Romantic Love Story-রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প

Romantic Love Story-রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প Romantic Love Story is a Love story sharing Page.

হাসবেন্ড আমার প্রাক্তন সম্পর্কে জেনে গিয়েছে।মূহুর্তেই আমার ফিউচার এলেমেলো হয়ে গেছে,কি করবো বুঝতে পারছি না তাই পোস্ট করা।...
28/03/2025

হাসবেন্ড আমার প্রাক্তন সম্পর্কে জেনে গিয়েছে।মূহুর্তেই আমার ফিউচার এলেমেলো হয়ে গেছে,
কি করবো বুঝতে পারছি না তাই পোস্ট করা।

আমার বিয়ের বয়স ৫ মাস ১৮ দিন। বিয়েটা পারিবারিক ভাবেই হয়েছিল। বিয়ের আগে আর সাথে সামনাসামনি দুই দিন কথা হয়েছিল। প্রথম দিন উনার পছন্দ অপছন্দ,অতিত বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা শেয়ার করে। আমার কাছে তার চাওয়া গুলো শেয়ার করে। আমাকেও তার কাছে কি কি আশা করি, আমার পছন্দ অপছন্দ জানতে চায়। আমি তেমন কিছু বলিনি।

এর কয়দিন পর দ্বিতীয় বারের মত মিট করি!
সেদিন আমি অনেকটা ফ্রী হয়ে অনেক গল্প করি একপর্যায়ে উনি কাবিনের বিষয়ে বলে —"দেখুন আমি এখনো প্রতিষ্ঠিত না ক্যাশ টাকাও তেমন নেই। তবু্ও কাবিন দিয়ে বিয়ে করতে চাই। আপনি কেমন আশা করেন? আমার সামর্থ্য হলে আগাবো।"

আমি বলি এটা আমার ফ্যামিলির সাথে কথা বলুন। উনি রিফিউজ করে আমার কাছেই জানতে চায়! তো আমি বলি আমার বান্ধবীর পাঁচ লক্ষ দিয়ে কাবিন হয়েছে।

এরপর অনেক প্রসঙ্গে কথা হয়। একপর্যায়ে উনি বলে, আমার একটা কন্ডিশনাল চাহিদা আছে, ইন্সাল্টিং মনে করবেন না। আমি চাইনা বিয়ের পর এটা নিয়ে ঝামেলা হোক।

আমি অনুমতি দিলে বলে —আজ্ঞে আমি একজন নিট এন্ড ক্লিন মেয়ে খুঁজছি। আপনি যদি এমন কেউ না হয়ে থাকেন প্রশ্নটা স্কিপ করতে পারেন আমি অন্য কারণ দেখিয়ে বিয়েটা ভেঙে দিব।

উনি ইইউ ভুক্ত একটা দেশের রেসিডেন্ট। কথাবার্তায় অনেক স্মার্ট আর উদার মনের তো স্বাভাবিকভাবেই আমি মিথ্যে বলেছি যে আমি কোন ধরনের সম্পর্কে জড়ায়নি। উনিও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে কনভারসেশন শেষ করলেন।

যথারীতি বিয়েটা হলো,যদিওবা কাবিন নিয়ে আব্বু একটু ঝামেলা করেছিল। তো চারদিন পর আমাদের মাঝে সম্পর্ক হলো কিন্তু ব্লি!;ডিং না হওয়ায় উনাকে কিছুটা চিহ্নিত মনে হলো।আমাকে কিছু বুঝতে দেয়নি।

তবে সে তখন থেকেই লোক নিয়োগ দিয়ে আমার কলেজ আর এলাকায় অনেক টাকা উড়িয়ে অবশেষে গত আট তারিখে আমার খুব কাছের এক বান্ধবীর কাছ থেকে অতিত সম্বন্ধে জেনে গিয়েছে।
এদিকে সে স্পাউস ভিসার জন্য আমার পাসপোর্ট রেডি করেছিলেন। আর আমি সন্তানসম্ভবা হয়ে পরেছিলাম!

এই অবস্থায় সেদিন আমাকে উনি চেয়ারে বসিয়ে উনি হাটুতে ভর দিয়ে আমার সামনে বসে আমার দুই হাত একসাথে করে উনি উনার হাত উপরে রাখলেন। বললেন —"আজ কোন ইমোশন আর মিথ্যে কাজে আসবে না। আমাদের তিনজনের যদি ভাল চাও যা বলবা সত্য বলবা।

আমি তখন কান্নায় কথা বলতে পারছিলাম না। উনিও হাল ছাড়ে না। পরে আস্তে আস্তে আমি সব বললাম। এবং এটাও এক্সপ্লেইন করলাম কেন এটা করেছি। উনার প্রতি ভালবাসা‌,অনুভূতি,মায়া সব বুঝালাম। উনার চোখ গুলো লাল হয়ে গেছে, হাত কাপছিল, আমার হাত তখনো ছাড়েনি।

শেষে উনি বললেনঃ
জীবনে আমার সাথে ছোট বড় অনেক ইনজাস্টিস হয়েছে। এর অধিকাংশ মাফ করর দিয়েছি কারণ মহাত্মা গান্ধীর আইডোলজি আমাকে প্রভাবিত করে। কিন্তু আমার একটা খারাপ অভ্যাস হচ্ছে; (কথাটা উনি ইংরেজিতে বলেছিল যার অর্থ কিছুটা এরকম: "যেই অন্যায় গুলো মাফ করতে পারিনা সেগুলো কোনদিন ভুলি না। যেদিন আমার সব শক্তি দিয়ে আঘাত করে তার সর্বোচ্চ ক্ষতি করতে পারবো সেদিন পর্যন্ত মনে রাখি!

এরপর কান্নায় সেদিন আর কথা হয়নি, উনি ঘুমিয়ে যায়। আমি সারারাত সেই চেয়ারেই বসে কাটিয়ে দিই। পরদিন থেকে উনি স্বাভাবিক আচরণ করছে। কিন্তু আমি ভেতরে ভেতরে শেষ হয়ে যাচ্ছি!প্রতিদিন কান্না করি। তার কাছে মাফ চাওয়ার সুযোগও পাচ্ছি না। এই প্রসঙ্গ কথা বলতে গেলে বলে -সেদিন রাতে যা হইসে বাদ দাও, ফরগেট ইট।"

আগে তাকে নাম ধরে ঢাকতাম। তুমি বলে সম্বোধন করতাম। এখন আগের মত বিহেভিয়ার আসে না কথা বলতে গেলে জড়তা চলে আসে। সবসময় ভয়ে থাকি কখন কি হয়। তার বাবা নেই। সে বড় ছেলে তাই ফ্যামিলির সব সিদ্ধান্ত তার কথা-ই ফাইনাল। যদিও যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ফ্যামিলির সবাইকে ডেকে সবার মতামত চায়। তার পত্নী হিসেবে আমাকে সবাই অনেক সমীহ করে চলে।

আশেপাশের মানুষজনও খুব ভাল,মোটকথা হাসবেন্ডের চেয়ে বেশি তাদের পরিবেশের প্রেমে পরে গেছি। আমি চাইনা সংসারটা হারাতে। আম্মু বলছে রাগের সময়ে মানুষ কত কিছুই বলে।কিচ্ছু করবে না। কিন্তু আমি উনার সেদিনের শেষ কথাটা কিছুতেই ভুলতে পারছিনা! মনে হচ্ছে উনি আমাকে এমন সময় ত্যাগ করবে যখন আমার যাওয়ার রাস্তা থাকবে না। নাকি অন্যভাবে ক্ষতি করবে তাও ভাবছি।
গতকাল সে চলে গেছে। অনেক দূরের রাস্তা তিনটা ট্রানজিট আছে। তাই এখনো হয়তো কোন ফ্লাইটে বা এয়ারপোর্টে বসে আছে। আমার পাসপোর্ট কি করেছে কিচ্ছু বলে যায়নি।

যাইহোক এই ঘটনাগুলো আমার আম্মু আর হাসবেন্ড এর কয়েকজন স্থানীয় বন্ধু ছাড়া কেউ জানে না। এই মুহূর্তে আমার কি করা উচিৎ বুঝতে পারছি না।
এই কয়দিনে আমি অসুস্থ হয়ে গেছি। আমার বাচ্চাটার কি হবে তা ভাবছি। ওভারথিংকিং আমায় শেষ করে দিচ্ছে।

(নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)

প্রেমিকার বুকের স্তন তুমি খুবলে খেয়েছ৷ তার পিঠে নখের দাগ বসিয়ে দিয়েছ৷ সেখানে তুমি কেবলই দেখেছ কামুকতা৷ অথচ তার অন্তর্বাস...
20/11/2024

প্রেমিকার বুকের স্তন তুমি খুবলে খেয়েছ৷ তার পিঠে নখের দাগ বসিয়ে দিয়েছ৷ সেখানে তুমি কেবলই দেখেছ কামুকতা৷ অথচ তার অন্তর্বাসের নিচে শুধু স্তন না৷ স্তনের নিচে চামড়ার ওপাশে একটা সুপ্ত হৃদপিন্ড থাকে৷ সেটার খোঁজ নেওনি৷

তার বুকে কখনও কান পেতে শোনোনি প্রতি মিনিটে ৭২ বার স্পন্দিত করে কি বলে৷ তুমি শুধু দেখেছ তার উন্মুক্ত বুকে মাংস পিন্ড৷

সবাই ঘুমিয়ে গেলে প্রতিরাতে তার চুল ধরে তাকে প্রহার করেছ৷ অথচ কখনও তার চুলে নাক ডুবিয়ে বলোনি "চুলে কি শ্যাম্পুর বদলে অ্যালকোহল মাখো? এতো নেশাভরা ঘ্রাণ কেনো তোমার চুলে!

