11/08/2025
চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন, দেখবেন ছাত্র-শিক্ষকরা দিন-রাত কাজ করছে। রাজনীতি তো দূরের কথা, ফালতু কথা বলে সময় নষ্ট করার সুযোগ ওদের নেই।
জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন, দেখবেন শিক্ষকদের রুমের লাইট বন্ধ হয় না। সকাল সাতটা থেকে শুরু হয়। অনেকের লাইট জ্বলে রাত দশটা পর্যন্ত।
কোন পোস্টার নাই। নেতা নাই। হলে রাজনীতি নাই। ছাত্রদের সংগঠণের নামে, ব্যানার টানিয়ে কোন কার্যক্রম নাই। ঐ ধর-ঐ মার এসব নাই। যে যার মতো স্বাধীনভাবে চলছে। পড়ছে। কাজ করছে। আবিষ্কার-উদ্ভাবন করে যাচ্ছে। কারণ একটা প্রতিষ্ঠান, প্রতিটা শিক্ষার্থীর। কোন দলের কাছে নত হওয়ার জন্য না। কোন দলের ছায়ায় চলার জন্য না।
ইউরোপে যাবেন, তাই দেখবেন। জার্মানী, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ইংল্যান্ড, ফ্রান্সের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পৃথিবী নাড়া দেয়া আবিষ্কার-উদ্ভাবন নিয়ে আছে। তাদের ছাত্ররা ২২-২৩ বছর বয়সে পিএইচডি শুরু করে। অসংখ্য তরুণের চোখ ভরা স্বপ্ন।
আর সে বয়সী বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা দলীয় রাজনীতি নিয়ে আছে। এক দল আরেক দলকে খেদায়। দিনভর হাউকাউ! কিসের পড়াশুনা! কিসের গবেষণা! ছাত্র-শিক্ষকরা মিলে দলাদলি, রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত। এমন নোংরা সংস্কৃতি পৃথিবীর কোথাও নাই। আফ্রিকার ক্ষুধাপীড়িত দেশেও না। —এতোই দুর্ভাগা আমরা! —এতোই দুর্ভাগা আমার দেশ!
আমেরিকার ছেলে-মেয়েরা আছে রোবট নিয়ে। নতুন নতুন ড্রাগ আবিষ্কার নিয়ে। মেশিন লার্নিং নিয়ে। মহাকাশ গবেষণা নিয়ে। ২৫-২৬ বছর বয়সী তরুণরা উদ্যোক্তা হচ্ছে। লক্ষাধিক স্টার্টআপ প্রতিবছর চালু হয় আমেরিকায়। —এমন কোন বিষয় নেই যেটা নিয়ে আমেরিকার তরুণরা পড়ে না। গবেষণা করে না। ভাবে না।
আমরা কি কখনো এসব শিখবো না? শিখতে চাইবো না? নাকি জীবনভর নিজেদের ব্যার্থতাকে, অন্যের ষড়যন্ত্র আর চক্রান্ত বলেই মানুষকে বিভ্রান্ত করবো?
পাশের দেশ ভারত, ২৩ টা বিশ্বমানের আইআইটি গড়ে তুলেছে। আমরা সে মানের একটা প্রতিষ্ঠানও গড়তে পারিনি আজো। একটাও না। অথচ এটা ২০২৫ সাল! এগুলো আর কতো বুঝাবো! আর কতো লিখবো!
সারা দুনিয়া তার তরুণদের কাজে লাগায় বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য। আর আমরা আমাদের তরুণদেরকে দলীয় দাস বানিয়ে রাখি—চিন্তায়, মগজে, কার্যক্রমে!
…………………….
RAUFUL ALAM
“একটা দেশ যেভাবে দাঁড়ায়” এবং “বাংলাদেশের স্বপ্নচোখ” বই দুটোতে সারা পৃথিবীর উদাহরণ দিয়ে, চোখে ধরিয়ে দিয়েছি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সবই যেনো পণ্ডশ্রম! কোন পরিবর্তন নেই!