23/01/2025
ফেসবুকে এড কস্ট কমানোর কার্যকরী কিছু টিপস :
প্রতিটি বিজনেস ওনার বা সিইও চায় কিভাবে এড খরচ কমানো যায়। আজকে আমরা এমন কিছু টিপস শেয়ার করব। যার ফলে
Facebook Ad (ফেসবুক এড) এর খরচ কমানো সম্ভব হবে। নিচের কার্যকর স্ট্র্যাটেজিগুলি অনুসরণ করতে পারেন:
১. Targeted Audience (টার্গেট অডিয়েন্স) নির্ধারণ করুন-
নির্দিষ্ট অডিয়েন্স নির্বাচন করুন। বয়স, লিঙ্গ, লোকেশন, ইন্টারেস্ট ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে অডিয়ান্স টার্গেট করুন।
নোট : আগে ফেসবুক ব্রড অডিয়েন্স এড়িয়ে চলতে বলছে। কিন্তু এখন আপনি ব্রড অডিয়েন্স ইউজ করতে পারেন। তবে এইক্ষেত্রে ব্রড এর পাশাপাশি ন্যারো ডাউন করে দেখতে পারেন।
২. Facebook Ad Optimize (ফেসবুক এড অপটিমাইজ) করুন -
একাধিক এড সেট, এড ক্রিয়েটিভ তৈরি করে A/B টেস্টিং করুন। তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন কোন এড বেশি ভাল পারফর্ম করছে। সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করা এড টা চালু রেখে বাকি এডগুলো বন্ধ করে দিন। এই ক্ষেত্রে বাড়তি খরচ কমে যাবে।
নোট : কিন্তু আমরা অনেকই এই কাজটা করতে আগ্রহী হই না। একটা এড সেট, একটা এড দিয়ে এড রান করে দিয়ে থাকি। যার ফলে ফেসবুক এআই (Facebook AI) ভাল আউটফুট দিতে পারে না।
৩. Custom Audience (কাস্টম অডিয়ান্স) ইউজ করুন -
ফেসবুকের চমৎকার একটি ফিচার হচ্ছে এই কাস্টম অডিয়ান্স। আপনার পেইজ যত পুরাতন হয় পূর্বের ডেটা আপনার জন্য খুব ই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর, পেইজ ভিজিটর, ভিডিও ভিউ, এংগেজমেন্ট, কাস্টমার লিস্ট থেকে আপনি কাস্টম অডিয়ান্স তৈরি করুন।
এই কাস্টম অডিয়ান্স ইউজ করে আপনি আপনার এড কস্ট কমাতে পারেন।
৪. Lookalike Audience (লুকঅ্যালাইক অডিয়েন্স) ব্যবহার করুন -
আমরা প্রতিনিয়ত এড দেওয়ার মাধ্যমে আমাদের ওয়েবসাইট এবং পেইজে ভিজিটর পেয়ে থাকি। যেমন - ওয়েবসাইটের ভিজিটর, ভিডিও ভিউ, কাস্টমার লিস্ট, বা কাস্টম অডিয়ান্স ইত্যাদি। এই অডিয়ান্স থেকে লুকঅ্যালাইক অডিয়েন্স তৈরি করুন।
এটি একটি মজার জিনিস যদি আপনি ভালভাবে অপ্টিমাইজ করতে পারেন। অনেক গোল্ডেন ডেটা আপনি খুজে পাবেন এইখানে। তাই মিস করবেন না। এটি নির্ভুল টার্গেটিংয়ের মাধ্যমে খরচ কমাতে পারবেন খুব সহজেই৷
৪. Retargeting Strategy (রিটার্গেটিং স্ট্রাটেজি) প্রয়োগ করুন -
আপনি যদি আগে এই স্ট্রাটেজি ইউজ না করে থাকেন। আজকেই শুরু করতে পারেন।
এটা ইউজ করে আমি ভাল রেজাল্ট পেয়েছি। নিচে কিছু নমুনা দিয়েছি।
ধরুন আপনার পেইজ বা ওয়েবসাইটে পূর্বের ভিজিটরের কাছে আপনি আপনার পণ্য বা সেবা আবার দেখিয়ে বিক্রি করবেন।।
যেমন - প্রথমে একজন ভিজিটরকে ট্রাফিক ক্যাম্পেইন চালিয়ে আপনার ওয়েবসাইট এ নিয়ে আসছেন। এবার আপনি একটি অফার ক্রিয়েট করে সেলস ক্যাম্পেইন চালিয়ে আপনার সেলস রেশিও বাড়াতে পারবেন। একজন নতুন সম্ভাব্য কাস্টমার আপনার পন্য কিনার চেয়ে পূর্বের সম্ভাব্য কাস্টমার পণ্য কিনার হার অনেক বেশি। এছাড়া Add To Cart, Initial Checkout, Visitor, Content View ইত্যাদি যারা করছে তাদেরকে রিটার্গেটিং করতে পারেন। এতে আপনার এড খরচ কমাতে পারবেন।
৫. Manual Bidding (ম্যানুয়াল বিডিং) প্রয়োগ করুন-
Automatic bidding এর পাশাপাশি নিজে থেকে বিড সেট করুন। এতে রেজাল্ট ভিন্ন কিছু যা খুব ভাল আসতে পারে। এটি অতিরিক্ত খরচ কমাতে সাহায্য করবে।
৬. Ad Frequency (এড ফ্রিকুয়েন্সি) মনিটর করুন -
আমরা অনেকই একই এড বার বার টার্গেটেড অডিয়ান্সকে দেখাতে থাকি, খুব বেশি যদি একই অডিয়েন্সকে সেইম এড দেখাই তাহলে তারা বিরক্ত হতে পারে। এই জন্য Frequency ৩-৫ এর বেশি রাখা যাবে না। না হলে এড এর পারফরম্যান্স কমে যাবে। খরচ বাড়তে থাকবে। তাই খরচ কমাতে Ad Frequency মনিটর করা জরুরি।
৭. Right Placement (সঠিক প্লেসমেন্ট) নির্বাচন করুন -
ফেসবুকে এডের জন্য সঠিক প্লেসমেন্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ফিচার।
ফেসবুকের অটোমেটিক প্লেসমেন্টের পরিবর্তে ম্যানুয়াল প্লেসমেন্ট ব্যবহার করে নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্ম বাছাই করতে পারি৷
অপ্রয়োজনীয় প্লেসমেন্ট বাদ দিয়ে যে প্লেসমেন্ট টি ভালো পারফর্ম করছে সেটি রেখে অন্যগুলো বাদ দিন।
এইক্ষেত্রে নিউজফিড, রিলস, ইন্সটাগ্রাম, স্টোরিজ ইত্যাদি ইউজ করতে পারেন।
৮. Creative Content (ক্রিয়েটিভ কন্টেন্ট) তৈরি করুন-
কন্টেন্ট ইজ কিং। এটা আমরা কয়জন মানি। কিন্ত আমরা এটা অনেকেই জানি। যদি আপনার এডের ভাল পারফরম্যান্স নিশ্চিত করতে চান তাহলে আকর্ষণীয় এবং মানসম্পন্ন ভিডিও বা ইমেজ ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে ভিডিও ব্যবহার করাই উত্তম। এমন ভাবে ভিডিও করবেন যাতে এটি সংক্ষিপ্ত হয়, অডিয়ান্স এর কাছে ক্লিয়ার মেসেজ টা সুন্দর ভাবে ফুটে উঠে। এটা অবশ্যই নিশ্চিত করুন। তাহলে আপনার এডের খরচ কমে আসবে।
৯. Different Campaign Objectives (ভিন্ন ভিন্ন ক্যাম্পেইন অব্জেক্টিভ) বাছাই করুন -
আমাদের একটা অভ্যাস আছে। প্রথম দিন থেকেই সেলস ক্যাম্পেইন দিতেই হবে। এটা না করলে আমাদের ভাল লাগে না। মনে করি এটি করলে সেলস আশা শুরু হবে। এটা করা উচিত না।
কারণ এতে আপনার টার্গেটেড অডিয়ান্স পেতে খরচ বেড়ে যায়৷ তাই আমাদের উচিত সবসময় Conversion ( Sales) এর জন্য এড না দিয়ে Engagement, Awareness বা Traffic Objective বাছাই করে এড দিতে পারি। যার ফলে সেলস ক্যাম্পেইন এ খরচ কম আসবে।
১০. Conversion Tracking কনভার্সন ট্র্যাকিং) ব্যবহার করুন -
ফেসবুক পিক্সেল, সার্ভার সাইড ট্রাকিং এবং গুগল অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করে পারফরম্যান্স এনালাইসিস করুন।
যেমন - আপনার সাইটের ভিজটর কোন পন্য বা পেইজ বেশি ভিজিট করে, কোন পন্য বেশি Add To Cart করে তা চেক করুন। তারপর ডেটা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়ে অফার ক্রিয়েট করে এড ক্যাম্পেইন করুন। এতে করে আপনার এড খরচ কমে আসবে।
১০. Trending Product (ট্রেন্ডিং পন্য) বাছাই করুন-
পণ্য বাছাই করা ভাল এড ক্যাম্পেইন এর পূর্ব শর্ত। আপনি যদি ভাল পণ্য সিলেকশন না করতে পারেন তাহলে আপনার কিছুই বৃথা যাবে।
তাই ট্রেন্ডিং প্রোডাক্ট বাছাই করুন। সেই অনুযায়ী কনটেন্ট তৈরি করুন। বর্তমানে ট্রেন্ডিং পণ্য ভাল পারফরম্যান্স করে। রেজাল্ট অনেক ভাল হয়। যার ফলে আপনার খরচ কমে আসবে।
১১. Different Platform (ভিন্ন ভিন্ন প্ল্যাটফর্ম) এ এড রান করুন -
ফেসবুকের পাশাপাশি Instagram এবং WhatsApp ব্যবহার করে টার্গেটেড কাস্টমার খুঁজে বের করতে পারেন। এছাড়া Call option, Website গুরুত্বপূর্ণ দুটি ফিচার, এই দুটি ইউজ করে দেখতে পারেন। এর পাশাপাশি ইমেইল মার্কেটিং বা Google Ads ট্রাই করতে পারেন। যার ফলে আপনার এড খরচ কমে আসবে।
ফেসবুক এডের খরচ কমাতে সঠিক টার্গেটিং, মানসম্মত কন্টেন্ট, এবং নিয়মিত অপ্টিমাইজেশনের কোনো বিকল্প নেই।
এই স্ট্র্যাটেজিগুলো নিয়মিত ফলো করলে ফেসবুক এডের খরচ কমিয়ে ফলাফল উন্নত করা সম্ভব।