প্রতিরাতে সঙ্গমে তাকে নিজের যৌনদাসী করে চিৎকার শুনেছ৷ অথচ জানতে চাওনি প্রতিমাসে পাঁচদিন পিরিয়ডের সময় সে কেমন আছে?

সে মো**টা বলে তাকে "হাতির বাচ্চা" বলে গা/লি দিয়েছ৷ তার শরীরের ভাঁজে ভাঁজে চর্বি খুঁজেছ অথচ তুমি জানতে চাওনি! এ মেয়েটাই প্রতিদিন তোমার প্রতিক্ষার প্রহর গুনে৷ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে তোমার জন্যে তৈরি করে প্রতিরাতে৷

কখনও আবিষ্কার করোনি তার শরীরে কয়টা তিল৷ শুধু আবিষ্কার করেছ খেতে বসলে প্লেটে কতগুলো চুল পড়লো৷

তুমি বাসা থেকে বের হবার পর এ মানুষটা সারাদিন চিন্তায় থাকে৷ তুমি ঠিকমত পৌছেছ কিনা! সারাদিনে কিছু খেয়েছ কিনা! তোমার পরিবারের জন্যে রান্না করা থেকে সব করে অথচ তুমি সারাদিনে ক্লান্ত হয়ে এসে বলো "সারাদিন কি বা* করছো?

তুমি একটু রেগে গেলেই তাকে "খা**" বলে খিস্তি করো৷ সে অভিমানে বুক ভাসিয়ে যখন কান্না করে, তুমি তখন বলো "প্যান প্যানানী বন্ধ কর" অথচ তার চোখে কখনও মুগ্ধতা দেখো নি৷ কখনও বলোনি "চোখে কাজল দিলে তোমাকে দেবী দেবী লাগে"

তুমি শুধু তার পরনের শাড়ি খুলতে শিখেছ৷ অথচ কখনও নিজে শাড়ি পরিয়ে দেওনি৷ শাড়ির কুচি ঠিক করতে গিয়ে তার নাভী স্পর্শ করে বলোনি "শাড়ি পরলে তোমাকে মায়াবতি লাগে"

সে**ক্স, কামুকতা ছাড়াও একটা মানুষের যে আরও অনেক কিছু চাওয়ার আছে সেটা তুমি বোঝোনি৷ বুঝতেও চাওনি৷ মনে রেখো! এসব তুমি বুড়ো হয়ে

গেলেই ফুরিয়ে যাবে, ক্ষয় হয়ে যাবে, আজ আছে তো কাল নেই৷ কিন্তু প্রিয় মানুষের জন্যে তোমার চোখে যে প্রেম ভালোবাসা সেটা তুমি যুগ যুগ ধরে পেতে থাকবে....❤

আমার মা দেখতে কালো !!শুধুমাত্র এই কারণে তার বিয়ে হচ্ছিলো না। একের পর এক পাত্রপক্ষ না করার পর আমার নানা শেষে ঘটককে বললেন,...
24/05/2024

আমার মা দেখতে কালো !!
শুধুমাত্র এই কারণে তার বিয়ে হচ্ছিলো না। একের পর এক পাত্রপক্ষ না করার পর আমার নানা শেষে ঘটককে বললেন, আমার মেয়েকে বিয়ে করলে ছেলেকে সরকারি চাকরি দেবো। নানার এই কথার পর ছেলে পেতে সমস্যা হলো না। মায়ের বিয়ে হয়ে গেলো। নানা ছেলেকে বন্দরে চাকরি দিয়েছিলেন।
বিয়ের বছর খানিক পর আমার পৃথিবীতে আসার সময় যখন হয়ে এলো, বাবা তখন মাকে বললো, এই সময়টা তুমি বাবার বাড়িতে থাকো। সেখানে তোমার যত্ন ভালো হবে। সন্তান জন্মের পর তোমাকে নিয়ে আসবো। মা বাবার বাড়িতে চলে এলো। এখানে আসার পর মায়ের জীবনে দুটো ভয়াবহ ঘটনা ঘটলো। যা মা দু:স্বপ্নেও ভাবে নি।
আমার জন্মের আগেই বাবা আরেকটা বিয়ে করলো। ফর্সা এক মেয়েকে বিয়ে করলো। এই খবর শোনার পর নানা হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেলেন। সীমাহীন কষ্ট বুকে নিয়ে মা আমাকে জন্ম দিলো। আমিও মায়ের মতো কালো হলাম। নানার বাড়িতে বাবাহীন বেড়ে উঠতে লাগলাম। এর মধ্যে মা বাবার ডিভোর্স হয়ে গেলো।
পর পর দুটো আঘাত পেয়ে মা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলো। তারপর থেকে খুব কম কথা বলতো। বেড়ে ওঠার পর থেকে মা'র সাথে কখনো বাবা বিষয়ে কথা বলিনি। কেননা মাকে অস্বস্তিতে ফেলতে চাইনি। পড়াশোনা শেষ হবার পর মামারা আমার জন্য পাত্র দেখতে শুরু করলো। কিন্তু কালো হওয়ার দরুন কেউ আমাকে পছন্দ করছিলো না। ঠিক মায়ের ক্ষেত্রে যা হয়েছিলো।
পরে মামারা নানার মতো সিদ্ধান্ত নিলো। অর্থাৎ আমাকে বিয়ে করার বিনিময়ে ছেলেকে সরকারি চাকরি দেবে। এই সিদ্ধান্ত যখন মায়ের কানে গেলো তখন কম কথা বলা মা প্রথমবারের মতো জোরালো কণ্ঠে মামাদের বললো,"চাকরিটা ছেলেকে নয়, আমার মেয়েকে দাও। মামারা বললো, তাহলে কি ওর বিয়ে হবে?
ওর বিয়ের চেয়েও জরুরী হলো চাকরি। কারণ চাকরির লোভে যে ছেলে ওকে বিয়ে করবে সে তো আমার মেয়ের জন্য বিয়ে করবে না। করবে চাকরির জন্য। আর মেয়েকে না চেয়ে অন্য কিছুর লোভে যে ছেলে বিয়ে করে সে কখনো নির্ভরযোগ্য হতে পারে না। আর এমন ছেলের সাথে সংসার করার চেয়ে না করা ভালো।
এরপর বললো, ওর চাকরি থাকলে বিয়ে না হলেও মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকতে পারবে। মায়ের শক্ত অবস্থানের কারণে এবং মায়ের জীবনে যা হয়েছে তা বিবেচনা করে মামারা সিদ্ধান্ত বদল করলো। এবং চাকরিটা কোনো ছেলেকে না দিয়ে আমাকে দিলো।
আমার চাকরি হওয়ার সংবাদে মা আনন্দিত হয়েছিলো। সেদিন আরেকটা সংবাদ বাড়িতে এসে পৌঁছেছিলো। মামাদের কাছ থেকে শুনলাম, বাবা অফিসের এক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। বন্দরে ক্রেনের সাথে ধাক্কায়।

©

একটা কোর্স করতে যখন দেশের বাইরে ছিলাম, তখন রবিন নামের এক বাংলাদেশী ভাইয়ের সাথে রুম শেয়ার করে থাকতাম। একদিন রুমে এসে দেখি...
22/05/2024

