
26/09/2025
আগে পর্দা দুইভাগে বিভক্ত ছিলো!
১. শালীন পোশাক
২. সহীহ পর্দা
চাচি-আন্টিদের দেখলে বোঝা যেত ওই এক নিকাবেই সমস্তটা ঢাকা। এমনকি ভিতরে বুড়ি নাকি ছুড়ি তা বোঝার উপায় নেই।
কালের পরিক্রমায় এখন পর্দা বিভক্ত হয়েছে তিনভাগে।
১. স্টাইলিশ পর্দা
২. শালীন পোশাক
৩. গ্যাঞ্জি-প্যান্টের উপর মাথা ভর্তি প্যাচানো হিজাব
প্রশ্ন হচ্ছে তাইলে সহীহ পর্দা গেলো কোথায়? উত্তর হচ্ছে বিলুপ্ত হওয়ার পথে। বর্তমানে ১০০ জনের ভিতর এমন একজনকে দেখা যায় যারা প্রকৃতরূপেই চান তার পর্দায় যাতে কোনো ফাঁক-ফোকড় না থাকুক।
বর্তমান যুগে পর্দার পোশাকের পেইজগুলোতে ঘুরলে দেখা যায় বাহারি রঙের পর্দা, নিকাব। কি এক সাধারণ হাত-পা মোজা ছিলো এখন তাতেও বাহারি নেট লাগানো, ফুল লাগানো। ঢাকনার জিনিস দিয়ে যেন প্রদর্শন'ই বেশি। সবচেয়ে কষ্টের ব্যাপার হলো, চোখে লাগার মতন এইসব কেনার জন্যই দ্বীনি বোনেরা হুমড়ি খেয়ে পরেন। আমরা জামা-কাপড় কেনার ক্ষেত্রে আগে সৌন্দর্যকে প্রাধান্য দি সবসময়। বেছে বেছে আকর্ষণীয় ড্রেসটাই কিনি যা পরলে সুন্দর দেখা যাবে।ঠিক সেইম থট পর্দার ক্ষেত্রেও খাটাই "যা পরলে সুন্দর লাগবে, সবার চেয়ে আলাদা করে তুলবে।" তাহলে আর পর্দা রইলো টা কোথায়? পর্দার সংজ্ঞা কি আসলেই তাই!
এক্ষেত্রে খুব সাধারণ একটা প্রশ্ন ফেইস করি যারা এই ধরণের পর্দা বিক্রি করছে এবং যারা পরছে তাদের কাছ থেকে, তা হলো – "পর্দায় যদি একটু সৌন্দর্যতা না নিয়ে আসি তবে বে-দ্বীন বোনেরা তো ইন্সপায়ার হবে না, আগ্রহী হবে না পর্দা করতে।" ব্যাপার টা এখন এমন হয়ে গেলো যে, পর্দাকেই মানুষের রুচির সাথে কম্প্রোমাইজ করতে হচ্ছে, যেখানে মানুষের উচিত ছিল পর্দার জন্য সব কম্প্রোমাইজ ও সেক্রিফাইস করা। লজিক দিতে দিতে এতই করুণ অবস্থা যে পর্দার সাথে খেলতামাশা শুরু হয়ে গেছে অথচ যা ছিল সম্মানীয়। অবশ্য ব্যবসায়ীদের দোষ দিয়ে লাভ নাই কারণ বোনেদের আগ্রহ এই সেক্টরে না থাকলে এত রমরমাভাবে বিজনেস কখনোই চলত না।
পর্দার কথা যেহেতু এনেছিই এক্ষেত্রে দ্বীনি পর্দানশীন সেলিব্রেটিদের কথা না আনলেই যেন না। আজকাল ইস-লা-মের দাও-য়াত দেওয়া ও বোনেদের পর্দায় আগ্রহী করার নামে কিছু বোন হাজার কয়েক ফলোয়ার নিয়ে বেড়ে উঠে প্রোফাইলে পর্দা করা পিক আপলোড করে। অথচ পর্দা মানেই তো ছিল লুকায়িত, অপ্রকাশিত। উনাদের রোল মডেল ভেবে অন্য দ্বীনি বোনেরা যেন নতুন করেই পর্দা করা শিখছে, তাদের ভাষায় ইন্সপায়ার হচ্ছে। অন্য বোনেদের পর্দা করা শিখাতে গিয়ে এই বাজারময় মিডিয়ায় এখন নিজেকেই তুলে ধরতে হচ্ছে। তাতে নফসের খাশেয়াত মিটে গিয়ে ক্ষতিটা হচ্ছে কার? দ্বীনি লেবাসের এই বোনেদের জন্য এখন করনীয় হচ্ছে কুর'আনের আয়াত বারংবার রিচেক দেওয়া এবং দেখা আল্লাহ সুব'হান ওয়াতাআ'লা পর্দা নিয়ে কি হুকুম দিয়েছেন আমাদের। বিশেষত একটা আয়াত তুলে ধরা যায়, "পূর্বের জাহেলী যুগের মতন সৌন্দর্য প্রদর্শন করো না!" [সূরা আল-আহজাব, আয়াত-৩৩]
একচুয়েলি এখন হরেক রকম বোরকা নিকাব বেড়েছে ঠিক তেমন পরিহিতাও বেড়েছে কিন্তু পর্দা বাড়েনি, মোটেও বাড়েনি। উল্টো পর্দার উপর চলছে সাজগোছ। যতটুক চোখ খোলা থাকে তাতেও বোনেরা সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য কাজল-আইলাইনার দেয়, হাত মোজার উপর আংটি, চুড়ি। বিবেককে প্রশ্ন করা উচিত, "আসলেই কি আল্লাহ'র সন্তুষ্টির জন্য পর্দা করছি নাকি, মানুষের চোখে ভালো লাগার উদ্দেশ্যে?"
একজন মুমিনার একমাত্র উদ্দেশ্য থাকবে শুধুমাত্র আল্লাহ'র হুকুম এবং সন্তুষ্টি। কারণ নারী যখন পর্দা করে তখন সে শুধু কাপড় না বরং সেই সম্মানিত আয়াতসমূহ দ্বারা নিজেকে মুড়িয়ে নেয় আর এই আয়াতের যথাযথ মর্যাদা রাখাই আমাদের বিধান, ফরজ বিধান। আল্লাহ তা'আলা আমাদের হেফাজত করুক