধারা একছুটে বেরিয়ে এসে দেখে হাত দুই উঁচু থেকে ওয়াসিফা মেঝেতে পড়ে আছে দোলনা সহ। দোলনার স্ট্যান্ড থেকে মাঝের টুকু কিভাবে যেনো খুলে পড়ে আছে। ধারার হাত কাপে, ও দৌড়ে গিয়ে মেয়েকে তোলে। ওয়াসিফার কান্নার বেগ আরো বাড়ে। ধারা হতভম্ব হয়ে মেয়ের কপালে, গালে চুমু খায়, এদিকে ওদিকে ওর হাত, মাথা উল্টে পাল্টে দেখে কোথাও লেগেছে কিনা? কিন্তু আপাতত বোঝা যাচ্ছে না। তবে মেয়ে ভয় পেয়েছে ভীষণ।
মিনিট খানেকের মধ্যে এঘর, ওঘর থেকে ছুটে আসে সবাই। এই মাঝরাতে ওয়াসিফার জোর গলায় কান্না এবাড়ির প্রতিটা রুমে পৌছেছে।
সাজু এসেই দেখে ঐ অবস্থা, ও হাত বাড়িয়ে ওয়াসিফা নিতে চেয়েও পারেনা। ধারার বুকের সঙ্গে মাথা মিশিয়ে শক্ত করে মুঠোয় শাড়ি চেপে ধরে কাঁদছে।
শাহেনূর এলো, ' কি হয়েছে বৌমা? ও কি পড়ে গেছে '?
ধারার চোখেও পানি জমলো, বললো ' জানি না আম্মা, ও পড়ে যেতে পারে বলে বিছানা থেকে দোলনায় শুইয়ে ওয়াশরুমে গিয়েছি, কিছুক্ষণ পর একটা শব্দ হলো, তারপর ওয়াসিফা.. '

নিধি দোলনার কাছে এগিয়ে, খুঁটিয়ে খাটিয়ে দেখে বললো।
' এইতো এখানের পিন ছুটেছে, আর ওটা খুলে গেছে '

আতিকা ভয়ে ভয়ে বললো। ' ভাইজান অনেক বার বারণ করেছিলো আম্মা কে, এই দোলনাটা ব্যবহার না করতে, এটা অনেক পুরাতন কাঠের দোলনা, আমার সময়ের। এখন ভাইয়া শুনলে তখন বুঝোও তোমরা।

শাহেনূর মেয়ের কথায় পাত্তা না দিয়ে সে নাতনিকে দেখতে থাকে। ' কোথায় লেগেছে দাদু তোমার? সাজুকে ডেকে বলে, ' একটু ভালো করে দেখোত তোমরা'?

সাজু, নিধি এগিয়ে আসে, নিধি বলে।

' আম্মা এখন কিছু বোঝা যাবে না, কোথাও যদি লেগে থাকে সেই জায়গাটা ফুলবে, আপাতত তো কোথাও ফোলেনি'

সাজু বলে।

' দোলনায় তো বেশ আরামদায়ক গদি, বালিশ এসব ছিলো, কোথাও হয়তো তেমন লাগেনি, ও ভয় পেয়েছে অনেক, তাই কাঁদছে '

_____

বেশ কিছু সময় ওয়াসিফার কান্না থামলো, মেয়েটার গায়ে কোথাও কোনো চোট লাগেনি, ফোলেনি কোথাও, এতেই সবাই যেনো একটু শান্তি পেলো। ওয়াসিফা যা কেঁদেছে ভয় থেকেই। মেয়েটা ওভাবে কাঁদতে কাঁদতেই বুকের সঙ্গে লেপ্টে থেকে ঘুমিয়ে গেলো। ধারা আলতো হাতে চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বিছানায় শোয়ালো ওকে। শাহেনূর চলে গেলেন, তাহাজ্জুদ নামাজ পরতে, নিধিও হাই তুলতে তুলতে শাশুড়ীর পেছন পেছন বেরিয়ে যায় ঘর থেকে, এরপর যায় আতিকা। সাজু বসে থাকে কিছুসময়। ধারার শুকনো মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে বলে।

' কয়েকটা প্রশ্ন করি তোমাকে'?

ধারা তাকায় সাজুর দিকে, এখানে আবার প্রশ্ন?

' জি ভাবি, করুন'

' আজকের এইটুকুর জন্য কি তোমার ভিতরে অপরাধবোধ হচ্ছে? আচ্ছাহ তোমার কি ভয় হচ্ছে, এই ঘটনা ভাইজান শোনার পর তোমাকে দুটো শক্ত করে কথা শুনিয়ে দেবে। বলবে ' তুমি তার মেয়েকে দেখে শুনে রাখতে পারোনা'? বা পাড়া প্রতিবেশী শুনলে বলবে ' আপন মা নয়তো, তাই ওতো আগলে রাখেনা' এসব মনে হচ্ছে? বলো বলো?'

ধারা আর কি জবাব দেবে, আসলেই হচ্ছে, তার মধ্যে এইসব ভয়ই কাজ করছে। তার ইচ্ছে করছে নিজের মাথার চুল গুলো ধরে দুটো ঝাঁকি দিতে, ওর আগে কেনো চোখ পড়লোনা যে দোলনাটার ঐ জায়গায় সমস্যা রয়েছে।

ধারাকে নিশ্চুপ থাকতে দেখে সাজু হেসে বলে।

' তুমি যদি সত্যি সত্যিই এসব ভেবে থাকো, তবে তুমি কিন্তু ওর আপন হয়ে উঠতে পারবেনা কখনো। কথাটা তেঁতো শোনালে এটাই সত্য। আরেহ ভাই! আমার ছেলের বয়স চার বছর, তুমি জানো? ও এই চার বছরে কতবার কতভাবে পড়েছে, ব্যথা পেয়েছে, কেটেছে? তাই বলে কি আমি তোমার মতো অপরাধ নিয়ে ভুগেছি? এটা ভোগা যাবেনা। বাচ্চারা পড়বে, ব্যথা পাবে, কাঁদবে, এভাবেই একটা বাচ্চা বড় হবে, কিন্তু আমাদের মায়েদের দু-চোখের জায়গায় চারচোখ লাগিয়ে ওদের খেয়াল রাখতে হবে। তবুও যদি অঘটন কিছু ঘটে যায় তাতে অপরাধবোধে ভোগার কোনো মানেই হয়না। আর বাকি রইলো ভাইজান, সে এতোটাও মুর্খ নয়, মেয়ে পড়ে গেছে ওমনি তোমাকে দুটো শক্ত কথা বলে দেবে। সো এসব চিন্তা ছাড়ো। আর যদি কিছু বলে, মানে যদি বলে, ধরো বললো, যদিও কখনো ই বলবে না, তবুও ধরো, যদি বলে তুমি ও দিগুণ তেজ নিয়ে বলে দেবে।

' মেয়ে শুধু আপনার? আমার না? ও ব্যথা পেলে, কাঁদলে, আমার বুঝি খারাপ লাগেনা'?

' একটা কথা সবসময় মাথায় রাখবে, তুমি ওর মা হও, এই যে আমরা, যারা ওর পরিবার, এই সবার থেকে ওর উপর তোমার আর ভাইজানের অধিকার বেশি এবং সমান, কারণ তুমি ওর মা, আর ভাইজান বাবা'

ধারা শুনলো কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে, সাজু বিছানা ছেড়ে উঠতে উঠতে বলে।

' নেও এখন একটু ঘুমাও, মেয়ে তো তেমন ব্যথা পায়নি, তাই আর খুব বেশি চিন্তা ও করতে হবে না। ঘুমাওতো, ঘুমাও'

______

ফজরের ওয়াক্ত শেষ হতেই বিছানায় শাহেনূরের ফোন বাজে। ভদ্র মহিলা তখনও জায়নামাজে বসে আছেন। ফোন আসতেই বুঝলেন এই সময় ঠিক কার কল আসতে পারে। এটা ওয়াসিফে'র কল। এটা তার রেগুলার রুটিনের মধ্যেই একটি, রোজ ফজরের নামাজ শেষ হতেই প্রথম কলটি সে মা'কে করে। শাহেনূর জায়নামাজ গুছিয়ে ফোনের কাছে যেতে যেতে কলটি শেষ হতেই পুনরায় আবার কল এলো।রিসিভ করে কানে নিতেই সালাম দেয় ওয়াসিফ।

' আসসালামু আলাইকুম আম্মা '

' ওয়ালাইকুম আসসালাম। কেমন আছিস বাবা?'

