Rubel

Rubel Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Rubel, Digital creator, Narsingdi.

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা:)
💚💜💜💚
💚💙💚
💚💚
🤍

ওস্তাদের মাইর শেষ রাতে 😁😁
08/07/2025

ওস্তাদের মাইর শেষ রাতে 😁😁

এজন্যই তো বলি ফেসবুকে কত সুন্দর সুন্দর মাইয়া দেখি, কিন্তু রাস্তায় বের হলে দেখি না কেন 🤭
08/07/2025

এজন্যই তো বলি ফেসবুকে কত সুন্দর সুন্দর মাইয়া দেখি, কিন্তু রাস্তায় বের হলে দেখি না কেন 🤭

-"ডক্টর এ.এ.সিকে, কে কি বলেছে?খান বাড়ির আর চৌধুরী বাড়ির সকলে চুপ করে আছে দেখে ডক্টর ইরফান আবারো জিজ্ঞেস করল,,- "আমি কি...
08/07/2025

-"ডক্টর এ.এ.সিকে, কে কি বলেছে?
খান বাড়ির আর চৌধুরী বাড়ির সকলে চুপ করে আছে দেখে ডক্টর ইরফান আবারো জিজ্ঞেস করল,,

- "আমি কি বলছি শুনতে পাচ্ছো না তোমরা? আমার উত্তর চাই আমি যা জিজ্ঞেস করছি তার উত্তর দাও?

কিছুক্ষণ আগে,,,

ডক্টর এ.এ.সি খান বাড়ির আসাদ খানের হার্ট অপারেশনের জন্য ইতালি থেকে বাংলাদেশে আসার কথা। সকাল এগারোটায় অপারেশন হওয়ার কথা। তার দশটায় হসপিটালে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। এখন দশটা চল্লিশ বেজে গেছে কিন্তু ডক্টর এ.এ.সি এখনো হসপিটালে এসে পৌছায় নি। তাই সবাই টেনশন করছিলো কারন আসাদ খানের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। একটু দেরি হলে যেকোনো কিছু হতে পারে। খান বাড়ির আর চৌধুরী বাড়ির সকলেই এটা নিয়ে টেনশন করছে। তখনি একটা বোরকা পরিহিত মেয়ে মুখে মার্কস চোখে সানগ্লাস পরে হসপিটালে প্রবেশ করলো। চশমার জন্য চোখটা ভালোভাবে বোঝা যাচ্ছে না। খান বাড়ির আর চৌধুরী বাড়ির সকলে জানতে পারলো এটাই ডক্টর এ.এ.সি । ডক্টর এ.এ.সি এসে পৌঁছালেন দশটা পঁয়তাল্লিশ এ ডক্টর আসতেই আয়াজ ইমদাদ খান তার সামনে গিয়ে বলল,,,

-"আপনার কান্ডজ্ঞান নেই এতোক্ষণ লাগে আসতে, আপনার কয়টায় আসার কথা ছিল। আপনার দশটায় হসপিটালে থাকার কথা ছিল। ডক্টর হয়ে এতো ইরেসপন্সিবল কিভাবে হতে পারেন আপনি। আপনার একটু দেরি হওয়ার জন্য আমার বাবার যদি কিছু হয়। তার দায় কি আপনি নিবেন। আপনাকে তো টাকা দেওয়া হবে আমার বাবার অপারেশনের জন্য। তাহলে আপনি লেট করে আসলেন কেন? "

এ কথা শুনে ডক্টর এ.এ.সি একটু রেগে গেলেও কিছু বলল না। চোখে দেওয়া সানগ্লাস আর মুখের মাক্স এর ভেতরে রাগটা হজম করে নিলো। তারপর কঠোর স্বরে বলল,,,

-What time is it now?

