20/11/2022
ইউরোপীয়দের দস্যুপনার অতীত অধ্যায়
••••••••
আজ থেকে ৪০০ বছর আগে আমাদের এই সবুজ বাংলাসহ মোগল শাসিত ভারত উপমহাদেশ ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশ। বৃটিশসহ ইউরোপের অন্যান্য লোকজন তখন ব্যবসা ও কাজের সন্ধানে দেশেদেশে ঘুরতো ও সুযোগ পেলে দস্যুবৃত্তি করতো এবং দুর্বল কোনো দেশ পেলে সেটি দখল করে নিতো।
এই ইউরোপীয়রা উঁচু ভবন ও ব্রিজ বানানো শিখেছে ভোগবিলাসী মুসলমানদের কাছ থেকে। ছবিতে যে সেতু দেখা যাচ্ছে, সেটি মোগল আমলে তৈরি মুন্সীগঞ্জের মীরকাদিম সেতু।
মোগল সম্রাট শাহজাহান যখন ১৬৩২ সালে তাজমহলের মত স্থাপনা বানাচ্ছিল, তখন জ্ঞান-বিজ্ঞান, অর্থনীতি ও সামরিক শক্তিতে ইউরোপীয় দস্যুরা মুসলমানদের চেয়ে অনেক পশ্চাদপদ ছিল।
সম্রাট শাহজাহানের মত শাসকরা যদি ইসলামের প্রচার-প্রসার ছেড়ে স্বর্গীয় প্রাসাদ, সোনায় মোড়ানো ময়ূর সিংহাসন, তাজমহলের মত অতি বিলাসী মাজার ও পৃথিবীর সবচেয়ে উচুঁ তোরণ নির্মাণের মত অপচয়মূলক কাজে মনযোগ না দিতো, তাহলে আমাদের ভারত উপমহাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ও ধনী দেশ হিসেবে আজও ঠিকে থাকতো। সর্বশেষ মোগল সম্রাট বাহাদুরশাহ জাফরের বংশধররকে আজ রেঙ্গুনে মানেবতর জীবন যাপন করতে হতো না।
-
মূলত মোগলদের অর্থনৈতিক পতন শুরু হয়েছিল ভবন বিলাসী সম্রাট শাহজাহানের আমলে। স্ত্রী আরজুমান্দ বানু বেগম ওরফে মুমতাজ মহলের কবরের উপর নির্মিত #তাজমহল নামের বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে ব্যয়বহুল মাজারটির নির্মাণের পর তার কোষাগার দুর্বল হয়ে পড়েছিল। কিন্তু তারপরও একের পর এক বিলাসী ভবন নির্মাণ অব্যাহত রাখে। অবস্থা বেগতিক দেখে তখন তার বুদ্ধিমান ছেলে আলমগীর ওরফে আওরঙ্গজেব তাকে ক্ষমতাচ্যুৎ করে গৃহবন্দী করেন এবং দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নেবার চেষ্টা করেন। তাঁর উদ্যোগেই ইসলামী আইন শাস্ত্রের বিখ্যাত গ্রন্থ ফতোয়ায়ে আলমগীরি রচিত হয়েছিল।
-
কিন্তু তাঁর পঞ্চাশ বছরের সুশাসন (১৬৫৮-১৭০৭) শেষে সম্রাট শাহজাহানের পাপের ভার আবারো এসে ক্লান্ত করে দেয় মোগল শাসকদেরকে। অর্থনৈতিক মন্দার কারণে নবম মুঘল সম্রাট ফররুখ সিয়ার ১৭১৭ সালে একটি ফরমানের মাধ্যমে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে শুল্ক ছাড়া বাংলায় বাণিজ্য করার অনুমতি দেন।
এরপরের ইতিহাস সিরাজদ্দৌলার পলাশী, ফকির বিদ্রোহ, তিতুমীরের বাঁশেরকেল্লা, হাজী শরীয়তুল্লাহর ফরাজী আন্দোলন ও ১৮৫৭ সালের দিল্লীর সিপাহী বিদ্রোহ হয়ে অনেক দূর এগিয়েছে।
মূলত বৃটেন ও ফ্রান্সসহ আজকের ইউরোপীয়রা তথাকথিত ধনী হয়েছে ভারত উপমহাদেশ ও আফ্রিকার সম্পদ লুণ্ঠন করে। ওদের অতীত ইতিহাস কয়লার মত কালো। প্রতারণা ও নিষ্ঠুরতার মাধ্যমে আফ্রিকা ও এশিয়ার মানুষকে তাদের গোলাম বানিয়ে রাখার দস্যুগিরীতে পূর্ণ। ছলেবলে ও কৌশলে উসমানী সলতনত ধ্বংস করে ফিলিস্তিনকে জায়নিস্টদের হাতে তুলে দেবার অমানবিকতায় ঠাসা।
কিন্তু নির্বোধ মুসলমানরা তা নিয়ে ভাবার সময় পায় না। অন্যদিকে মুনাফিক মুসলমানরা এসব অর্ধোলঙ্গ অশ্লীল দস্যুদেরকে নিজেদের প্রভু বানিয়ে নিয়েছে অনেক আগেই। যেকারণে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মুসলিম দেশগুলো এখনো শাসিত হয় বৃটিশ কলোনি আইনে। ইসলামী শাসন, শিক্ষা ও বিচার ব্যবস্থাকে এখানে মোল্লাতন্ত্র বলে বিদ্রূপ করা হয়।
আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন চাই, নিজেদের দীন ও ঈমান নিয়ে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াতে চাই। নো ইস্ট, নো ওয়েস্ট, ইসলামই বেস্ট। আমরা মুহাম্মদে আরবী (স.) এর অনুসারী।