একটা কোর্স করতে যখন দেশের বাইরে ছিলাম, তখন রবিন নামের এক বাংলাদেশী ভাইয়ের সাথে রুম শেয়ার করে থাকতাম। একদিন রুমে এসে দেখি উনি লাগেজ গোছাচ্ছেন।
আমি হেসে বললাম- দেশে যাবেন দেখে ভাই তো দেখি মহাখুশি!
রবিন ভাই লাগেজের চেইনটা লাগিয়ে হাসিমুখে বললো- “ভাই, ৮ বছর পর দেশে যাচ্ছি, মনে তো আনন্দ হবেই। ছোট বোনটাকে এতোটুকু দেখে এসেছিলাম, আর এখন তারই বিয়ে হয়ে যাচ্ছে! বোনটা যখন আমাকে দেখবে, খুশিতে যে কি করবে এটা ভেবেই আমার চোখে পানি এসে যাচ্ছে।”
রবিন ভাই হাসিমুখে কথা বলছিলো, অথচ আনন্দে উনার চোখ জ্বল জ্বল করছিলো। এমন সময় রবিন ভাইয়ের বাবা ফোনে উনার কাছে জানতে চাইলো- “কিরে, শুনলাম তুই নাকি দেশে আসবি?”
রবিন ভাই হাসিমুখে উনার বাবাকে জানালো- “হ্যাঁ বাবা, আসবো। ছোট বোনের বিয়ে, বড় ভাই কি না এসে পারে?”
অপর প্রান্ত থেকে উনার বাবা বললেন- “তোর শুধু শুধু এতো টাকা খরচ করে আসতে হবে না! বিয়ে ঘরোয়া পরিবেশেই হবে। তাছাড়া নতুন জমি কিনেছি, টাকা-পয়সার একটা বিষয় আছে না? তাই আসার দরকার নেই!”
বাবার সাথে কথা বলা শেষে রবিন ভাই যখন ছোট বোনকে জিজ্ঞেস করলো- “কিরে, তুইও কি চাস আমি তোর বিয়েতে না আসি?”
ছোট বোন বললো- “এমনিতেই বাবা অনেক টাকা খরচ করছে। ৪০০ জন লোকের খাওয়ার ব্যবস্থা করতে গরু-খাসি কিনে এনেছে। এই অবস্থায় তোমার এতো টাকা খরচ করে দেশে আসতে হবে না!”
রবিন ভাই ফোনটা রেখে যখন লাগেজ থেকে কাপড়গুলো নামাচ্ছিলো, তখন উনাকে জিজ্ঞেস করলাম- ভাই, আপনি কি দেশে যাবেন না?
চোখের জল মুছতে মুছতে রবিন ভাই বললেন- “বাবা বিয়েতে আয়োজন করেছে ৪০০ লোকের। আমি গেলে তো ৪০১ জন হয়ে যাবে! ১ জনের দায়িত্ব বাবা নিতে পারবে না, তাই যাবো না!”
সেদিন নিজ চোখে একজন প্রবাসীর কষ্ট দেখেছিলাম, দেখেছিলাম একজন প্রবাসীর সাথে তারই কাছের মানুষগুলো কেমন নির্মম আচরণ করে…
প্রতিদিন কাজ শেষে রবিন ভাই তার ছোট ভাইকে ফোন করে বলতো, বাড়ির আশপাশটা একটু ভিডিও করে পাঠাতে, কিন্তু ছোট ভাই বিরক্ত হয়ে ফোন রেখে দিতো, অথচ সেই ছোট ভাইকে কয়েকদিন আগেই রবিন ভাই বাইক কেনার টাকা পাঠিয়েছে।
আমি যখন নতুন আইফোন কিনলাম, তখন উনি আইফোনটা হাতে নিয়ে বললেন- “এটাই তাহলে আইফোন? যার জন্য মানুষ এতো পাগল!”
আমি বললাম- “আপনিও তো একটা আইফোন কিনতে পারেন। কি একটা ফোন ব্যবহার করেন, অর্ধেক ভাঙা!”
উনি হেসে বললেন- “কিনবো একটা আইফোন, ছোট বোনের জামাইয়ের জন্য!”
আমি উনার দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবতে লাগলাম- সব প্রবাসীরাই কি এমন হয়, যারা নিজের জন্য একটুও ভাবেন না?
প্রতিদিন রাতে রাবিন ভাই খুব কাশতেন, একদিন উনাকে বললাম– ভাই, এবার অন্তত একটা ডাক্তার দেখান। আপনার শরীরের অবস্থা তো খুব একটা ভালো না।
উনি কাশতে কাশতেই বলতেন- “এখানে ডাক্তার দেখাতে যতো টাকা খরচ হবে, সেই টাকা দিয়ে বাবা নতুন একটা জমি কিনতে পারবে!”
আমি রেগে বলতাম– তাই বলে নিজের জন্য কিছুই করবেন না?
উনি হেসে বলতেন- “কয়েকদিন পর ডাক্তার দেখাবো। আসলে ছোট ভাইটা নতুন ব্যবসা করবে, তার জন্য আলাদা টাকা পাঠাতে হবে!”
এই অসুস্থার কারণেই রবিন ভাই একদিন হুট করেই পরপারে পাড়ি জমান। ফোনে যখন উনার বাবাকে বিষয়টা জানালাম, তখন উনি খুবই কান্না করছিলেন।
কিন্তু যখন বললাম- আমি লাশ পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। কিন্তু, লাশ দেশে পাঠাতে হলে আড়াই লাখ টাকার মতো লাগবে, আপনারা টাকার ব্যবস্থা করুন। তখন উনার গলার স্বর পাল্টে গেলো!
উনি আমতা আমতা করে বললেন- “এতো টাকা! যে ছেলে জীবিত থাকতেই দেশে আসতে পারলো না, তার লাশ দেশে এনে কি করবো? তোমরা ওখানেই কিছু একটা ব্যবস্থা করে ফেলো!
শেষবারের মতো ভিডিও কলে আমার ছেলের মুখটা একটু দেখাও তো!”
আমার তখন ইচ্ছে করছিলো উনার মুখে থুথু মারি। যে কিনা নিজের সন্তানকে টাকা বানানোর মেশিন ছাড়া কিছুই ভাবতো না!
ছোট ভাইকে ফোনে যখন বললাম- তোমার ভাই তো তোমার জন্য কতো কি করেছে, তুমি না হয় একটু লাশটা নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করো।
ছোট ভাই তখন উত্তর দিলো- “ভাই নাকি তার জন্য কোন কিছুই করেনি! একই রকম উত্তর ছোট বোনও দিলো! অথচ এই ভাই-বোনের সকল শখ-আহ্লাদ বড় ভাই বিদেশে কামলা খেটে পূরণ করছে!”
চোখের সামনে একটা মানুষের লাশ পড়ে আছে, অথচ আমার মনে হচ্ছে এটা মানুষের লাশ নয়! এটা একটা টাকার মেশিন, যেটা অচল হয়ে গেছে…
অনেক প্রবাসী আছেন, যারা বছরের পর বছর দেশের বাইরে কাটানোর পরও তাদের পরিবার চায় না মানুষটা দেশে ফিরে আসুক।
এক সময় সেই মানুষটা অমানবিক পরিশ্রম করতে করতে মারা গেলেও, মৃতদেহটা পরিবার দেশে আনতে চায় না টাকা খরচ হবে বলে, অথচ মানুষটা পরিবারের জন্যই আমৃত্যু কষ্ট করেছেন।
টাকার কাছে মানুষ সত্যি অসহায়, টাকার কাছেই মানুষ মনুষ্যত্ব হারায়, মানবিকতা হারায়, হারায় বিবেকবোধ…

স্বামীর সাথে ঝগড়ার পর ইচ্ছে করেই রান্নায় লবণ, হলুদ বেশি করে দিলাম।যেন খেতে না পারে।বুঝবে বৌয়ের সাথে ঝগড়া করার ফল।স্বামী ...
29/04/2024

স্বামীর সাথে ঝগড়ার পর ইচ্ছে করেই রান্নায় লবণ, হলুদ বেশি করে দিলাম।যেন খেতে না পারে।বুঝবে বৌয়ের সাথে ঝগড়া করার ফল।

স্বামী রাত এগারোটায় ফিরলো ক্লান্ত শরীরে।গা চিপচিপে ঘাম।ক্লান্ত স্বরে বললো

" স্বস্তিকা,চোখ বন্ধ করো "

চোখ বন্ধ করতেই চুলে কিছু একটার স্পর্শ অনুভব করলাম।চোখ মেলে দেখি গোলাপ ফুলের মালা।স্বামী বিষাদে বললো

" সারাদিন অফিসে একটুও মন বসেনি।আমার ছোট্ট পাখিটাকে বকা দিয়েছি,ভুল করেছি।নিজের কাছে খুব অপরাধী লাগছিলো।তোমার পছন্দের ফুল নিয়ে এসছি।রাগ কমেছে? "

এতোদিনের চেনা পরিচয়েও আজ যেন নতুন করে স্বামীর প্রেমে পড়ে গেলাম।অশ্রুসিক্ত হয়ে বললাম

" হু রাগ কমেছে।তুমি হাত মুখ ধুয়ে আসো।আমি রান্না করি "

স্বামী ভ্রু কুঁচকে বললো " কেন রান্না করোনি?"