এ কথা শুনে আয়াজ সহ ওখানে থাকা সকলেই অবাক হলো। তারপর একটু কঠোর স্বরে বলায় সবাই একটু হলেও আন্দাজ করতে পেরেছে ডক্টর এ.এ.সি রেগে গেছে। তখন আয়াজ ইমদাদ বলল,,

-"মানে?

-"আপনি আমার কথা বুঝতে পারেন নি আমি জানতে চাচ্ছি কয়টা বাজে এখন !

ইমদাদ বোকা চোখে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল,,

-"দশটা পয়তাল্লিশ!

-"অপারেশন শুরু কয়টায়?

-বেলা এগারোটায়!

--"তাহলে, আপনার কি মনে হয় ডক্টরদের আর কোন কাজ থাকে না। এগারোটায় অপারেশন শুরু করতে পারলেই তো হয়। আমি কখন আসলাম না আসলাম সেটা ম্যাটার করে না। ঠিক টাইমে অপারেশন শুরু হয়েছে কিনা সেটাই ম্যাটার করে। ডক্টরদের টাকা দেন বলে তারা সবসময় আপনাদের কথা মতো চলবে। তারা তাদের নিজেদের কাজ করতে পারবে না। আপনার যদি আমাকে সে দলের মানুষ মনে হয় তাহলে আমি দুঃখিত আমি এ অপারেশন করতে পারবো না!

এ কথা শুনে সবাই একটু ভয় পেল। সত্যিই যদি এখন উনি অপারেশন না করে তাহলে কি হবে। আয়াজ কিছু বলবে তার আগেই একটা পিচ্চি মেয়ে এসে ডক্টর এ.এ.সি এর হাত ধরে টান দিলো। ডক্টর তাকিয়ে দেখলো একটা পিচ্চি তাই ও হাঁটু তার সামনে বসলো। তখন মেয়েটা বলল,,

--" আন্টি তুমি এ অপারেশন টা করো প্লিজ । যদি ঠিক সময়ে দাদুর অপারেশন না হয়। তাহলে নাকি দাদুকে বাঁচানো যাবে না। তুমি জানো আমাকে কেউ দাদুর কাছে আনতেই চাইছিল না। আমি জোর করে এখানে এসেছি।

তখন ডক্টর এ.এ.সি বলল,,

-"তোমাকে এসব কে বলেছে মামনি। তোমার দাদুর কিছু হবে না। তোমার দাদু একদম ঠিক হয়ে যাবে।

- "কেউ বলে নি আমি শুনেছি । তুমি জানো দাদু আমাকে অনেক ভালোবাসে আমার জন্য রোজ চকলেট আনে। আমার সাথে খেলা করে আমাকে নিয়ে ঘুরতে যায়। যদি দাদু না থাকে তাহলে দাদুর মতো আমাকে ভালোবাসবে কে চকলেট আনবে কে আমাকে নিয়ে খেলবে কে। তুমি প্লিজ আমার দাদুকে ঠিক করে দাও ।

বলেই পিচ্চি মেয়েটা কেঁদে দিল। ওর কান্না দেখে বাড়ির সকলেই কাঁদতে লাগলো। ডক্টরের ও খারাপ লাগলো। তাই বলল,,

-তুমি একদম কান্না করো না পিচ্চি। তুমি না স্ট্রং গাল । আমার দাদুভাই বলে স্ট্রং গার্লরা কখনো কাঁদে না। তোমার দাদুর কিছু হবে না। তোমার দাদুকে আমি জাদু দিয়ে ঠিক করে দেব। দেখবে কয়েক দিন পরেই তোমার সাথে খেলবে।

- "সত্যিই!

- "একদম সত্যি!

