24/09/2023
“আকিদা"
আকিদা বিষয়ক ৫০টি প্রশ্নোত্তর ও আকিদার সারকথা
ইমাম ইবনে আবী যায়দ আল কায়রাওয়ানী
শাইখ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার,
সৌদি আরব।
“আকিদা বিষয়ক ৫০টি প্রশ্নোত্তর' এ যে সব বিষয় আলোচিত হয়েছে সেগুলো হল:
• মহান আল্লাহর পরিচয়
• ইসলাম এবং তার রোকন সমূহ
• ঈমান ও তার রোকন সমূহ
তাওহিদ ও তার প্রকারভেদ
শিরক ও তার প্রকারভেদ।
কুফরি ও তার প্রকারভেদ
মুনাফেকি এবং তার প্রকারভেদ
• কালিমার অর্থ এবং শর্তাবলী
• ইবাদতের পরিচয় এবং তা কবুলের শর্তাবলী
• তাগুতের পরিচয় ও তার প্রকারভেদ
ইমাম ইবনে যায়দ আল কাওয়ারানি রাহ. কর্তৃক রচিত বিশুদ্ধ আকিদার সারকথা:
পুরো নাম: আবু মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ বিন আবি যায়দ বিন আব্দুর রহমান আল কায়রাওয়ানি। জন্ম: ৩১০ হি./ ৯২২ খৃষ্টাব্দ, মৃত্যু: ৩৮৬ হিজরি/৯৯৬ খৃষ্টাব্দ। জন্মস্থান: আরব-আফ্রিকার তিউনিসিয়ার কায়রাওয়ান অঞ্চলে। তিনি একজন অত্যন্ত উঁচুমানের নির্ভরযোগ্য মুহাক্কিক আলিম ছিলেন। তাকে বলা হত, জুনিয়ার ইমাম মালিক। তার অন্যতম একটি প্রসিদ্ধ গ্রন্থ হল, আর রিসালাহ। আমাদের বক্ষ্যমাণ লেখাটি মূলত: উক্ত গ্রন্থের ভূমিকা। এখানে সম্মানিত লেখক অতি সংক্ষেপে আকিদার মৌলিক বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। আরবি ভাষায় এই ভূমিকাটির অনেক বড় বড় ব্যাখ্যা গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তন্মধ্যে অন্যতম একটি হল, বর্তমান বিশ্বে সালাফদের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি মদিনার রত্ন শাইখ আব্দুল মুহসিন আল আব্বাদ (হাফিযাহুল্লাহ) কর্তৃক ব্যাখ্যা গ্রন্থ। যার নাম:
قطف الجنى الداني شرح مقدمة رسالة ابن أبي زيد القيرواني
অত্র ভূমিকাটিতে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ বা সালাফে সালেহিনের আকিদা-বিশ্বাসের মৌলিক বিষয়গুলো অতি সংক্ষেপে আলোচিত হয়েছে। তাই বাংলাভাষী পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার বঙ্গানুবাদ পেশ করা হল। যদিও তা দলিল প্রমাণ সহকারে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের দাবী রাখে। তবে পরবর্তীতে আল্লাহ তাওফিক দান করলে এর সাথে সংক্ষিপ্ত কিছু ব্যাখ্যা যুক্ত করা হবে ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ইসলামের বিশুদ্ধ আকিদা-বিশ্বাস সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করে ইসলামের আলোকিত পথ ধরে জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
-বিনীত, আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
আকিদা ও বিশ্বাসের মূলকথা
দীনের যে সকল বিষয় অন্তরে বিশ্বাস এবং মুখে উচ্চারণ করা আবশ্যক:
➡️আল্লাহর পরিচয়:
১) এ কথা অন্তরে বিশ্বাস করার পাশাপাশি মুখে উচ্চারণ করা আবশ্যক যে, আল্লাহই একমাত্র মাবুদ। তিনি ছাড়া সত্য কোন মাবুদ নাই। তাঁর মত আর কেউ নাই। তাঁর সমকক্ষ কেউ নাই। তাঁর সন্তান নাই। পিতা-মাতা নাই। স্ত্রী নাই। কোন অংশীদার নাই।