' আলহামদুলিল্লাহ আম্মা, তোমার শরীরের কি অবস্থা? হাঁটুর ব্যথা কমেছে'?

' অনেকটাই কম এখন, ঔষধ খাচ্ছি, নিয়মিত সেক ও নিচ্ছি'

' তোমার সব ঔষুধপত্র আছে তো যেগুলো রেখে এসেছিলাম? আর কিছু লাগবে আম্মা '?

' না, না, কিছুই লাগবেনা। সব আছে, তা বলছি কি বাবা'?

' হ্যা আম্মা বলো'?

' কাজের অনেক চাপ তাই না? ছুটি কবে পাবি বলতো?'

হাসে ওয়াসিফ, এই একটা কথা ' কবে ছুটি পাবি' এই কথাটাও রেগুলার মায়ের কথোপকথনের শীর্ষে থাকবেই।

' ছুটি পেলে তোমাকে ই সবার আগে জানাবো আম্মা '

' আচ্ছা '

ওয়াসিফ ভিডিও কলে মা'কে খুব খেয়াল করে দেখে বলে।

' রাতে ঘুমাও নাই আম্মা? চোখ মুখ এমন লাগছে কেনো?'

শাহেনূর একটু অন্যমনস্ক থাকায় চট করে বলে ফেললো ' ঐয়তো মেয়েটা যে পড়ে গিয়ে কান্নাকাটি করলো, তখনই ঘুম ভেঙে... '
এটুকু বলে থামে। আসলে সে বলতে চায়নি। এতটুকু কথা হজম করতে পারলোনা সে।

' কে পড়ে গেলো আম্মা '?

মুখ ফসকে কথা যখন একবার বেরিয়েই গেছে তখন আর এই ছেলের থেকে সে লুকাতে পারবেনা। তাই পুরোটা সাজিয়ে গুছিয়ে সুন্দর করে বললো ওয়াসিফ কে। ওয়াসিফও শুনলো সবটা। এরপর তাড়াহুড়ো করে ই কল কাটে ওয়াসিফ। ছেলের এমন হুট করে কল কাটাতে শাহেনূর নিজেই এবার কল দেয়। ছেলের কল তখন এ্যানাদার কলে।

#চলবে

আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন আবার জানেন না। পহেলা আগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে বইটই এ্যাপে ই-বুক মেলা ২০২৫। এই মেলা চলবে টানা ১ টা ...
29/07/2025

আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন আবার জানেন না। পহেলা আগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে বইটই এ্যাপে ই-বুক মেলা ২০২৫। এই মেলা চলবে টানা ১ টা মাস, থাকবে নতুন-পুরাতন সকল ই-বুকে ২৫ পারসেন্ট করে ছাড়!
বুঝতে পারছেন কি হতে চলেছে?
আমার লেখা যে ই-বুক টি এবার মেলায় আসছে তার প্রচার আমি অনেক আগেই দিয়েছি। আগামীকাল থেকে পেজের রানিং গল্পের পাশাপাশি ই-বুকের ১ম পাঁচটি পর্ব একে একে প্রচার পোস্ট করা হবে 💜

 #ফের_বসন্ত  #ঐশী_রহমান  #পর্ব_|১২(ক)]________________ফজর নামাজ পড়েই এক কাপ চা আর রুটি খেয়ে  বেরিয়ে গেছে ওয়াসিফ। এখান থে...
29/07/2025

#ফের_বসন্ত
#ঐশী_রহমান
#পর্ব_|১২(ক)]

________________

ফজর নামাজ পড়েই এক কাপ চা আর রুটি খেয়ে বেরিয়ে গেছে ওয়াসিফ। এখান থেকে সোজা হাসপাতাল হয়ে চলে যাবে রাঙামাটি তার কর্ম জীবনে। ওয়াসিফ চলে যেতেই ধারা বিছানায় গা এলিয়ে দেয়। আপাতত তার ভীষণ ঘুম পাচ্ছে, রাতে ঘুম প্রপারলি হয়নি তার। বালিশে মাথা দিতেই পিঠে শক্ত কিছু টের পেতেই তাড়াতাড়ি করে উঠে বসে। আজকে ওয়াসিফ যাওয়ার সময় ও ঘরের চাবিটা ধারাকে দিয়ে গেছে, যেনো মাঝে মধ্যে ই ও ঘরটা খুলে ঝাড়া মোছা করা হয়। চাবিটা তখনই ধারা শাড়ির আঁচলে গিট দিয়ে রেখেছিলো, আর ঐটা কেবল পিঠের নিচে পড়ে শক্ত কিছু অনুভব হলো। ধারার ঘুম পালিয়ে আপাতত ইচ্ছে করলো ও ঘরে সে যাবে, গিয়ে কিছুটা সময় ঘুরে ফিরে সবকিছু দেখবে। যেমন ভাবা তেমনই কাজ, ধারা বিছানা থেকে নামতেই ওয়াসিফা আড়মোড়া ভেঙে পিটপিট করে তাকায় ওর দিকে। ধারাও তাকিয়ে আছে ওয়াসিফার দিকে। ওভাবে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই ওয়াসিফা ঠোঁট উল্টে কেঁদে ফেলে। তার এই কান্না'র মানে হলো, তার তো ঘুম ভেঙেছে তবে তাকে কেনো কোলে না নিয়ে এখনো বিছানায় ফেলে রাখা হয়েছে। ধারা যেনো ওর কান্নায় সবকিছু ভুলে গিয়ে ওকে কোলে তুলে আদর সুলভ বুলি ধরে। ওমনিই ওয়াসিফাও কান্না থামিয়ে মায়ের কোলের সঙ্গে লেপ্টে থেকে সেসব বুলি শোনে আর প্রতিউত্তর করে তার নিজস্ব ভাষায়। এই অল্প কদিনে ছোট্ট মেয়েটা ঠিক চিনে নিয়েছে তার ধারা মা'কে। ইদানীং সবার কোল থেকে ধারার কোলে ও খুব শান্ত থাকে। পিটপিট করে তাকায়, কথা বলে নিজস্ব ভঙ্গিতে, হাসে, খেলে, ধারাও তাই করে যা ওয়াসিফা চায়। দিন একটা একটা করে পার হচ্ছে আর তাদের মা মেয়ের সম্পর্কটাও একটু একটু করে গাঢ় হচ্ছে।

_____________________

সপ্তাহ খানেক পেরিয়ে আজ সকালে একটু সূর্যের মুখ দেখলো রাজধানী বাসী। গত চার/পাঁচ দিন একটানা বৃষ্টিতে যেনো হাঁপিয়ে উঠেছিলো এ নগর। সকাল সকাল তাইতো ধারা, নিধি, সাজু এরা সব ছোটাছুটি করে বাচ্চাদের গত কয়েকদিনের আধা ভেজা থাকা কাপড় গুলো ছাঁদে মেলতে ভীষণ ব্যস্ত। সাজু নিজের কাজ করতে করতে ছাদে ওপাশে তাকিয়ে দেখে ধারাকে। যে কিনা শাড়ির আঁচল কোমরে গুজে লাফিয়ে লাফিয়ে ওয়াসিফার একেকটা কাপড় মেলছে। সাজু ওর কাজ সেরে পাশে গিয়ে দাঁড়ায় ধারার। বলে ' তোমাকে একটুও পরপর মনে হয়না জানো?'
ধারা তাকায় সাজুর দিকে, সাজু বলে।

' তোমাকে সত্যি ই ওয়াসিফার মা লাগে, আচ্ছা সত্যি করে বলোত কিভাবে শিখেছো বাচ্চা পালা? এতো কেয়ার নিয়ে '?

