ফাজায়েলে আমল

  • Home
  • ফাজায়েলে আমল

ফাজায়েলে আমল "কোন আমল করার আগে নিয়ম জানাও অনেক বেশি জরুরী"

#ফাজায়েলেআমল

11/07/2025

🌸 মানবতার মুক্তির দূত, বিশ্বনবী ﷺ এর জুম্মার দিনের আমল 🌸

🕋 হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মানবতার জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ।
তিনি জুম্মার দিনকে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন এবং কিছু নিয়মিত আমল করতেন, যা আমাদের জন্যও অনুসরণীয়।

✨ রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জুম্মার দিনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল:

✅ গোসল করা ও পবিত্রতা অর্জন
রাসূল ﷺ জুম্মার দিন গোসল করতেন।

> 📚 (বুখারি, মুসলিম)

✅ সুন্দর পোশাক পরিধান করা ও সুগন্ধি ব্যবহার করা
তিনি পরিচ্ছন্ন ও সুবাসিত হয়ে জুম্মার নামাজে যেতেন।

> 📚 (মুসনাদে আহমদ)

✅ মিসওয়াক করা (দাঁত পরিষ্কার করা)

> 📚 (বুখারি)

✅ জুম্মার খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা
তিনি বলেন:

> “যে ব্যক্তি খুতবার সময় কথা বলে, সে ব্যর্থ হলো।”
📚 (মুসলিম)

✅ সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করা

> “যে ব্যক্তি জুম্মার দিন সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করবে, তার জন্য দুই জুম্মার মধ্যবর্তী সময় নূর আলোিত হবে।”
📚 (হাকিম)

✅ দরুদ শরীফ বেশি বেশি পড়া
রাসূল ﷺ বলেন:

> “তোমরা জুম্মার দিনে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো।”
📚 (নাসায়ী)

✅ দোয়া করা ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া
কারণ জুম্মার দিনে একটি বিশেষ মুহূর্ত আছে, যেখানে দোয়া কবুল হয়।

🕊️ আসুন, আমরা বিশ্বনবী ﷺ এর এই সুন্নতগুলো জীবনে বাস্তবায়ন করি এবং জুম্মার দিনের ফজিলত অর্জন করি। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন। 🌷

11/07/2025

🌸 জুম্মার নামাজের ফজিলত ও জুম্মার দিনের আমল 🌸

🕋 জুম্মার দিন সপ্তাহের সর্বশ্রেষ্ঠ দিন।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন:

> “সপ্তাহের সাত দিনের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হল জুম্মার দিন। এই দিনে আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এই দিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এই দিনেই তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে।”
📚 (মুসলিম: ৮৫৪)

✨ জুম্মার দিনের একটি বিশেষ মুহূর্ত আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায়, আল্লাহ তা কবুল করেন।
রাসূল ﷺ বলেন:

> “জুম্মার দিন একটি ক্ষণ রয়েছে, সেই সময়ে কোনো মুসলিম দাঁড়িয়ে নামাজে থাকাকালে আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে, আল্লাহ অবশ্যই তা তাকে দেন।”
📚 (বুখারি: ৯৩৫, মুসলিম: ৮৫২)

🕌 কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন:

> “হে ঈমানদারগণ! যখন জুম্মার দিনের নামাজের আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় পরিত্যাগ কর। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানো।”
📖 (সূরা জুমু’আ: ৯)

💖 জুম্মার দিনের করণীয় আমল সমূহঃ ✅ গোসল করা, সুন্দর পোশাক পরা ও সুগন্ধি ব্যবহার করা।
✅ জুম্মার খুতবা মনোযোগ সহকারে শোনা।
✅ সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করা।
✅ দরুদ শরীফ বেশি পরিমাণে পাঠ করা।
✅ দোয়া ও ইস্তেগফার বেশি বেশি করা।

