21/07/2025
ইসলামী খেলাফতের যুগে, বায়তুল মাল (আরবি: بيت المال) একটি কেন্দ্রীয় কোষাগার হিসেবে কাজ করতো। এর প্রধান কাজ ছিল জনগণের যাকাত, খারাজ (ভূমি রাজস্ব), এবং অন্যান্য সরকারি আয় গ্রহণ ও বিতরণ করা। এই অর্থ দরিদ্র, বিধবা, এতিম, অভাবী এবং রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হতো।
কিন্তু আমাদের দেশেও বায়তুল মাল তোলা হয়। এই অর্থ যারা তোলে তারা কি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়? তারা এই অর্থ কোথায় ব্যায় করে? এর আয় ব্যায়ের হিসাব কি রাষ্ট্র জানে? পরিসংখ্যান বলে দেশের প্রায় ২৫ - ৩০% জনগনের কাছ থেকে এই অর্থ সংগ্ৰহ করা হয়। বাংলাদশের সাধারণ মুসলমানদের
আবেগ ও ইমোশনের জায়গা ইসলাম।। এই ইমোশন কে কাজে লাগিয়ে একটি দল ইসলামের নাম দিয়ে তথা ( বায়তুল মালের ) কথা বলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ।। রাষ্ট্র ও এদেশের সাধারণ মানুষের সাথে যারা প্রতারণা করে আসছে এর বিরুদ্ধে এখনিই সোচ্ছার হতে হবে।। এখন আমরা আলোচনা করবো শরীয়তের দৃষ্টি কোন থেকে বয়তুল মাল কোথায় ব্যাবহার করা যায়,,,
রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় অর্থ প্রশাসক ভবিষ্যতের প্রয়োজনের তুলনায় জনগণের বর্তমান প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেবে। ওমর (রা.) বায়তুল মালের সম্পদ ব্যয়ে এই নীতি অবলম্বন করতেন। ঐতিহাসিক ইবনুল জাওজি তাঁর সম্পর্কে বলেন, ‘ভবিষ্যতের জন্য সম্পদ জমা করে রাখা ওমর (রা.)-এর নীতি ছিল না। বরং তিনি সম্পদের অধিকারীদের হাতে তা দ্রুততম সময়ে পৌঁছে দিতেন। প্রতিবছর একবার তিনি রাষ্ট্রীয় কোষাগার শূন্য করার নির্দেশ দিতেন।’
আমাদের দেশে বায়তুল মাল তুলে আবার নিজেদের জন্যই ব্যাবহার করা হয়।। অর্থাৎ যিনি দেন তিনিই ব্যাবহার করেন।। এই অর্থ দিয়ে সুদের কারবার করা হয়।।
হিন্দু দের পূজায় যাওয়ার জন্য ব্যাবহার করা হয় ।। নির্দিষ্ট দলের জন্য ও ব্যাক্তিগত কাজের জন্য ব্যাবহার করা হয়,। রাষ্ট্র ও, মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্ত্র কিনতে ব্যাবহার হয়।। এটাকে যারা বাইতুল মাল বলবে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানো আলেম সমাজের দায়িত্ব হয়ে পড়েছে।।।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আযদ গোত্রের ইবনু উতবিয়া নামক এক ব্যক্তিকে যাকাত আদায়ের জন্য নিযুক্ত করেছিলেন। সে ফিরে এসে জানালো যে কিছু মাল তাকে হাদিয়া হিসেবে দেওয়া হয়েছে। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, সে কেন তার বাবা অথবা মায়ের ঘরে বসে রইল না, যাতে সে দেখতে পেত, তাকে কেউ হাদিয়া দেয় কিনা। এই হাদিসে ঘুষ বা ব্যক্তিগত লাভের জন্য সরকারি সম্পদ ব্যবহার করার বিষয়ে একটি সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
এই হাদিসের মূল বিষয় হলো, কোন ব্যাক্তির উচিত নয় ব্যক্তিগত লাভের জন্য বায়তুল মালের সম্পদ ব্যবহার করা বা উপহার হিসাবে গ্রহণ করা। হাদিসে এমন কাজের নিন্দা করা হয়েছে এবং এটি একটি গুরুতর অনৈতিক কাজ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।