অক্সিজেন

অক্সিজেন কারো মায়ার মধ্যে জড়িয়ে যেও না।যখন খন দ

আজ বিথির বিয়ে। বিথি অনার্স ফাস্ট ইয়ারে পড়ে। সবার মতো আনন্দ সহিতই পালিত হচ্ছে। বিথী উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। তবে দুধ...
28/04/2025

আজ বিথির বিয়ে। বিথি অনার্স ফাস্ট ইয়ারে পড়ে। সবার মতো আনন্দ সহিতই পালিত হচ্ছে। বিথী উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। তবে দুধে যেমন চূণ কাম্য নয়। একজনের মুখে হাসি ও কাম্য নয় সে আর কেউ নয় বিথি। এমন না যে বিথির প্রেম আছে কিন্তু সে মেন্টাল্লি প্রিপেয়ার্ড না এছাড়াও সে আগে নিজের পায়ে দাড়াতে চেয়েছিল। কিন্তু আমাদের পুরুষভিত্তিক সমাজ মেয়ে ভার্সিটিতে উঠেছে মানেই বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে। তাই-ই তো অনিচ্ছার এই বিয়ে না চাওয়া এত্ত আনন্দ।

বিথির বিয়ে হচ্ছে বিধান চৌধুরীর সাথে, চৌধুরী ইন্ডাস্ট্রিজের একমাত্র ওয়ারিস। এজন্যই তো মেয়ের অনিচ্ছায় বিয়ে দিচ্ছেন বিথির বাবা-মেয়ে। অবশ্য বিথি বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান হওয়ায় বেশ আদরেই বড় হয়েছে এই ছোট্ট পরিবারে, যেখানে মা হাউজ ওয়াইফ বাবা ব্যাংকার।
কিন্তু বাঙালি বাবা-মাদের সন্তানের শরীরটা নিয়ে অনেক বোঝা-পড়া থাকলেও মনটাকে বোঝার চেষ্টা খাণিকের জন্য হলেও করে না।

এতোক্ষণ তো কনে কে নিয়ে অনেক কথাই বলা হলো এখন বরকেও গুরুত্ব দেয়া উচিত না হলে সে রাগ করবে। কারণ বিয়েতো বিথির একার না।
বিধানের নামে যেমন একটা নিয়ম-নীতির ভাইব আসে ঠিক তেমনই বিধান নিজেকে ডিসেপ্লিনের মধ্যে রাখতেই পছন্দ করে। জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে প্রথম হওয়াটা ওর নেশা ছিল, তা বিজনেস হোক পড়া-লিখা কিংবা খেলাই হোক। বিধানের ম্যান ইগোটা একটু বেশিই। কলেজ লাইফ থেকেই ওর পিছনে মেয়েরা মৌমাছির মতো ঘুরে। সেখানে বিথি তাকে রিজেক্ট করেছে সো তার ম্যান ইগো তো হার্ট হবেই।

বিথিকে বিধানের মা প্রথম দেখেছিল তার কলেজের মাঠে। তখন বিথি এইচএসসি পরীক্ষা দিবে। বিথির তেমন সুন্দর নয় শ্যামী রং, ছোট ছোট চোখ, বোচা নাক তবুও চেহারাটা মায়াময় সাথে গোলাপি ঠোঁটের কোণে দুষ্টু হাসি। কিন্তু তার মন জয় করেছিল বিথির সুন্দর মন। বিথি মাঠে থাকা পথশিশুদের সাথে খেলছিল আদর করছিল তাদের চকলেট কিনে দিচ্ছিল। যেখানে কলেজের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা সেই শিশুদের সহ্যই করতে পারছে না।
এরপরই বিথির খোজ নিয়ে তাদের বাসায় যায়।

বিথি বিয়ের কার্যক্রম শেষ করে বাসর ঘরে বসেছে। তার মনে এখন অনেক চিন্তা দোলা দিচ্ছে।
বিথিঃ বিয়েতো হয়ে গেল। কিন্তু আমার স্বামী কি আমাকে বুঝবে? আমার স্বপ্ন কে বুঝবে? তা পূরণের স্বাধীনতা দিবে? নাকি সিরিয়ালের স্বামীদের মতো প্রথমে স্বপ্ন পূরণের কথা বলে সংসার দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়ে বন্ধ করাবে পড়া-লিখা? সে কি আমাকে সময় দিবে সম্পর্কটা মেনে নেয়ার, নিজেকে মানিয়ে নেয়ার নাকি নরপশুদের মতো ঝাপিয়ে পড়বে নিজের চাহিদা পূরণে? (মনে মনে)