🕊️ আসুন, আমরা সবাই জুম্মার দিনের ফজিলত অর্জনে সচেষ্ট হই। আল্লাহ আমাদের কবুল করুন। আমিন। 🌸

26/06/2025

🌟 আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) – বিশিষ্ট সাহাবী ও নবীজীর সেবক
(আল্লাহ তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হোন)

🔹 পরিচয়:
আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) ছিলেন ইসলাম ধর্মের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহাবী। তিনি মদিনার খাজরাজ গোত্রের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তাঁর মা উম্মে সুলায়ম (রাঃ) যখন ইসলাম গ্রহণ করেন, তখন তিনি ছোট ছিলেন। নবী করীম ﷺ যখন হিজরত করে মদিনায় আসেন, তখন তাঁর মা তাঁকে নবীর খেদমতে (সেবায়) দিয়ে দেন।
> 📅 বয়স: যখন নবী ﷺ হিজরত করেন, তখন তাঁর বয়স ছিল প্রায় ১০ বছর।
🕌 তিনি নবীজীর সাথে ছিলেন প্রায় ১০ বছর—যাবতীয় খেদমত করেছেন।

🔹 নবীজীর খাদেম হিসেবে ভূমিকা:
তিনি নবীজী ﷺ–এর সাথে প্রতিদিন থাকতেন—ঘুম থেকে উঠানো, ওযু পানির ব্যবস্থা, জুতা-চাপ্পল, সফর-সঙ্গ, মসজিদ পরিষ্কার করা ইত্যাদি তিনি করতেন। নবীজী ﷺ তাকে কখনো রাগ করে কিছু বলেননি। তিনি নিজেই বলেছেন:

> হাদীস:
❝আমি দশ বছর রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর খেদমত করেছি। তিনি কখনো আমাকে 'উফ' পর্যন্ত বলেননি।❞
— সহীহ মুসলিম, হাদীস: 2310

🔹 হাদীস বর্ণনায় অবদান:
আনাস (রাঃ) ছিলেন অন্যতম মুক্ষণ হাদীস বর্ণনাকারী। তিনি প্রায় ২৮৬০টি হাদীস বর্ণনা করেছেন।
তিনি আবু হুরাইরা (রাঃ)-এর পরে সর্বাধিক হাদীস বর্ণনাকারীদের একজন।
> সহিহ বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ ইত্যাদি হাদীস সংকলনে তাঁর বহু রেওয়ায়াত রয়েছে।

🔹 কোরআনের সাথে সম্পর্ক:
আনাস (রাঃ) কুরআন হিফজ করেছিলেন এবং সাহাবিদের মাঝে কুরআন শিক্ষা দিতেন। তাঁর কণ্ঠে কুরআন তেলাওয়াত অত্যন্ত মধুর ছিল।
> ❝إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ❞
"আল্লাহ্‌কে তো তাঁর বান্দাদের মধ্যে কেবল জ্ঞানীরাই ভয় করে"
— সূরা ফাতির: ২৮
এই আয়াত তাঁর জীবনে পরিপূর্ণরূপে প্রতিফলিত ছিল।

🔹 তাঁর মেধা ও স্মরণশক্তি:
আনাস (রাঃ) ছিলেন তীক্ষ্ণ স্মৃতিশক্তির অধিকারী। এজন্য বহু ঘটনা তিনি হুবহু তুলে ধরতেন। তাঁর এই গুণের কারণে অনেক তাবেঈ ও মুহাদ্দিস তাঁর কাছে জ্ঞান অর্জনে আগ্রহী ছিলেন।

🔹 ইন্তিকাল:
আনাস (রাঃ) ৯৩ হিজরিতে (খ্রিস্টাব্দে প্রায় ৭১১ সালে) বাসরা শহরে ইন্তিকাল করেন। তিনি ছিলেন সর্বশেষ ইন্তিকালকারী সাহাবিদের একজন।