ধারা ও কথায় আলতো হেঁসে জবাব দেয় ' ঐ যে মা শব্দটা। মায়েদের কোনো কিছু ই শিখতে হয়না, আল্লাহর রহমাত, হয়েই যায়'

সাজু ওর কথায় হেসে বলে ' বাববাহ! কি কথা জানো রে তুমি '?

ওভাবেই টুকটাক কথা বলতে বলতে দুই জা নিজেদের কাজ সেরে নিচে নামতেই ধারা শুনতে পায় আজই নাকি তার মামা, মামি চলে যাবেন। ধারা এগিয়ে গিয়ে অনুরোধ করে ' মামা আর দুটো দিন থাকা যায় না'?

মোহাম্মদ সাহেব ভাগ্নীর দিকে তাকিয়ে দেখে তাকে বলে ' ওদিকে লোপার পরীক্ষা চলছে রে, অনেক দিন তো থেকে গেলাম, তোকে দেখলাম, আজ ফিরি বুঝলি তো, অন্য একসময় আবারও আসবো মা'

' তবুও মামা, আজকের দিনটা থেকে গেলে হতোনা'?

' না রে মা! অনেক দিনই তো থাকা হলো। ওয়াসিফ ছুটিতে এলে তুই, তোর শশুরবাড়ির সকলে একসঙ্গে যাবি কেমন? আমি বলেছি আপাকে এই বিষয়ে, বলেছে ওয়াসিফ এলে জানাবে'

______

বেলা এগারোটার দিকে শাহীন গিয়ে গাড়িতে তুলে দিয়ে এলো তাদের। আজ দিন চারেক হলো ফুলির মা কাজে আসেনা। বিষয়টা নিয়ে ভারি বিরক্ত নিধি। ফুলির মা রোজ কাজে না এলে ৫০ শতাংশ কাজ তার কাঁধে পরে। সারাদিন ছেলে দুটোর ঘ্যানঘ্যানাতিতে বিরক্ত সে তারউপর জুটেছে এই ফুলির মা, একদিন এলে আর নয়দিন তার কোনো খোঁজ থাকেনা। ও বকতে বকতে সিড়ি ভেঙ্গে নিচে এলো, ধারা সবে ফ্রীজ থেকে মাছের প্যাকেট গুলো বের করে বড় গামলাতে ভিজাতে রান্না ঘরের দিকে যাচ্ছিলো। সাজু পেয়াজ রসুন কাটতে ব্যস্ত। নিধিকে ওভাবে বিরক্ত হতে দেখে ধারা জিজ্ঞেস করে।

' কি হয়েছে ছোট ভাবি? কে কি করেছে'?

' কে আবার? ফুলির মা আসেনা কতদিন? উপরের একটা ঘরের মেঝেতে পা রাখা যাচ্ছে না, কেমন সব এ কয়দিনের বৃষ্টিতে স্যাতস্যাত করছে। মা'কে এতো করে বলি, এটাকে পাল্টে অন্য লোক রাখা হোক, আমার কথা তো এবাড়িতে কেউ কানেই তোলেনা'

রান্না ঘর থেকে সাজু জবাব দিলো, ' সবে তো এগারোটা বাজে, আজ আসবে মনে হয়, গতকয়েকদিন যা বৃষ্টি গেলো কাকপক্ষী ও তো নিজের বাসা থেকে বের হতে পারেনি, আর ও তো মানুষ '

' হ্যা দাও আরো লাই! তোমাদের মাথায় উঠে নিত্য করুক এবার'

' কি করবো বল? এদের তো আর গালাগাল করা যাবে না '

' ওটা করতেও বলছি না, পাল্টে আরেকটা রাখা যায় না? গতদিনগুলো নাহয় বৃষ্টির অজুহাত অন্যদিন কি? এই ব্যথা, সেই রোগ, সেই সমস্যা ইত্যাদি ইত্যাদি '

' আমাকে বলছিস কেনো মাকে গিয়ে বল? আমি লোক পাল্টানোর কে'?

' ধূর আর ভালো লাগে না '

নিধি বসার ঘর থেকে চলে যেতে নিলেই সাজু ডেকে বলে।

' এসেছিস যখন মাছ গুলো একটু ভেজে রেখে যা'

নিধি আরো জোরে পা চালিয়ে যেতে যেতে বলে ' বাবুরা যেনো কি নিয়ে কাড়াকাড়ি করছে, দাঁড়াও দেখে আসি।'
অথচ নিধির দুই জমজ ছেলে তখন বাবার সঙ্গে গার্ডেনে।

নিধি যেতেই সাজু দম ফেলে বলে ' কাজ চুরনি মেয়ে একটা, যেখানে কাজ সেখান থেকেই ও এভাবে হাওয়া হয়ে যায় '

ধারা কিছু না বুঝে সাজুর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে, বলে ' হয়তো বাচ্চাদের জন্য.. '

' আরে থামো, ওকে চিনছি বছর চারেক ধরে তুমি তো সবে মাস হলো এসেছো, ও যে কি অলস! তা আমি জানি'

' আচ্ছা! মাছ গুলো ভেজে দিতে পারো আমায়'

' হ্যা পারি'

' তবে দেও, তারপর গিয়ে ওয়াসিফা কে গোসল করিয়ে দিও'

' আচ্ছাহ'

_________

গতদিন দুই কেটেছে ওয়াসিফের অফিশিয়াল কাজে। সারাদিনের ব্যস্ততা শেষ করে যখন ই বিছানায় একটু পিঠ ঠেকিয়ে আরামে চোখ দু'টো বন্ধ করে নেয় তখনই চোখের বন্ধ পাতায় ভেসে ওঠে হাস্য উজ্জ্বল মুখখানা। ওভাবে চোখ বন্ধ করে রাখা মুখে আলতো হাসে ওয়াসিফ। এতটুকু ই তার সারাদিনের ব্যস্ততার পর একটুখানি সস্তি।
গায়ের ইউনিফর্ম এখনো ছাড়েনি সে, বিছানায় ফেলে রাখা ফোনটা তুলে সময় দেখে রাত পৌনে একটা। দু'মিনিট ভাবলো সে, হয়তো এতোসময়ে বাড়ির লোক সবাই ঘুমিয়েছে। শুধু শুধু ফোন দিয়ে তাদের ঘুম ভাঙাতে চাইলোনা। ফোনটা চার্জে বসিয়ে ওয়াসিফ উঠলো ফ্রেশ হতে।

ওয়াসিফা আজ এখনো ঘুমোয়নি, মেয়েটা আজ দুপুর থেকে বিকেল অনেকটা সময় নিয়ে ঘুম দিয়েছে যার ফলস্বরূপ সে এখনো জেগে আছে। ধারা ওকে নিয়ে জুড়ে দিয়েছে রাজ্যের গল্প। ঐদিকে রাত যে বেশ হলো সেদিকে তার বিন্দু পরিমাণ খেয়াল নেই। ওয়াসিফাও সেই গল্প শুনে কখনো ফিরতি বুলি ছুড়ছে, কখনো বা মায়ের মুখভাব দেখে হেসে কুটিকুটি হচ্ছে, ঐ ছোট্ট দু'চোখে আজ ঘুম কিছুতেই ধরা দিচ্ছে না। এদিকে অনেকক্ষণ যাবত মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে বলতে ধারার চোখে ঘুম আসতেই ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সময় দেখে চমকে ওঠে। মেয়ের দিকে তাকিয়ে বলে।

