Muhammad Mazharul Islam

Muhammad Mazharul Islam Welcome to Official page of Md. Mazharul Islam. Md. Editor at sherpurtoday.com www.facebook.com/md.mazharulislam.fanpage www.twitter.com/miakash_bd
(1)

27/04/2025
23/02/2025

যাকাত একটি ফরজ এবাদাত

মুহাম্মাদ মাজহারুল ইসলাম

যাকাত একটি ফরজ এবাদাত, যা বুঝে শুনে ক্ষেত্র বিশেষে আদায় করা বাঞ্ছনীয়, অন্ধের মত চোখ বুজে দিয়ে দিলেই আদায় হবে না।

বৈবাহিক সম্পর্ক ও ঔরষজাত সম্পর্কের মানুষকে যাকাত দেয়া যায় না। কাজেই স্বামী-স্ত্রী, পিতা-পুত্র, দাদা-নাতী কাউকে যাকাত দেয়া যাবে না। অনুরূপভাবে রাসূল স. এর বংশের কাউকে যাকাত দেয়া যাবে না।
এছাড়া যে কোনো গরীবকে যাকাত দেয়া যাবে। গরীব বলতে এমন ব্যক্তিকে বুঝায়, যার হয়ত কোনো সম্পদই নেই। কিংবা আছে, তবে তার প্রয়োজনীয় সম্পদ ও জীবন যাপনে প্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিলে তা নেসাবের চেয়ে কম হয়।

সমাজে কোনো না কোনো কারণে কিছু লোকের অভাব থেকে যায়। আল্লাহ এ জাতীয় লোকদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য যাকাত ফরয করেছেন।

সূরা তাওবার ৬০ নং আয়াতে যাকাতের ৮ টি খাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছেঃ

অন্য কোনো কাজে যাকাতের টাকা খরচ করা যাবে না।

১. ফকীর-
যারা এত গরীব, অন্যের কাছে হাত পাততে বাধ্য হয় তাদের জন্য।

২. মিসকীন-
যারা অভাবী হলেও লজ্জায় কারো কাছে চায় না, তাদের সাহায্যের জন্য।

৩. সরকারের যাকাত বিভাগের কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার জন্য।

৪. নতুন মুসলমান-
যাদের মন জয় করা দরকার। নওমুসলিমদেরকে উৎসাহ দেওয়ার জন্যও যাকাত দেওয়া যাবে।

৫. দাসদের মুক্তির জন্য, বা জরিমানা আদায় না করতে পারায় যারা জেলে পড়ে আছে তাদের মুক্তির জন্য।

৬. ঋণগ্রস্থদেরকে-
ঋণের বোঝা থেকে উদ্ধার করার জন্য।

৭. আল্লাহ দীনকে বিজয়ী করার আন্দোলনে সাহায্য করার জন্য।

৮. মুসাফির অবস্থায় অভাবে পড়ে গেলে তার
অভাব দূর করার জন্য। নিজের বাড়িতে কেউ ধনী হলেও মুসাফির অবস্থায় অসহায় হতে পারে।

যাকাত প্রদানের ক্ষেত্রে আত্মীয়-স্বজনকে প্রাধান্য দেয়া উচিৎ। যাকাত আদায়ের সময় ‘যাকাতের টাকা’ উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। আদায়ের সময় বা যাকাতের টাকা আলাদা করার সময় নিয়্যত করলেই হবে। তবে এই দুই সময়ের কোনোটাতেই নিয়্যত না করলে যাকাত আদায় হবে না। এমনিতে কাউকে টাকা দিয়ে পরে তা যাকাতের খাত থেকে দিয়েছে নিয়্যত করলে যাকাত আদায় হবে না।
এখানে উল্লেখ্য যে, যাকাতের ক্ষেত্রে গরীবকে মালিক বানিয়ে দেয়া শর্ত। কাজেই যাকাতের টাকা দিয়ে মসজিদ বানানো, মাদ্রাসা বানানো, রাস্তাঘাট নির্মাণ, কূপ খনন ইত্যাদি করা যাবে না। বরং সরাসরি গরীবকে যাকাতের টাকার মালিক বানিয়ে দিতে হবে।
কোনো গরীবকে পড়াশোনা, চিকিৎসা, বিবাহ দেয়ার জন্যও যাকাত দেয়া যেতে পারে। তবে তাকে সে টাকার মালিক বানিয়ে দিতে হবে।
যাকাতের টাকা নগদ না দিয়ে গঠনমূলক কিছু ক্রয় করে দেয়া যেতে পারে। যেমন, কেউ কাজ করার সামর্থ্যবান হলে তাকে সেলাই মেশিন, রিক্সা, ভ্যান, কম্পিউটার ইত্যাদি ক্রয় করে দেয়া যেতে পারে। যেন তা দিয়ে উপার্জন করে সে স্বাবলম্বী হতে পারে। এবং এক সময় তাকে আর যাকাত গ্রহণ করতে না হয়।
অল্প অল্প করে অনেককে না দিয়ে প্রতিবছর পরিকল্পনা করে কিছু মানুষকে বেশি করে দিলে সে তাকে গঠনমূলক কাজে লাগাতে পারবে।