🔹 শিক্ষণীয় বিষয়সমূহ:
1. ছোটবেলা থেকেই দ্বীনের খেদমতে থাকা।
2. নম্রতা ও বিনয় নবীজীর সান্নিধ্যে শেখা।
3. স্মৃতিশক্তি ও লেখালেখিতে পারদর্শিতা
4. নবীজীর প্রতি ভালোবাসা ও নিরবচ্ছিন্ন খেদমত।
🔹
আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) আমাদের জন্য এক অনন্য আদর্শ—বিশেষ করে নবীজীর প্রতি ভালোবাসা, খেদমত, এবং ইলম অর্জনে আগ্রহে। তাঁর জীবনী থেকে আমাদের শেখার আছে অপরিসীম।

21/06/2025

বাংলাদেশে ইসলাম ও সেকুলারিজমের দ্বন্দ্ব: দীর্ঘমেয়াদি সংঘাত ও বিভক্তি

বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় পরিচয় এবং সামাজিক কাঠামোতে ইসলাম এবং সেকুলারিজমের মধ্যে দ্বন্দ্ব একটি দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ দ্বন্দ্বের শিকড় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মলগ্ন থেকেই প্রোথিত।

রাষ্ট্র গঠনের শুরুর দ্বন্দ্ব

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্ম ঘটে একটি সেকুলার (ধর্মনিরপেক্ষ) রাষ্ট্র হিসেবে। বাংলাদেশের সংবিধানের ৪নং ধারা বলেছিল:

> “রাষ্ট্র ধর্মনিরপেক্ষতা থাকবে এবং ধর্মনিরপেক্ষতাই থাকবে জাতীয় জীবনের ভিত্তি” (Bangladesh Constitution, 1972)।

তবে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর রাষ্ট্রক্ষমতায় সামরিক শাসকদের উত্থান হয় এবং তারা ইসলামকে রাষ্ট্রীয় পরিচয়ের অংশ হিসেবে তুলে ধরতে শুরু করে। জিয়াউর রহমান সংবিধানে "বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম" যুক্ত করেন এবং এরশাদ ১৯৮৮ সালে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ঘোষণা করেন (Riaz, 2004)।

ইসলাম ও সেকুলারিজমের দ্বন্দ্বের মূল কারণসমূহ

১️⃣ রাষ্ট্রীয় নীতি ও সংবিধান পরিবর্তন:
সেকুলারিজমের মূল নীতি ছিল ধর্মের ওপর নিরপেক্ষতা বজায় রাখা, কিন্তু রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামের সংযোজন সেকুলার চিন্তাধারার সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে দাঁড়ায় (Hashmi, 2011)।

২️⃣ রাজনৈতিক ব্যবহারে ধর্ম:
রাজনৈতিক দলগুলো ইসলামকে ভোটের রাজনীতিতে ব্যবহার করতে থাকে। বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিকভাবে ইসলামপন্থী ভোটব্যাংক তৈরি করে, যেখানে আওয়ামী লীগ সেকুলার বেস ধরে রাখার চেষ্টা করে (Riaz, 2016)।

৩️⃣ সামাজিক বিভাজন:
ধর্মনিরপেক্ষতা পক্ষে থাকা জনগোষ্ঠী এবং ইসলামপন্থী জনগোষ্ঠীর মধ্যে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দূরত্ব বেড়েছে। বিশেষত হেফাজতে ইসলাম ও সমমনা দলগুলোর উত্থান এই বিভাজন আরও স্পষ্ট করেছে (International Crisis Group, 2015)।

সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট

২১ শতকে এই দ্বন্দ্ব আরও তীব্র আকার ধারণ করে ব্লগার হত্যা, ধর্ম অবমাননা বিতর্ক, হেফাজতের বিক্ষোভ, এবং সংখ্যালঘু নিপীড়নের ঘটনায়। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগও বাকস্বাধীনতার ওপর প্রভাব ফেলছে (Human Rights Watch, 2021)।