' অনেক হয়েছে গল্প আম্মা, চলো তো এবার আমরা ঘুমোই '
বলেই ধারা উঠলো বিছানা ছেড়ে, ও একটু পানি খাবে এরপর ঘরের হাইপাওয়ারের লাইটটা বন্ধ করে জিরো পাওয়ার লাইটটা অন করে দিবে। তখনই ওর হুট করে মনে পড়লো। আজ তো ভদ্রলোক মেয়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য একবার ও কল দিলোনা, মেয়ের খোঁজ খবর নিলোনা। আশ্চর্য!
ধারা ফোনটা নিয়ে বসলো আবার ওয়াসিফার পাশে। ওদিকে ওয়াসিফা দু'পা তুলে মুখের দিকে নিতে ভীষণ ব্যস্ত, সে তার নিজস্ব কর্মে মশগুল। ধারা হোয়াটসঅ্যাপে ঢুকে প্রথমেই ' ওয়াসিফার বাবা' লেখা নাম্বারটার ইনবক্সে ঢুকে লাস্ট সিন চেক করে মাত্র দশমিনিট আগেও একটিভ ছিলো। তাই ধারা আর কল দেয়না, ও দুটো ম্যাসেজ পাঠিয়ে রাখে।

' আসসালামু আলাইকুম। আপনি কি খুব ব্যস্ত? আজ যে একবার ও কল দিয়ে আমাদের খোঁজ খবর নিলেন না'?

ম্যাসেজ দুটো ওপাশের লোকের কাছে পৌছালো ঠিকই কিন্তু সিন হলোনা। ধারা মিনিট চারেক সময় অপেক্ষা করে ও ওয়াসিফাকে ঘুম পাড়ায় গুনগুনিয়ে গান গেয়ে।

আধা ঘণ্টা পর ওপাশ থেকে ফিরতি জবাব এলো।

' খোঁজ খবর নেওয়া কি একা আমারই দায়িত্ব? আপনাদের নয় কি? আচ্ছাহ! আপনারা এখনো ঘুমোননি? '

ম্যাসেজের নোটিফিকেশনের শব্দে আবছা ঘুম ছুটে গেলো ধারার, ধারার নড়েচড়ে ওয়াসিফাও চোখ মেলে চায় মায়ের দিকে, সেও এখনো ঘুমোয়নি, শুধু যা চুপচাপ মায়ের বুকের সঙ্গে লেপ্টে ছিলো এতোক্ষণ।

ধারা ফোনটা একহাতে তুলে মুচকি হাসে, লেখে।

' আজ আমরা দুপুরে বিশাল বড় করে ঘুম দিয়েছি, তাই আপাতত চোর পাহারা দিচ্ছি '

ওয়াসিফ আর ম্যাসেজ পাঠায় না, ও এবার সরাসরি ভিডিও কল দেয়। ধারা তাড়াহুড়ো করে শোয়া থেকে উঠে বসে কলটা রিসিভ করে ছুটে গিয়ে লাইট টা অন করে বিছানায় শোয়া ওয়াসিফার দিকে ব্যাক ক্যামেরা ঘুরিয়ে দেয়।
ওয়াসিফ বেশ সময় ধরে মেয়ের সঙ্গে আদুরে আলাপ পাড়ে, আর এদিকে ধারা চুপচাপ বসে নিজেকে আড়ালে রেখে দেখতে থাকে মেয়ের বাবার মুখভঙ্গি আর শোনে বাপ মেয়ের কথোপকথন।

#চলবে

(১২খ) পর্বটি আগামীকাল পেয়ে যাবেন। অনেকদিন বিরতির পর ফিরলাম, পেজের অবস্থা আর না ই বা বলি। গল্পটি যারা পড়ছেন অবশ্যই লাইক কমেন্ট করে যাবেন।

18/07/2025

বর্তমানে আমি লেট লতিফ নামে পরিচিত হয়ে গেছি মানে দেরিতে গল্প দেওয়া আর কি। তারপর আজ ঘটলো বিপত্তি। যাইহোক আপনাদের অপেক্ষায় রাখার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী!

17/07/2025

আজ ১৭ ই জুলাই! এক পাপিষ্ঠ পুরুষের মৃত্যু বার্ষিকী!

১.বাইরে কালবৈশাখী ঝড়ের তান্ডব, বাতাসের গতি সেকেন্ডে সেকেন্ডে বাড়ছে। খোলা কাঠের জানালার কপাট ধুড়ুমধাড়ুম শব্দ করে বাড়ি খাচ...
17/07/2025

১.
বাইরে কালবৈশাখী ঝড়ের তান্ডব, বাতাসের গতি সেকেন্ডে সেকেন্ডে বাড়ছে। খোলা কাঠের জানালার কপাট ধুড়ুমধাড়ুম শব্দ করে বাড়ি খাচ্ছে। হঠাৎ লোডশেডিং এ পুরো ঘর অন্ধকার ভর করতেই তড়াগ করে স্টাডি টেবিল ছেড়ে উঠলো মেহের। অন্ধকার হাতড়ে ফোনটা খোঁজার বৃথা চেষ্টা। কোথায় রেখেছে সঠিক মনে করতে পারছেনা। পুরো ঘর জুড়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন, বিন্দু পরিমাণ আলোর ছটা নেই। আকস্মিক পা বাড়িয়ে সামনে ফেলতেই হকচকিয়ে উঠলো। ভীতসন্ত্রস্ত ডাগর চোখের দৃষ্টি ফেলে চেচিয়ে উঠলো "কে'? ' কে ঐখানে "?

আগন্তুকের কোনো সাড়াশব্দ নেই। তবে মেহের নিশ্চিত, এ ঘরে কেউ এসেছে, তার সম্মুখ বরাবর কেউ একজন দাড়িয়ে আছে। কিন্তু কে সে? মেহের দু'কদম পিছিয়ে গিয়ে ধাক্কা খেলো টেবিলে। ভয়ে গলা শুকিয়ে বারবার কন্ঠ আঁটকে আসছে। আগন্তুকের কোনো সাড়াশব্দ না পেতেই পুনরায় বললো "কথা বলছেন না কেনো? কে আপনি "?

পুরো ঘর জুড়ে অন্ধকার। মেহের কিছু ঠাহর করতে পারছেনা। এঁটে সেটে টেবিলের কোণায় ঠেসে আছে। আচমকা তার খুব নিকট থেকে চেয়ার টেনে নেওয়ার শব্দ কানে যেতেই চেচিয়ে উঠলো " কে আপনি? কথা বলুন প্লিজ "।

আগন্তুক চেয়ার টেনে আয়েশ করে বসলো বোধহয়, হয়তো মেহেরে'র খুব নিকটে। কিন্তু লোকটা কথা বলছেনা কেনো? ভয়ে ভীত মেয়েটা আর নিজেকে সামলে উঠতে পারলোনা। ডুকরে কেঁদে উঠতেই এক জোড়া শক্ত মসৃণ হাত তার মুখ আলগোছ চেপে ধরে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল " ভয় পাবেনা, আমি উচ্ছ্বাস "। মুখ থেকে হাতটা ধীরে ধীরে সরে যেতেই মেহের অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো" আপনি? কিন্তু এখানে...? "

" হুঁশশ, চুপ। একটা কথাও না"

মেহের এক প্রকার হাফ ছেড়ে বাঁচলো । এটা তাহলে উনি। অর্ক ভাইয়ার বন্ধু লোকটা। পর মুহূর্তে মেহেরে'র মনে প্রশ্ন জাগে। এতো রাতে এই লোকটা তাদের বাড়িতে কেনো? তাও আবার তারই ঘরে? মনের মাঝে জেগে ওঠা প্রশ্নগুলো মনেই রইলো। জিজ্ঞেস করার জন্য টু, টা শব্দ অব্ধি মুখ থেকে বের করলোনা।

ব্যথায় দাঁত, মুখ শক্ত করে সটান হয়ে চেয়ারে পিঠ ঠেকিয়ে বসে আছে উচ্ছ্বাস। এক্সিডেন্ট টা গুরুতর ভাবেই হয়েছে তার। ব্যথায় পুরো শরীর টনটন করছে। খানিক সময় পর ফোনের ফ্লাশ ধরতেই চোখ মুখ বুঝে নিলো মেহের। উচ্ছ্বাস সেদিকে তাকিয়ে শুধালো " এই মেহু, তুমি না ডাক্তারি পড়ছো?"