- "আচ্ছা ঠিক আছে আমি আর কাঁদবো না। আর আমি এখন থেকে স্ট্রং গার্ল হয়ে থাকবো।

--"ভেরি গুড, এখন আমি যাই আমাকে রেডি হতে হবে তারপর তোমার দাদুর অপারেশন করতে হবে তো।

বলেই মেয়েটার দু গাল ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে উঠে দাঁড়ালো। তারপর আয়াজ এর দিকে তাকিয়ে বলল,,,

- "আপনাদের সকলের লাক ভালো। তাই এখন আমি অপারেশন টা করতে রাজি হলাম। আর এখন যেটুকু সময় নষ্ট হয়েছে সেটুকুর জন্য আপনি দায়ী মিস্টার।

বলেই ডক্টর এ.এ.সি হনহন করে চেঞ্জিং রুমে গিয়ে চেন্জ করে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে পরলো। মুখে মার্কস আর চোখে চশমা বিদ্যমান। তাই ওর চেহারা কেউই দেখতে পেল না। আগে থেকেই ওর টিম এখানে এসে পরেছিল তারা ওর জন্য ওয়েট করছিল। কারন ও যেখানেই যায় ওর টিম নিয়ে যায়। আর তাদের কে আগে পাঠিয়ে দেয়। ডক্টর ইরফান তার সাথে থাকার কথা। ইরফান খান আসাদ খানের বড়ো ছেলে। ডক্টর এ.এ.সি ঢুকেই ইরফান কে বলল,,

-ডক্টর ইরফান আপনি আমাদের সাথে এখানে থাকতে পারবেন না। আপনি এখান থেকে গেলে আমরা অপারেশন শুরু করবো। এখন দশটা আটান্ন বাজে আপনাকে দুই মিনিট টাইম দিলাম তার মধ্যে এখান থেকে চলে যাবেন।

-কিন্তু কেন ডক্টর এ.এ.সি?

- আমি এমনিতেও আমার টিম ছাড়া বাইরের কাউকে এলাউ করি না। তবুও আমি আপনাকে এলাউ করেছিলাম। আমি আপনাকে কেন রাখবো না সেটা আপনার পরিবার কে জিজ্ঞেস করুন। আপনি তখন জেদ করছিলেন বলে আমি রাজি হয়েছিলাম কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আপনি না থাকাটাই বেটার। আপনি আপনার পরিবারের কাছে থাকুন এখন তাদের আপনাকে দরকার। আর একটা কথা আমি আপনার কথায় এখানে এসেছি আপনাদের টাকার জন্য নয়। এখন আপনি এখান থেকে আসতে পারেন।

ইরফান বুঝতে পারল বাইরে কিছু একটা হয়েছে। নাহলে ডক্টর এ.এ.সি এভাবে বলতো না। যতোটুকু তার ব্যাপারে শুনেছে। সে খুব স্ট্রিক্ট আর রাগী। ইরফান খুব খুশি ছিল এতো বড়ো একটা হার্ট সার্জন এর সাথে থাকতে পারবে বলে। তার ওপর তার বাবার অপারেশন। কিন্তু সেরকম কিছুই হলো না। তিনি একটু হলেও এ.এ.সির ব্যাপারে অবগত। তাই তিনি বিনা বাক্যে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়ে গেলেন। তারপর বাইরে গিয়ে পরিবারের কাছে। উক্ত প্রশ্নটি করলো।

বর্তমান,,,,

-কি হলো বলো তোমরা কি বলেছো তাকে?

তখন আয়াজ ইমদাদ এগিয়ে এসে বলল,,,

-আসলে ভাইয়া!

-আসলে নকলে বাদ দিয়ে সোজাসুজি বল!