সংঘাতের ফলাফল

রাষ্ট্রীয় নীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থায় দ্বৈততা।

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধি।

রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও সহিংসতা বৃদ্ধি।

নাগরিক অধিকারের সংকোচন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার হ্রাস।

মূল রেফারেন্সসমূহ

📌 Riaz, Ali (2004). God Willing: The Politics of Islamism in Bangladesh. Rowman & Littlefield Publishers.
📌 Hashmi, Taj I. (2011). Islamic Resurgence in Bangladesh: Genesis, Dynamics and Implications.
📌 International Crisis Group (2015). Mapping Bangladesh’s Political Crisis.
📌 Human Rights Watch (2021). Bangladesh: Events of 2020.
📌 The Constitution of the People’s Republic of Bangladesh, 1972 (with amendments).

20/06/2025

🌟 মু'আয ইবনে জাবাল (রাঃ)

উপাধি: আলেম ও কুরআনের বিশারদ সাহাবী
আরবিতে নাম: معاذ بن جبل رضي الله عنه
জন্মস্থান: মদীনা, আনসার গোত্র খাযরাজ
ইসলাম গ্রহণ: অল্প বয়সেই, বাইআত উল আকাবা-তে অংশগ্রহণ করেন

📖 কুরআন ও হাদীসের জ্ঞান:
রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁকে আলেম সাহাবীদের মধ্যে অন্যতম হিসেবে গড়ে তোলেন। তিনি ছিলেন কুরআনের গভীর অর্থ বোঝায় পারদর্শী এবং হালাল-হারাম নির্ধারণে দক্ষ।

✅ হাদীস:
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন:
> “আমার উম্মতের মধ্যে মু'আয ইবনে জাবাল (রাঃ) হালাল ও হারামের জ্ঞান সবচেয়ে বেশি রাখেন।”
📚 তিরমিযি: 3791, হাদীস সহীহ

✅ আরেক হাদীসে:
> “কিয়ামতের দিন মু'আয (রাঃ) জ্ঞানীদের এক কদম সামনে চলবেন।”
📚 ইবনে মাজাহ: 154

🕌 গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব:
মু'আয (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ ﷺ ইয়ামান প্রদেশে দাঈ ও বিচারক হিসেবে প্রেরণ করেন।

🗣️ তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ জিজ্ঞেস করলেন:
> “তুমি কিসের দ্বারা ফয়সালা করবে?”
তিনি বললেন: “আল্লাহর কিতাব দ্বারা।”
রাসূল ﷺ আবার বললেন: “তাতে না পেলে?”
তিনি বললেন: “রাসূলের সুন্নাহ দ্বারা।”
— এরপর রাসূল ﷺ তাঁকে বাহুতে জড়িয়ে বললেন:
“আল্লাহর রাসূলের দূতকে, যে তাঁর রাসূলকে সন্তুষ্ট করেছে।”
📚 আবু দাউদ: 3592, সহীহ

🕋 ওফাত:
মু'আয ইবনে জাবাল (রাঃ) খলিফা উমর (রাঃ)-এর খিলাফতের সময় সিরিয়ায় প্লেগে আক্রান্ত হয়ে শাহাদাত বরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল আনুমানিক ৩৩ বছর।

❤️ তাঁর শেষ কথা:
> “হে আল্লাহ! জানতাম তুমি আমাকে ভালোবাসো। আমি তোমাকেও ভালোবাসি। এখন তুই আমার সাথে সাক্ষাতের সময় করে দে।”
📌 বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
আল্লাহর রাসূল ﷺ তাঁকে "ইমামুল উলামা" (আলেমদের নেতা) বলেছেন।
কুরআনের ৭ জন বিশিষ্ট ক্বারীদের মধ্যে অন্যতম।
📚 বুখারী, মুসলিম, তিরমিযি
📚 রেফারেন্স:
সহীহ বুখারী
সহীহ মুসলিম
সুনান তিরমিযি
সুনান আবু দাউদ
سير أعلام النبلاء للإمام الذهبي