প্রতিত্তোরে শুধু মাথা নাড়ালাম।কি আশ্চর্য! উনি বিষয়টা বুঝতে পেরে বললেন

" আচ্ছা ঠিক আছে, নতুন করে আর রান্না করতে হবে না।তরকারিতে বাড়তি একটু জল দিলেই তো লবণ কমে যাবে।ব্যাপার না,মেসে থাকতে কত এভাবে খেয়েছি "

রেগে বললাম " তখন তোমার বউ ছিলোনা তাই খেয়েছো।এখন বউ আছে।ফ্রীজে মাংস আছে,পোলাও রান্না করি? "

" আচ্ছা ঠিক আছে।আমি হাত মুখ ধুয়ে পেঁয়াজ কে'টে দিচ্ছি।তুমি কা"টতে যেয়ো না,হাত কে'টে ফেলবে "

লোকটার এই এক সমস্যা।আমার রাগ কখনোই দীর্ঘস্থায়ী হতে দেয় না।এতোটা কেন?একটু কম ভালোবাসলেও তো কোনো ক্ষতি ছিলো না।

গল্প #অভিমান ©️

আমার স্ত্রীকে শুধু বলেছিলাম তুমি আমাকে আগের মতো ভালোবাসো না। কেয়ার করো না। একথায় সে কেঁদে দিল।জানতে চাইলাম কাঁদার কারণ ক...
24/04/2024

আমার স্ত্রীকে শুধু বলেছিলাম তুমি আমাকে আগের মতো ভালোবাসো না। কেয়ার করো না।

একথায় সে কেঁদে দিল।

জানতে চাইলাম কাঁদার কারণ কি? (উচু কণ্ঠে)

উত্তর দিল,

সকালে গ্যাস থাকেনা তাই ভোরে উঠে রান্নাবান্না করা। থালাবাসন ধোয়া। আমি অফিসে যাই আমাকে যাওয়ার অব্ধি প্লেটে খাবার বেরে খাওয়া শেষ করে উঠা। আবার সবাই এক সাথে খাবার খেতে আসলে সবাইকে খাওয়ানো। রুম ধোয়ামোছা করা। আমার শার্ট পেন্ট ধোয়া। আমার জামাকাপড় ইস্ত্রি করা। পারিবারের সমস্ত কাজ নিজের যথেষ্ট শ্রম দিয়ে করা। গোসল করা। আবার দুপুরবেলা বাকি সব কিছু করা। রাতে সবাই এক সাথে খেতে আসলে সবাইকে আবার একত্রে খাওয়ানো। থালাবাসন গুছানো। ইত্যাদি…

নিজের চেষ্টার শেষটুকু দিয়ে কাজ করে আসলে ভুল ধরলে আবার করা।

পারিবারিক ছোটখাটো ঝামেলা মানসিক শান্তি হারিয়ে যায়।
যেটা আমি সহ্য করে নিতে পারি সেটা একজন মেয়ে এতকিছু করেও হাসিমুখে সহ্য করে নেওয়া।

স্ত্রীকে গতমাসে টেস্ট করালাম। আলহামদুলিল্লাহ পজিটিভ। বাবা হতে যাচ্ছি।

সে কোনকিছু খেতে পারেনা। এক প্লেটের হাফ প্লেট খাবার খায়। মাছ একদম খেতেই পারেনা। বমি হয়। জোর করে খেতে চাইলে বমি হয়।

এই সবকিছু মিলিয়ে সে নাকি নিজেকে নিজেই ভালো রাখতে পারছেনা। নিজেকে ভালোবাসতেও পারছেনা। তাই আমাকেও আগের মতো ভালোবাসতে পারেনা।

আমি তার কথাগুলো শুনে জোরে নিশ্বাস ফেললাম। মনে হচ্ছে আমার বুকের ভিতরে হাহাকার করছে। কাঁদতে চাই কিন্তু চোখ দিয়ে জল আসছেনা।

সে এত কষ্ট করে সবকিছু মানিয়ে নেয়।
তবুও চোখে তাকালে আমি দেখি তার কোন চেষ্টা কমতি নেই আমাকে হ্যাপী রাখার।

আমার গলা শুকিয়ে গেল। চোখভেজা অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে তাকে জড়িয়ে ধরে বললাম…

‘আমাকে মাফ করে দিও। এভাবে বলা আমার ঠিক হয়নি। তুমি যে আমাকে এভাবেও আরালে থেকে এতটা ভালোবাসো সেটা ভেবে দেখেনি।’ আমাদের সবার ভালোর জন্য কতকিছু করো। অথচ নিজের ভালো থাকাটাও ভুলে গেছো। প্লিজ মাফ করে দিও। কপালে চুমু দিয়ে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ প্রশান্তি নিলাম।

জরিয়ে ধরে শুধু ভাবতে লাগলাম ‘একটা মেয়ে কতকিছুই না করে পরিবারের জন্য’।

(Respect স্ত্রী)
#অনুগল্প ©

আমার ওয়াইফের জন্য একটা শাড়ি কিনবো, তাই শাড়ি দেখতেছিলাম। আমার পাশেই এক ইয়াং ছেলে শাড়ি দেখতেছে। সে বেশ কয়েকটা শাড়ি দেখলো।দ...
22/04/2024

আমার ওয়াইফের জন্য একটা শাড়ি কিনবো, তাই শাড়ি দেখতেছিলাম। আমার পাশেই এক ইয়াং ছেলে শাড়ি দেখতেছে। সে বেশ কয়েকটা শাড়ি দেখলো।

দোকানদার খানিকটা বিরক্ত হয়ে বললো ' ভাই আপনি যে শাড়ি কিনবেন তা আমাদের দোকানে নেই। আপনি পাশের দোকানটায় দেখুন।'

আমার জানা মতে এই মার্কেটে সব চেয়ে ভালো এবং দামী শাড়ি এই দোকানেই পাওয়া যায়। ছেলেটা হয়তো তার পছন্দের কাউকে শাড়ি গিফট করবে। গার্লফ্রেন্ড নয়তো অন্য কেউ। আমার কেনা শাড়িটা দোকানদার প্যাক করছিলো সেই ফাঁকে আমি ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করলাম

"ভাই এর মধ্যে একটা শাড়িও কি পছন্দ হচ্ছে না আপনার?

- ভাইয়া আসলে আমার চয়েস করে শাড়ি কেনার অভিজ্ঞতা নেই। দোকানদারকে বললে সে পছন্দ করে যে শাড়িটা দেয় সেটাই নিয়ে যাই। শাড়ি নেওয়ার পরে ভালো মন্দ কিছুই বলে না।

-শাড়িটা কার জন্য নিতে চাচ্ছেন।

- মা! আমার মায়ের জন্য ভালো একটা শাড়ি নিতে চাচ্ছি।

-ওহ আচ্ছা। তাহলে এই গুলো বাদ দিয়ে অন্য শাড়ি দেখতে হবে। কারণ এগুলো যারা ইয়াং তারা পরে থাকেন সাধারণত।

- আসলে আমার মায়ের চকচকে শাড়ি পছন্দ। আমার বাবা বয়স্কদের শাড়ি কিনে দিলে খুবই রাগ করতেন ভীষণ।

- ওহ আচ্ছা বুঝলাম। তাহলে আমি একটা পছন্দ করে দেই?

- আচ্ছা দিন। তাহলে আমার ভালোই উপকার হয়।

কয়েকটা শাড়ি দেখে তার মধ্যে একটা শাড়ি পছন্দ হলো আমার। সেটা দেখিয়ে বললাম 'এটা আপনার কাছে কেমন লাগছে?'

ছেলেটার মুখে উজ্জ্বল হাসি দেখতে পেলাম। হাসি দিয়ে জবাবে বললো...

" এমনটাই খুঁজছিলাম আমি। ভালোই লাগছে।"

ছেলেটা বিল দিতে দিতে আমার দিকে তাকিয়ে ছোট্ট একটা ধন্যবাদ দিয়ে বললো " ভাইয়া আসলে জানেন কি আমার মা বেঁচে নেই। বাবা চলে যাওয়ার কয়েকমাস পরে মা'ও আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।"

ছেলেটার কথা শুনে আমার হার্টবিট কয়েক সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হয়ে গেলো। মায়ের জন্য কতটা পাগল হলে মৃত্যুর পরেও আলমিরার তাকে মায়ের শাড়ি গুছিয়ে রাখে নতুন নতুন শাড়ি কিনে।

আমার মা বেঁচে আছেন। তবুও তাকে আমি কবে শাড়ি কিনে দিয়েছি আমার ঠিক মনে নাই। মা বেঁচে থাকতেও মূল্যায়ন করছিনা তার। অথচ আমি নাকি উচ্চ শিক্ষিত সমাজের লোকেরা বলে আমার কথা। আমি নাকি ভদ্র সমাজের লোক।

#মা
#অনুগল্প

সুখে থাকার জন্য অনেক বেশি টাকার প্রয়োজন হয়না----ঈদের শপিং করব বাবা সেই ১৫ রমজান থেকে ঘুরাইতেছে টাকা আজ না কাল, কাল না পর...
11/04/2024

সুখে থাকার জন্য অনেক বেশি টাকার প্রয়োজন হয়না
----
ঈদের শপিং করব বাবা সেই ১৫ রমজান থেকে ঘুরাইতেছে টাকা আজ না কাল, কাল না পরশু।
আজ দিলো,মাত্র ৩ হাজার ৫০০ টাকা দিয়েছে। তাই টাকা গুলা টেবিলে রেখে চলে এসেছি।
বাবা একটা চাকরী করে সব মিলিয়ে বেতন পায় ২০ হাজার টাকা। তার মধ্যে বাসা ভাড়া দিতে হয় ৮ হাজার টাকা; বাকী ১২ হাজার টাকায় পুরা মাস। আজকালকার যুগে ২০ হাজার টাকায় তো এক সপ্তাহও চলা কঠিন। অথচ আমাদের চলতে হয় সারা মাস।