আয়াজ ইমদাদ সবকিছু খুলে বলল। তা শুনে ইরফান রেগে বলল,,,

--"তোর সাহস হলো কিভাবে ওনাকে এভাবে বলার। তুই ওনাকে কতোটুকু চিনিস কতোটুকু জানিস ওনার সম্পর্কে। আর ডক্টর রা টাকার জন্য কাজ করে না। আমি কি টাকার জন্য ডক্টর হয়েছি। আমি ডক্টর হয়েছি মানুষের সেবা করবো বলে। তারা ডক্টর হয় তারা মানুষের সেবার জন্য কাজ করে। আমার কথায় শুধু তিনি এই অপারেশনটা করতে রাজি হয়েছিল। তার দাদুভাই অসুস্থ তিনি আসতে ই রাজি ছিলেন না। তাও আমি ওনাকে জোর করে এখানে এনেছি। আজ সত্যিই যদি পাখির কথায় রাজি না হয়ে উনি অপারেশন টা না করতেন। তাহলে কি করতি তুই কি করে বাচাতাম আমরা বাবাকে । কতোটা রিস্কি এই অপারেশন টা সেটা শুধু আমি জানি। এটার জন্য বেস্ট হচ্ছে ডক্টর এ.এ.সি। টপ সার্জন দের মধ্যে উনি একজন। তাকে তুই টাকার দেমাগ দেখাস। তোর সাহস হলো কি করে ওনাকে ওভাবে বলার।

-ভাইয়া তুই ঐ সামান্য ডক্টরের জন্য আমাকে কথা শোনাচ্ছিস।

-তুই কাকে সামান্য ডক্টর বলছিস। তুই ওনাকে কতোটুকু চিনিস , কতোটুকু ধারনা আছে ওনার সম্পর্কে। তুই যে বয়সে বাবার টাকায় ফুটানি দেখাচ্ছিস। সেই বয়সে উনি সেরা হার্ট সার্জনদের মধ্যে নিজের নাম উঠিয়ে নিয়েছে। তার সাথে ইতালিতে ওনাদের নিজেদের বিজনেস সামলায়। তোর মতো হাজার আয়াজ ইমদাদকে উনি মিনিটে কিনতে পারে। তোর বাবার কয়টাকা আছে তার থেকে দশগুণ ওনার আছে। তাকে তুই টাকার গরম দেখাস।

তখন আয়াজের বড় মামি আয়েশা চৌধুরী বললেন,,

-"তোরা দুই ভাই কি করছিস। এটা একটা হসপিটাল আর এখানে অপারেশন চলছে। তাও সেটা তোদের বাবার। ভেতরে কি হচ্ছে তোদের তা নিয়ে চিন্তা নেই। দুজনে মিলে ঝগড়া করে যাচ্ছিস। তোদের এরকম দেখে তোর মায়ের কেমন লাগছে ওনার স্বামী ভেতরে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সুয়ে আছে আর বাইরে ওনার দুই ছেলে একটা ডক্টর কে নিয়ে ঝগড়া করছে।

-"সরি মামি আর তোমরা টেনশন করো না বাবার কিচ্ছু হবে না। ডক্টর এ.এ.সির আজ পর্যন্ত কোনো অপারেশন আনসাকসেসফুল হয় নি। আর এটাও হবে না ইনশাআল্লাহ। যতো কঠিন অপারেশন ই হোক না কেন সবগুলো অপারেশন ই তিনি সাকসেসফুল করেছেন। তার জন্যই সিনিয়রদের কে দিয়ে কথা বলিয়ে আর আমি নিজে কথা বলে তাকে রাজি করিয়েছি। ইনশাআল্লাহ বাবা খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে।

-"তাই যেনো হয় বাবা!

আয়াজ ওর ভাইয়ের বকা খেয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে বাবার জন্য চিন্তা করতে লাগল। আর এটাও ভাবলো সত্যি তখন ঐ ডক্টরের সাথে ওভাবে ব্যবহার করা উচিৎ হয়নি। সুযোগ পেলে ক্ষমা চেয়ে নিবে তার কাছ থেকে। আর আল্লাহর দরবারে দোয়া করতে লাগল যাতে তার বাবার যেনো কিছু না হয়। অপারেশন টা যেনো সাকসেসফুল হয়।

অতঃপর তিন ঘণ্টা পর ডক্টর এ.এ.সি অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হলো। সবাই তার দিকে এগিয়ে গেল। ইরফান একটু উত্তেজিত হয়েই জিজ্ঞেস করল,,,

-আমার বাবা এখন কেমন আছে। বাবা ঠিক আছে তো?