২) তিনি প্রথম-যার কোন সূচনা নাই। তিনি শেষ-যার কোন সমাপ্তি নাই।
৩) কারও দ্বারা তাঁর গুণ-বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে সেগুলোর মর্মমূলে উপনীত হওয়া সম্ভব নয়। চিন্তা-গবেষণা করে তাঁকে পরিপূর্ণভাবে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়।
৪) গবেষকরা তাঁর নিদর্শনাবলী নিয়ে গবেষণা করে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু তাঁর স্বত্ত্বার মূল রহস্য নিয়ে চিন্তা করতে পারবে না।
ولا يحيطون بشيء من علمه إلا بما شاء وسع كرسيه السماوات والأرض ولا يتوده حفظهما وهو العلي العظيم
“তাঁর জ্ঞান সীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর কুরসি আসমান সমূহ ও জমিনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে হেফাজত করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।”। সূরা বাকারা, ২)
(৫) তিনি মহাজ্ঞানী, সুক্ষ্মদর্শী, মহাপরিচালক ও মহাশক্তির আধার। সব কিছু দেখেন ও শুনেন। তিনি সুউচ্চ ও সুমহান।
৬) তিনি সসত্ত্বায় আরশের উপরে বিরাজমান কিন্তু তাঁর জ্ঞান সর্বব্যাপী।
৭) তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এবং মানুষের মনের সকল কুমন্ত্রণা সম্পর্কে অবগত।
৮) তিনি মানুষের কণ্ঠনালীর চেয়েও সন্নিকটে আছেন।
(১) গাছ থেকে একটি পাতা পড়লেও সে সম্পর্কে তিনি জানেন। মাটির তলদেশে একটি শস্যদানা এবং তাজা বা শুষ্ক যাই হোক না কেন সবই সুস্পষ্ট গ্রন্থে সংরক্ষিত আছে।
১০) তিনি আরশে সমুন্নত। সমগ্র বিশ্বচরাচর তারই কর্তৃত্বাধীন।
১১) তিনি সুন্দর সুন্দর নাম এবং সুমহান গুণাবলীর অধিকারী। তাঁর নাম ও গুণাবলী চিরন্তন। এগুলো পরবর্তীতে নতুনভাবে সৃষ্ট নয়।
(১২) তিনি মূসা আলাইহিস সালাম এর সাথে কথা বলেছেন। এই কথা তাঁর সত্ত্বাগত বৈশিষ্ট্য; এটি তাঁর সৃষ্টির মধ্যে গণ্য নয়) (মুসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহকে দেখার আবেদন করলে) তিনি পাহাড়ের গায়ে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটিয়েছিলেন। সেই আলোর বিচ্ছুরণে পাহাড় চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়েছিলো।
১৩) কুরআন আল্লাহর বাণী। এটিও তাঁর সৃষ্টির অন্তর্গত নয় যে, তা অন্যান্য সৃষ্টির মত একদিন নি:শেষ হয়ে যাবে। কুরআনের মধ্যে সৃষ্টি জগতের এমন কোন বৈশিষ্ট্য নাই, যার কারণে তার পরিসমাপ্তি ঘটবে।
১৪) তকদীর (ভাগ্য) এর ভালো-মন্দ সব কিছুই মহান আল্লাহর পূর্বনির্ধারিত।
(১৫) সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ তাঁরই হাতে। যা কিছু ঘটে সবই তাঁর সিদ্ধান্ত মোতাবেক সংঘটিত হয়।
১৬) কোনো কিছু ঘটার আগে থেকেই তিনি সে সম্পর্কে অবগত। ফলে যা ঘটে তা তার ফয়সালা অনুযায়ী ঘটে।
১৭) বান্দার প্রতিটি কথা ও কাজ তাঁর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হয়। সবই হয় তাঁর অগ্রিম জ্ঞানের আলোকে।
الا يعلم من خلق وهو اللطيف الخبير
"যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানবেন না অথচ তিনি সুক্ষজ্ঞানী, সম্যক জ্ঞাত?"