তা যাই হোক, ঈদের সময় ভেবেছিলাম একটা ভাল মোবাইল কিনবো।অথচ বাবা দিয়েছে মাত্র ৩ হাজার ৫০০ টাকা। এতে তো শুধু পাঞ্জাবী কিনবো না কি মোবাইল!
বাবা পরে আরো ৫০০ টাকা বাড়িয়ে পুরো টাকাটা আমার টেবিলের উপর রেখে যায়। আমি টাকাগুলো নিয়ে কতগুলো কথা শুনিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যাই!
প্রচন্ড রাগ হচ্ছে! ফ্রেন্ড সার্কেলে কিভাবে মুখ দেখাবো ভেবে পাচ্ছি না।ওদের বলেছিলাম ভাল মোবাইল কিনবো, সেলফি তোলতে গেলে মোবাইল চাইতে হয় তাদের কাছে, তা আর হলো না।
রিক্সা ডাক দিয়ে বাজারের দিকে যেতে বলি! ওখানে একটা ফ্রেন্ডের দোকান আছে। শুধু শার্ট বিক্রি করে!দেখি ওর কাছে ভালো কোনো শার্ট আছে কি না!
যেতে যেতে রিক্সাটা জ্যামে আটকে যাই। এমনিতেই মেজাজ খারাপ তার উপর পচন্ড গরম। তারমধ্যে দেখি ৬/৭ বছরের মতো হবে এমন একটা ছেলে আমার হাত ধরে টানছে, হাতে কতগুলো পত্রিকা।

ভাইয়া, ভাইয়া একটা পেপার নিবেন? মাত্র ১০ টাকা!
-না...রে!
-নেন না ভাইয়া!
-আহা! লাগবে না তো। যাচ্ছি মার্কেট, তোর পেপার নিয়ে কি করবো?
-ভাইয়া, একটা জামা কিনবো ঈদের জন্য! নেন না ভাইয়া!

বেশ মায়া লাগলো। তারপর ২টা পেপার নিলাম ২০ টাকা দিয়ে, রিক্সাওয়ালা মামাকে বললাম তাড়াতাড়ি চালাতে! গরমে মেজাজটা আরো গরম হয়ে যাচ্ছে।
সেন্টাল প্লাজার নিচে,পার্কিং এর একটু পিছনে গলির ভিতরে ফ্রেন্ড এর দোকানে গিয়ে দেখি,ফ্রেন্ড নেই। ওয়েট করতে হবে! বসে পড়লাম, ফোনটা বের করে ফেসবুকে ঠুকলাম। দেখি আমার অন্য ফ্রেন্ডরা বড় বড় শপিং মলের চেক-ইন দিচ্ছে! এগুলো দেখে মেজাজটা আরো গরম হয়ে গেলো! ফোনটা পকেটে রেখে পেপার পরছি।

হঠাৎ ঘাড়টা ঘোরাতে গিয়ে দেখি সেই পেপার বিক্রেতা ছেলেটা দোকানের বাইরে দাড়িয়ে তার পকেটের টাকা হিসেব করছে কত টাকা হলো ওখানে।
আর গ্লাসের বাইরে থেকে ভিতরে ঝুলিয়ে রাখা পাঞ্জবী দেখছে। একটু পর দেখি দোকানের এক কর্মচারী তাকে তাড়িয়ে দিলো!
আমি শার্টগুলো রেখে বাইরে বের হই। দেখি ছেলেটা খুব করে রাগারাগি করছে।
-এই পুলা, প্রত্যেকদিন তুই এই জায়গা আইসা দাড়ায় থাকিস ক্যান? যেদিন টাকা নিয়ে আসতে পারবি সেদিন আসবি যা !
-কিন্তু, ততদিনে যদি ওই জামাটা বিক্রি হয়ে যায়? আমার তো ওটাই পছন্দ হইছে!
-হলে হইবো, এখন যা ভাগ। তোরে যেনো আর না দেখি এখানে!
কর্মচারীর কথায় কষ্ট পেয়ে ছেলেটা চলে যাচ্ছিলো। আমি ডাক দিয়ে জানতে চাইলাম,
-তুমি না বললে জামা কিনবে, এখানে তো সব ছেলেদের কাপড়।
-আমি একটা পাঞ্জবী কিনবো। ওই যে দেখতেছেননা ঝুলানো আছে ব্ল কালারের, ওই পাঞ্জবী কিনবো।
-কার জন্য..?
-আমার বাবার জন্য!
-বাবার জন্য..? তুমি এতটুকু একটা ছেলে, বাবার জন্য শার্ট কিনবে..?
-আসলে ৬ মাস আগে আমার আব্বা রিক্সা চালাতে গিয়ে ট্রাকের সাথে এক্সিডেন্ট করে পায়ে আঘাত পায়! কাজে যাইতে পারে না। মা মানুষের বাসায় কাজ করে সংসার চালায়!
প্রতিবছর আব্বা আমার জন্য নতুন জামা কিনে আনতো। কত খাবার কিনে আনতো। কিন্তু এবার আব্বা ঘর থেকেই বের হতে পারে নাই। তাই ভাবছি এবার আমি ডেইলি পেপার বিক্রি করে যা লাভ হয়, তা দিয়ে এই পাঞ্জাবী কিনে আব্বুকে হাদিয়া দিবো। আব্বার হাসি মুখ দেখলে আমারও খুব ভালো লাগে।
ছেলেটার কথাগুলো শুনে আমার চোখের কি হলো জানি না, শুধু ভিজেই যাচ্ছে। এতটা কান্না বোধ হয় আমার আগে কখনো আসেনি। কি বলবো বা করবো কিছুই ভেবে পাচ্ছি না। স্তম্ভিত হয়ে বসে আছি! ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরলাম। এত ছোট বাচ্চা একটা ছেলে এত কিছু বোঝে অথচ আমি এত বড় হয়েও ইচ্ছামতো টাকা না দেবার জন্য বাবার মুখের উপর কত কথা বলেছি। খুব অমানুষ মনে হচ্ছে নিজেকে। নিজের জন্য, নিজের স্টাটাস বজায় রাখার জন্য সব সময় দামী দামী জিনিস কিনেছি।
অথচ কখনো ভেবেই দেখিনি একটা মানুষ (আমার বাবা) ৫ বছর ধরে একই পাঞ্জাবী পরে ঈদ কাটিয়ে দিচ্ছে! ঈদের আগের দিন মা পাঞ্জাবীটা ধুয়ে দিতো বাবা সেটা আয়রন করে পরতো। ঈদ উপলক্ষে বাবা-মাকে কখনো কিছু কিনতে দেখিনি। সব সময় আমাকেই কিনে দিতো।
এসব ভাবতে ভাবতে আরো বেশি কান্না আসছিলো!

চোখ মুছে ছেলেটাকে দোকানের ভিতর নিয়ে গেলাম। ফ্রেন্ডকে বললাম, পাঞ্জাবীটা দিতে। তারপর ওকে নিয়ে পাশের মার্কেটে গিয়ে ওর জন্য একটা জামা আর ওর মায়ের জন্য একটা শাড়ি কিনলাম। তারপর আমার বাবার জন্য একটা পাঞ্জাবী আর মায়ের জন্য একটা শাড়ী!

এগুলো নিয়ে হোটেল থেকে কিছু খাবার কিনে ছেলেটার বাড়ির দিকে যাই! যেমনটা ভেবেছিলাম, ছোট্ট একটা ঘর, তার বাবা শুয়ে আছে! ইফতারীর বেশী বাকী নেই। একটু পর ওর মা'ও আসে। তাদেরকে পুরো ঘটনাটা বলি। তারা তো তাদের ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেই যাচ্ছিলো।

আমি বিদায় নিয়ে চলে আসি, আসার সময় ঈদের দিন সুমনকে আমাদের বাসায় আসার জন্য বলি।
বাসায় ফিরে দেখি বাবা-মা বসে আছে ইফতারী নিয়ে। মা এগিয়ে এসে বলছে,
-বাবা, কেনাকাটা করেছো..?
একটু পর বাবা একটা প্যাকেট নিয়ে আসে।
আমাকে দিয়ে বলে "খুলে দেখ!"
খুলে দেখি, একটা মোবাইল। যেটা আমি কিনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এত টাকা বাবা কোথায় পেলো!
মাকে জিজ্ঞেস করলাম, মা কিছু বলতে চাচ্ছে না। বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম, বাবা বললো, তোর মায়ের একটা মাটির ব্যাংক ছিলো, তা ভেঙ্গে ফেলছে তোর মা।

কি বলবো ভেবে পাচ্ছি না। মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিয়েছি।তারপর বাবার পা ধরে সকালের ব্যাপারটার জন্য ক্ষমা চাই। তারপর আমার ব্যাগ থেকে তাদের জন্য কেনা পাঞ্জাবী আর শাড়ীটা দেই।
তারা তো মাহ খুশি আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিয়েছে।

আসলেই সুখে থাকার জন্য অনেক বেশি টাকার প্রয়োজন হয়না।

আমি চেয়েছিলাম তুমি হও হুমায়ূন আহমেদের  কোনো এক উপন্যাসের সহজ সরল নায়িকার মতো প্রাণবন্ত। কোন কোন ঘুম না আসা রাত্তিরে তুমি...
31/03/2024

