18/10/2025
চরম অন্তর্কোন্দলঃ মনোনয়ন ঘিরে আনোয়ারা-কর্নফুলী বিএনপিতে চরম উত্তেজনা!
প্রিয় আনোয়ারা বিশ্লেষণী প্রতিবেদনঃ
চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়নকে ঘিরে স্থানীয় রাজনীতিতে চরম অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের অন্তত ৬ টি গ্রুপ মাঠে সক্রিয় হয়ে পড়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ও বিভাজন তীব্র হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দলীয় নেতা-কর্মীদের বাকযুদ্ধ ও আক্রমনাত্মক আচরণের মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে এই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের চিত্র। অনেকেই অভিযোগ করছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন প্রচারণার আড়ালে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে চলছে নিজস্ব বলয় তৈরির প্রতিযোগিতা।
আনোয়ারা-কর্ণফুলী তথা চট্টগ্রাম-১৩ আসনে অন্তত আধা ডজন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে সরব রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন, সাবেক সংসদ সদস্য সরোয়ার জামাল নিজাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. হেলাল উদ্দিন, বিএনপি নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি শাহজাহান।
স্থানীয় সূত্র ও একাধিক দলীয় নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মনোনয়নপ্রত্যাশী হেলাল উদ্দিন ও সরোয়ার জামাল নিজামের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের। সাম্প্রতিক সময়ে আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলায় দলীয় কর্মীদের মধ্যে বেশ কয়েক দফা হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনাও ঘটেছে। সরোয়ার জামাল নিজাম অভিযোগ করেছেন, তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলার পেছনে প্রতিদ্বন্দ্বী হেলাল উদ্দীনের নেতা-কর্মীরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। অন্যদিকে, পর্যবেক্ষকরা বলছেন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হেলাল উদ্দিন নিজের প্রভাব বাড়াতে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিতে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের স্থান দিচ্ছেন এমন অভিযোগও উঠেছে। স্থানীয় কিছু নেতার দাবি, হেলাল উদ্দিন ও নেতৃত্বাধীন কিছু নেতা-কর্মী 'চাঁদাবাজি ও অনৈতিক তৎপরতায়' জড়িত। তবে এ অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।
অন্যদিকে, কিছু বিএনপি নেতা মনে করেন, গত কয়েক বছরের আন্দোলন-সংগ্রামে সরোয়ার জামাল নিজাম খুব একটা সক্রিয় ছিলেন না। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সময়ে তাঁর নীরবতা নিয়ে সমালোচনাও রয়েছে। ফলে মাঠপর্যায়ে তাঁর সমর্থক বলয়েও হতাশা দেখা দিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে এখন আনোয়ারা-কর্ণফুলী অঞ্চলে বিএনপির কার্যক্রমই সবচেয়ে দৃশ্যমান। তবে এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল নির্বাচনী মাঠে তাদের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। একাধিক প্রার্থী ও বিভক্ত কর্মীসংগঠন নিয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রচার গড়া এখন দলের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
প্রশ্ন উঠেছে দলীয় বিভাজন ও পারস্পরিক অবিশ্বাসের এই পরিবেশে চট্টগ্রাম-১৩ আসনে বিএনপি কীভাবে তাদের নির্বাচনী বৈতরণী পার করবে?