তা শুনে ডক্টর এ.এ.সি বলল,,,

- "রিল্যাক্স ডক্টর ইরফান আপনার বাবার অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে। ইনশাআল্লাহ তিনি খুব তাড়াতাড়ি আগের লাইফ লিড করতে পারবে।

- "থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ ডক্টর কিভাবে যে আপনার শুকরিয়া আদায় করবো।

- "থ্যাঙ্ক ইউ বলতে হবে না। ইটস্ মাই ডিউটি। আর শুকরিয়া জানানোর হলে আল্লাহ কে জানান আমাকে নয়। যা করার আল্লাহ ই করিয়েছে আমি তো উপলক্ষ মাত্র। এক্সকিউজ মি,,,

বলেই ডক্টর এ.এ.সি ওখান থেকে চলে গেল। তারপর চেঞ্জিং রুমে গিয়ে চেন্জ হয়ে ওর জন্য বরাদ্দকৃত কেবিনে গিয়ে দেখল ইরফান বসে আছে। ইরফানের সাথে আসাদ খানের ব্যাপারে সকল কথা বলল। কিভাবে কি করতে হবে । সব শেষে ইরফান বলল,,,

- "আই এম সরি ডক্টর আমি বুঝতে পারি নি আমার ভাই এরকম একটা কাজ করবে। আপনি আমার কথায় এখানে এসেছেন আর এরকম একটা কাজ হলো আমি সত্যিই লজ্জিত।

-"আরে ডক্টর ইরফান আপনি কেন লজ্জিত হচ্ছেন। আপনার এখানে কোন দোষ নেই। এখানে সম্পূর্ণ বিষয় টা আপনার ভাই করেছে তাই তার লজ্জিত হওয়া উচিত আপনার না । বাই দা ওয়ে সেই পিচ্চি টার জন্যই আমি অপারেশন টা করতে রাজি হলাম। সি ইজ ভেরি কিউট এন্ড ইন্টিলিজেন্ট গার্ল।

- "হ্যা সে ইন্টিলিজেন্ট গার্ল ই বটে। সি ইজ মাই ডটার ইনাত খান আমরা সবাই ভালোবাসে পাখি বলে ডাকি।

- "ওকে তাহলে আজ উঠি আমাকে এখনি ইতালি ব্যাক করতে হবে!

- "এখনি চলে যাবেন।

- "আপাতত বিডিতে আমার কাজ নেই। আর দাদুভাই একটু অসুস্থ আমাকে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব দাদুভাইয়ের কাছে যেতে হবে। শুধু আপনার আর দাদুভাইয়ের কথা রাখতে এখানে এসেছি।

- "মানে?

- "আমি আসতে চাইছিলাম না দেখে দাদুভাই ই আমাকে এখানে পাঠিয়েছে।

-"তাহলে তো আপনার দাদুভাই আমার থেকে একটা ধন্যবাদ পায়।

- "কোনদিন দেখা হলে দিয়ে দিয়েন।আসছি,,,,

বলেই উঠে দাঁড়ালো ডক্টর এ.এ.সি। তখন ইরফান আমতা আমতা করে বলল,,

-"আপনার অপারেশনের টাকাটা!