البداية والنهاية لابن كثير
📌 নোট: মু'আয (রাঃ)-এর জীবন আমাদের জন্য এক উজ্জ্বল আদর্শ – বিশেষ করে যারা ইসলামি জ্ঞান অর্জন ও প্রচারে মনোযোগী

19/06/2025

🌟 আবু হুরায়রা (রাঃ) – হাদীসের অগ্রদূত সাহাবী

মূল নাম: আবদুর রহমান ইবন সাখর আদ-দাওসি (رضي الله عنه)
উপনাম: আবু হুরায়রা (রাঃ) – অর্থাৎ "বিড়ালের পিতা", কারণ তিনি একটি বিড়ালছানা পুষতেন যা সর্বদা তাঁর সঙ্গে থাকত।

ইসলাম গ্রহণ: নবী করিম (সাঃ)-এর হিজরতের সাত বছর পর, খাইবার যুদ্ধের সময় ইসলাম গ্রহণ করেন। তখন থেকেই তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সংস্পর্শে আসেন এবং তাঁর সঙ্গ ত্যাগ করেননি।

বিশেষত্ব:

সর্বাধিক হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবী। প্রায় ৫,৩৭৪টি হাদীস বর্ণনা করেছেন।

তিনি দিনরাত নবীজি (সাঃ)-এর সান্নিধ্যে থেকে হাদীস, আমল ও সুন্নাহ শিখেছেন ও সংরক্ষণ করেছেন।

বহু সাহাবী ও তাবেঈ তাঁর কাছ থেকে জ্ঞান আহরণ করেছেন।

জীবনের উৎসর্গ:
আবু হুরায়রা (রাঃ) ছিলেন “আহলুস সুফফাহ”–দের অন্যতম। তিনি দুনিয়াবী সম্পদ ত্যাগ করে পুরোপুরি ইলম ও দাওয়াতের কাজে জীবন উৎসর্গ করেন।

খিলাফত ও মৃত্যু:

খলিফা উমর (রাঃ) তাঁকে বাহরাইন-এর গভর্নর নিযুক্ত করেছিলেন।

৫৯ হিজরিতে, মদিনায় ইন্তেকাল করেন। জানাজা নামাজ পড়িয়েছিলেন মদিনার তৎকালীন গভর্নর মারওয়ান ইবন হাকাম।

উল্লেখযোগ্য গুণাবলি:

অসাধারণ স্মৃতিশক্তি

রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর প্রতি গভীর ভালোবাসা

দীনের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য

18/06/2025

বিলাল ইবনে রাবাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ইসলামের এক অসাধারণ সাহাবী যিনি তাঁর ঈমান, ধৈর্য ও ত্যাগের মাধ্যমে মুসলিম জগতে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। তিনি ছিলেন ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন এবং দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়ে ইসলামের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন।

🔹 পরিচয়:
নাম: বিলাল ইবনে রাবাহ (رَضِيَ ٱللَّٰهُ عَنْهُ)
উপনাম: আবু আব্দুল্লাহ
জন্ম: মক্কা, আনুমানিক ৫৮০ খ্রিস্টাব্দ
জাতিগত পরিচয়: আফ্রিকান বংশোদ্ভূত (মাতার দিক থেকে আবিসিনিয়ান)
দাসত্ব: জন্মসূত্রে কুরাইশদের অধীন দাস ছিলেন

🔹 ইসলাম গ্রহণ:
বিলাল (রাঃ) ছিলেন প্রাথমিক ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে একজন। তিনি যখন ইসলাম গ্রহণ করেন, তখন মুসলমানদের সংখ্যা ছিল খুবই নগণ্য। তাঁর ঈমান ছিল অত্যন্ত মজবুত এবং অটল।