"হ্যা, তো? প্লিজ ঐ আলো আমার চোখের উপর থেকে সরান"

উচ্ছ্বাসে'র দৃষ্টি স্থির। আজ! আজ বহুদিন পর কাঙ্খিত রমনীর মুখটা দেখতে পেল সে। তীব্র আলোর ঝলকানিতে চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে রেখেছে। ওর দিকে তাকিয়ে উচ্ছ্বাস শক্ত গলায় বললো " তাকাও আমার দিকে"!

মেহের প্রথমবার, ফের দ্বিতীয় বার চোখ মেলে তাকাতেই হকচকিয়ে উঠলো। গোল গোল চোখ করে দেখছে লোকটাকে। পরপর আঁতকে উঠল " এ্যাই, আপনার কপালে রক্ত কেনো? হায় আল্লাহ! কি হয়েছে আপনার? এক্সিডেন্ট? "

উচ্ছ্বাস ফিসলে হাসলো। নিভু কন্ঠস্বরের নিরুত্তাপ আওয়াজে বললো " তুমি কি ভেবেছিলে, মীর উচ্ছ্বাস ফাউ ফাউ টাইম ওয়েস্ট করে তোমাদের বাড়িতে এসেছে"?

উচ্ছ্বাসের কথায় মেহেরের হুশ নেই। সে এগিয়ে এসে মৃদু আলোয় লোকটাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে। কপালের দিকটা কেটেছে বেশ। মেহের সর্ব শরীরে চোখ বুলিয়ে বার্তালো "আর কোথায় কোথায় লেগেছে"?

উচ্ছ্বাস, মেহেরে'র একটা হাত শক্ত করে টেনে নিয়ে বুকে রাখলো, মেহের কিছু বুঝে ওঠার আগেই বললো "এখানে, ঠিক এখানে, ঠিক বুকের মধ্যেখানে লেগেছে, দেখতে চাও তুমি "?

মেহের পারলোনা নিজেকে সামলে উঠতে, গলা আটকে কান্না আসছে। এই যে এই লোকটা! এটা ঠিক মেহেরে'র কি তা মেহের জানেনা। শুধু জানে এই লোকটা পুরোটাই একটা মায়া। এটা সেই মায়া, যে মায়াতে সে আটকেছে অষ্টাদশীর চৌকাঠে। মেহের নিজেকে ধাতস্থ করে বললো " সত্যি করে বলুন, কোথায় কোথায় লেগেছে? দেখতে দিন আমাকে"?

উচ্ছ্বাস ওর হাতটা সরিয়ে দিলো, " দেখতে হবেনা তোমাকে, এক গ্লাস পানি আনো, খেয়েই চলে যাবো"।

" আম্মু কে ডাকি, বলি আপনি এসেছেন। আপনি অসুস্থ, একটু দাঁড়ান "। মেহের পা বাড়াতেই খপ করে ওর হাতটা ধরে ফেললো উচ্ছ্বাস। " এতো পাকনামি করতে কে বলেছে ? চুপচাপ পানি চেয়েছি পানি নিয়ে এসো"

মেহের স্থির দৃষ্টি ফেলে দেখছে লোকটাকে। শরীর আহত তবে মেজাজ নয়। কপাল থেকে বিন্দু বিন্দু রক্ত গড়িয়ে গাল বেয়ে পড়ছে। অথচ মেজাজ দেখো? আকাশ ছোঁয়া। মেহের থেমে গেলো। বললো " তাহলে পানিটাও বাড়িতে গিয়ে খান, এখানে যখন সামান্য চিকিৎসা নিতে পারবেন না, তখন এখানের পানিও আপনার খেতে হবেনা"। বলেই মুখটা বা পাশে ঘুরিয়ে দাড়িয়ে রইলো মেহের। সবসময় কেনো এই লোকটা তাকে রাগ দেখাবে? লোকটারও বুঝতে হবে, রাগ শুধু একার তার নয়, মেহেরে'র ও রাগ আছে, খুব রাগ আছে।

উচ্ছ্বাস একহাতে মেয়েটাকে হ্যাচকা টানে বুকের উপর এনে ফেললো। আকস্মিক ঘটনায় হকচকিয়ে উঠলো মেহের। বড়ো বড়ো চোখ করে তাকিয়ে আছে উচ্ছ্বাসে'র মুখের দিকে। উচ্ছ্বাস একহাতে ওকে সামলে, অন্যহাতে মেহেরে'র কাঁধ থেকে ওড়না টেনে নিলো। মেহের হতবাক চোখে লোকটার কর্ম কান্ড দেখছে। একটানে কাঁধ থেকে ওড়না খসিয়ে নিয়ে নিজের কপালের রক্তটুকু মুছে ফেলে। মেহেরে'র মুখে টু টা কোনো শব্দ নেই। আলো বলতে সারা ঘরে ফোনের ফ্লাশ অন রয়েছে টেবিলের উপর। লোকটার পাগলামি দেখে অস্ফুটস্বরে একবার বললো মেহের "ওড়নাটা হয়তো নোংরা, জীবাণু রয়েছে, এভাবে ক্ষত জায়গায় লাগাবেন না, আমি ড্রেসিং করে দিতে পারি? দেব কি"?

উচ্ছ্বাসে'র কঠিন জবাব " তুমি কি আমার ঘরের বৌ? আমি কেনো তোমার থেকে ফ্রীতে সেবা যত্ন নিতে যাবো"?

মেহের বিড়বিড় করে বললো " বৌ নই তাই পরমেয়ের ওড়না টানাটানি করছেন, বৌ হলে কি করতেন কে জানে "?

উচ্ছ্বাস ও মেহেরে'র ন্যায় বিড়বিড় করে বললো"চব্বিশ ঘণ্টা বৌয়ের আঁচল ধরে ঝুলে থাকতাম"

মেহের ফিচলে হাসলো, বললো" পাইলট মীর উচ্ছ্বাস বৌয়ের এতো ন্যাওটা হতো বুঝি? একথা দিবাস্বপ্নতেও দেখিনা আমি"

হাতের বাঁধন আরেকটু শক্ত করে নিজের সঙ্গে একদম মিশিয়ে নিলো মেহের কে। লোকটার উত্তপ্ত শ্বাস আঁচড়ে পড়ছে মেহের চোখ মুখে। মেহের ডাগর চোখের দৃষ্টি ফেলে তাকিয়ে আছে ঐ গোল মুখপানে। কন্ঠে খাদ নামিয়ে শুধালো " পাইলট মীর উচ্ছ্বাস কে নিয়ে যতোটানা ভাবো,আমি ঠিক ততটাই বৌ পাগল হবো। মিলিয়ে নিও"

"একথা আমি মরে গেলেও বিশ্বাস করি না "

উচ্ছ্বাস হাত ছেড়ে দূরত্ব বাড়িয়ে দাঁড়ালো " তোমার ওতো ভেবে কাজ নেই, পানি খেতে চেয়েছি দিবে কি না? নাকি চলে যাবো"?