যাকাত ফরয হওয়ার পর যাকাত আদায় না করা হলে পরবর্তীতে পূর্বের অনাদায়কৃত সব বছরের যাকাত আদায় করে দিতে হবে।

হারাম সম্পদে যাকাত আসে না এবং হারাম সম্পদ দিয়ে যাকাত আদায়ও করা যায় না। যাকাত তো হল সম্পদের কেবল ২.৫ শতাংশ। আর হারাম সম্পদ তো পুরো একশ শতাংশই দান করে দেয়া ওয়াজীব। কারণ এ সম্পদের মালিক ব্যক্তি নয়। কাজেই সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি, অন্যায়ভাবে দখলকৃত সম্পত্তি ইত্যাদি সব প্রকার হারাম সম্পদ তাৎক্ষণিক ভাবে সওয়াবের নিয়্যত ছাড়া দান করে দায়মুক্ত হতে হবে।

সব ধরণের অভাবী লোকদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার মহান উদ্দেশ্যেই আল্লাহ তাআলা যাকাত ফরয করেছেন এবং এটাকে বড় ইবাদত হিসেবে গণ্য করেন। ইসলামে ভিক্ষা করা অত্যন্ত মন্দ। এ থেকে মানুষকে রক্ষা করার জন্য যাকাত জরুরি। যারা গরীব অথচ হাত পাতে না, তাদেরকে খুঁজে বের করা সরকারের বিরাট দায়িত্ব। ধনীদের থেকে যাকাত উসুল করা ও হকদারদেরকে পৌঁছিয়ে দেওয়ার জন্য যারা কাজ করবে, তাদের বেতন যাকাত থেকেই দিতে হবে।

লেখকঃ ইসলামী গবেষক

23/02/2025

পর্দা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান

মুহাম্মাদ মাজহারুল ইসলাম

নারী জাতীর জন্য পর্দা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। আল্লাহ তা‘আলা নারীদের ইজ্জত, সম্ভ্রম ও সম্মানকে রক্ষা করার জন্য পর্দার বিধানকে বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন। পর্দা নারীর সৌন্দর্য, নারীর ইজ্জত এবং সুরক্ষা। পর্দাহীন নারী বাকলহীন কলার মত-যার উপর মশা-মাছি বসার কারণে কেউ তা গ্রহণ করতে চায় না। বাজারে তার কোনো দাম নেই। অনুরূপ নারীও যখন ঘরের বাইরে পর্দাহীন অবস্থায় বের হয়, তখন সমাজে তার কোনো দাম থাকে না। কুরআন মজীদের কয়েকটি সূরায় পর্দা-সংক্রান্ত বিধান দেওয়া হয়েছে। পর্দার বিষয়ে আল্লাহ তাআলা সকল শ্রেণীর ঈমানদার নারী-পুরুষকে সম্বোধন করেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদেশ করেছেন তিনি যেন তাঁর স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে এবং মুমিন নারীদেরকে চাদর দ্বারা নিজেদেরকে আবৃত রাখার আদেশ দেন।পর্দার রয়েছে মৌলিক ছয়টি স্তম্ভ যার ভিত্তিতে পর্দার অপরিহার্যতা সাব্যস্ত হয়,