🔹 নির্যাতন ও ধৈর্য:
ইসলাম গ্রহণের কারণে উমাইয়া ইবনে খালাফ তাকে চরম নির্যাতনের শিকার করেন। গরম বালুর উপর শুইয়ে পাথর চাপিয়ে রেখে বারবার জিজ্ঞাসা করা হতো, “তুমি কী আবার মুহাম্মদকে সাচ্চা বলো?” কিন্তু বিলাল (রাঃ) দৃঢ়চিত্তে একটিই কথা বলতেন:
> "আহাদ! আহাদ!"
(এক, কেবল এক আল্লাহ!)
এই আহ্বান ছিল তাঁর ঈমানের প্রতীক।

🔹 মুক্তি:
এই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাহাবী আবু বকর (রাঃ) অত্যন্ত ব্যথিত হন। তিনি উমাইয়া ইবনে খালাফের কাছ থেকে প্রচুর অর্থ দিয়ে বিলাল (রাঃ)-কে কিনে নিয়ে মুক্ত করে দেন।

🔹 ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন:
রাসূলুল্লাহ ﷺ মদিনায় হিজরতের পর, আজানের মাধ্যমে সালাতের আহ্বান শুরু হয়। রাসূল ﷺ ব্যক্তিগতভাবে বিলাল (রাঃ)-কে প্রথম মুয়াজ্জিন হিসেবে মনোনীত করেন।
তাঁর কণ্ঠ ছিল সুদৃঢ় ও হৃদয়স্পর্শী। আজান দানের সময় তাঁর হৃদয় আল্লাহর স্মরণে পূর্ণ থাকত।

🔹 যুদ্ধ এবং অবদান:
তিনি বদর, উহুদ, খন্দকসহ সকল প্রধান যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তাঁর তলোয়ার কেবল ইসলামের জন্য ছিল। তিনি শুধু একজন মুয়াজ্জিনই ছিলেন না, বরং একজন সাহসী যোদ্ধাও ছিলেন।

🔹 রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ইন্তেকালের পর:
নবীজীর ইন্তেকালের পর তিনি আজান বন্ধ করে দেন। তিনি বলতেন:
> "নবীজী নেই, কাকে আমি আজান দিব?"
তিনি পরবর্তীতে সিরিয়ায় চলে যান এবং সেখানে থেকেই ইবাদত ও দ্বীনি কাজে জীবন কাটান।

🔹 মৃত্যুবরণ:
বিলাল (রাঃ) সিরিয়ার দামেস্কে আনুমানিক ৬৪ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর সময় তাঁর মুখে ছিল:
> "আগামীকাল প্রিয় নবীজীর সাথে দেখা হবে…"

🌟 শিক্ষণীয় বিষয়:
ঈমানের দৃঢ়তা
ধৈর্য ও ত্যাগের অনন্য দৃষ্টান্ত
মানবমুক্তির আদর্শ রূপ
সত্যের জন্য প্রাণ দান

বিলাল (রাঃ) আমাদের জন্য এক অনন্ত অনুপ্রেরণা, যিনি দাসত্ব থেকে উঠে এসে ইসলামের একটি অমর প্রতীক হয়ে উঠেছেন।

17/06/2025

🌟 আবু উবাইদা ইবনে জাররাহ (রাঃ)
— “আমিনুল উম্মাহ” – উম্মাহর বিশ্বস্ত ব্যক্তি নামে রাসূল ﷺ–এর ঘোষিত সাহাবী

🔹 পরিচিতি:
পূর্ণ নাম: আমির ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে জাররাহ
কুনিয়াহ: আবু উবাইদা
গোত্র: কুরাইশ, ফিহর শাখা
জন্ম: প্রায় ৫৮৫ খ্রিষ্টাব্দ, মক্কায়
ইসলাম গ্রহণ: খুব শুরুর দিকে, আবু বকর (রাঃ)–এর মাধ্যমে
ইন্তেকাল: ১৮ হিজরি, আমবাস (সিরিয়া) অঞ্চলে প্লেগে আক্রান্ত হয়ে

