27/10/2022
একটি অপ্রিয় সত্য ঘটনা।
ঘটনাটি একটি মেডিক্যাল এর।
আমি একজন মেডিক্যাল ডাক্তার, নামটা না বলি।
ঘটনাটা হলো,একদিন আমি অনেক রাত পর্যন্ত হাসপাতালে থাকি।রাত প্রায় ১টা বাজে। সিজারের রোগী থাকায়,বাসায় যেতে যেতে অনেক রাত হয়ে যায়। বলে রাখা ভালো,,আমি হাসপাতালের একটা কোয়ার্টারে থাকতাম। হসপিটালের কাজ শেষে বাসার দিকে রওনা দেই,রাত প্রায় ২টার উপরে বাজে,আমার বাসাটা হাসপাতাল থেকে ৯ মিনিটের রাস্তা। এত রাতে একা একা বাসায় যেতে খুব ভয় করছিলো, কিন্তু মন কে বুঝালাম আমি একজন ডাক্তার, আমাকে ভয় পেলে চলবে না। তাই মনে কিছুটা সাহস নিয়ে বাসার দিকে হাটা শুরু করি। রাস্তার পাশে অনেক গুলো লেম্প পোস্ট ছিলো,তাই চলতে কোনো অসুবিধে হলো না।কিন্তু একটা অদ্ভুত জিনিস উপলব্ধি করি বাসার কিছুটা সামনে গিয়ে। বাসার কিছুটা সামনে যেতেই একটা দূর্গন্ধ নাকে ভেসে আসছিলো। কিন্তু বুঝতে পারছিনা গন্ধটা কোথা থেকে আসতেছে,,মনে মনে ভাবলাম হয়তো আসে পাশে কোনো জন্তু মারা গেছে সেটা থেকেই গন্ধটা আসতেছে,,কিন্তু যতই বাসার দিকে যাচ্ছি ততই দেখি গন্ধটা আরো তীব্র হচ্ছে।আমার বাসাটা ছিলো ৪তলা, আমি তিন তলায় থাকতাম একা।শিড়ি বেয়ে উপরে উঠছিলাম আমার রুমের সামনে যেতেই বুঝলাম একটা সদ্য নবজাতক শিশুর কান্নার শব্দ। এই শব্দ টা আমার রুম থেকেই আসতেছে।দরজা খুলতেই কান্নার শব্দ থেমে যায়। রুমে প্রচন্ড বাজে গন্ধ যা সহ্য করার মত ছিলো না।লাইট অন করতেই গন্ধটা যেনো উদাহ হয়ে গেলো। হাতে থাকা মোবাইলের প্লাস লাইট জ্বালিয়ে পুরো রুমটা তন্ন তন্ন করে খুজলাম কিন্তু কোনো শিশু বা গন্ধের উৎস খুঁজে পেলাম না। তারপর সব চিন্তা মাথা থেকে বাদ দিয়ে হাত মুখ ধুয়ে ঘুমিয়ে পড়ি।হঠাৎ আবারো সেই পঁচা দূর্গন্ধ, বালিশের পাশ থেকে মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখি ৩টা বেজে গেছে,আবারো প্লাস লাইট জ্বালিয়ে রুমের লাইট অন করলাম,কিন্তু এবার মনে হলো গন্ধ টা আগের থেকেও বেশ তীব্র। আবারো শুরু করলাম খোঁজা খুঁজি কিছুই দেখতে পেলাম না। ডয়ার থেকে রুম স্প্রে টা বের করে পুরো রুমে স্প্রে করে দেই।কিছু সময়ের জন্য গন্ধটা যেনো হারিয় গেলো।চুপ করে শুয়ে আছি, হঠাৎ একটা বাচ্চা শিশুর কান্নার শব্দ যেটা আমি রুমের বাহির হতে শুনতে পেয়েছিলাম সাথে সেই পঁচা গন্ধ মনে হচ্ছে আমার খাটের নিচ থেকে আসছে। আমি খাট থেকে নেমে মোবাইলের লাইট অন করে খাটের তলায় আলো মারতেই শব্দ টা থেমে যায়। খাটের নিচে দেখি একটা বাজারের থলে।কিন্তু আমি প্রথমেও খাটের তলা দেখেছিলাম কিন্তু ওখানে কিছু ছিলো না।এখন এটা কোথা থেকে এলো,এটা ভেবে অনেক ভয় লাগছিলো।সাহস করে থলে টা খাটের তলা থেকে বের করি।থলেটার মুখ খুলতেই দেখি একটা বাচ্চার অর্ধগলিগ লাশ, আর বাজে গন্ধ।বাচ্চাটার চোখ দুটো কোঠর থেকে বেরিয়ে আছে, মুখে কেমন যেনো একটা মৌলিন হাসি দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,কিন্তু আরো একটা অদ্ভুত বিষয় হলো বাচ্চাটার চোখের কোনো মনি ছিলো না।পুরো চোখটাই সাদা ফেকাসে হয়ে আছে।এটা দেখে আমি প্রচন্ড চিৎকার দিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে যাই। শিড়ি দিয়ে নামতেই দেখি বাচ্চাটার কান্নার শব্দ আমাকে তাড়া করছে।নিচের বাসায় আমার এক কলিগ থাকে আমি ওর বাসায় গিয়ে জোরে জোরে ওর দরজা ধাক্কাচ্ছিলাম। ওরা দরজা খুলতেই আমি রুমে ঢুকে পড়ি।আমার হাত পা সব নিস্তেজ হয়ে পড়লো।ওরা সবাই আমাকে জিজ্ঞাসা করতে লাগলো কি হয়েছে আমার।কিন্তু আমার মুখ দিয়ে তখন কোনো শব্দই বের হচ্ছিল না।সকালে ঘুম থেকে উঠার পর আমার পুরো শরীরে প্রচন্ড জ্বর। আমার কলিগ এসে বললো গত রাতে কি হয়েছিলো। আমি কাতর কন্ঠে গতরাতের পুরো ঘটনাটা তাকে বলতে লাগলাম। সে এক পর্যায়ে বললো,,,আমি যে বাসায় টায় থাকতাম, সেই রুমে ৪বছর আগে একজন নার্স থাকতো।হঠাৎ কয়দিন ধরে সে নার্সের খোঁজ পাচ্ছে না।প্রতি রাতে তার রুম থেকে একটা বাচ্চা শিশুর কান্নার শব্দ ও পচাঁ গন্ধা আসছিলো কিন্তু তার বাসার বাহির থেকে তালাবদ্ধ ছিলো। তখন কিছু লোকজন মিলে তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে,এবং খাটের নিচ হতে বাজারের থলে থেকে একটা বাচ্চার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে তারা।সেই থেকেই নাকি এই সমস্যা হয়।আমি ওই রুমে থাকার আগেও নাকি কয়েকজন ওই রুমে থেকেছিলো,তারাও এই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে বাসা ছেড়ে চলে যায়।আমিও সেইদিন বাসা ছেড়ে দেই।এই ছিলো গল্প।
#ভুতকথা #আরজেকিব্রিয়া #ভুতএফ #কালোজাদু #ভুতেরগল্প #আরজেরাসেল #ভুত #ডর