(১) আল-ঈমান: ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি সন্নিবেশিত বিধি-বিধানে আন্তরিক বিশ্বাস স্থাপন করা, যার সাথে সাথে মানব অন্তরে বিদ্যুৎ শক্তির উৎপত্তি হয়। যে শক্তি মানবের সর্বাঙ্গকে আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূল প্রদর্শিত আনুগত্যের বিধানানুসারে পরিচালিত করতে উদ্বুদ্ধ করে। সোজা কথায় আল্লাহ ও রাসূলের মনোনীত আইন কানুন মেনে নেয়া।
(২) আল-ইফ্ফাত: সতীত্ব সংরক্ষণ, নৈতিক পবিত্রতা বজায় রাখা।
(৩)আল-ফিতরাত: সৃষ্টিগত স্বভাব ও প্রকৃতি।
(৪) আল-হায়া: লজ্জাশীলতা।
(৫) আত-তাহারাত: আত্মার পবিত্রতা।
(৬) আল- গাইরাত: শালীনতা ও আত্মমর্যাদাবোধ।
নারী-পুরুষের কোনো নির্জন স্থানে একাকী বাস, কিছুক্ষণের জন্যও লোক-চক্ষুর অন্তরালে, ঘরের ভিতরে, পর্দার আড়ালে একান্তে অবস্থান শরীয়তে হারাম। যেহেতু তা ব্যভিচার না হলেও ব্যভিচারের নিকটবর্তী করে, ব্যভিচারের ভূমিকা অবতারণায় সহায়িকা হয়। আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “কোন পুরুষ যেন কোনো নারীর সাথে একান্তে গোপনে অবস্থান না করে। কারণ, শয়তান উভয়ের কুটনি হয়”।
এ ব্যাপারে সমাজে অধিক শৈথিল্য পরিলক্ষিত হয় দেবর-ভাবী ও শালী-বুনাই-এর ক্ষেত্রে। অথচ এদের মাঝেই বিপর্যয় ঘটে অধিক। কারণ ‘পর চোরকে পার আছে, ঘর চোরকে পার নাই।’ তাই তো আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদের পক্ষে তাদের দেওরকে মৃত্যুর সাথে তুলনা করেছেন।
ব্যভিচার থেকে সমাজকে দূরে রাখার জন্যই ইসলামে নারী-পুরুষে অবাধ মেলা-মেশা, নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই অফিসে, মেসে, ক্লাসরুমে, বিয়ে ও মরা বাড়িতে, হাসপাতালে, বাজারে প্রভৃতি ক্ষেত্রে উভয় জাতির একত্রে অবাধ মেলা-মেশা করা অবৈধ।
তাছাড়া পৃথক গার্লস স্কুল-কলেজ না থাকলে মিশ্র শিক্ষাঙ্গনে মুসলিম নারীর শিক্ষায় ‘জল খেতে গিয়ে ঘটি হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাই অধিক ঘটে থাকে; সে সব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে শিক্ষিত হওয়া যায় ঠিকই, কিন্তু আদর্শ মুসলিম হওয়া যায় না। নারীর স্বনির্ভরশীলা হয়ে জীবন-যাপন করায় গর্ব আছে ঠিকই, কিন্তু সুখ নেই। প্রকৃতির সাথে লড়ে আল্লাহর আইনকে অবজ্ঞা করে নানান বিপত্তি ও বাধাকে উল্লঙ্ঘন করে অর্থ কামিয়ে স্বাধীনতা আনা যায় ঠিকই, কিন্তু শান্তি আনা যায় না। শান্তি আছে স্বামীর সোহাগে, স্বামীর প্রেম, ভালোবাসা ও আনুগত্যে। পরিত্যক্তা বা নিপীড়িতা হলে এবং দেখার কেউ না থাকলে মুসলিম রাষ্ট্র ও সমাজে তার কালাতিপাত করার যথেষ্ট সহজ উপায় আছে। যেখানে নেই সেখানকার কথা বিরল। অবশ্য দ্বীন ও দুনিয়ার প্রকৃত মূল্যায়ন করতে পারলে এ সমস্যার সমাধান সহজ হয়ে উঠবে। যারা পরকালের চিরসুখে বিশ্বাসী তারা জাগতিক কয়েকদিনের সুখ-বিলাসের জন্য দ্বীন ও ইজ্জত বিলিয়ে দেবে কেন?