- "আপনার কি মনে হয় আমি টাকাটা নেব। আপনি বরং ঐ টাকা দিয়ে আপনার মেয়ে পাখি কে কিছু গিফট কিনে দিয়েন। আল্লাহ হাফেজ।

বলেই ডক্টর এ.এ.সি হনহন করে যেভাবে এসেছিল সেভাবেই কারো দিকে না তাকিয়ে হসপিটাল থেকে বের হয়ে এয়ারপোর্টের দিকে গেল। এখানে থাকতে তার কষ্ট হচ্ছিল। এখানে সবাই তার আপনজন কিন্তু কারো সাথে সে কথা বলতে পারলো না জরিয়ে ধরতে পারলো না। কাউকে বলতে পারলো না চিন্তা করো না আমি আসি তো। ডক্টর এ.এ.সির চোখটা পানিতে ভরে উঠলো। কিন্তু পানি পরার আগেই সে মুছে ফেলল কারন স্টং গার্লরা কখনো কাঁদে না। আর সে তো স্ট্রং গার্ল ই নাহলে কি পরিবার ছেড়ে এতো বছর দূরে থাকা যায়। সে চোখ বন্ধ করে ভাবতে লাগলো।

"একটা মেয়ে একটা ছোট দুধের বাচ্চাকে কোলে নিয়ে দৌড়াচ্ছে একটু সাহায্যের আশায়। পেছনে কেউ নেই তবুও মনে হচ্ছে তার পেছনে কেউ আসছে। হঠাৎ করে সে একটা আলো দেখতে পেল।"

ডক্টর এ.এ.সি তাড়াতাড়ি চোখটা খুলে ফেলল। হয়তো সে আর ভাবতে চাইলো না। সে বাইরে তাকিয়ে প্রকৃতি দেখতে লাগলো।

_____________________

ইরফান কেবিন থেকে বাইরে বের হয়ে। ওর পরিবারের কাছে গেল। তখন সবাই জিজ্ঞেস করল ডক্টর কি বলেছে আসাদ খানের ব্যাপারে। তার উত্তরে ইরফান বলল,,,

- "বাবার কয়েক ঘণ্টা পরেই জ্ঞান ফিরবে। বাবাকে প্রপার বেড রেস্টে থাকতে হবে একমাস। সবসময় হেলদি খাবার খাওয়াতে হবে। বেশি স্ট্রেস নেওয়া যাবে না। নিয়মমাফিক চললে বাবা খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।

তখন আয়াজের মা রোজিনা খান বললেন,,,,

- "যে মেয়েটা তোর বাবার অপারেশন করলো তার সাথে একবার দেখা করাবি বাবা ধন্যবাদ দেব।

- "সে তো চলে গেছে মা। তাকে আর পাবে না।

- "কি চলে গেছে !ইস মেয়েটাকে একটা ধন্যবাদ ও জানানো হলো না।

- "মেয়েটা তো আর বসে থাকে না‌ । তার অনেক কাজ আছে। তাই সে ইতালি তে আবার ব্যাক করেছে এখনি। আসলে তার দাদু অসুস্থ। তাই রেখে এসেছে শুধু আমার কথা রাখতে । আর হ্যা তোমার ছোট ছেলেকে বলে দিও সে একটা টাকাও নেয় নি। তার টাকা দিয়ে পাখিকে গিফট কিনে দিতে বলেছে তার ফিসের টাকা দিয়ে পাখিকে এক আলমারি গিফট কিনে দেয়া যাবে। আর আগে যেয়ে কারো সাথে কথা বললে সে যেনো বুঝে সুনে কথা বলে। তার উচিত ছিল ডক্টরের কাছে থেকে ক্ষমা চাওয়া।

তখন আয়াজ ইমদাদ ইরফানের কাছে এসে বলল,,,

- "সে থাকলে আমি অবশ্যই তার কাছে থেকে ক্ষমা চাইতাম। সত্যিই তখন আমার ওভাবে বলা উচিৎ হয় নি। আসলে তখন টেনশনে ছিলাম তাই কি বলতে কি বলে ফেলেছি বুঝতে পারিনি ভাইয়া। এবারের মতো ক্ষমা করে দে। কথা দিচ্ছি সামনে থেকে সবার সাথে বুঝে সুনে কথা বলব। তার সাথে কোনদিন দেখা হলে আমি নিশ্চয়ই ক্ষমা চেয়ে নেব।