🔹 ইসলাম গ্রহণ ও প্রাথমিক অবদান:
আবু উবাইদা (রাঃ) ইসলাম গ্রহণ করেন শুরুর দিকেই। তিনি ছিলেন সেই দশজন সৌভাগ্যবান সাহাবীর একজন, যাঁরা আবু বকর (রাঃ)–এর দাওয়াতে ইসলাম কবুল করেছিলেন।

🔹 “আমিনুল উম্মাহ” উপাধি:
রাসূল ﷺ তাঁর সম্পর্কে বলেন:
> "প্রত্যেক জাতির জন্য একজন আমিন (বিশ্বস্ত) থাকে, আর এই উম্মাহর আমিন হলেন আবু উবাইদা ইবনে জাররাহ।"
— (সহিহ বুখারি)

এই জন্য তিনি ইতিহাসে পরিচিত “আমিনুল উম্মাহ” নামে।

🔹 বীরত্ব ও যুদ্ধে অংশগ্রহণ:
আবু উবাইদা (রাঃ) ছিলেন এক সাহসী যোদ্ধা ও অত্যন্ত মার্জিত প্রকৃতির মানুষ।

অংশগ্রহণ করেছেন:
বদর যুদ্ধ
উহুদ যুদ্ধ
খন্দক যুদ্ধ
তাবুক যুদ্ধ সহ অধিকাংশ গাজওয়ায়
উহুদ যুদ্ধে, রাসূল ﷺ–এর মুখে ঢুকে যাওয়া লৌহ কাঁটা হাতে তুলে তুলে বের করেন। এতে তাঁর নিজের দাঁত ভেঙে যায়। সাহস ও ভালোবাসার অনন্য নিদর্শন এটি।

🔹 নেতৃত্ব ও প্রশাসন:
হযরত ওমর (রাঃ) যখন খলিফা হন, তখন আবু উবাইদা (রাঃ)–কে শাম (সিরিয়া) অঞ্চলের সর্বমুখী সেনাপতি ও গভর্নর নিযুক্ত করেন।
তাঁর নেতৃত্বেই দিমাশক, হামস ও অন্যান্য সিরিয়ান অঞ্চল বিজয় হয়।

🔹 নম্রতা ও বিনয়:
খলিফা ওমর (রাঃ) একবার তাঁকে বলেছিলেন,
> "তুমি মারা গেলে আমি যদি জীবিত থাকি, তাহলে তোমার পর খলিফা হিসেবে তোমাকে মনোনীত করতাম।"
কিন্তু তিনি সব সময়ই ক্ষমতা ও পদ থেকে দূরে থাকতে চাইতেন।

🔹 মৃত্যু:
১৮ হিজরিতে শামের আমবাস নামক স্থানে এক ভয়াবহ প্লেগ মহামারী ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি রোগাক্রান্ত হন এবং ধৈর্য ও ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করেন।
তাঁর ইন্তেকালের পর, হযরত ওমর (রাঃ) গভীরভাবে শোক প্রকাশ করেন।

🔹 বিশেষ সম্মান:
আশারায়ে মুবাশ্‌শারা – জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ১০ জন সাহাবীর একজন
রাসূল ﷺ–এর ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত সাহাবী
তার জীবনের প্রতিটি অধ্যায় ছিল সততা, বিশ্বস্ততা, সাহস ও বিনয়ের অনন্য উদাহরণ।

Address


Opening Hours

Monday 09:00 - 08:59
Tuesday 09:00 - 08:59
Wednesday 09:00 - 08:59
Thursday 09:00 - 08:59
Friday 09:00 - 08:59
Saturday 09:00 - 08:59
Sunday 09:00 - 08:59

Telephone

+8801700714567

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when ফাজায়েলে আমল posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to ফাজায়েলে আমল:

Shortcuts

  • Address
  • Telephone
  • Opening Hours
  • Alerts
  • Contact The Business
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share