ব্যভিচারের প্রতি নিকটবর্তী হওয়ার আর এক পদক্ষেপ মহিলাদের একাকিনী কোথাও বাইরে যাওয়া-আসা। তাই ‘সুন্দরী চলেছে একা পথে, সঙ্গী হলে দোষ কি তাতে?’ বলে বহু লম্পট তাদের পাল্লায় পড়ে থাকে, ধর্ষণের হাত হতে অনেকেই রক্ষা পায় না, পারে না নিজেকে ‘রিমার্ক’ ও ‘টিস্’ এর শিলাবৃষ্টি হতে বাঁচাতে। এর জন্যই আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “কোন মহিলা যেন এগানা পুরুষ ছাড়া একাকিনী সফর না করে, তার নিকট যেন এগানা ছাড়া কোনো বেগানা পরুষ প্রবেশ না করে, এ কথা শোনে এক সাহাবী জিজ্ঞাসা করলেন, হে রাসূলুল্লাহ আমি অমুক অমুক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য সৈন্য দলে নাম লিখিয়েছি অথচ আমার স্ত্রী হজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন এখন আমি কি করব? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে উত্তর দিলেন তুমি তার সাথে বের হও”।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, “নারী গুপ্ত জিনিস; সুতরাং যখন সে (বাড়ি হতে) বের হয়, তখন শয়তান তাকে পুরুষের দৃষ্টিতে রমণীয় করে দেখায়”
ব্যভিচারের কাছে যাওয়ার আর এক পদক্ষেপ কোনো এমন মহিলার নিকট কোনো গম্য আত্মীয় বা অন্য পুরুষের গমন যার স্বামী বর্তমানে বাড়িতে নেই, বিদেশে আছে। কারণ এমন স্ত্রীর মনে সাধারণত: যৌন ক্ষুধা একটু তুঙ্গে থাকে, তাই বিপদ ঘটাই স্বাভাবিক। স্ত্রী বা ঐ পুরুষ যতই পরহেজগার হোক, তবুও না।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমরা সেই মহিলাদের নিকট গমন করো না যাদের স্বামীরা বিদেশে আছে। কারণ, শয়তান তোমাদের রক্ত শিরায় প্রবাহিত হয়”।
সাহাবী (রা:) বলেন, “আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিষেধ করেছেন যে, আমরা যেন মহিলাদের নিকট তাদের স্বামীদের বিনা অনুমতিতে গমন না করি।
সুগন্ধি ব্যবহার করে নারীদের ঘরের বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ। অনুরূপ কোনো প্রকার সেন্ট বা পারফিউম ক্রিম অথবা পাউডার ব্যবহার করে বাইরে পুরুষদের সম্মুখে (পর্দার সাথে হলেও) যাওয়া ব্যভিচারের নিকটবর্তী হওয়ার এক ভূমিকা। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে মহিলা সুগন্ধি ব্যবহার করে মসজিদে যায়, সেই মহিলার গোসল না করা পর্যন্ত কোনো নামায কবুল হবে না”।
কোন গম্য পুরুষের সাথে মহিলার প্রগলভতার সাথে কিংবা মোহনীয় কণ্ঠে সংলাপ ও কথোপকথন করাও ব্যভিচারের নিকটবর্তীকারী পথসমূহের অন্যতম ছিদ্রপথ। এ বিপজ্জনক বিষয়ে সাবধান করে আল্লাহ তা‘আলা মহিলাদের উদ্দেশ্যে বলেন,
“হে নবী স্ত্রীগণ তোমরা অন্যান্য নারীদের মত নয়, যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর তবে পরপুরুষদের সাথে কোমল কণ্ঠে এমনভাবে কথা বলো না, যাতে ব্যাধিগ্রস্ত অন্তরের মানুষ প্রলুব্ধ হয়।” [সূরা আল-আহযাব: ৩২]