মেহের শান্ত চোখে শুধু দেখছে লোকটার রাগ, জেদ। যার সামনে মেহেরে'র রাগ, অভিমান অতি নগন্য। মেহের ছোট করে জবাব দিলো " আনছি, অপেক্ষা করুন"।

সময়ের গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখন ঝড়ের গতি শীতল। তবে লোডশেডিং হয়েছে তো হয়েছে, ফেরার নাম নেই। মেহের ঘর ছেড়ে পানি আনতে বেরিয়ে যেতেই উচ্ছ্বাস গিয়ে দাঁড়ালো খোলা জানালার নিকট। একে তো মাথা ফেটে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে, তারউপর তীব্র মাথা ধরেছে। জঘন্য পরিস্থিতি। উচ্ছ্বাস সটান হয়ে দাড়িয়ে দৃষ্টি ফেলেছে দূর, দূর বহুদূর ঐ অন্ধকারাচ্ছন্ন আকাশের বুকে। বিশালতার ঐ আকাশের বুকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে অজস্র তারাদের। " তোরা কি বলে দিতে পারিস তাকে? আমার না বলা অপ্রকাশিত অনুভূতি গুলো, আমি আর পারছিনা, নিজের মধ্যে পুষে রাখতে, ইচ্ছে করে ঐ মেয়েটাকে তুলে নিয়ে বিয়ে করে বুঝিয়ে দিতে, এই মীর উচ্ছ্বাস কারো পরোয়া করে না। কিন্তু আফসোস! ভালোবাসা জোর জবরদস্তি করে হয়না। নিজের বুকে থাবা বসিয়ে আওড়ালো ❝ভালোবাসার সবটুকু এখান থেকে হয়, ঠিক এখান থেকে ❞।

নিজের ঘরের বাইরে পা বাড়িয়ে উঁকি দিলো বসার ঘরে। বাবা বাড়িতে নেই, গ্রামে গিয়েছেন আজ। মায়ের শরীর টা খুব একটা ভালোনা। প্রেশারের ঔষুধ খেয়ে ঘুমিয়েছে সেই রাত নটার পরপর। ভাইয়া ফিল্ডে। ভাবি বাপের বাড়ি। আপাতত বাড়িতে শুধু দু'জন মেয়ে মানুষ। তারউপর এই ভারি রাতে লোকটার আগমন। মেহের চাইছে নিজেকে শক্ত রাখতে। তবুও দূর্বল পয়েন্ট ধারেকাছে থাকলে নিজের উপর জড়োতা ভর করে। মোমবাতি জ্বালিয়ে, রাতের ভাতগুলো গ্যাসের চুলায় হালকা গরম করলো, সাথে দুটো ডিম পোছ। ফ্রীজে রাখা ঠান্ডা তরকারি আর বের করেনা। লোকটা ওসব খাবেওনা। মেহের জানে, লোকটা ডিম খেলে একসঙ্গে দুটো করে খায়, এর কম হলে ডিমই সে খাবেনা। আচমকা কথাটা মনে পড়তেই আনমনে হাসলো মেহের। যতোসব বাচ্চামো। ভাত গরম হতেই মেহের প্লেট গুছিয়ে, এক গ্লাস পানি হাতে তুলে পা বাড়ালো ঘরের দিকে।

ততক্ষণে উচ্ছ্বাস ফোনের ফ্লাশ ধরে মেহেরে'র ঘরে খুঁজে খুঁজে ঔষুধের বক্স থেকে সেভলন, তুলা, মলম, এগুলো দিয়ে কপালের কাটা জায়গা পরিষ্কার করছে। দরজার কাছে আসতেই মেহের পা থামিয়ে লোকটার কর্ম কান্ড দেখছে। স্যাভলনে তুলা ভিজিয়ে কপালে ধরতেই চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে নিচ্ছে। পুনরায় আবার নিজের ক্ষত ঠিক করছে। সর্বশেষ, মলম লাগিয়ে পেছন ফিরতেই দেখলো মেহের তার দিকে তাকিয়ে আছে। মলমের খোলা মুকটা আটকে রাখতে রাখতে বললো " এক গ্লাস পানি আনতে রাত পার হয়ে গেলো যে"?

মেহের সে কথার কোনো জবাব দিলো না। হেঁটে গিয়ে খাবারের প্লেটটা টেবিলে রাখলো সামান্য শব্দ করে। উচ্ছ্বাস তাকিয়ে আছে মেয়েটার দিকে। " নিন, খেয়ে আমাকে উদ্ধার করুন, তারপর বাড়ি যান"।

" তোমার কাছে আমি ভাত খেতে চেয়েছি"?

" না"

" তবে, আনলে কেনো"?

মেহের কোনোরকম ভণিতা ছাড়াই উত্তর দিলো " আপনি আমাদের বাড়ির কুটুম, ভাবির ভাই হন, আপনাকে এতটুকু খাতির না করলে বিষয়টা দৃষ্টিকটূ লাগবে"

উচ্ছ্বাস এগিয়ে গিয়ে পানির গ্লাসটা তুলে, পানিটুকু খেলো, পরপর বলল "তোমার ভাত তুমি খেয়ো, আমার খিদে নেই "।

" এমন বললে তো হবেনা উচ্ছ্বাস ভাই, আমি কষ্ট করে গুছিয়ে এনেছি, আপনাকে খেতে হবে, বসুন"

" না খেলে কি করবে তুমি? জোর করে বেঁধে খাওয়াবে"?

মেহের ঘরে আরেকটা মোমবাতিতে আগুন ধরিয়ে দিতে দিতে বললো " আপনাকে জোর করার ওতোটা সাহস আমার নেই, খেলে খান, আপনার বিবেক যা বিচার করে তাই করুন"

উচ্ছ্বাস শীতল দৃষ্টি ফেলে তাকিয়ে আছে মেয়েটার মুখপানে, বললো "আমার ওতোশত বিবেক নেই, আমি বিবেকের ধার ধারিনা, যদি ধারতাম তবে রাত বেরাত পাঁচিল টপকে পরনারীর ঘরে ঢুকতাম না"

"কেনো ঢুকেছেন তবে"?

" ঐযে, তোমার ভাষ্যমতে বিবেক, ঐ জিনিসটা আমার মধ্যে একটু কম"

মেহের চোখ নামিয়ে নিলো উচ্ছ্বাসের থেকে। " আপনি প্লিজ চলে যান এখান থেকে, আমার বদনাম করবেন না এভাবে, প্লিজ চলে যান, আর কখনো আসবেন না, যান বলছি"

" চলে যাচ্ছি, তবে আমি আবার আসবো, ভেবোনা এতো সহজে তো..."
উচ্ছ্বাস থেমে গেলো। পুরো বাক্য শেষ করলোনা। ঠিক যে পথে এসেছিলো, ওভাবেই বারান্দার ওয়াল টপকে চোখের আড়াল হলো। মেহের শুধু ভেজা চোখে তাকিয়ে দেখলো লোকটার চলে যাওয়া। চোখের আড়াল হতেই মেহের ছুটে বারান্দায় এলো। কিন্তু অন্ধকারে লোকটার ছায়াও মেহেরে'র দৃষ্টিতে আর ধরা দিলোনা। মানুষটা চোখের আড়াল হতেই মেহের আর নিজেকে সামলে উঠতে পারে না। ডুকরে কেঁদে উঠলো। ধীরে ধীরে পিঠ ঘেঁষে বসলো বারান্দার রেলিঙের কাছে। হাঁটুতে মাথা ঠেকিয়ে কাঁদছে মেয়েটা, ভীষণ কাঁদছে।

আজ থেকে ঠিক বছর দুই আগে.......
অষ্টাদশীর চোকাঠে পা রাখতেই মনের গোপন কুঠুরিতে আবেগে মোড়ানো একটি নামের জন্ম হয়, মীর উচ্ছ্বাস। অথচ এই নামের মালকিনকে একটু সহসা ছুঁয়ে দেখার অধিকার তার নেই। এ কেমন আবেগ? এমন আবেগ তো মেহের চায়নি কখনো। তবে কি ঐ শক্ত পোক্ত মনের অধিকারী পুরুষের কখনো বোধগম্য হবেনা, এই ছোট্ট মনে বাসা বেঁধে ছিলো অতীতের গল্প। তবে কি অতীত কখনো বর্তমান থেকে ভবিষ্যতে গড়াবে?

