26/07/2025
🌙 সফর মাস সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি:
❌ ভ্রান্ত ধারণা: সফর মাস অপয়া
আরবদের জাহিলিয়াত যুগে সফর মাসকে অপয়া মনে করা হতো। তারা মনে করত, এই মাসে বিপদ, দুর্যোগ বেশি হয়। কিন্তু রাসূলুল্লাহ ﷺ এই বিশ্বাস সরাসরি বাতিল করে দিয়েছেন।
✅ সহিহ হাদিস:
📘 সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম–এ এসেছে:
> قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ: «لا عَدْوَى، وَلا طِيَرَةَ، وَلا صَفَرَ، وَلا هَامَةَ»
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন:
"ছোঁয়াচে রোগ (নিজে থেকে) সংক্রমিত হয় না, অশুভ লক্ষণ নেই, সফর মাসে কোনো অশুভতা নেই, ও হামের (পাখি-ভিত্তিক কুসংস্কার) কোনো ভিত্তি নেই।"
📚 (সহিহ বুখারি: 5707, সহিহ মুসলিম: 2220)
🔹 ব্যাখ্যা: এখানে “لا صَفَرَ” অর্থাৎ "সফর মাস অপয়া নয়" – সরাসরি বলা হয়েছে।
---
📜 সফর মাসে ঐতিহাসিক ঘটনাবলি:
১. রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে হত্যার ষড়যন্ত্র (দারুন-নাদওয়া সভা)
📅 সফর মাস, হিজরতের পূর্বে (১৩ নবুওয়াত)
📍 কুরাইশ নেতারা মক্কার “দারুন নাদওয়া”-তে মিলিত হয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে হত্যার ষড়যন্ত্র করে।
এরপরেই তিনি আল্লাহর নির্দেশে হিজরতের প্রস্তুতি নেন।
📚 রেফারেন্স:
ইবনে হিশাম (সীরাহ),
তাবরী,
আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া (ইবন কাসীর)
---
২. রাসূলুল্লাহ ﷺ–এর হিজরতের সূচনা
📅 সফর মাসের শেষ দিকে তিনি হজরত আবু বকর (রা.)–এর সাথে গোপনে মক্কা ত্যাগ করেন।
📍 গুহা "সওর"-এ আশ্রয় নেন।
📚 রেফারেন্স:
সহিহ বুখারি (3906),
ইবনে হিশাম (সীরাহ),
আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া (৩/২২১)
---
৩. খায়বার যুদ্ধের প্রস্তুতি
📅 সফর ৭ হিজরি
মুসলিম বাহিনী সফর মাসে খায়বার অভিযানের জন্য প্রস্তুত হয়। যদিও যুদ্ধ পরবর্তী মাসে (রবিউল আউয়াল) হয়।
📚 রেফারেন্স:
সহিহ বুখারি (4200),
আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া,
ইবনে সা’দ: الطبقات الكبرى
---
৪. রাসূলুল্লাহ ﷺ-র শেষ অসুস্থতার সূচনা
📅 সফর ১১ হিজরি
রসুলুল্লাহ ﷺ সফরের শেষ দিকে অসুস্থ হন। এরপর রবিউল আউয়াল মাসে ইন্তিকাল করেন।
📚 রেফারেন্স:
সহিহ বুখারি: 4450
ইবনে হিশাম,
ইবনে কাসীর
---
✅ ইসলামের দৃষ্টিতে সফর মাসে করণীয়:
1. সফর মাসে কুসংস্কার থেকে বিরত থাকুন
2. ইবাদত চালিয়ে যান যেমন অন্যান্য মাসে করেন
3. বিশেষ কোনো ইবাদতের নির্দিষ্ট ফজিলত সফর মাসে নেই
বিষয় ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি
সফর মাস অপয়া কি? ❌ না, রাসূল ﷺ স্পষ্টভাবে তা বাতিল করেছেন
বিশেষ আমল আছে কি? ❌ না, সহিহ সূত্রে নির্দিষ্ট কোনো আমল নেই
ঐতিহাসিক ঘটনা ✔️ হিজরতের সূচনা, দারুন নাদওয়া সভা, খায়বার প্রস্তুতি