এমন বহু হতভাগী মহিলা আছে যারা স্বামীর সাথে কর্কশ কণ্ঠ স্বরে কথা বলে কিন্তু কোনো উপহাসের পাত্রের সাথে মোহন-সূরে সংলাপ ও উপহাস করে। এরা নিশ্চয়ই পরকালেও হতভাগী। তদ্রূপ বেগানা নারীর সাথে মুসাফাহা বৈধ নয়। হাতে মোজা, দস্তানা বা কাপড়ের কভার রেখেও নয়। কাম মনে হলে তা হবে হাতের ব্যভিচার। আয়েশা রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো স্ত্রী ছাড়া আর কোনো মহিলার হাত স্পর্শ করেননি। নারীদের রাস্তায় বের হয়ে নিজেদের সৌন্দর্য্য পর পুরুষকে প্রদর্শন করা হারাম। বাইরে বের হয়ে নারীর রমণীয়, মোহনীয় ও সৌন্দর্য-গর্বজনক চপল মধুর চলনও ব্যভিচার ও যৌন উত্তেজনার সহায়ক কর্ম। এরা সেই নারী যাদের প্রসঙ্গে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “দুই শ্রেণীর মানুষ জাহান্নামের অধিবাসী যাদেরকে আমি দেখিনি, তারা ভবিষ্যতে আসবে প্রথম শ্রেণী অত্যাচারীর দল যাদের সঙ্গে থাকবে গরুর লেজের মত চাবুক যদ্ধারা তারা লোকদেরকে প্রহার করবে। আর দ্বিতীয় শ্রেণী হল সে নারীর দল যারা কাপড়তো পরিধান করবে কিন্তু তারা উলঙ্গ, নিজেরা অন্যদের প্রতি আকৃষ্ট এবং অন্যদেরকেও তাদের প্রতি আকৃষ্ট করবে, যাদের মস্তক [খোপা বাধার কারণে] উটের হেলে যাওয়া কুঁজের মত হবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তার গন্ধও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধ এত এত দূরবর্তী স্থান থেকেও পাওয়া যাবে”।অনুরূপ খটখট শব্দবিশিষ্ট জুতো নিয়ে চটপটে চলন, দেহের অলঙ্কার যেমন চুড়ি, খুঁটকাটি, নূপুর, তোরা প্রভৃতির বাজনা বাজিয়ে লাস্যময় চলনও যুবকের মনে যৌন-আন্দোলন আনে। সুতরাং, এ কর্ম যে হারাম তা বলাই বাহুল্য। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “তারা তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ করবে না, তারা যেন তাদের গোপন আভরণ প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদক্ষেপ না করে। নারীরা রাস্তায় চলার সময় কখনোই রাস্তার মাঝখান দিয়ে চলবে না। তারা রাস্তার এক পাশ দিয়ে চলবে। মহিলাদের জন্য স্বগৃহে গোসলখানা (বাথরুম) করা ওয়াজেব (সিমেন্টের হওয়া জরুরী নয়) এবং ফাঁকা পুকুরে, নদীতে, ঝর্ণায়, সমুদ্রতীরে বা সাধারণ গোসলখানায় গোসল করা তাদের জন্য হারাম।নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, স্বগৃহ, স্বামীগৃহ বা মায়ের বাড়ি ছাড়া অন্য স্থানে নিজের পর্দা রাখে (কাপড় খোলে) সে তার ও তার রবের মধ্যকার পর্দা ও লজ্জাশীলতাকে বিদীর্ণ করে দেয়। রাসূল সা. বলেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহতে ও পরকালে বিশ্বাস রাখে সে যেন তার স্ত্রীকে সাধারণ গোসলখানায় যেতে না দেয়। স্বগৃহ ছেড়ে পরকীয় গৃহে বাস, বান্ধবী বা বান্ধবীর স্বামীর বাড়িতে রাত্রিবাস ইত্যাদিও বিপজ্জনক ব্যভিচারের ছিদ্রপথ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে মহিলা নিজের স্বামীগৃহ ছাড়া অন্য গৃহে নিজের কাপড় খোলে সে আল্লাহ তা‘আলা ও তার নিজের মাঝে পর্দা বিদীর্ণ করে ফেলে। একই কারণে অপরের লজ্জা স্থান (নাভি হতে হাঁটু পর্যন্ত স্থান) দেখা এবং একই কাপড়ে পুরুষে-পুরুষে বা মহিলায়-মহিলায় শয়ন করাও নিষিদ্ধ।