14/10/2025
গর্ভধারণ এড়াতে নিরাপদ সময় (সেফ পিরিয়ড)
আপনার প্রশ্নটি ছিল, "কোন সময় মিলন করলে বাচ্চা হয় না, মাসিকের আগে নাকি পরে?"
এর উত্তরটি হচ্ছে, মাসিকের আগে ও পরের নির্দিষ্ট কিছু দিনকে সাধারণত নিরাপদ সময় (Safe Period) বা সেফ পিরিয়ড বলা হয়। এই সময়গুলোতে গর্ভধারণের সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে কম থাকে।
গর্ভধারণ এড়াতে এই সময়টি কীভাবে হিসাব করতে হয়, তা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
১. মাসিক চক্রের সময়কাল ধরে হিসাব (উদাহরণসহ)
ধরে নিচ্ছি, আপনার স্ত্রীর প্রতি মাসের ১০ তারিখ থেকে পিরিয়ড শুরু হয় এবং ১৫ তারিখ শেষ হয়।
এই পুরো মাসিক চক্রটিকে আমরা দুটি ভাগে ভাগ করব:
ক. ডেঞ্জার পিরিয়ড (Danger Period) বা উর্বর সময়
এটি হলো গর্ভধারণের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সময়। এই সময় ডিম্বাণু নির্গত হয়, তাই গর্ভধারণের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে।
সময়কাল: সাধারণত দুটি মাসিকের ঠিক মাঝের সময়টা।
হিসাব:
মাসিক শেষ হওয়ার পরের দিন থেকে শুরু করে পরবর্তী মাসিক শুরুর প্রায় ৭ দিন আগ পর্যন্ত।
আপনার উদাহরণ অনুযায়ী: ২২ তারিখ থেকে পরবর্তী মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত প্রায় ১০-১১ দিন।
গুরুত্ব: যারা সন্তান নিতে চান, তাদের এই সময়ে নিয়মিত মিলন করতে বলা হয়।
খ. সেফ পিরিয়ড (Safe Period) বা নিরাপদ সময়
এই সময়গুলোতে মিলন করলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা প্রায় থাকে না বললেই চলে।
সময়কাল: মাসিকের শুরুর আগের ৭ দিন এবং মাসিকের শেষ হওয়ার পরের ৭ দিন।
হিসাব:
মাসিক শুরুর আগে: পরবর্তী মাসিক শুরুর ৭ দিন আগে। (যেমন: ৩ তারিখ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত)।
মাসিক শেষ হওয়ার পরে: মাসিক শেষ হওয়ার পরের ৭ দিন। (যেমন: ১৬ তারিখ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত)।
মোট নিরাপদ দিন: ৭ (আগে) + ৭ (পরে) = মোট ১৪ দিন।
২. বাড়তি সতর্কতা হিসেবে নিরাপদ সময়ের হিসাব
যদি আপনি আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে চান, তবে নিরাপদ সময়ের সংখ্যা কিছুটা কমানো যেতে পারে। কারণ সপ্তম দিনের পরেও সামান্য ঝুঁকি থাকতে পারে।
এই ক্ষেত্রে, আপনি আগের ও পরের ৭ দিন না ধরে আরও কম দিনকে নিরাপদ হিসেবে গণ্য করতে পারেন:
মাসিক শেষ হওয়ার পরের নিরাপদ দিন: মাসিক শেষ হওয়ার দিন (১৫ তারিখ) থেকে পরবর্তী ৫ দিন। অর্থাৎ, ১৫ তারিখ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত।
মাসিক শুরুর আগের নিরাপদ দিন: পরবর্তী মাসিক শুরুর ৫ দিন আগে। অর্থাৎ, ৫ তারিখ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত।
মোট নিরাপদ দিন (সতর্কতা সহকারে): ৫ (আগে) + ৫ (পরে) = মোট ১০ দিন।
গুরুত্বপূর্ণ নোট:
মনে রাখতে হবে, এই পদ্ধতিটি (রিদম পদ্ধতি বা ক্যালেন্ডার পদ্ধতি) শুধুমাত্র নিয়মিত মাসিক চক্রের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যদি আপনার স্ত্রীর মাসিক চক্রের কোনো ধরনের অনিয়ম থাকে, তবে এই হিসাব কাজে নাও আসতে পারে। জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য এই পদ্ধতিটি শতভাগ কার্যকর নয়, তাই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সুরক্ষার জন্য সর্বদা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং অন্যান্য সুরক্ষা পদ্ধতি (যেমন: কনডম বা পিল) ব্যবহার করা উচিত।