(১৮) তিনি যাকে চান তাকে পথভ্রষ্ট করেন এবং এর দ্বারা তাকে লাঞ্ছিত করেন কিন্তু এটিও তাঁর ন্যায়পরায়ণতাই অন্তর্ভুক্ত। আবার যাকে চান তাকে সুপথ দেখান, এটি তাঁর অনুগ্রহের বহি:প্রকাশ।
১৯) মানুষ হতভাগ্য কিম্বা সৌভাগ্যবান যাই হোক না কেন- তিনি ভবিষ্যৎ জ্ঞানের আলোকে তাকে সেই নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে পরিচালিত করে থাকেন।
২০) আল্লাহর রাজ্যে আল্লাহর ইচ্ছার বাইরে কিছু সংঘটিত হয় না।
২১) সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী।
(২২) তিনি সব কিছুর স্রষ্টা। তিনি যেমন বান্দাদের সৃষ্টিকর্তা তেমনি তাদের কর্মেরও সৃষ্টিকর্তা।
২৩) তিনি বান্দাদের প্রতিটি নড়াচড়া, কার্যক্রম ও সমাপ্তি সব কিছু নির্ধারণ করে থাকেন।
➡️ নবী-রাসূল:
২৪) তিনি বান্দাদের নিকট রাসূল প্রেরণ করেছেন। যাতে এর মাধ্যমে তিনি তাদের উপর হজ্জত কায়েম করতে পারেন।
২৫) তিনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাধ্যমে নবুওয়ত এবং রিসালাতের ধারার পরিসমাপ্তি ঘটিয়েছেন। তিনি তাঁকে বানিয়েছেন শেষ রাসূল। তাঁকে সুসংবাদ দাতা, সতর্ককারী এবং তাঁরই হুকুমে আল্লাহর দিকে আহ্বানকারী এবং প্রদীপ্ত আলোকবর্তিকা হিসেবে প্রেরণ করেছেন।
২৬) তিনি তাঁর প্রতি প্রজ্ঞাময় কিতাব তথা আল কুরআন অবতীর্ণ করেছেন। তাঁর মাধ্যমে দীনের ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন আর মানবতাকে দেখিয়েছেন সিরাতে মুস্তাকীম বা সরল পথ।
➡️ কিয়ামত:
২৭) কিয়ামত সংঘটিত হবে-এতে কোন সন্দেহ নাই। তিনি সকল মৃতকে পুনরুত্থিত করবেন। যেভাবে তাদের সূচনা হয়েছিল তারা ঠিক সেরূপে পরিবর্তিত হবে।
২৮) আল্লাহ তায়ালা ইমানদার বান্দাদের নেকীগুলোকে বাড়িয়ে দিবেন। সেই সাথে বড় গুনাহগুলোকে মোচন করবেন তওবার মাধ্যমে আর ছোট গুনাহগুলোকে মোচন করবেন বড় গুনাহ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে।
২১) আর যারা বড় গুনাহ থেকে তওবা না করে মৃত্যু বরণ করবে তাদের পরিণতি আল্লাহর ইচ্ছার উপর সমর্পিত।
إن الله لا يغفر أن يشرك به وتغير ما دون ذلك لمن يشاء
“নিঃসন্দেহে আল্লাহ ঐ ব্যক্তিকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সাথে শরীক করে। আর তিনি এর চেয়ে নিম্ন পর্যায়ের পাপ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেন।” (সূরা নিসা
৩০) আল্লাহ যাকে (গুনাহের কারণে) জাহান্নামের আগুনে শাস্তি দিবেন তাকে ঈমানের কারণে জাহান্নামের আগুন থেকে উদ্ধার করে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। فَمَنۡ یَّعۡمَلۡ مِثۡقَالَ ذَرَّۃٍ خَیۡرًا یَّرَهٗ ؕঅতঃপর কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখতে পাবে।” (সূরা যিলযাল: ৭)