এসব ভাবতে ভাবতেই বিথির চোখে ঘুম ভর করেছে। বিথীর এখন প্রচন্ড বিরক্তিকর লাগছে। লাগারও কথা যে মেয়ে জীবনে এয়ার-রিং এন্ড ব্রেসলেট ছাড়া কোনো জুয়েলারি পড়ে নি তার চিক, শিতা হার, ভারি ঝুমকো, মাথায় টায়রা, টিকলি, দুহাত ভর্তি কাচের চুড়ি,মোটা বালা দুইটা করে প্রত্যেক হাতে, কোমর-বন্ধনি, পায়ে ভাড়ি নুপুর জোড়া, ভাড়ি বেনারসি, মাথায় ভাড়ি কাজের ডুপাট্টা পড়ে তো লাগবেই বিরক্ত। তার উপর প্রচণ্ড ক্লান্তি আর ঘুম তো আছেই।

হঠাৎ দরজা খুলার আওয়াজে বিথি ঝিমানো ছেড়ে পরিপাটি হয়ে বসে। বিধান বেডরুমে ঢুকে বিথীকে এক পলক দেখে ওয়াসরুমে চলে যায় ফ্রেশ হতে। মুখ ধুয়ে আয়নার দিকে তাকাতেই স্মৃতির আয়নায় ভেসে উঠে তার ঘুমপরীর সাথে হওয়া প্রথম দেখা।