পর পুরুষের দৃষ্টিতে মহিলার সর্বশরীর লজ্জাস্থান। বিশেষ করে চক্ষু এমন এক অঙ্গ যার দ্বারা বিপত্তির সূচনা হয়। চোখাচোখি থেকে শুরু হয়, কিন্তু শেষ হয় গলাগলিতে। এই ছোট্ট অঙ্গার টুকরা থেকেই সূত্রপাত হয় সর্বগ্রাসী বড় অগ্নিকান্ডের মহা বিপদ। দৃষ্টির কথায় কবি বলেন, “আঁখি ও তো আঁখি নহে, বাঁকা ছুরি গো কে জানে সে কার মন করে চুরি গো!” সুতরাং এ দৃষ্টি বড় সাংঘাতিক বিপত্তি। যার জন্যই আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “মুমিন পুরুষদেরকে বল, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে (নজর ঝুকিয়ে চলে) এবং তাদের যৌনাঙ্গকে হেফাযতে রাখে; এটিই তাদের জন্য উত্তম। ওরা যা করে, আল্লাহ সে বিষয়ে অবহিত। আর মুমিন নারীদেরকে বল, তারাও যেন নিজেদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে ও লজ্জাস্থান সংরক্ষন করে। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “(কোন নারীর উপর তোমার দৃষ্টি পড়লে তার প্রতি) বারবার দৃকপাত করো না। বরং নজর সত্বর ফিরিয়ে নিও, কারণ, তোমার জন্য প্রথমবার ক্ষমা, দ্বিতীয়বার নয়”। যেহেতু “চক্ষুও ব্যভিচার করে এবং তার ব্যভিচার হল (কাম) দৃষ্টি।” সুতরাং, এ দৃষ্টিকে ছবি থেকেও সংযত করতে হবে এবং পরপুরুষ থেকে আড়ালে রাখতে হবে। যাতে একহাতে তালি নিশ্চয়ই বাজবে না। আর এই বড় বিপদ সৃষ্টিকারী অঙ্গ চোখটি থাকে চেহারায়। চোখাচোখি যাতে না হয় তাই তো নারীর জন্য জরুরী তার চেহারাকেও গোপন করা। অত্যন্ত সখীত্বের খাতিরে হলেও বিনা পর্দায় সখীতে-সখীতে দৃঢ় আলিঙ্গন ও একে অপরকে নিজ নিজ সৌন্দর্য প্রদর্শন করা বৈধ নয়। কারণ এতে সাধারণত: প্রত্যেক সখী তার সখীর দেহ-সৌষ্ঠব নিজের স্বামীর নিকট বর্ণনা করলে স্বামী মনের পর্দায় তার স্ত্রীর ঐ সখীর বিলক্ষণ রূপ-দৃশ্য নিয়ে মনোতৃপ্তি লাভ করে থাকে। হয়তো বা মনের অলক্ষ্যেই এই পুরুষ তার হৃদয়ের কোনো কোণে ঐ মহিলার জন্য আসন পেতে দেয়। আর পরবর্তীতে তাকে দেখার ও কাছে পাওয়ার মত বাসনাও জাগ্রত করে তোলে। নারীর রূপমাধুরী ও সৌন্দর্য লাবণ্য নারীর গর্ব। তার এ রূপ-যৌবন সৃষ্টি হয়েছে একমাত্র কেবল তার স্বামীর জন্য। স্বামীকে সে রূপ উপহার না দিতে পারলে কোনো মূল্যই থাকে না নারীর। এই রূপ-যৌবন স্বামীকে উপহার দিয়ে কত যে আনন্দ, সে তো নারীরাই জানে। সুন্দর অঙ্গের উপর অঙ্গরাজ দিয়ে আরও মনোহারী ও লোভনীয় করে স্বামীকে উপহার দিয়ে উভয়েই পরমানন্দ ও প্রকৃত দাম্পত্য-সুখ লুটতে পারে পার্থিব সংসারে। সুতরাং অঙ্গ যার জন্য নিবেদিত অঙ্গরাজও তার জন্যই নির্দিষ্ট। স্বামী ব্যতীত অন্য কারো জন্য অঙ্গসজ্জা করা ও তা প্রদর্শন করা বৈধ নয়। যুগের তালে তালে নারীদের অঙ্গরাজ, মেকআপ ও প্রসাধন-সামগ্রী অতিশয় বেড়ে উঠেছে। যার হালাল ও হারাম হওয়ার কষ্টিপাথর