৩১) অনুরূপভাবে উম্মতে মুহাম্মদীর যে সব মানুষ কবীরা গুনাহের কারণে জাহান্নাম বাসী হয়েছে আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শাফায়াতের মাধ্যমে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করবেন।
৩২) আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা জান্নাত সৃষ্টি করে তা স্বীয় বন্ধুদের জন্য স্থায়ী নিবাস হিসেবে প্রস্তুত রেখেছেন।
৩৩) তিনি সেখানে জান্নাতবাসীদেরকে তার সুমহান চেহারা দেখার সুযোগ দিয়ে সম্মানিত করবেন।
৩৪) তিনি পূর্ব জ্ঞানের আলোকে তাঁর নবী ও খলীফা আদম আলাইহিস সালামকে জান্নাত থেকে বের করেছিলেন।
৩৫) তিনি জাহান্নাম সৃষ্টি করে তাকে ঐ সকল লোকের জন্য স্থায়ী নিবাস হিসেবে প্রস্তুত রেখেছেন যারা আল্লাহ, তাঁর নিদর্শনাবলী, আসমানি কিতাব সমূহ এবং রসূলগণকে অবিশ্বাস করত। তিনি সে সকল অবিশ্বাসীকে তার দর্শন থেকে বঞ্চিত করবেন।
৩৯) আল্লাহ তায়ালা কিয়ামত দিবসে হিসাব-নিকাশ এবং পুরস্কার ও শাস্তি প্রদানের উদ্দেশ্যে মানবজাতির সামনে আগমন করবেন। তখন ফিরিশতা মণ্ডলী সারিবদ্ধ অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকবেন।
➡️ দাঁড়িপাল্লা:
৩৭) সেদিন বান্দাদের আমল পরিমাপের জন্য দাঁড়িপাল্লা স্থাপন করা হবে। যাদের নেক আমলের পাল্লা ভারী হবে তারাই হবে সফলকাম।
➡️ আমলনামা:
৩৮) সে দিন বান্দাদের প্রত্যেকের হাতে তাদের আমলনামা দেয়া হবে। যাকে আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে তার হিসাব-নিকাশ সহজ করা হবে।
আর যাকে আমলনামা পেছন দিক থেকে দেয়া হবে সেই জাহান্নামের আগুনে প্রজ্জ্বলিত হবে।
➡️পুলসিরাত:
৩৯) পুলসিরাত সত্য। (জাহান্নামের উপর স্থাপিত ব্রিজ বা পুল। জান্নাতে যাওয়ার জন্য এটি অতিক্রম ব্যতীত উপায় নেই) বান্দারা তাদের আমল অনুসারে পুলিসরাত পার হবে।
৪০) পুলসিরাত পার হওয়ার সময় যারা জাহান্নামের আগুন থেকে বেঁচে যাবে তাদের পার হওয়ার গতির মধ্যে কমবেশি থাকবে। (অর্থাৎ আমল অনুযায়ী কেউ দ্রুতবেগে আর কেউ মন্থর গতিতে পার হবে)। পুলসিরাত পার হওয়ার সময় কিছু মানুষ তাদের আমলের কারণে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে
➡️ হাউজে কাউসার:
৪১) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উম্মতের লোকেরা হাউজে কাউসার থেকে পানি পান করবে। যে ব্যক্তি এই পানি পান করবে সে আর কখনও পিপাসিত হবে না। আর যে ব্যক্তি দীনের মধ্যে পরিবর্তন-পরিবর্ধন করবে তাকে সেখান থেকে বিতাড়িত করা হবে।
➡️ ঈমানের পরিচয়:
৪২) ঈমান হল, মুখে স্বীকৃতি, অন্তরে একনিষ্ঠ বিশ্বাস এবং কর্মে বাস্তবায়নের নাম।
