13/10/2024
সদ্য ড্রাইভিং টেস্ট পাশ করে পালসার চালাতে গিয়ে মনে কাজ করতে পারে নানা রকম ভয়-ভীতি। কিন্তু সেই ভয়কে জয় করতে হবে বাইক চালানো শেখার সকল টিপস মাথায় রেখে, আত্মবিশ্বাসের সাথে।
নতুন পালসার রাইডার হিসেবে যে বিশেষ টিপস্গুলো মাথায় রাখতে হবে-
রাইড শুরু করার আগে বেসিক সেফটি চেক:
প্রতিদিন রাইড শুরু করার আগে বাইকের সকল লাইট, ব্রেক লাইট, ইন্ডিকেটর, ফুয়েল রেঞ্জ, ইঞ্জিন অয়েল লেভেল - এগুলো ঠিক মত চেক করবেন। তাহলে রাস্তায় নিজেও কোন ঝামেলায় পড়বেন না এবং আপনার কারণে অন্য কেউও ঝামেলার সম্মুখীন হবে না।
বাইকের ম্যানুয়াল রেকমেন্ডশন মেনে চলুন:
ম্যানুয়াল রেকমেন্ডশন অনুযায়ী টায়ার প্রেশার, ইঞ্জিন অয়েল গ্রেড ঠিক রাখুন। বাইকের চেন লুব্রিকেট করুন নিয়মিত, সার্ভিসিং-এর জন্য অথোরাইজড সার্ভিস সেন্টার ভিজিট করুন এবং ব্রেক-ইন পিরিয়ড মেনে চলুন।
ট্রাফিক আইন মেনে চলুন:
হাইওয়ের যেসব রুলস প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয় সেগুলো জেনে রাখুন। ট্রাফিক সিগনাল, রুলস এবং লেন সবসময় মেনে চলুন।
বেশি করে রাইডিং প্র্যাকটিস করুন:
যত বেশি আপনি খোলা রাস্তায় রাইডিং প্র্যাকটিস করবেন, তত আপনি বাইক চালানোর জন্য জরুরী জ্ঞান ও টেকনিক আয়ত্ত করতে পারবেন।
রাইডিং টেস্ট পাশ করেই আরও শেখার আগ্রহ হারিয়ে না ফেলে, বিভিন্ন মোটরসাইকেল ক্লাব এবং অ্যাডভান্সড ট্রেনিং স্কুল অ্যাটেন্ড করুন।
সামনের যানবাহন থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন:
গাড়ি, ট্রাকের সাথে একই রাস্তা দিয়ে চলাচল করার সময় সামনে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত দূর্ঘটনা ঘটলে আপনার সামনের রাস্তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই যথাযথ দূরত্ব বজায় রাখুন যাতে সামনে কী হচ্ছে আপনি পরিষ্কার ভাবে দেখতে পান এবং কোন দূর্ঘটনা ঘটলে আপনি নিরাপদ দূরত্বে থাকতে পারেন।
নিজের বাইককে আয়ত্তে আনুন:
আপনার প্রিয় পালসারের সাথে সময় কাটান বেশি করে। এতে করে আপনি বাইকের টর্ক, পাওয়ার, অ্যাক্সিলারেশন, ব্রেকিং ক্যাপাবিলিটি, সিটিং পজিশন, ফুয়েল কঞ্জাম্পশন সম্পর্কে বুঝতে পারবেন। বাইকের সাথে দেয়া ম্যানুয়াল বইটি অবশ্যই একবার ভাল করে পড়বেন।
সঠিক পজিশনে বাইকে বসুন:
দুই চাকার বাহনে বসতে ভীতি কাজ করলেও, বাইক রাইডাররা রাস্তার সবকিছু সবার আগে ভাল করে দেখতে পায়, যা বাইক চালানোর একটি ভাল দিক।
আপনি যদি লেফট হ্যান্ড বেন্ড পজিশনে সেন্টার লাইন বরাবর বাইক চালান, তাহলে সামনের রাস্তা ভাল করে দেখতে পারবেন। রাইট হ্যান্ড বেন্ড পজিশন খুবই সিম্পল একটি পজিশন যা শুধু আপনাকে সামনে কি আছে তা দেখতে সাহায্য করবেনা, কোন যানবাহন সামনে চলে আসলে সেটাও আগে আগেই দেখতে পাবেন। পজিশনিং তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ যা রাইড শুরু করার আগেই আপনার ভাবা উচিত।
রাইড চলাকালীন শান্ত থাকুন:
সদ্য ড্রাইভিং টেস্ট পাশ করে বাইক চালানো শুরু করলে নার্ভাস লাগা স্বাভাবিক। তাই রাইড চলাকালীন তাড়াহুড়ো করবেন না। উদ্বিগ্ন হয়ে বা দুশ্চিন্তা নিয়ে পালসার বাইক চালানো শুরু করবেন না, তাহলে সম্পূর্ণ মনোযোগ পথে রাখতে পারবেন।
শুনতে সামান্য মনে হলেও, পালসার চালানোর সময় গভীর শ্বাস নেয়া আপনাকে অনেকখানি সাহায্য করবে। তাও যদি আপনার বাইক চালাতে উদ্বিগ্ন লাগে, খালি পার্কিং অথবা ইন্ড্রাস্টিয়াল জায়গা খুঁজে বের করে বেশি করে প্র্যাকটিস করুন। ধীরে ধীরে আপনি আত্মবিশাস খুঁজে পাবেন।
ভাল মানের গিয়ার ও অ্যাকসেসরিজ কিনুন:
বেশি দাম দিয়ে গিয়ার ও অ্যাকসেসরিজ কিনলেই যে তা ভাল মানের হবে এমন নয়। তাই পালসারের জন্য গিয়ার বা অ্যাকসেসরিজ কেনার আগে ভাল করে রিসার্চ করে নিন।
যদি শতভাগ নিশ্চিত না থাকেন, কেনার আগে অবশ্যই কিছু গিয়ার ও হেলমেট ট্রাই করে দেখবেন।
প্রতি রাইডের আগে আবহাওয়া চেক করুন:
হিট ওয়েভ, ভারী বৃষ্টিপাত অথবা অন্য কোন দুর্যোগের সম্ভাবনা থাকলে পালসার নিয়ে যেকোন রাইডে বের হওয়া থেকে বিরত থাকুন। রাইডিং যতই প্রিয় হোক না কেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কখনো বাইক চালানো উচিত না।
সতর্ক ভাবে বাইক চালান:
রাইড চলাকালীন আপনাকে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। পথে অনেক ধরণের যাত্রী থাকে, যেমন - উদাসীন, বিপদজনক, উদ্বিগ্ন ড্রাইভার, বাইসাইকেল চালক, ট্রাক্টর, ট্রাক, বাস ড্রাইভার ইত্যাদি। আপনি কেমন গতিতে এবং কীভাবে বাইক চালাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে বিপদের সম্ভাবনা বাড়ে এবং কমে। সতর্ক ভাবে বাইক চালানো মানে আপনি নিজেকে একটি সুরক্ষার বলয়ে রেখে বাইক চালাচ্ছেন। তাই উত্তেজিত না হয়ে বুদ্ধি দিয়ে বাইক চালান, নিরাপদে থাকুন।
দরকারী তথ্যগুলো আপনি পালসার-এর বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ, ব্লগ, এমনকি গুগল সার্চ করলেও সাথে সাথে পেয়ে যাবেন।