অতিত-
মিসেস চৌধুরী কলেজ থেকে বিথির ঠিকানা যোগার করে বিথীর অজান্তেই তার আম্মু আব্বুর কাছে বিথী ও বিধানের বিয়ের প্রস্তাব দেন। বিধানের মতো ছেলেকে তারা হাত ছাড়া করতে চাননি তাই পরের দিনই তাদের আসতে বলেন। তবে তারা বিথিকে কিছু জানায়নি। এমনকি কেউ যে আসবে বাড়িতে আসবে তাও জানতো না।
বিধান মায়ের জোর জবরদস্তিতে সেখানে যেয়ে বিথিকে যখন প্রথম দেখে তখন ওর তেমন কোনো অনুভূতি কাজ করেনি কারণ বিথীর থেকে অনেক সুন্দরী মেয়েদের সাথে তার উঠা বসা। আর তাছাড়া তখন বিথির মুখে না ছিল হাসি না ছিল লজ্জা। ছিল শুধুই বিরক্তি কারণ বিথি প্যাস্টেল কালার শাড়ি পড়ে হালকা মেকআপ করে রেডি হয়েছিল বান্ধবীর জন্মদিনে যাবে বলে কিন্তু বিধানরা আসবে দেখে যেতে দেয়নি। যদিও বিথিকে বিধানের ততটা ভালো লাগেনি কিন্তু বিরক্তি মাখা মুখখানা দেখতে কেনো জানি ভালো লাগছিল।
এদিকে বিথি ও বিধানের মা নানা ধরনের আলোচনা করছে মনে হচ্ছে কতদিনের চেনা। হঠাৎ,
মিসেস চৌধুরীঃ বিথী মা তোমাদের ছাদের বাগানটা বিধানকে ঘুরিয়ে দেখাও তো ওর আবার গাছের অনেক সখ। বাগান ভালোবাসা।
বিথি কি করবে বুঝতে পারছিল না কারণ অচেনা একজন ছেলে।
বিথীর আম্মুঃ কিরে যা!
বিথীর আর কি করার চলে গেলো বিধানকে নিয়ে ছাদে। বিধিদের ছাদ দুটি অংশে বিভক্ত। একপাশে বাগান আর অন্য পাশে একটি রুম ও তার সামনে ছাউনির নিচে বেতের সোফা ও দোলনা রাখা। বিথি প্রথমেই বিধানকে বাগান ঘুরিয়ে দেখালো। বাগানের একপাশে আরটিফিশিয়াল ছোট্ট পন্ড তার পাশে ময়না পাখির খাচা। মন জুড়ানোর মতো একটা জায়গা।
,
,
তারপর বিথী যেয়ে দোলনায় বসে পড়লো।
বিথীঃ আপনিও বসেন ভাইয়া!
বিধানঃ জী! (মেয়েটা পাগল নাকি পাত্রকে ভাই বলে ডাকে যাই হোক আমার কি আমি তো আর বিয়ে করছি না- মনে মনে)
বিধান যেয়ে একটা বেতের চেয়ারে গিয়ে বসলো। আর বিথী কানে এয়ারফোন লাগিয়ে গান শুনছিল। এর মাধ্যমে মধ্যে একজন এসে বিধানের জন্য কফি ও নাস্তা দিয়ে যায়। বিধান কফি খেতে ফেসবুকে স্ক্রলিং করতে থাকে। হঠাৎ বিথীর দিকে চোখ যেতেই ও ছোট খাটো একটা শক খায়।
,
,
কারণ বিথী গান শুনতে শুনতেই দোলনায় ঘুমিয়ে গেছে। একজন মেয়ে যে মেহমানকে ছাদ ঘুরাতে এসে নিজেই ঘুমাতে পারে তা দেখে বিধান মনের অজান্তেই হেসে দেয়। এতক্ষণে বিধান বিথীকে ভালোভাবে তাকালো। এখন বিধানের মনে হচ্ছে এ যেনো এক ঘুমন্ত মায়াবী রাজকন্যাই। ৫ ফুট লম্বা হবে, শ্যামা রং, পুরু গোলাপি ঠোঁট, বোচা বোচা নাক, কোমার সমান ঘন কালো কেশ। তবে কেশের বিশেষত্ব হলো প্রাকৃতিক ভাবেই নিচের চুলগুলো ঢেউ খেলানো। হঠাৎ বিধান খেয়াল করে বিথী ঘুমের মধ্যেই হাসছে এবং ঠোঁটের এক কোণে ও থুতনির এক পাশে টোল পড়ছে।
,
,
বিধান নিজের অজান্তেই বিথীর কাছে চলে যায়। কোনো এক ঘোরের মধ্যেই বিথীর পাশে বসে বিথীর মুখে আসা চুলগুলো সরিয়ে হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে ঠোঁটে স্লাইড করতে থাকে।
বিধানঃ কি মিষ্টি হাসি, যেনো এই হাসি দেখেই সারাজীবনের ক্লান্তি ভুলা যায়। ঠোঁট দুটি যেনো গোলাপের পাপড়ির থেকেও মোলায়েম। আর চুলগুলো দেখে মনে হচ্ছে রূপকথার কেশবতী রাজকন্যা অথবা মায়াবী রাজ্যের থেকে আগত কোনো মায়াপরী। (মনে মনে)
বিথী নড়েচড়ে উঠতেই ওর চেতনা আসে ও কি করছে। তাই তাড়াতাড়ি নিজের জায়গায় যেয়ে বসে। অন্যদিকে বিথী ঘুম থেকে উঠে মেহমানের সামনে ঘুমিয়ে যাওয়ার কারণে লজ্জায় পড়ে যায়। যার কারণে মাথা নিচু করে বার বার চুল ঠিক করছিল যা বিধান বুঝতে পেরে মনে মনে হাসছিলো।
বিধানঃ উফফ মায়াবীনি এতো লজ্জা পেয়ো না কয়েকদিন পর তো আমারই হবে। আজই আম্মুকে যেয়ে বলবো যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ের ব্যবস্থা করতে। (মনে মনে)
কিছুক্ষণের মধ্যেই একজন এসে জানায় তাদের নিচে যেতে বলেছে তাই তারা আবার বিথীদের বাসায় যায়।
মিসেস চৌধুরীঃ আজ আসি আম্মু আবার দেখা হবে। এই নেও তোমার জন্য আনা ছোট্ট একটি গিফট।
বিথী দেখে ওর পছন্দের কেডবেরি সেলিব্রেশনস তাই ও খুশিতে বিধানের আম্মুকে জড়িয়ে ধরে।
বিথীঃ থ্যাংক ইউ সো মাচ আন্টি! আবার আসবেন!
বিধানঃ আমার মায়াবতী তো দেখি পুরাই বাবু চকোলেট দেখেই এতো খুশি। (মনে মনে)
এভাবেই বিথীর জন্য ভালোবাসা জন্মে বিধানের মনে।
তারপর বিধানরা চলে যায়। বিধান তার আম্মুকে নিজের মনের কথা খুলে বললে সে বিথীর আব্বুকে জানায়। কিন্তু বিথী মানা করে দেয় তার আব্বুকে। এটা শুনে বিধান অনেক রেগে যায় কারণ আগেই বলা বিধানের ম্যান ইগো অনেক বেশি তাই বিথীর রিজেকশন নিতে পারেনি।
তাই বিথীর বাবাকে অনেক কষ্টে মেনেজ করে বিথীকে বউ করে বিধানকে রিজেক্ট করার পরিণতি বোঝাতে।
,
,
,
হঠাৎ কিছু ভাঙার আওয়াজে বর্তমানে ফিরে আসে বিধান। বাথরুম থেকে বের হয়ে দেখে ওর বাবার দেয়া শেষ উপহার মেঝেতে টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে আছে। একে তো বিধানের মনে এমনেই বিথীর উপর অনেক ক্ষোভ তার উপর এ ঘটনায় ও আরও রেগে গেলো।

চলবে,,
একজনের মনে শুধুই দিধা অপরজনের রাগ ও ইগোর আড়ালে ভালোবাসা এরই নাম হয়তো,

আড়ালে_ভালোবাসার_সংসার-1

12/04/2025
30/12/2024

BPL 2024-25

30/12/2024

DHAKA VS RANGPUR- BPL 2024-25 LIVE

05/12/2023

আমি এমনেই চালায় কিছু করার নাই💔

Address

Mymensingh
2220

Telephone

+8801617285690

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when অক্সিজেন posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to অক্সিজেন:

Share

Category