(৪৩) আমল বাড়লে ঈমান বাড়ে আর আমল কমলে ঈমান কমে যায়। অর্থাৎ আমল অনুযায়ী ঈমান বাড়ে বা কমে।
৪৪) আমল ছাড়া ঈমানের দাবী পূর্ণ হয় না।
কা.ফি.র বলা:
৪৫) আহলে কিবলা বা কিবলার অনুসারী কাউকে গুনাহের কারণে কা.ফি.র বলা যাবে না (যদি সে উক্ত গুনাহকে বৈধ মনে না করে)।
➡️ শহীদ:
৪৬) শহীদগণ (কবরে) জীবিত। তাঁরা আল্লাহর নিকট থেকে রিযিক প্রাপ্ত হয়।
৪৭) সৌভাগ্যবান বান্দাদের আত্মা পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত (কবরে) সুখ শান্তিতে অবস্থান করবে। আর হতভাগ্যদের আত্মা বিচার দিবস পর্যন্ত শাস্তি প্রাপ্ত হতে থাকবে।
৪৮) ইমানদার বান্দাগণও কবরে পরীক্ষা এবং প্রশ্নের সম্মুখীন হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
يثبت الله الذين آمنوا بالقول الثابت في الحياة الدنيا وفي الآخرة
“আল্লাহ মুমিনদেরকে মজবুত বাক্য দ্বারা দৃঢ়তা দান করেন পার্থিব জীবনে। এবং পরকালে।”
(সূরা ইবরাহীম: ২৭)
৪৯) বান্দাদের উপরে এমন কতিপয় ফিরিশতা নিযুক্ত রয়েছে যারা বান্দাদের যাবতীয় কার্যক্রম লিখে থাকেন।
৫০) বান্দাদের কোন কর্মই আল্লাহর জ্ঞানের বাইরে যায় না।
৫১) আল্লাহর হুকুমেই মালাকুল মাউত রূহ কবজ করে থাকেন।
➡️সাহাবায়ে কেরাম:
৫২) যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখেছেন এবং তার প্রতি ঈমান এনেছেন তাঁদের যুগই সর্বশ্রেষ্ঠ যুগ। তারপর তাদের পরবর্তী যুগ। তারপর তাদের পরবর্তী যুগ।
৫৩) সাহাবীদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হলেন, খোলাফায়ে রাশেদীন। প্রথমে আবু বকর (রা.), তারপর উমর (রা.), তারপর উসমান (রা.), তারপর আলী (রা.)।
৫৪) সাহাবীদের মাঝে সৃষ্ট বিবাদ ও বিভিন্ন ঘটনার ব্যাপারে নীরবতা অবলম্বন করতে হবে (তাঁদের সমালোচনা করা যাবে না)।
তাদের বিষয়গুলো সম্পর্কে সুন্দরতম পন্থায় ব্যাখ্যা খুঁজতে হবে, তাদের প্রতি সুন্দরতম দৃষ্টিভঙ্গি এবং সুধারণা পোষণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তাঁরাই সবচেয়ে বেশী হকদার।
➡️ মুসলিম শাসক ও আলেমদের আনুগত্যঃ
৫৫) মুসলিম জাতির অভিভাবক তথা শাসকবৃন্দ এবং আলেমগণের আনুগত্য করতে হবে। (শরীয়তের খেলাফ না হলে তাদের আনুগত্য পরিহার করা যাবে না।)
৫৬) সালাফে-সালেহীন তথা নেককার পূর্বসূরি ইমাম ও আলেমগণকে মান্য করতে হবে, তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে হবে এবং তাঁদের ক্ষমার জন্য দুয়া করতে হবে।
৫৭) দীনী বিষয়ে ঝগড়া-ঝাটি এবং কূটতর্ক বর্জন করতে হবে।
৫৮) বিদয়াতীরা দীনের মধ্যে যে সব নিত্য-নতুন বিষয় সৃষ্টি করেছে সেসব বর্জন করতে হবে।
চলবে ইনশাআল্লাহ........