আমার ১ম ই-বুক #সখী_তোমারে_বাধিবো_যতনে। পেয়ে যাবেন বইটই এ্যাপে। ইবুক ক্রয় লিংক এবং বইটই থেকে কিভাবে বই কিনবেন বিস্তারিত কমেন্ট বক্স এ 💗

17/07/2025

আপনারা কি জানেন? আগামী মাস থেকে ই-বুক মেলা ২০২৫ শুরু হচ্ছে? এই মেলা চলবে টানা একমাস।
বিস্তারিত পরবর্তী তে আসবে~

আসলেই ওয়াসিফ একজন জেন্টেলম্যান। আপু ঠিক ধরেছেন। আমার পাঠক যারা আছে একটু খেয়াল করে দেখবেন আমার নিজ হাতে গড়া কাল্পনিক পুরু...
16/07/2025

আসলেই ওয়াসিফ একজন জেন্টেলম্যান। আপু ঠিক ধরেছেন। আমার পাঠক যারা আছে একটু খেয়াল করে দেখবেন আমার নিজ হাতে গড়া কাল্পনিক পুরুষ চরিত্র গুলো। বাস্তবে তো আমরা মেয়েরা পুরুষের ঐ পারসোনালিটির উপর ই মুগ্ধ হই। আমার কাছে পুরুষের সকল সৌন্দর্য তার পারসোনালিটিতে আঁটকে আছে। আমি সেভাবেই গড়ি আমার প্রতিটা পুরুষ চরিত্র কে❣️

16/07/2025

' তোমার প্রিয় ছিলো দোলনচাঁপা আমার প্রিয় তুমি, তুমি ঠিক ওভাবেই রইবে ঠিক যেভাবে আমি তোমাকে রেখেছিলাম। '

' শুভ জন্ম দিন আমার ছোট্ট ওয়াসিফার আম্মা কে। তোমার সাতাশ তম জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন '

____মেজর শাহেদ ওয়াসিফ

 #ফের_বসন্ত  #ঐশী_রহমান  #পর্ব_|১১|________________________সকাল প্রায় এগারোটা নাগাদ বাড়িতে ফেরে ওয়াসিফ। ঘরে ঢুকে প্রথমে ...
16/07/2025

#ফের_বসন্ত
#ঐশী_রহমান
#পর্ব_|১১|

________________________

সকাল প্রায় এগারোটা নাগাদ বাড়িতে ফেরে ওয়াসিফ। ঘরে ঢুকে প্রথমে শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে দেখে ধারা খাবার প্লেট হাতে দাড়িয়ে আছে। ধারার মুখটা শুকনো দেখে ওয়াসিফ তাওয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে বসে চেয়ারে। বলে।

' ভয়ের কিছু নেই, অতিরিক্ত চিন্তা করবেন না।'

' মামা এখন কেমন আছেন'?

' আলহামদুলিল্লাহ, উনি ভালো আছেন'

ওয়াসিফ খাবার প্লেট টেনে খেতে শুরু করে। খেতে খেতে বলে।

' আপনি খেয়েছেন মুমতাহিনা ?

' জি'

' আচ্ছা, আজ যেহেতু শুক্রবার, আমি জুমার নামাজ পড়েই আপনাকে নিয়ে হসপিটালে যাবো, রেডি থাকবেন কেমন'?

' আচ্ছা, একটা কথা জিজ্ঞেস করি'?
ওয়াসিফ খেতে খেতে তাকায় ধারা'র দিকে।

' বলুন'

' আপনি যখনই খবরটা পেলেন আমাকে একটু জানালেন না কেনো'?

ওয়াসিফ ওর কথার উত্তর না দিয়ে উল্টো প্রশ্ন করে।

' খবরটা তখনই পেলে কি করতেন আপনি '?

সত্যি ই তো তখন কি করতো ধারা? কেঁদে কুটে ফেলা ছাড়া আর তো কিছু ই করার থাকতোনা। আর না পারতো লোকটার মতো ছুটে গিয়ে তাদের শহর অবধি টেনে আনতে।
ধারা কিছু বলার আগেই ওয়াসিফ বলে।

' ওতোরাতে খবরটা যখন আমি পেয়েছি, তখন আপনি গাঢ় ঘুমে, হুট করে ওমন একটা খবর কিভাবে শোনাতাম আপনাকে? আর সময়টাও খুব বেশি ছিলো না। তাই জানায়নি'

ওয়াসিফ মনোযোগ দিয়ে খাবার খেতে থাকে, ওর পাশে চুপচাপ ভঙ্গিতে দাড়িয়ে থাকে ধারা। ওয়াসিফের খাওয়া শেষ হতেই ধারা এগিয়ে হাত থেকে এঁটো প্লেটটা নিতে নিতে বলে।

' আপনার রাখতে হবেনা, আপনি শুধু হাত ধুয়ে আসুন'

___________

সন্ধ্যা নাগাদ বাড়িতে ফেরে ওয়াসিফ, ধারা। বাইরে তখন তুমুল বৃষ্টি নেমেছে। ধারা এসেই প্রথমে শাড়ি পাল্টে ছুটে যায় ওয়াসিফার কাছে। ওয়াসিফ বসে মায়ের পাশে ড্রয়াইং রুমে।
ছেলেকে তাড়াতাড়ি করে এক কাপ গরম চা এগিয়ে দিয়ে শাহেনূর জিজ্ঞেস করে।

' হ্যা রে? এখন কেমন আছেন ভদ্রলোক '?

' শারীরিক দূর্বলতা কাটতে সময় লাগবে আম্মা, খুব জটিল কোনো অসুবিধা হয়নি'

' আপাকে তো সঙ্গে আনতে পারতিস, মানে বৌমার মামিকে। আর মেয়ে দুটো ওরা কি এসেছে'?

' রোগীর সাথে ই থাকবেন আন্টি, আর লুইপা এসেছে, আরেকজন কে তো দেখিনি'

' ওও, তাহলে লুইপাকে নিয়ে এলিনা কেনো তোদের সঙ্গে? হাসপাতালে মেয়েটার কষ্ট হয়ে যাবে না '?

ওয়াসিফ মায়ের দিকে তাকিয়ে আলতো হাসে, বলে।

' বাবাতো, আসতে চাইনি আমাদের সঙ্গে। মুমতাহিনা ও থাকতে চেয়েছিলেন কিন্তু ওতো লোক এলাউ করেনি'

' আচ্ছা আম্মা শুনো'

' হ্যা,বল'

' সকাল সাতটায় গাড়ির টিকেট কেটেছি, আমি ফরজের নামাজ পড়েই বের হয়ে ঐ পথে আংকেল কে দেখে রওনা হবো। তোমরা আগামীকাল সময়মতো একে একে আংকেল কে দেখে এসো। কাল বোধ হয় শাহিন বাড়িতে আসবে, কোনো দরকারে ওকে বলবে। আর'?

' হ্যা বল'

' মুমতাহিনা কে বলবে আংকেল কে যেনো রিলিজ দেওয়ার পরও এখানে সপ্তাহ খানেক রাখে, কিছুদিন থেকে যাবে'

শাহেনূর হাসে, বলে।

' আমাকেই কেনো বলতে হবে? তুই বলে যেতে পারছিস না ওকে'?

