13/08/2025
মুন্সিগঞ্জে আন্তজেলা ইজিবাইক ছিনতাইকারী চক্রের ০৭ সদস্য গ্রেফতার ও ৮ টি চোরাই ইজিবাইক উদ্ধার।
রাসেল মাহমুদ :
মুন্সিগঞ্জে চেতনানাশক ব্যবহার করে হত্যা বা অজ্ঞান করে আন্তজেলা ইজিবাইক ছিনতাইকারী চক্রের ০৭ সদস্য গ্রেফতার ও ০৮ টি ইজিবাইক উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার তার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই চক্রটিকে গ্রেফতার ও ইজিবাইক উদ্ধার সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি এসময় বলেন,
তারা সাধারণত যাত্রীবেশে ইজিবাইকে চড়ে বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন অজুহাতে ঘুরিয়ে সময়ক্ষেপন করে অথবা আইন-শৃঙ্খলা বাহীনির সদস্যর পরিচয় দিয়ে সুবিধামতো জায়গায় নিয়ে নিজেরা খাওয়া-দাওয়া করে এবং কৌশলে ইজিবাইক চালককে বিষ মাখানো বিস্কুট, কোল্ড ড্রিংস, পানি খাইয়ে অজ্ঞান করে। চালক খেতে রাজি না হলে তাকে মারপিট করে এমনকি হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ছিনতাইয়ের পর পরই তারা তাদের চক্রের অন্য সদস্যদের গ্যারেজে নিয়ে ইজিবাইকটির চ্যাসিস থেকে বডিটি আলাদা করে ফেলে এবং বডির রং পরিবর্তন করে ফেলে যাতে উক্ত ইজিবাইকটি আর সনাক্ত করা না যায়। এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
দীর্ঘদিন যাবৎ আন্তঃজেলা ইজিবাইক ছিনতাইকারী একটি চক্র যাত্রীবেশে মুন্সিগঞ্জ জেলাসহ আশপাশের জেলায় চেতনানাশক ব্যবহার করে ইজিবাইক চালককে হত্যা/অজ্ঞান করে ইজিবাইক ছিনতাই করে আসছিল। তাদেরকে গ্রেফতার করার জন্য মুন্সিগঞ্জ জেলা পুলিশ সর্বদা তৎপর ছিল। গত ২ আগষ্ট সকালে অনুমান সিরাজদিখান থানাধীন নোয়াপাড়া এলাকা হতে এই চক্রের ৩ সদস্য আলম শেখ নামক একজন ইজিবাইক চালককে বিস্কুটের সহিত বিষ মিশিয়ে খাইয়ে তাকে অজ্ঞান করে তার ইজিবাইকটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। বিষয়টি অবগত হওয়ার পর পুলিশ সুপারের দিক নির্দেশনায় মুন্সিগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম তাদের সনাক্ত করতে কাজ শুরু করে।এবং রবিবার উল্লিখিত ইজিবাইক চালকের সনাক্ত মতে শ্রীনগরের পাটাভোগ এলাকার ফেরীঘাট আন্ডারপাসের নিচ থেকে চোর চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করে তারা হচ্ছে ১। রুবেল আব্দুল্লাহ (৩২), পিতা- কালো মিয়া, ধোলাইপাড়, থানা-শ্যামপুর, ডিএমপি, ঢাকা, ২। মো: জামাল হোসেন (৪০), পিতা- মৃত রুস্তম আলী, আগলাদরগা বাড়ি, থানা- নবাবগঞ্জ, জেলা- ঢাকা, ৩। ইমরান হোসেন মোফাজ্জল (৪৫), পিতা- নোয়াব আলী, আওরঙ্গবাদ, থানা- দোহার, জেলা- ঢাকা। এ সময় এসআই কামরুল হাসান তাদের দেহ তল্লাশী করে রুবেলআব্দুল্লাহ্ এর ডান হাতে একটি ছোট শপিং ব্যাগে রক্ষিত এক প্যাকেট চকলেট ডাইজেস্টিক বিস্কুট ও মাইক্রোনেক্স ওয়্যারলেস সেটসহ আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে যে, ইজিবাইক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তারা চেতনানাশক মাখানো বিস্কুটসহ উক্ত স্থানে অবস্থান করতেছিল। এরপর তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাদের অন্যান্য সহযোগী ৪। মো: হৃদয় শেখ (২৫), পিতা- ইউসুফ শেখ, দেউলভোগ, ৫। পলাশ পাঠান (৩৫), পিতা- সাইফ পাঠান, ভাগ্যকুল মান্দ্রা, ৬। মো: বিধান (৪৭), পিতা- মৃত নুরুল ইসলাম, মাতা- জয়নদ বেগম, সাং- কামারগাঁও সর্ব থানা- শ্রীনগর, জেলা- মুন্সিগঞ্জ দেরকে তাদের নিজ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের হেফাজত থেকে ভিকটিম আলম শেখের ছিনতাইকৃত ইজিবাইকসহ আরো একটি ছিনতাইকৃত ইজিবাইক এবং ০২ টি ইজিবাইকের চেসিস উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী পূর্বের বিভিন্ন সময়ে ছিনতাইকৃত ইজিবাইকসমূহ বিক্রয়ের স্থান ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ এলাকার একটি গ্যারেজ হতে ০৪ টি অটোরিক্সা উদ্ধার করা হয় এবং গ্যারেজ মালিক ৭। মো: সুমন (৩৮), পিতা- মো: ইউনুস খলিফা, রামেরকান্দা, থানা- কেরাণীগঞ্জ মডেল, জেলা- ঢাকাকে গ্রেফতার করা হয়। চেসিস সহ মোট ০৮ টি ইজিবাইক উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় ইজিবাইক চালককে হত্যা ও আহত করে ইজিবাইক ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে।