মৎস্যবিদ মাসুম বিল্লাহ তমাল

মৎস্যবিদ মাসুম বিল্লাহ তমাল নিরাপদ মৎস্য উৎপাদনে যেকোন পরামর্শে সাহায্য করতে চাই....

22/09/2025

পুকুর প্রস্তুতি? 🤨🤨

যদি ৬ ইঞ্চিখানেক মাটি তুলে ফেলে প্রস্তুতি সম্পন্ন করত🫶
21/09/2025

যদি ৬ ইঞ্চিখানেক মাটি তুলে ফেলে প্রস্তুতি সম্পন্ন করত🫶

20/09/2025

স্ট্রেপটোকক্কাস ⚠️🚫

19/09/2025

পাহাড়ে খামার।

পিত্তরস (Bile) কোথা থেকে আসে?- যকৃৎ/Liver থেকে নিঃসৃত হয়ে পিত্তরস পিত্তথলিতে জমা হয়।পিত্তরস (Bile) এর কাজ কি? - পিত্তরস ...
19/09/2025

পিত্তরস (Bile) কোথা থেকে আসে?

- যকৃৎ/Liver থেকে নিঃসৃত হয়ে পিত্তরস পিত্তথলিতে জমা হয়।

পিত্তরস (Bile) এর কাজ কি?

- পিত্তরস প্রধানত চর্বি হজমে সাহায্য করে।
অন্যদিকে পিত্তরস প্রোটিন হজমের জন্য উপযোগী ক্ষারকীয় অবস্থা তৈরি করে, কারণ অগ্ন্যাশয়িক এনজাইমগুলো ক্ষারকীয় পরিবেশে সক্রিয় থাকে।

মৎস্যবিদ মাসুম বিল্লাহ (তমাল)
মৎস্য চাষ বিষয়ক পরামর্শক।

কার্প (রুই, কাতল, মৃগেল, কালিবাউশ)  এর হজম প্রক্রিয়া:কার্প জাতীয় মাছ (যেমন: রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস ইত্যাদি) তাদের খ...
17/09/2025

কার্প (রুই, কাতল, মৃগেল, কালিবাউশ) এর হজম প্রক্রিয়া:

কার্প জাতীয় মাছ (যেমন: রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস ইত্যাদি) তাদের খাদ্য হজমের জন্য এধরনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। এরা সাধারণত সর্বভুক (Omnivorous) হয় এবং প্রাকৃতিক পরিবেশে শেওলা, উদ্ভিদকণা, প্ল্যাঙ্কটন, ক্ষুদ্র প্রাণী ইত্যাদি খেয়ে থাকে।

কার্প জাতীয় মাছের খাবার হজম প্রক্রিয়াকে নিম্নলিখিত ধাপে বিভক্ত করে বোঝানো যায়:

১. খাদ্য গ্রহণ (Ingestion):
কার্প মাছের মুখে কোনো দাঁত নেই। তারা তাদের নিচের দিকে থাকা মুখ (Ventral mouth) ব্যবহার করে পুকুরের তলা থেকে বা পানিতে ভাসমান খাবার মুখে টেনে নেয়। খাবার গ্রহণের জন্য তারা মুখগহ্বর (Buccal cavity) এবং ফ্যারিংস (Pharynx) ব্যবহার করে।

২. খাদ্য ভাঙ্গার প্রাথমিক পর্যায় (Mechanical Breakdown)
যেহেতু তাদের দাঁত নেই, তাই হজম প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ঘটে গিলতে পারার আগেই। তাদের গলবিল দাঁত (Pharyngeal Teeth) থাকে যা ফ্যারিংকসের ভিতরে অবস্থিত। এই দাঁতগুলো খুবই শক্তিশালী এবং শক্ত খাদ্য যেমন শামুক, ছোট চিংড়ি, শক্ত শেওলা ইত্যাদি চূর্ণ-বিচূর্ণ করে। খাবার গলার মাধ্যমে অন্ননালীতে (Oesophagus) যাওয়ার আগেই এগুলো পিষে নেয়।

৩. অন্ননালী (Oesophagus) দিয়ে পরিবহন
খাবার গলবিল দাঁত দ্বারা পিষে পেস্টের মত (paste-like) হওয়ার পর তা অন্ননালীর মাধ্যমে পাকস্থলীতে (Stomach) পাঠানো হয়। অন্ননালীতে শ্লেষ্মা (Mucus) নিঃসৃত হয় যা খাদ্যকে পিচ্ছিল করে এবং নিচে নামতে সাহায্য করে।

৪. রাসায়নিক হজম (Chemical Digestion) - প্রধান পর্যায়
কার্প মাছের আসল হজম প্রক্রিয়া শুরু হয় পাকস্থলীতে নয়, বরং অন্ত্রে (Intestine)। কারণ কার্প জাতীয় মাছের পাকস্থলী থাকে না (They are agastric or stomachless fish)।

· অন্ত্র (Intestine):
এটি কার্প মাছের হজমের প্রধান অঙ্গ। এটি একটি লম্বা, কুণ্ডলীপাকানো নল (coiled tube) যা লিভার এবং অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত এনজাইম গ্রহণ করে।

· পাইলোরিক সেকা (Pyloric Caeca):
পাকস্থলী না থাকলেও অন্ত্রের শুরুর দিকে অসংখ্য ছোট ছোট আঙ্গুলের মতো উপাঙ্গ থাকে, যাদের পাইলোরিক সেকা বলে। এগুলোর পৃষ্ঠতল খুব বেশি, এর প্রধান কাজ হল হজমে সাহায্যকারী এনজাইম নিঃসরণ করা এবং পুষ্টি উপাদান শোষণ করা। এটি কার্প মাছের অগ্ন্যাশয় (Pancreas) এবং ক্ষুদ্রান্ত্রের সমন্বিত কাজ করে।

· এনজাইম নিঃসরণ:
লিভার (Liver) থেকে পিত্তরস (Bile) নিঃসৃত হয় যা পিত্তথলিতে (Gall bladder) জমা থাকে। পিত্তরস চর্বিকে ভাঙ্গে (ইমালসিফাই করে)।

অগ্ন্যাশয় (Pancreas) এবং পাইলোরিক সেকা থেকে নানা প্রকার এনজাইম নিঃসৃত হয়:
· প্রোটিজ (Protease): প্রোটিনকে অ্যামিনো অ্যাসিডে ভাঙ্গে।
· অ্যামাইলেজ (Amylase): শর্করা (কার্বোহাইড্রেট)কে সরল শর্করায় ভাঙ্গে।
· লাইপেজ (Lipase): চর্বি (লিপিড)কে ফ্যাটি অ্যাসিড ও গ্লিসারলে ভাঙ্গে।

৫. পুষ্টি শোষণ (Absorption):
রাসায়নিকভাবে ভাঙ্গা পুষ্টি উপাদানগুলো (এমাইনো অ্যাসিড, গ্লুকোজ, ফ্যাটি অ্যাসিড ইত্যাদি) অন্ত্রের প্রাচীর (Intestinal wall) এবং বিশেষ করে পাইলোরিক সেকা এর মাধ্যমে শোষিত হয়ে রক্ত প্রবাহে চলে যায়।

৬. বর্জ্য নিষ্কাশন (Egestion):
হজমের পর উৎপন্ন বর্জ্য পদার্থ (যেমন: সেলুলোজ, কিছু খনিজ) অন্ত্রের মাধ্যমে গমন করে মলদ্বার (A**s) এর মাধ্যমে বাইরে বের হয়ে যায়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
কার্প মাছচাষে এই হজম প্রক্রিয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু তাদের পাকস্থলী নেই, তাই তারা একবারে বেশি পরিমাণে খাবার হজম করতে পারে না। এজন্য…..
· তাদের ঘন ঘন কিন্তু অল্প পরিমাণ করে খাবার দিতে হয়।
· খাবারটি অবশ্যই সহজে হজমযোগ্য এবং নিম্ন ফাইবারযুক্ত হতে হয়।
· খাবারের দানাগুলো (pellets) পানিতে ভাসমান বা ডুবন্ত তা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা তাদের মুখের গঠন অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকে খাবার সংগ্রহ করে।

মাসুম বিল্লাহ (তমাল)
মৎস্য চাষ বিষয়ক পরামর্শক।

✊ তেলাপিয়া মাছের খাদ্য হজম প্রক্রিয়া:তেলাপিয়া একটি মনোগ্যাস্ট্রিক (এক-পাকস্থলী) মাছ, অর্থাৎ এর পরিপাকতন্ত্র তুলনামূলক সর...
16/09/2025

✊ তেলাপিয়া মাছের খাদ্য হজম প্রক্রিয়া:

তেলাপিয়া একটি মনোগ্যাস্ট্রিক (এক-পাকস্থলী) মাছ, অর্থাৎ এর পরিপাকতন্ত্র তুলনামূলক সরল কিন্তু খুব কার্যকর। প্রোটিন হজম করা এর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রোটিনই এর বৃদ্ধি এবং টিস্যু রক্ষণাবেক্ষণের মূল উপাদান।

তেলাপিয়ার প্রোটিন হজম প্রক্রিয়ার ধাপসমূহ:
১. গ্রহণ ও যান্ত্রিক ভাঙ্গন (Ingestion and Mechanical Breakdown)

খাদ্য গ্রহণ: তেলাপিয়া মুখ দিয়ে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার (যেমন: প্ল্যাঙ্কটন, কীট, অথবা চাষের ক্ষেত্রে প্রোটিন সমৃদ্ধ পিলেট খাবার) গ্রহণ করে।
দাঁতের কাজ: এর দাঁতগুলো তীক্ষ্ণ নয় কিন্তু খাবারকে ধরে রাখতে এবং খণ্ডিত করতে সাহায্য করে।

গলবিল ও অন্ননালী: খাবার গলবিল দিয়ে অন্ননালীতে (Esophagus) প্রবেশ করে। অন্ননালীর পেশীসংকোচন (পেরিস্টালসিস) এর মাধ্যমে খাদ্যবস্তুকে পাকস্থলীতে পাঠায়।

২. রাসায়নিক ভাঙ্গন (Chemical Breakdown)
এই অংশটিই প্রোটিন হজমের মূল অংশ।

পাকস্থলীতে (Stomach):
· পাকস্থলীতে পৌঁছানোর পর, বিশেষ কোষ থেকে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (HCl) নিঃসৃত হয়।
· এই অ্যাসিড খাদ্যের সাথে প্রবেশ করা সম্ভাব্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে এবং খাদ্যকণাকে আরও ভাঙ্গতে সাহায্য করে।
· HCl খুবই গুরুত্বপূর্ণ এনজাইম পেপসিনোজেন (Pepsinogen) কে সক্রিয় করে পেপসিনে(Pepsin) রূপান্তরিত করে।
· পেপসিন হল মূল প্রোটিন-হজমকারী এনজিম। এটি দীর্ঘ প্রোটিন শৃঙ্খলকে ছোট ছোট পলিপেপটাইড এবং এমাইনো অ্যাসিডে ভাঙ্গতে শুরু করে।

অন্ত্র (Intestine) :
যেখানে প্রধানত হজম সম্পন্ন হয়।
আংশিকভাবে হজমকৃত খাদ্যবস্তু (অম্লীয় অবস্থায়) পাকস্থলী থেকে পাইলোরিক স্ফিংকটার দিয়ে ছোট অন্ত্রের প্রথম অংশ ডুওডেনামে প্রবেশ করে।অগ্ন্যাশয় (Pancreas) থেকে অগ্ন্যাশয় রস নিঃসৃত হয়। এই রসে থাকে শক্তিশালী প্রোটিয়েজ এনজাইম যেমন: ট্রিপসিন, কাইমোট্রিপসিন, কার্বক্সিপেপটিডেজ ইত্যাদি। এই এনজাইমগুলো পেপসিনের কাজ চালিয়ে যায় এবং পলিপেপটাইডগুলোকে আরও ছোট পেপটাইড এবং এমাইনো অ্যাসিডে পরিণত করে।

পিত্তরস (Bile): যকৃৎ থেকে নিঃসৃত পিত্তরস পিত্তথলিতে জমা থাকে এবং ডুওডেনামে প্রবেশ করে। যদিও পিত্তরস প্রধানত চর্বি হজমে সাহায্য করে, পিত্তরস প্রোটিন হজমের জন্য উপযোগী ক্ষারকীয় অবস্থা তৈরি করে, কারণ অগ্ন্যাশয়িক এনজাইমগুলো ক্ষারকীয় পরিবেশে সক্রিয় থাকে।

👉 অন্ত্রের প্রাচীর থেকে নিঃসৃত এনজাইম, ক্ষুদ্রান্ত্রের প্রাচীরে থাকা এন্টেরোসাইট কোষ থেকে কিছু এনজাইম (যেমন: অ্যামিনোপেপটিডেজ, ডাইপেপটিডেজ) নিঃসৃত হয় যা শেষ পর্যন্ত পেপটাইডগুলোকে পৃথক পৃথক এমাইনো অ্যাসিডে পরিণত করে।

৩. শোষণ (Absorption)
· একবার প্রোটিন সম্পূর্ণরূপে এমাইনো অ্যাসিড এবং খুব ছোট পেপটাইডে পরিণত হলে, সেগুলো ক্ষুদ্রান্ত্র (Small Intestine)-এর প্রাচীর (বিশেষ করে ileum অংশ) দিয়ে শোষিত হয়।
· এমাইনো অ্যাসিডগুলি রক্তনালীতে প্রবেশ করে।

৪.পরিপাক/আত্তীকরণ (Assimilation) এবং নিষ্কাশন(Egestion)

পরিপাক/আত্তীকরণ:
রক্তের মাধ্যমে এই এমাইনো অ্যাসিডগুলি শরীরের বিভিন্ন কোষে (পেশী, অঙ্গ ইত্যাদি) পৌঁছে। সেখান থেকে সেগুলো নতুন প্রোটিন সংশ্লেষণ ব্যবহৃত হয়, যা মাছের বৃদ্ধি, মেরামত এবং শক্তি উৎপাদনের জন্য অত্যাবশ্যক।

নিষ্কাশন:
যে অংশ হজম হয় না (যেমন: খুব শক্ত খোসা, অতিরিক্ত সেলুলোজ) তা বৃহদন্ত্র (Large Intestine) দিয়ে গমন করে এবং শেষ পর্যন্ত মলদ্বার (A**s) দিয়ে মলের সাথে শরীর থেকে বের হয়ে যায়।

⚠️ তেলাপিয়ার প্রোটিন হজমের বিশেষ দিক:
তেলাপিয়া মাছের পরিপাকতন্ত্র অনেক সরল, কিন্তু মেরুদণ্ডহীন প্রাণীর (চিংড়ি) চেয়ে বেশি উন্নত এবং দক্ষভাবে প্রোটিন হজম করতে পারে।

তাপমাত্রার প্রভাব:
তেলাপিয়ার হজম প্রক্রিয়া পানির তাপমাত্রার সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত। হজমের জন্য সর্বোত্তম তাপমাত্রা হচ্ছে (২৫-৩০°C), এই তাপমাত্রায় এনজাইমের কার্যকরীতা সর্বোচ্চ বিধায় হজম ভাল হয়। তাপমাত্রা কমে গেলে হজম করার গতিও কমে যায়(একারনে মাছ শীতকালে কম খায়)।

খাদ্যের গুণগত মান:
চাষের ক্ষেত্রে, পিলেট খাবারের প্রোটিনের উৎস (শুটকি, ময়দা, সয়াবিন, ভুট্টা ইত্যাদি) এবং গুণমান তেলাপিয়ার হজম প্রক্রিয়ায় সরাসরি প্রভাবিত করে।

মৎস্যবিদ মাসুম বিল্লাহ (তমাল)
মৎস্য চাষ বিষয়ক পরামর্শক।



🚫 শেয়ার করতে পারেন, কিন্তু নিজের নামে চালিয়ে দিয়েন না।

আসুন তেলাপিয়ার স্ট্রেপটোকক্কাস নিয়ে একটু ভালভাবে জানতে চেষ্টা করিঃতেলাপিয়ার অনেক ধরনের রুগের মধ্যে স্ট্রেপটোকক্কোসিস হচ্...
15/09/2025

আসুন তেলাপিয়ার স্ট্রেপটোকক্কাস নিয়ে একটু ভালভাবে জানতে চেষ্টা করিঃ
তেলাপিয়ার অনেক ধরনের রুগের মধ্যে স্ট্রেপটোকক্কোসিস হচ্ছে সবচেয়ে বিদ্ধংসী ধরনের রোগ এবং এই রোগের কারনে সবচেয়ে বেশি মারা যায় বড় সাইজের(৫০-৩০০ গ্রাম) তেলাপিয়া এবং খামারিরা আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

☯️রোগ হওয়ার কারনঃ
চাষকৃত তেলাপিয়াতে স্ট্রেপটোকক্কাস এর প্রধান কারন Streptococcus agalactiae ব্যাকটেরিয়া, এর আরেকটা প্রজাতি হচ্ছে streptococcus iniae যা তুলনামূলক কম মৃতুহার ঘটায়।

☯️খালি চোখে/বাহ্যিক লক্ষন দেখে এ রোগ চেনার উপায়ঃ

১. স্নায়ুতন্ত্রে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারনে মাছগুলো ঘূর্ণয়মান আচরন করে, মাছের দেহ বাঁকা হয়ে যায় এবং মাছের মধ্যে অলসতার ভাব চলে আসে।

২. অসুস্থ মাছের চোখের মধ্যে ক্ষত দেখা যায় বা মাছের চোখ ভিতরের দিকে বা বাহিরের দিকে বের হয়ে আসার লক্ষন প্রকাশ পায়।

৩. তেলাপিয়ার মাছের শরিরে বা পাখনার গোড়ায় বা মলদ্বার/যৌনাঙ্গ এর মশার কামরের ন্যায় ছোট ছোট লাল দাগ বা রক্তক্ষরণ দেখা যায়।

৪. স্ট্রেপটোকক্কাস আক্রান্ত মাছের নিচের চোয়ালের দিকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ফোঁড়া দেখা যায় এবং এ ফোঁড়াগুলো দ্রুত ফেটে রক্তক্ষরণজনিত আলসারে পরিনত হয় এবং যা সাধারণত ভাল হয় না। এ ধরনের কিছু ফোঁড়া মাছের লেজের গোড়ার দিকেও পাওয়া যায় যা রোগ ভাল হলেও কিছু কিছু থেকে যায়।

৫. তীব্র পাদুর্ভাবের সময় পেটে এক ধরনের তরল পদার্থের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় এবং চাপ দিলে মলদ্বার দিয়ে বেরিয়ে আসে।

☯️মাছের দেহের ভিতরকার লক্ষন দেখে এ রোগ চেনার উপায়ঃ
১.সাধারণত অসুস্থ মাছের পেটে বা অন্ত্রে কোন খাবার পরিলক্ষিত হয় না, রোগের শুরুর দিকে মাছ কিছু ফিড অন্ত্রে পাওয়া যায়। মাছের গল ব্লাডার/পিত্ত থলি স্বাভাবিকের চেয়ে বড় দেখা যায় এবং এ কারনে মাছের হজম বা পাকস্থলীতে খাদ্য বিপাকে সমস্যা দেখা দেয়।

২. তীব্র সংক্রমণের সময় ব্যাকটেরিয়া দ্রুত রক্তের অভ্যন্তরীণ সিস্টেমে পৌঁছে যায় এবং সমস্থ অভ্যন্তরীণ অঙ্গে(লিভার,প্লীহা,কিডনি, হৃদপিন্ড,মস্তিষ্ক, চোখ এবং পাকস্থলী নালী) ছড়িয়ে পরে। পিত্ত থলি, প্লীহা এবং কিডনি স্বাভাবিক এর চেয়ে অনেক বড় হয়ে যায়।

৩. মাছেত অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলি একত্রে পেরিটোনিয়াল গহব্বরের দেয়ালের সাথে আঠালোভাব লেগে যায় এবং ফাইব্রিনাস উপাদানের উপস্থিতি দেখা যায়।

**** সংক্রমণের তীব্রতার সাথে অন্যান্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া যেমন Aeromas spp. এর সাথে একত্রিত হয়ে দ্বৈত আক্রমণ ঘটায়।

☯️স্ট্রেপটোকক্কাস কিভাবে বিস্তার লাভ করে বা কেন এ রোগ হয়ে থাকেঃ
তেলাপিয়া চাষের জন্য আদর্শ পি এইচ হচ্ছে ৬-৯ পিপিএম(Popma & Masser, 1999), অক্সিজেনের মাত্রা ৫ পিপিএম(Swann,1992;El-Sayed, 2006), এমোনিয়ার মাত্রা ২ মি.গ্রাম/লিটার এবং আদর্শ তাপমাত্রা হচ্ছে ২৯-৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস(Popma & Masser, 1999)। যখম এ মাত্রাগুলো চাষের পুকুরে ঠিক থাকে না তখন স্ট্রেপটোকক্কাস বিস্তার লাভ করে।

অধিক ঘনত্বে তেলাপিয়া চাষ এ রোগের অন্যতম কারন এর সাথে মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধি, পানিতে অক্সিজেনের ঘাটতি, এমোনিয়া গ্যাসের আধিক্যতা। স্ট্রেপটোকক্কাস মুলত মাছ থেকে মাছে এবং পরিবেশ থেকে মাছে ছড়ায়। সাধারণ স্ট্রেপটোকক্কাস সব ধরনের মাছেই হতে পারে তবে বড় আকারের মাছ(১৫০গ্রাম থেকে বিক্রি উপযোগী) এ রোগের জন্য সবচেয়ে বেশি সংবেদনশীল । অতিরিক্ত তাপমাত্রায় সময় এ রোগ তীব্রতর আকার ধারন করে এবং আর মৃত্যহার সাধারণত ২-৩ সপ্তাহ স্থায়ী হয়। যখন পানির তাপমাত্রা কম থাকে তখন এর তীব্রতাও কমে আসে।

☯️রোগ নির্ণয়ের প্রক্রিয়াঃ
খামারে রোগ নির্ণয়ঃ
৫-১০ টি মাছে পর্যবেক্ষণ করে উপরে বর্নিত লক্ষণগুলোর সাথে মিলিয়ে প্রাথমিকভাবে আমরা স্ট্রেপটোকক্কাস নির্ণয় করতে পারি। এখানে উল্লেখ্য যে একটি মাছে সকল ধরনের বাহ্যিক লক্ষণ দেখা নাও যেতে পারে।

☯️গবেষণাগারে রোগ নির্ণয়ঃ
মাছ মৃত্যুর জন্য কোন প্রজাতির Streptococcus spp. দায়ী তা জানার জন্য ল্যাবরেটরিতে ব্যাকটেরিয়াল আইসোলেশন টেস্ট করে ফলাফল জানা যায়।

👉এ রোগ প্রতিরোধের জন্য আমরা নিন্মলিখিত বিষয়গুলোতে মনোযোগী হতে পারিঃ

স্ট্রেপটোকক্কাস মুক্ত মা মাছ থেকে পোনা সংগ্রহ করা এবং চাষের পুকুর স্ট্রেপটোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া মুক্ত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

প্রবাধে আছে “Prevention is better than cure-প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম”।

চাষের পুকুরের মাটি ও পানিতে যদি কার্যকরী স্ট্রেপটোকক্কাস এর জীবানু উপস্থিত থাকে তবে তা প্রতিরোধ বা ধমন করা খুব একটা সহজ নয়।

এপ্রিল-জুন/জুলাই তেলাপিয়া চাষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময় বলে বিবেচিত হয় আবার এ সময় উচ্চ তাপমাত্রা এবং অতিরিক্ত মজুদ ঘনত্বে(১৫০-৩০০ গ্রামের মাছে) এ রুগের বিস্তার সবচেয়ে বেশি ঘটে, এমতাবস্থায় অতিরিক্ত মজুদ ঘনত্বে পরিহার করা, অতিরিক্ত খাবার খাওয়ানো বন্ধ রাখা এবং পানির সকল গুনাগুন ঠিক রাখার দিকে নজর বাড়ানো।

যে সকল পুকুরের মাছ বিক্রি উপযোগী সেই মাছগুলো ক্রমান্বয়ে বিক্রি এবং একই সাথে পানির তাপমাত্রা কমানোর জন্য এরেটর(প্যাডেল হুইল) এবং নতুন পানির যোজন- বিয়োজন করা খুবই জরুরী বিষয় বলে বিবেচিত।

নিয়মিত স্যানিটাইজেশন করে প্যাথোজেনগুলির সংক্রামন কমানোর জন্য পর্যায়ক্রমে উৎপাদনের প্রতিটি ইউনিট এবং সরঞ্জাম পরিষ্কার এবং জীবানুমুক্ত করে স্ট্রেপটোকক্কাস এর ঝুঁকি কমানো।

*****পানির প্যারামিটার ঠিকঠাক রাখা-খাদ্য খাওয়ানোর পরিমান কমিয়ে রাখা-এবং অধিক মজুদ ঘনত্ব পরিহার করে স্ট্রেপটোকক্কাস এর ঝুঁকি কমানো।

☯️চিকিৎসাঃ
যেহেতু ব্যাকটেরিয়া গুলো পানিতেও উপস্থিত থাকে এবং খাবারের সাথে মিশে মাছের দেহে আরো দ্রুত প্রবেশ করতে পারে তাই এমতাবস্থায় আংশিক খাবার দেওয়া বা সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ রেখে মৃত্যুহার কমানোতে সাহায্য পাওয়া যায়।

তেলাপিয়া একটি উচ্চ ফলনশীল মাছ এবং এর বেঁচে থাকার হারও অন্যান্য মাছের তুলনায় তুলনামূলক বেশি তাই চাষিরা চাষকৃত পুকুরে অধিক ঘনত্বে চাষ করে থাকে, যখন মৃত্যুহারের প্রকোপ বৃদ্ধি পায় তখন মজুদ ঘনত্ব কমিয়ে দিলে স্ট্রেস(চাপ) লেভেল ও প্যাথোজেন লোড উভয়ই কমতে সাহায্য পায়।

তাপমাত্রা বেশি থাকার কারনে মাছের খাদ্য হজম ক্রিয়াই অতিরিক্ত অক্সিজেন এবং শক্তির খরচ হয় এমতাবস্থায় পানির যোজন-বিয়োজন করা এবং এরেটর চালিয়ে অক্সিজেন এর মাত্রা ঠিক রাখার চেষ্টা করা জরুরি (এক্ষেত্রে প্যাডেল হুইল এরেটর কার্যকরী ভুমিকা পালন করতে পারে)।

☯️এন্টিবায়োটিক ব্যবহারঃ
এন্টিবায়োটিক(ব্রোডস্পেকট্রাম) সাধারণত রোগের শুরুতে বা প্রাথমিক অবস্থায় খুব ভাল কাজ করে সেক্ষেত্রে যদি লক্ষন প্রকাশ পাওয়ার সাথে-সাথেই চিকিৎসায় যাওয়া যায় তাহলে কিছুটা উপকার পাওয়া যায় কিন্তু রোগ ব্যাপক আকার ধারন করলে ওরাল এন্টিবায়োটিক গুলা অকার্যকর হয়ে পরে কারন এ সময় মাছের খাবারের তেমন চাহিদা থাকে না বা ক্ষুধামন্দা ভাব চলে আসে।

বিভিন্ন খামারে এন্টিবায়োটিকগুলো প্রয়োগ করে দেখা যায় যে, শুধুমাত্র প্রয়োগের সময় মৃতুহার নিয়ন্ত্রণ(আংশিকভাবে) করতে সক্ষম হয় কিন্তু কোর্স শেষ হয়ে গেলে মৃত্যুহার আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে।

*** ইরিথ্রোমাইসিন, সালফাডায়াজিন এবং ট্রাইমিথোপ্রিম এর কম্বিনেশন এক্ষেত্রে সবচেয়ে সফল বলে বিবেচিত হয়। লিভার এবং পাকস্থলী মারাত্মক আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিধায় ভাল মানের লিভারটনিক এবং গাট প্রোবায়োটিক ব্যবহার করাও জরুরী।

*** এমোক্সিসিলিন গ্রুপের এন্টিবায়োটিক দীর্ঘ স্থায়ী সমাধানের জন্য কার্যকরী বলে বিবেচিত হয়

⚠️ এন্টিবায়োটিক এর উইথড্রল পিরিয়ড শেষ করে মাছ বাজারজাত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

👉 বর্তমান বৈশ্বিক উষ্ণতায় মজুদ ঘনত্বের নিয়ন্ত্রণ,পানির পর্যাপ্ততা এবং পানির প্যারামিটার ঠিকঠাক না রাখতে পারলে যতকিছুই করেন তেলাপিয়ার স্ট্রেপটোকক্কাস নিয়ন্ত্রনে সফল হতে পারবেন না।

নোটঃ লেখাটি আমার খামারি সেবা দেওয়ার বাস্তব অভিজ্ঞতা, বিভিন্ন জার্নাল এবং ইন্টারনেট থেকে থেকে সংগ্রহ করে সহজভাবে বোজানোর জন্য লেখে হয়েছে।

ধন্যবাদান্তে,
মৎস্যবিদ মাসুম বিল্লাহ (তমাল)
মৎস্য চাষ বিষয়ক পরামর্শক।

স্ট্রেপটোকক্কাস এর অন্যতম লক্ষ্মণ - অভ্যন্তরীণ অঙ্গ ফুলে যাওয়া।
15/09/2025

স্ট্রেপটোকক্কাস এর অন্যতম লক্ষ্মণ - অভ্যন্তরীণ অঙ্গ ফুলে যাওয়া।

13/09/2025
 #এন্টিবায়োটিক: (ব্যবহার করার আগে বুজে নিন-কি, কেন, কিসের জন্য প্রয়োগ করবেন)।  অযথাই অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মৎস্যবিদের পরামর্শ...
08/09/2025

#এন্টিবায়োটিক: (ব্যবহার করার আগে বুজে নিন-কি, কেন, কিসের জন্য প্রয়োগ করবেন)। অযথাই অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মৎস্যবিদের পরামর্শ ছাড়া এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করবেন না।
🚫 কাজ করার ধরন:

Bactericidal (ব্যাক্টেরিওসাইডাল): ব্যাকটেরিয়াকে সরাসরি মেরে ফেলে।

Bacteriostatic (ব্যাক্টেরিওস্ট্যাটিক): ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি থামিয়ে দেয়, কিন্তু ইমিউন সিস্টেম বাকি কাজ সম্পন্ন করে।

Narrow spectrum: সীমিত কয়েকটি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে।

Broad spectrum: Gram-positive ও Gram-negative উভয় ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে।

মৎস্যবিদ মাসুম বিল্লাহ (তমাল)
মৎস্য চাষ বিষয়ক পরামর্শক।

এন্টিবায়োটিক কি?এন্টিবায়োটিক হলো এমন এক ধরনের ঔষধ যা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বন্ধ করে বা সরাসরি ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে।• এন...
06/09/2025

এন্টিবায়োটিক কি?
এন্টিবায়োটিক হলো এমন এক ধরনের ঔষধ যা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বন্ধ করে বা সরাসরি ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে।
• এন্টিবায়োটিক শুধু ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর।
• ভাইরাস, ছত্রাক বা পরজীবীর বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না।

অ্যান্টিবায়োটিকের ধরন:
অ্যান্টিবায়োটিককে বিভিন্নভাবে ভাগ করা যায়।

👉 কার্যপ্রক্রিয়া (Mode of action) অনুযায়ী

-Bactericidal (ব্যাক্টেরিওসাইডাল)
-Bacteriostatic (ব্যাক্টেরিওস্ট্যাটিক)

👉 ব্যাকটেরিয়ার পরিসর (Spectrum of activity) অনুযায়ী

- Narrow spectrum
- Broad spectrum

👉 রাসায়নিক গঠন অনুযায়ী (Chemical class/group)

• Penicillins
• Cephalosporins
• Macrolides
• Tetracyclines
• Aminoglycosides
• Fluoroquinolones
• Sulfonamides
• Chloramphencol

রোগ নির্ণয় করে এরপর মোড অফ একশন অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক সাজেশন করতে হবে।

*** অবশ্যই উইথড্রল পিরিয়ড মেনে মাছ বাজারজাত করতে হবে।

মাসুম বিল্লাহ (তমাল)
মাছ চাষ বিষয়ক পরামর্শক।

Address

Mymensingh
2260

Telephone

+8801751136096

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when মৎস্যবিদ মাসুম বিল্লাহ তমাল posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to মৎস্যবিদ মাসুম বিল্লাহ তমাল:

Share