ওয়াসিফ সোফা ছেড়ে ওঠে।

' আচ্ছা, আমিও বলবো। ফ্রেশ হয়ে আসি'

' যা'


_____________

ঘড়ি'র কাটা তখন পৌনে একটার কাছাকাছি। এবাড়ির বসার ঘরটা তখন মানুষ শূন্য। যে যার ঘরে দুয়োর এঁটেছে। ধারা ওয়াসিফা কে ঘুম পাড়িয়ে রেখে এসেছে শাশুড়ী'র ঘরে। রাতে সবাই খেলেও ও এখনো খায়নি। রাতের রান্না শেষ হতেই বক্সে ভরে রাখা খাবার গুলো নিয়ে ওয়াসিফ গিয়েছিলো হাসপাতালে। এখনো ফেরেনি। ধারা বারবার ঘড়িতে সময় দেখছে আর হাই তুলছে। হুট করেই মনে পড়লো আচ্ছাহ একটা কল দিয়ে জেনে তো নেওয়াই যায় তার আসতে ঠিক কতটা দেরি হবে? যেই ভাবনা সেই কাজ ও একছুটে ঘরে যেতে নিলেই সদর দরজা থেকে কলিং বেলের আওয়াজ পেয়ে ওর পা জোড়া থামে। ও পুনরায় ছুটে এসে দরজা খুলতেই দেকে কাঙ্খিত মানুষটাকে। ওয়াসিফ আলতোভাবে হেসেই ভেতরে ঢোকে। চারিদিকে নজর বুলিয়ে বলে।

' ঘুমান নি এখনো'?

' নাহ'

' ওয়াসিফা ঘুমিয়েছে'?

' জি'

' আচ্ছা তাহলে দরজা টা লাগিয়ে দিন'

ধারা ঘুরে সদর দরজায় ছিটকিনি তুলে দিতে দিতেই ওয়াসিফ দোতালায় উঠে যায়। ধারা খেয়াল করেছে ওয়াসিফের হাতের প্যাকেটার দিকে, হাসপাতাল থেকে যে ফিরলো ওদিকের খবরটাও আর নেওয়া হলোনা তার। ধারা আর উপরে ওঠেনা, ভাবে ভদ্র লোক ফ্রেশ হয়ে আসতে আসতে রাতের খাবারটা গরম করে নেওয়া যাক। তাই ও ঢোকে রান্না ঘরে।

সময় বাড়লো, ধারাও টেবিলে খাবার গুলো গুছিয়ে একটা চেয়ারে বসে ঝিমাচ্ছে। ও আজ এতটুকু তেই আজ ভীষণ ক্লান্ত। ঘুমে কেমন যেনো চোখ দু'টো বুঝে আসছে। ও মাথা ঘুরিয়ে সিড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে। চেয়ার ছেড়ে উঠে গুটি গুটি পায়ে দোতালায় ওঠে। জিজ্ঞেস করে আসা যাক তার খাবারটা কি উপরে পাঠাবে?

_________

আজ ৫ ই জুন। একটা বিশেষ দিনের সূচনা, আর মেজর শাহেদ ওয়াসিফ কি সেই বিশেষ দিনটির কথা এতো সহজে ভুলে যেতে পারে? যে নারী তার জীবনের প্রথম মায়াময় এক ভালোবাসা'র সূচনা ঘটিয়েছিলো আজ সেই মানুষটির সাতশ'তম জন্ম বার্ষিকী। আজ হয়তো সেই মানুষটিকে ছুঁয়ে রাতের ১ম প্রহরে তার এই অভিনন্দন টুকু জানানো হলোনা তবে তার সঙ্গে এই বদ্ধ ঘরে দু'চারটে মনের কথা বলতে চায় ওয়াসিফ। যেই মেয়েটি কখনো সামনে থেকে দেখেনি এই কঠিন পুরুষের ভঙ্গুরতা আজ সেই মেয়েটির অগোচরে ওয়াসিফ যে কতটা ভাঙতে পারে নিজেকে তা তার ধারণারও বাইরে।
ওয়াসিফ আর ও ঘরে যায়নি, জামা কাপড় ও পাল্টায়নি। ও সোজা ঢুকেছে এই ঘরে, একটা চেয়ার টেনে বসেছে ঠিক ঐ ছবিটির সোজাসুজি। কপালের বিন্দু পরিমাণ ঘামটা হাতের শার্টে মুছে অমায়িক একটা হাসি দিয়ে বলে।

' আজও পারলাম না, জাস্ট বারোটায় উইশটা করতে তোমাকে, কিভাবে কিভাবে যেনো আমি পারিনা অথচ বিশ্বাস করো আমি এটা চাইনা'

কথাটা বলেই ও হাতের প্যাকেটা খুলে ও দোলনচাঁপার তোড়াটা বের করে ধরে বলে।

' বিশ্বাস করো আজ আমার নিজস্ব কোনো অজুহাত নেই। এই দ্যাখো! দ্যাখো প্লিজ হ্যা? এই ফুলগুলো খুঁজতে গিয়ে আজ এতোটা দেরি হলো। '

ওয়াসিফ যখনই এই মানুষটার ছবির সামনে বসে কথা বলে ওয়াসিফের দু'টো চোখ ভরে নোনাপানি চিকচিক করে। অথচ ঐ মানুষটা জীবিত অবস্থায় কখনো দেখেনি তার এই কঠিন পুরুষের চোখে এক বিন্দু পরিমাণ পানি।

ওয়াসিফ ফুলের তোড়াটা সামনে রেখেই বলে।

' তোমার প্রিয় ছিলো দোলনচাঁপা আমার প্রিয় তুমি, তুমি ঠিক ওভাবেই রইবে ঠিক যেভাবে আমি তোমাকে রেখেছিলাম। '

' শুভ জন্ম দিন আমার ছোট্ট ওয়াসিফার আম্মা কে। তোমার সাতাশ তম জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন '

এরপর ঠিক কতটা সময় যে ওয়াসিফ এক দৃষ্টিতে ঐ ছবিটির দিকে তাকিয়ে ঠিক ঐ জায়গাতে বসেছিলো তার হিসাব ওর কাছে নেয়।

ওয়াসিফের অগোচরে দরজার কাছে দাড়িয়ে ছিলো ধারা। ও এই দৃশ্য দেখে আর এক পাও সামনে এগিয়ে তাদের এই সুন্দর মুহূর্তটাকে ঘাটতে চাইনি। ধারা শুধু অবাক হয়ে দেখে এই পুরুষটির বুক ভরা এক ভালোবাসা তার মৃত স্ত্রীর প্রতি। কে বলে? মানুষ চোখের আড়াল হলেই মনেরও আড়াল হয়। একথাটা এই মানুষটার সঙ্গে একদম ই যায়। ধারার ভীষণ ইচ্ছে করে গল্প শুনতে তাদের সংসার জীবনের, ইচ্ছে করে আপার কথা শুনতে, কিন্তু কে বলবে তাকে এসব?

ধারা নিজের ভাবনায় মশগুল, ওর আর হুশ হলোনা চলে যাওয়ার। ওর ধ্যান ভাঙ্গে ওয়াসিফের কথায়।

' মুমতাহিনা! আপনি খেয়ে নিন। আমি রাতে খাবোনা'

ধারা একপলক তাকায় ওয়াসিফের দিকে, পরপর চোখ নামিয়ে বলে।

' আচ্ছা '

ও চলে যেতে নিলেই ওয়াসিফ ডাকে।

' মুমতাহিনা শুনুন'

ধারা থামে, ' জি '

' আংকেল আগের থেকে ভালো আছেন। দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। ডাক্তারের সঙ্গে কথা হয়েছে আগামীকাল রিলিজ দেয়া হবে। আংকেলকে কয়েকদিন এখানে থেকে যেতে বলবেন, আমিও বলে এসেছি, আপনি ও জোর করে রেখে দিবেন'

' জি আচ্ছা '

' ঠিক আছে, আপনি খেয়ে নিন তবে'

#চলবে

এই ওয়াসিফ আর মালিহা চরিত্র লিখতে গিয়ে আমার বারবার হাত থেমে যায়। আপনাদের পড়তে কেমন লাগে?

Address

Mongla

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Oishe Rahman - ঐশী রহমান posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share