হলো এই যে, ঐ প্রসাধনদ্রব্য ব্যবহারে যেন অঙ্গের বা ত্বকের কোনো ক্ষতি না হয়। ঐ দ্রব্যে যেন কোনো প্রকার অবৈধ বা অপবিত্র বস্তু মিশ্রিত না থাকে, তা যেন বিজাতীয় মহিলাদের বৈশিষ্ট্য না হয়। (যেমন সিন্দূর, টিপ প্রভৃতি) এবং তা যেন বেগানার সামনে প্রকাশ না পায়। সুতরাং শরীয়তের সীমার মাঝে থেকে নারী যে কোনো প্রসাধন কেবল স্বামীর মন আকর্ষণের জন্য ব্যবহার করতে পারে। পরিধান করতে পারে যে কোনো পোশাক তার সামনে, কেবল তাকেই ভালো লাগানোর জন্য। এই সাজ-সজ্জাতেও লুকিয়ে থাকে ভালোবাসার রহস্য। পক্ষান্তরে স্ত্রী যদি স্বামীর জন্য অঙ্গসজ্জা না করে; পরন্তু বাইরে গেলে বা আর কারো জন্য প্রসাধন করে, তবে নিশ্চয়ই সে নারী প্রেম-প্রকৃতির বিরোধী। নচেৎ সে স্বামীর প্রেম ও দৃষ্টি আকর্ষণকে জরুরী ভাবে না। এমন নারী হতভাগী।
পর্দাহীনতার পরিণতি হিসেবে আমরা দেখতে পাচ্ছি ভয়ঙ্কর সামাজিক ব্যাধি ইভটিজিং। অনেক নারীরা ইভটিজিং এর শিকার হয়ে অপমানের জ্বালা সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এখন সর্বত্রই হচ্ছে ইভটিজিং বিরোধী মিছিল, র‌্যালী ও মানবন্ধন ইত্যাদি। আমার এটি প্রশ্ন অভিভাবকদের কাছে, র‌্যালী, মানববন্ধন করে কি ইভটিজিং বন্ধ করা গেছে? র‌্যালী, মানববন্ধন সভা-সেমিনার করে একটি বিষয় সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা যায় কিন্তু ইভটিংয়ের মতো একটি সামাজিক ক্যান্সারকে নির্মূল করা যায় না। মিছিল, র‌্যালী, মানবন্ধন কেন যৌন নিপিড়ন বন্ধের আইন ৫০৯ ধারা দন্ডবিধি করেও এসব অপরাধ বন্ধ করা যাবে না। কথায় আছে, ‘‘সর্বাঙ্গে ব্যথা ঔষুধ দিবো কোথা।’’ আমাদের দেশের যুবসমাজ তথা তরুণ-তরুণীদের অবস্থা এমনই। এ অবস্থার পরিবর্তনে আমাদের যুবসমাজ তথা তরুণ-তরুণীদের দিতে হহবে আল কোরআন ও আল হাদীসের শিক্ষা। অভিভাবকদের হতে হবে আরো সচেতন। করতে হবে সন্তানদের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি। একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি সন্তানদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে।

12/02/2025

আনারসের বাগান

আমার ফেসবুক পেজটি ফলো দিয়ে সাথেই থাকুন!
11/02/2025

আমার ফেসবুক পেজটি ফলো দিয়ে সাথেই থাকুন!

11/02/2025
Celebrating my 10th year on Facebook. Thank you for your continuing support. I could never have made it without you. 🙏🤗🎉
07/12/2024

Celebrating my 10th year on Facebook. Thank you for your continuing support. I could never have made it without you. 🙏🤗🎉

আসসালামু আলাইকুম, সকলে কেমন আছেন?
13/11/2024

আসসালামু আলাইকুম, সকলে কেমন আছেন?

01/07/2024

Address

Mymensingh
Mymensingh
2100

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Muhammad Mazharul Islam posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Muhammad Mazharul Islam:

Share

Category