আমি চেয়েছিলাম তুমি হও হুমায়ূন আহমেদের কোনো এক উপন্যাসের সহজ সরল নায়িকার মতো প্রাণবন্ত। কোন কোন ঘুম না আসা রাত্তিরে তুমি ওপাশ থেকে ফোন করে গান ধরো, যদি মন কাঁদে তুমি ফিরে এসো, ফিরে এসো এক বর্ষায়।

ফাইভস্টার রেস্তোরার দামি ম্যানুর কফির স্বাদ না খুঁজে মাঝেমধ্যে ওই শ্যাঁতশ্যাঁতে হোটেলের সিঙ্গারর গাল ভাঙার আবদার করো। খাওয়া শেষে খুব শক্ত করে হাত চেপে ধরে রিকশায় চড়ে শহর দেখতে দেখতে হয়ে ওঠো চমৎকার প্রেমিকা।

বৃষ্টি হলে শাড়ি চুড়ি পরে চোখে গাঢ় করে কাজল দিয়ে সাজুগুজু করো। চিঠিতে লিখে রাখো বৃষ্টি নামার আনন্দের সংবাদ, চিঠির খামে ভরে রাখো কয়েকফোঁটা বৃষ্টি।

জন্মদিন এলে ওসব চিঠি কুরিয়ার করে পাঠাও সঙ্গে পাঠাও গুনে গুনে বেশ কয়েকটি কদমফুল।

অথচ, অথচ তুমি নিজেকে জড়ালে ওয়েস্টার্ন পোশাকে। আমার প্রাণবন্ত স্নিগ্ধ প্রেমিকা না হয়ে বুকের অন্দরের গোপন ফিতা দেখিয়ে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় হয়ে উঠলে নষ্টালজিক এক নারী। নাপিত থেকে মুচি তোমার বুকের সাইজ মেপে তোমাকে প্রশংসায় ভাসায়, ডুবায়, চুবায়।

আমি খুঁজি প্রেম, তুমি যৌনতা। আমি চাই একটু তোমার কাঁধে মাথা রাখতে, তুমি চাও কামনার আগুনে জ্বলেপুড়ে আঙ্গার হতে। আমার এই সব চাওয়াকে তুমি খেইত্যা বলে উপাধি দাও। তুমি মেনে নাও পৃথিবীর যাবতীয় অশ্লীলতা, অথচ আমাকে বলো লম্পট।

আমি বোধহয় সেইসব খেইত্যা মানুষদের দলে ভিঁড়েছি যাদের এখনও কবিতা পড়লে হৃদয় শূন্য হয়ে আসে, জোছনা দেখলে হতে চায় গৃহত্যাগী, বৃষ্টি দেখলে বিড়াল ছানার মতো প্রিয়তমার বুকে ঢুকে বসে থাকতে চায় চুপচাপ।

আমি বোধহয় সেই-সব খেইত্যা প্রেমিকদের দলের মানুষ যারা শুধু প্রেমিকার প্রেমটুকুই চিনেছে, প্রেমিকার শরীর ছোঁয়ার প্রয়োজন মনে করেনি।

তুমি হয়তো জানো না, শরীর যদি আমায় টানতো তবে আমি পৃথিবীর এক'শো তিরানব্বইটি দেশের নারীর নগ্ন শরীরের দিকে ছুটতাম, তোমাকে কেন্দ্র করে ঘুরতাম না।

31/03/2024

ঘটনা হচ্ছে বাবুকে গোসল করাতে গিয়ে ওর পাপা একটু বকে দিয়েছিল। ছেলে তারপর থেকে আর তার পাপার সাথে কথা বলে না। তো চৌধুরী ভেবেছে আহামরি কিছু না। ৫ মিনিট পরেই তার বুকে ঝাপায় পরবে কিন্তু আজ তা হয়নি। বাপকে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে ছেলে তো আর তার সাথে কথা বলে না। সময় যায় কিন্তু ছেলে তো তার সাথে কথা বলেই না। ছেলের বাপ বুঝতে পারলো ছেলে সত্যি সত্যি কঠিন রাগ করেছে। বুঝতে পেরেই ছেলের বাপ আমার স্মরণাপন্ন হয়। আমি কিচেনে রান্না করছিলাম। গিয়ে মুখ কালো করে বলতেছে, "আবরার আমার সাথে কথা বলে না। ওকে আমার সাথে কথা বলতে বলো।"
আমি আমার মস্তিষ্ককে নাড়া দিয়ে বললাম, "৫০০ টাকা দাও আমি মিটমাট করায় দিচ্ছি।"
আমার কথা শুনে ছেলের বাপ উল্টা হাটা দিলো। তা দেখে আমি পিছন ডাকলামও বলতে আচ্ছা যাও ১০০ কম দিও নাহয়। কিন্তু সে শুনলো না। মনে মনে তো আমি ১০০ দিলেও কাজটা করে দিতাম। যাক গিয়ে। কয়েক সেকেন্ডের মাথায় সে সত্যি সত্যি ৫০০ নিয়ে হাজির। আমাকে আর কে পায়! আমি ল্যাপ আর ছ্যাপ দিয়ে টাকা গুনে পেকেটে নিয়ে ঘরে এলাম। ছেলেকে শুধু বললাম, "পাপার মনে কষ্ট, আমাকে কাদু করে বলছে আবরার কথা বলে না। থাক পাপা আর ভুল করবে না। ইটস ওকে বলে একটা চুমু দিয়ে মাফ কুই দাও।" ছেলে এক লাফে বাপের কোলে। আহা আমার ৫০০ টাকা হালাল হয়ে গেল।
ছেলেকে বললাম ২ দিন পরপর এভাবেই রাগ কইরো বাবা তাহলে আমি মালামাল হয়ে যাবো।☺️


ইতি চৌধুরী

28/03/2024

দীর্ঘ সাত বছর পর টিএসসির মোড়ে দুই প্রাক্তনের হঠাৎ দেখা -

- 'আমাকে দেখে অবাক হওনি?'

শামীম স্বাভাবিক ভঙ্গিতে মুচকি হেসে উত্তর দেয়,
- 'হয়েছি তবে তোমাকে দেখে নয়, তোমার লম্বা চুলগুলোকে দেখে।'

রুমকি হয়তো খানিকটা ইতস্ততবোধ করে বলে,
- 'আসলে ওর লম্বা চুলই পছন্দ। তাই এখন আর আগের মত তিনমাস অন্তর অন্তর নতুন নতুন হেয়ার কাট দিই না৷'

- 'আচ্ছা ভালো তো। তারপর বলো কেমন আছো?'

- 'যেরকম থাকার কথা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি, সেরকম আছি।'

রুমকি একটু থেমে আবার বলতে শুরু করে,
- 'বাবার কথামতো বিয়েতে রাজি হয়ে যাওয়ার পর মনে মনে ভীষণ ভয় পাচ্ছিলাম। মনে হচ্ছিলো আমি সুখী হতে পারবো না। তোমাকে ছাড়া ভালো থাকতে পারবো না। কিন্তু বিয়ের পর আর এক মূহুর্তের জন্যেও এমন ভয় বা শঙ্কা কাজ করেনি কখনো।

কপালগুণে অসম্ভব ভালো একজন মানুষ পেয়েছি আমি। তার কথা বলতে গেলে সময় ফুরিয়ে যাবে কিন্তু কথা ফুরাবে না, বুঝলে?'

শেষ কথাটা বলতে গিয়ে রুমকির ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি ফুটে ওঠে। শামীম স্থির দৃষ্টি নিয়ে সেই হাসির দিকে তাকিয়ে থাকে।

- 'কি হল? এভাবে কি দেখছো?'

- 'দেখছি তোমার সরলতাকে। এমন করে অবলীলায় কেউ তার প্রাক্তনের সামনে নিজের হাজবেন্ডের গুণগান করতে পারে বলে জানা ছিল না।'

- 'ওমা! এ আবার কেমন কথা! যা সত্যি তা বলবো না? এটা কি কোনো নাটক সিনেমা নাকি যে প্রাক্তনের সামনে সবসময় দুঃখী দুঃখী চেহারা নিয়ে উদাসী হয়ে নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে!'

- 'তা অবশ্য ঠিক বলেছো।'

- 'তুমি কেমন আছো?'

- 'যেমনটা আশা করেছিলাম তেমনই আছি।'

শামীমও একটু থেমে আবার বলতে শুরু করে,
- 'তুমি চলে যাওয়ার পর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম একজন সঠিক মানুষের জন্য। যে আমাকে তোমার দেয়া দুঃখগুলো ভুলিয়ে দেবে। আমার সকল দূর্বলতাকে মেনে নিয়ে শক্ত হাতে আমাকে সামলে নেবে।

আর আমাকে তোমার থেকেও অনেক অনেক বেশি ভালোবাসবে। ভাগ্যগুণে পেয়েও গেলাম সেই সঠিক মানুষটাকে। হ্যাঁ, সে খানিকটা দেরি করেই আমার জীবনে এসেছে কিন্তু তবুও এসেছে তো! অনেকে তো সময়ের আগে চলে এসে আবার সময়ের আগেই চলে যায়।'

শেষ কথাটা যে রুমকিকে উদ্দেশ্য করে বলা, তা রুমকি ভালো করেই বুঝতে পেরেছে। কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। বরং কৌশলে প্রসঙ্গ পাল্টে ফেলে,

- 'তা এখানে কেন এসেছিলে? কোনো দরকারে নাকি এমনিই?'

