25/09/2025
FOREST CITY JOHOR BAHRU | ফরেস্ট সিটি , জোহর বাহরু | কেন এত সুন্দর একটা শহর কে ভূতের শহর বলা হয় ?
#প্রবাসিমালায়শিয়া
মালয়েশিয়ার জোহর বাহরু উপকূলে, সিঙ্গাপুরের একেবারে কাছাকাছি এক অসাধারণ পরিকল্পনার শহর। একে বলা হয় “ভবিষ্যতের সবুজ স্মার্ট সিটি।” কিন্তু স্বপ্নের পেছনের গল্পটা অনেক বেশি জটিল। আজ আমরা জানব ফরেস্ট সিটি কী, কিভাবে এটি গড়ে উঠল, এবং এর বর্তমান অবস্থা।
ফরেস্ট সিটি হলো চীনা কোম্পানি কান্ট্রি গার্ডেনের বিশাল প্রকল্প। প্রায় ৩০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে চারটি কৃত্রিম দ্বীপে তৈরি হচ্ছে এই শহর। আধুনিক প্রযুক্তি, পরিবেশবান্ধব স্থাপত্য আর সবুজায়নের মাধ্যমে প্রকৃতি ও শহরকে একসাথে রাখার লক্ষ্য ছিল এ প্রকল্পের। এখানে থাকবে আবাসিক এলাকা, বাণিজ্যিক জোন, অফিস, হোটেল আর পর্যটন কেন্দ্র।
ফরেস্ট সিটি অবস্থিত ইস্কান্দার মালয়েশিয়া বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে, সিঙ্গাপুরের সীমান্ত থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে। ফলে এটি আন্তর্জাতিক ব্যবসা ও বাণিজ্যের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয়। এখানকার “স্পেশাল ফাইনান্সিয়াল জোন” ঘোষণার ফলে বিনিয়োগকারীরা কর ছাড়সহ নানা সুবিধা পেতে পারেন।
প্রকল্পের শুরুতে লক্ষ্য ছিল কয়েক লক্ষ মানুষের বসবাস। ধনী বিদেশি ক্রেতাদের জন্য বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও সমুদ্রতীরবর্তী বাড়ি বিক্রি করা হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত পরিকল্পনার তুলনায় অল্প অংশই তৈরি হয়েছে। অনেক ভবন খালি, জনসংখ্যা খুবই কম, আর কেউ কেউ এটিকে “ঘোস্ট সিটি” বা ভূতুড়ে শহরও বলেন।
এছাড়াও ভূমি ভরাটের কারণে সাগরের পরিবেশ ও ম্যানগ্রোভ বন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে—এ নিয়েও সমালোচনা রয়েছে।
বর্তমানে কয়েক হাজারের বেশি স্থায়ী বাসিন্দা নেই। অনেক দোকানপাটও বন্ধ বা খালি। তবে মালয়েশিয়া সরকার কর সুবিধা ও নতুন বিনিয়োগ পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রকল্পটিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে। ভবিষ্যতে এটি সত্যিকারের স্মার্ট সিটি হবে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে।
ফরেস্ট সিটি মালয়েশিয়ার অন্যতম বড় আর সাহসী উদ্যোগ—যেখানে স্বপ্ন, অর্থনীতি, পরিবেশ ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির মিশ্রণ রয়েছে। আগামী বছরগুলোই নির্ধারণ করবে, এটি কি সত্যি এক আধুনিক নগরী হবে, নাকি এক অপূর্ণ স্বপ্নের প্রতীক হয়ে থাকবে।