- 'বেলী ফুলের মালা কিনতে এসেছিলাম। বউয়ের হুকুম প্রতিদিন অফিস থেকে ফেরার সময় তার জন্য একটা করে বেলীফুলের মালা নিয়ে যেতে হবে। বিয়ের পর থেকে এভাবেই চলছে আর কি।'

- 'ও আচ্ছা। কিনেছো বেলী ফুলের মালা?'

- 'না। যে বাচ্চা মেয়েটা মালা বিক্রি করে, আজ ওকে দেখতে পাচ্ছি না। দেখি অন্য কোথাও পাই কিনা। বাই দ্যা ওয়ে, তুমি কেন এসেছিলে?'

- 'মাল্টা চা খেতে এসেছিলাম।'

- 'একা একা?'

- 'আরে না। ভেবেছিলাম এখানে এসে ওকে কল করে বলবো অফিস থেকে ছুটি নিয়ে চলে আসতে। প্রায়ই করি এমন। কিন্তু আজ তো তোমার সাথে কথা বলতে বলতে দেরি হয়ে গেল।'

- 'হ্যাঁ আমারও দেরি হয়ে যাচ্ছে। অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বের হলাম যেন জলদি বাসায় ফিরতে পারি। তা আর হল কই! আরো দেরি করলে জ্যামে পড়তে হবে নিশ্চিত৷'

খানিকক্ষণের মধ্যে একে অপরের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যে যার পথে হাঁটা শুরু করলো।


বাসায় ফিরে ফ্রেশ না হয়েই শামীম দুটো বেলী ফুলের মালা তার বউয়ের দিকে এগিয়ে দিতেই চোখমুখ কুঁচকে বউ তার দিকে তাকালো,

- 'তোমাকে না কতদিন বলেছি এসব ঢং আমার ভালো লাগে না? তাও মানতাম যদি এই সস্তা মালার বদলে দামী কিছু আনতে।'

শামীম কোনো প্রতিউত্তর না করে শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। তারপর ফ্রেশ হতে চলে যায়। ওয়াশরুম থেকে সে তার বউয়ের গলা শুনতে পায়। গলা উঁচিয়ে বউ তাকে উদ্দেশ্য করে বলছে,

- 'অনলাইনে একটা কমদামী শাড়ি অর্ডার করেছি। ৪০০০টাকা কাল অফিসে যাওয়ার আগে রেখে যেও। আমি মায়ের বাসায় যাচ্ছি। রাতে ওখানেই থাকবো। আর শুনো রান্না করার সময় একটু সাবধানে কাজ করো৷ গতবার রান্নাঘরের বারোটা বাজিয়ে রেখেছিলে। সেগুলো পরিষ্কার করানোর জন্য বুয়াকে বাড়তি ৫০০টাকা দিতে হয়েছে। মেকআপ কেনার বাজেটে টান পরেছিলো পরে।'

শামীম বেসিনের আয়নার দিকে তাকিয়ে অন্যান্য দিনের মত আজও রুমকির সাথে মনে মনে কথা বলা শুরু করে দেয়, ‘তুমি আমাকে আজও বুঝতে পারলে না রুমকি! চোখের মিথ্যে অভিনয় ধরতে পারলে না! টিএসসির মোড়ে আমি কখনো বেলী ফুলের মালা কিনতে যাই না, যাই তোমার স্মৃতিচারণ করতে।’


ড্রেসিংটেবিলের আয়নার সামনে বসে একমনে আয়নায় নিজেকে দেখছে রুমকি। পিঠ সমান চুলগুলো সামনে এনে কাঁধের একপাশে ছড়িয়ে রেখে ভাবছে, ‘নতুন নতুন হেয়ার কাট দেয়ার মতো মানসিক বা আর্থিক সুখ কোনোটাই যে নেই এখন আমার। অথচ তুমি বুঝতে পারলেই না আমি আসলে ঠিক কতখানি সুখী। সে আমার লম্বা চুল পছন্দ করে ঠিকই কিন্তু ভালোবেসে নয়, বরং প্রতিরাতে মাতাল হয়ে এসে যেন আমার চুলের মুঠিটা আয়েশ করে ধরতে পারে সেজন্য।

টিএসসির মোড়ে গিয়ে আমি কখনোই ওকে কল দিয়ে অফিস থেকে চলে আসতে বলি না একসাথে মাল্টা চা খাওয়ার জন্য। বরং মনে মনে প্রার্থনা করি, সে যেন ঘুণাক্ষরেও টের না পায় যে আমি আমার প্রাক্তনের স্মৃতিচারণ করতে এখানে আসি। বরাবরের মতো আজও আমাকে অন্ধের মত বিশ্বাস করে গেলে শামীম!’

গল্প:কথোপোকথন

আম্মা এসে কানের কাছে ফিসফিস করে বললো, জামাই চিল্লায় কেন? আমারে ফোন দিয়ে ডেকে নিয়ে আসছে। বলছে, "আম্মা আপনার কাছে বিচার...
24/03/2024

আম্মা এসে কানের কাছে ফিসফিস করে বললো, জামাই চিল্লায় কেন? আমারে ফোন দিয়ে ডেকে নিয়ে আসছে। বলছে, "আম্মা আপনার কাছে বিচার আছে!" হ‌ইছে কি? কি করছিস?

আমি তখন বাম পায়ের ওপর ডান পা তুলে দিয়ে আম্মার আনা বর‌ইয়ের আচার খাচ্ছি আর একটা জটিল থ্রিলার উপন্যাস পড়ছি। এরমাঝে এহেন প্রশ্নে বিরক্ত হয়ে বললাম, আম্মা পাঁচ মিনিট! খুনী এখন‌ই ধরা পড়বে!

আম্মা চোখ বড় বড় করে বললো, কার খুনী?

আমি কথা না বাড়িয়ে হাতের ব‌ইটা দেখালাম। আম্মা মাথা নেড়ে চিন্তিত ভঙ্গিতে বসে র‌ইলো।

ঘটনা খুব‌ই সামান্য। আমি প্রচুর অলস। নড়তে চড়তে একেবারেই ভালো লাগে না। বিয়ের আগে আমার জামাই সেটা জানতো না। নতুন নতুন বিয়ের পর মেয়েরা অতি আগ্রহে ঘরদোর গোছায়, ঘরের কাজকর্ম করে। সব জিনিস দেখিয়ে দেখিয়ে নিজের বলে জাহির করে। যেমন, "এটা আমার ঘর, ঐটা আমার রান্নাঘর, আমার ফুলের টবে পানি দিতে হবে,আমার ছাদটা খুব সুন্দর,আমার ডাইনিং টেবিলটা নড়বড় করছে" ইত্যাদি। কিন্তু আমি সেরকম কিছু করছি না। অতো আগ্রহ আমার নাই। আমার জীবনের একটাই লক্ষ্য বিনা পরিশ্রমে বিনা ঝামেলায় জীবনটা পার করে দেয়া।

সারাদিন আমি বিছানায় নাহয় সোফায় বসে থাকি। বাইরে থেকে ঘরে ঢোকার দরজাটা ড্রয়িংরুম দিয়ে। বারবার বেল বাজে,উঠে গিয়ে দরজা খুলতে হয় এজন্য আমি ভালো একটা আইডিয়া বের করেছি। লম্বা একটা বাঁশের সাথে দরজার ছিটকিনি এমনভাবে বেঁধেছি যাতে দড়ি ধরে ঝাঁকি দিলেই দরজা খুলে যায়।

আমার এহেন বিরক্তিকর কর্মকান্ড আমার জামাই শাহেদের পছন্দ হচ্ছে না। সে গত পরশু বিরক্ত গলায় বলেছে, তুমি আমাকে কিজন্য বিয়ে করেছো বলবা?

আমি হাই তুলতে তুলতে বললাম, ভ্যালিড রিজন আছে। কিন্তু তোমার শুনে ভালো লাগবেনা।

শাহেদ চোখমুখ শক্ত করে বললো, ভালো না লাগলেও শুনতে চাই।

আমি বললাম, তোমাকে বিয়ে করেছি যাতে কম্বলের ভেতর আরাম করে শুয়ে পড়ার পর লাইট বন্ধ করার জন্য উঠতে না হয়। বা ধরো হেডফোনটা আমার থেকে কয়েক হাত দূরে,সেটা তুমি পাস করতে পারো। তারপর ধরো বিছানায় শুয়ে দেখছি ব‌ইটা টেবিলে,তুমি এনে দিতে পারো।

কথাগুলো শুনে শাহেদ যে দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালো তাতে আমি শিওর যে, সে যদি কোন সাধু সন্ন্যাসীর কাছ থেকে দীক্ষা নেয় তাহলে ঐ দৃষ্টি দিয়ে চাইলে আমাকে ভষ্ম করে দিতে পারবে।

যাইহোক, আজ শাহেদ রেগেমেগে আমার আম্মাকে ফোন দিয়েছে কারণ তার ধারণা আমি অশান্তির চুড়ান্ত করেছি। কিন্তু আমার মনে হয় না আমি কোন অশান্তি সৃষ্টি করেছি। অশান্তি করতে যতটা এনার্জি খরচ করতে হয় ততটা আমি কখনোই করবোনা!

আজ আমি যেটা করেছি তা হচ্ছে শাহেদকে ফোন দিয়েছি। সে তখন অফিসে একটা জরুরি মিটিংয়ে ব্যস্ত। ফোন ধরেই বলেছে, কি বলবা তাড়াতাড়ি বলো!

আমি আতঙ্কিত গলা করে বললাম, প্লিজ বাসায় আসো, প্লিজ খুব দরকার!

বাসায় আমি ছাড়া কেউ নাই। কাজের মেয়েটা এই টাইমে স্কুলে থাকে। স্কুল শেষে বাসায় এসে রান্নাবান্না করে। শাহেদের বোধহয় ধারণা হলো আমার কোন সমস্যা হয়েছে। হঠাৎ শরীর খারাপ হয়েছে বা এই জাতীয় কিছু। সে এক দৌড়ে অফিস থেকে বের হলো। পথের মধ্যে ফোন দিয়ে এম্বুলেন্স‌ও ডেকে ফেললো। তার পরিচিত হাসপাতালে ফোন দিয়ে বললো, ইমার্জেন্সি হতে পারে কেবিন রেডি রাখেন‌। পুরো কাজটা সে করলো দশ মিনিটের মাথায়। বারো মিনিট নাগাদ বাসায় পৌছে গেল।

শাহেদের কাছে চাবি থাকে। ট্যাক্সি থেকে নেমে দৌড়াতে দৌড়াতে হুড়মুড় করে ঘরে এসে ঢুকতেই আমি হাই তুলতে তুলতে বললাম,"এসির রিমোটটা পাচ্ছি না, ঠান্ডা বেশী হয়ে গেছে। একটু বাড়িয়ে দিয়ে যাবা প্লিজ?"

শাহেদ তাকিয়ে আছে। কিন্তু আমি চোখ বন্ধ করে আছি তাই তার কঠিন দৃষ্টি দেখতে পাচ্ছি না। এমন সময় এম্বুলেন্সের সাইরেন শুনে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম, ভালোই হয়েছে এম্বুলেন্স খবর দিয়েছো। আমার একটু দর্জির কাছে যাওয়া দরকার জামা বানাতে দিবো। এম্বুলেন্সে শুয়ে শুয়ে যাওয়া যাবে না?

শাহেদ জবাব না দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে গেল। সন্ধ্যার সময় হাজির হলো আমার আম্মা। এই হলো ঘটনা।

শাহেদ বাসায় এসেছে। আম্মার সাথে জরুরী মিটিংয়ে বসেছে। আমারো ডাক পড়েছে সেখানে। আমি বিছানা থেকে দুইটা কুশন বালিশ নিয়ে সোফায় হেলান দিয়ে আরাম করে বসে দেখি দুজনেই আমার দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে।

আম্মাই প্রথম কথা বললেন, তুই কি সংসার করতে চাস না? না চাইলে বলে দে!

আমি অবাক হয়ে বললাম, সংসার করতে না চাওয়ার কি আছে বুঝলাম না! শাহেদের বাড়িঘরে যথেষ্ট‌ই আরাম। বিছানার গদি নরম,ডিভানগুলা আরামদায়ক। বাথরুম‌ও সুন্দর, ওয়াইফাইয়ের সুব্যবস্থা! অনেকক্ষণ বসে বসে ফোন চালানো যায়।

আম্মা ধমক দিতে গিয়েও দিলেন না। আমাকে তিনি কখনো ধমক দেন না। অসহায় চোখে শাহেদের দিকে তাকিয়ে বললেন, বাবা আমি এখন কি করবো তুমি বলে দাও! তুমি কি এই মেয়েরে তালাক দিতে চাও? যদি দিতে চাও তাও তোমার দোষ দিতে পারবোনা আমি! দোষ তোমার না,দোষ আমার কপালের। ও পেটে থাকতে খালি শুয়ে বসে আরাম করতাম, বাথরুমে যাবার জন্য উঠলেও পেটের মধ্যে লাথি দিতো এই মেয়ে! জন্মের পর কান্দে না। ডাক্তার উল্টা করে পিঠে থাবা দিতেই বিরক্ত হয়ে সামান্য একটু শব্দ করেই থেমে গেল। এমন আইলসার আইলসা মেয়ে নিয়ে আমি কোথায় যাই!....

আম্মা কাঁদতে শুরু করলো। শাহেদ আম্মার হাত ধরে বললো, আম্মা কাঁদবেন না। আপনার মেয়েটা অলস হতে পারে, কিন্তু ওকে আমি খুব ভালোবাসি। ওকে আমি কখনোই ছাড়বো না। প্রয়োজনে দশটা কাজের লোক রেখে দিবো কি আর করা! আপনার মেয়ে তো নড়ে খাবেনা!

পাঁচ বছর পরের কথা। আমার একটা মেয়ে হয়েছে। বলাই বাহুল্য মেয়েটাও আমার মতোই কুঁড়ে। কথায় আছে অলস মস্তিস্ক শয়তানের আখড়া। এখন আমি একটা নতুন খেলা আবিষ্কার করেছি। মেয়ের সাথে কখনো বাংলা ভাষায় কথা বলি না। ইনফ্যাক্ট কোন ভাষায়‌ই কথা বলি না‌। আমি শুধু তার সামনে একটাই শব্দ উচ্চারণ করি সেটা হচ্ছে, 'হাম্বা'। হ্যাঁ! গরুর ডাকের হাম্বার কথাই বলছি। রিসেন্ট একটা ব‌ইয়ে পড়েছি, বাচ্চারা শুনে শুনে যা শেখে সেই ভাষাতেই কথা বলে। তাই হাতে কলমে এক্সপেরিমেন্ট করে দেখছি ব্যাপারটা সত্যি কিনা।

শাহেদ এই ব্যাপারটা জানে না।‌ তার এখন প্রমোশন হয়েছে। প্রায় সারাদিন‌ই অফিসের কাজে বিজি থাকে। কয়দিন পরপর এখানে ওখানে ট্যুরে যায়। তাই প্রথমবারে সে যখন সুইজারল্যান্ড থেকে ফিরে মেয়ের হাতে একটা খেলনা হাতি ধরিয়ে দিয়ে বললো, আম্মু বলোতো এইটা কি?

মেয়ে বললো, হাম্বা।

শাহেদ হেসে উঠে বললো, না মা! এটা হাম্বা না। এটা হচ্ছে হাতি..হা...তি.. এলিফ্যান্ট!

মেয়ে আবারো গম্ভীর গলায় বললো, হাম্বা।

শাহেদ হতাশ হয়ে মাথা নাড়তে নাড়তে বললো, আচ্ছা ঠিক আছে। তোমার আম্মুকে ডাক দাও। আম্মু ক‌ই?

মেয়ে আবার বললো, হাম্বা!

শাহেদের এবার একটু সন্দেহ হতেই মেয়ের হাত ধরে বললো, আম্মু বলোতো তোমার নাম কি?

-হাম্বা!

শাহেদ একটা পানির গ্লাস দেখিয়ে বললো, এটা কি?

-হাম্বা!

শাহেদ আতঙ্কিত গলায় চাপা চিৎকার দিলো, ও আল্লাহ!

মেয়ে গম্ভীর গলায় আবার বললো, হাম্বা!

আমার আম্মা আবার এসেছে। আমার হাম্বা এক্সপেরিমেন্টের ব্যাপারটা জানাজানি হয়েছে। যে ব‌ই থেকে এই ব্যাপারটা শিখেছি যে 'বাচ্চারা যা শোনে তাই শেখে' সেই ব‌ইটা শাহেদ চুলার ভেতরে দিয়ে পুড়াইছে।

আম্মা আমার দিকে তাকিয়ে হাহাকারের গলায় বললো, তোরে নিয়ে আমি কি করবো! এই দুনিয়াতে নিজের মেয়েরেই পাইলি তুই এই এক্সপেরিমেন্ট করার জন্যে!

আমি মাথা নিচু করে বসে র‌ইলাম। শাহেদ মাথায় হাত দিয়ে বসে র‌ইলো।

কিন্তু যা হয়ে গেছে তাকে আর কে বদলাতে পারে। সন্ধ্যার সময় আজকাল শাহেদ অফিস থেকে আসে। আমি আর আমার মেয়ে কম্বলের ভেতর আরাম করে বসে থাকি। আমি ব‌ই পড়ি,মেয়ে চকলেট খেতে খেতে শাহেদকে দেখে খুশীতে অস্ফুট আওয়াজ করে, হাম্বা!

বলেই চুপ করে যায়। বাবার দিকে ছুটে যায় না। আফটার অল আমার মেয়ে, অকারণ দৌড়াদৌড়ি করে এনার্জি লস করবে বলে ভাবাও ঠিক না।

Address

Muktagachha

Telephone

+8801922737772

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Romantic Love Story-রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Romantic Love Story-রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প:

Share

Category