- "এবার ই লাস্ট কিন্তু এরপর থেকে এমন হলে কিন্তু আমি সত্যিই তোকে আর ক্ষমা করবো না। অবশ্য আমি আমার ভাইকে চিনি সে যখন বলেছে ক্ষমা চাইবে মানে সে চাইবে।

- আচ্ছা ভাইয়া এই ডক্টর কি সবসময় ই এরকম বোরকা মাক্স আর চশমা পরে প্যাকেট হয়ে থাকে। ওনার চেহারাই তো দেখা হলো না।

- "আজ পর্যন্ত ওনার চেহারা কেউই দেখতে পারেনি। যতোটুকু উনার ব্যাপারে জানতে পেরেছি উনি সবসময় পর্দা মেনটেন করে চলে। এতো টাকার মালিক কিন্তু কখনো টাকা নিয়ে অহংকার করে না। ওনার ব্যাকগ্ৰাউন্ড সম্পর্কে তেমন কেউ কিছু জানে না। এমন কি ওনার এ.এ.সির পূর্ণ নাম কি এটাও কেউ জানে না আমাদের এখানে। একজন হার্ট সার্জন ডক্টর হিসেবে সি ইজ দ্য বেস্ট। আজ পর্যন্ত কোন অপারেশন আনসাকসেসফুল হয় নি। অনেক ক্রিটিক্যাল অপারেশন ও উনি করেছেন। মাত্র দু'বছর হয়েছে উনি ডক্টর হয়েছে তাতেই অনেক উন্নতি করে ফেলেছে। উনার সম্পর্কে যতোটুকু জানি উনি খুব স্ট্রিক্ট আর রাগী কারো সাথে বাড়তি কথা বলেন না। খুব এটিটিউড নিয়ে থাকে।

-"বাহ খুব ইন্টারেস্টিং তো উনি।

- "তা তো বটেই ওনার সম্পর্কে যারা জানে। তাদের ওনার সম্পর্কে সবকিছু জানার কৌতুহল অনেক। সত্যিই বলতে আমি নিজেও আগ্রহী।

-"ক্যারেক্টার টাই সেরকম।

"সবার কাছে সবকিছু নরমাল মনে হলেও একজনের মনে হচ্ছে তার কাছের কেউ তার কাছে এসেছিলো। কিন্তু সে ধরতে পারলো না কে সে এটা হসপিটাল অনেক লোকের যাওয়া আসা। সে নিজেকে বুঝিয়ে সুজিয়ে নিজের কাজ করতে লাগল।"

_________________

এক মাস পর,,,,,

আজকে আয়াতের প্রথম ক্লাস ভার্সিটিতে। সে কিছুদিন আগে অনার্স ফাইনাল ইয়ারে ভর্তি হয়েছে।আজ থেকে ক্লাস শুরু । এখানে তার আপনজন বলতে কেউ নেই। সে একাই থাকে। আয়াত সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ব্রেকফাস্ট সেরে একটা নরমাল বোরকা পরে মাথায় হিজাব পরে নিল। চোখে একটা চশমা পরলো। স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে পরলো ভার্সিটির উদ্দেশ্যে । ভার্সিটিতে ঢুকে স্কুটিটাকে পার্ক করে আসতেই একটা কিছু দেখে ওর মাথা গরম হয়ে গেল। ও দেখতে পেল একটা ছেলে একটা মেয়েকে টিজ করছে। মেয়েটার হাত ও ধরেছে মেয়েটা কাঁদছে। বাকি সবাই মজা দেখছে কেউ কিছু বলছে না। তা দেখে ও আরো রেগে গেল। ও সেখানে গেল আর বলল,,,

-"এখানে হচ্ছে টা কি?

তা দেখে মেয়েটার হাত ধরা ছেলেটা বলল,,,

-"কেন বেবি দেখতে পারছো না। এখন এখান থেকে মানে মানে কেটে পড়ো নাহলে তোমার সাথেও এমনটা হবে বেবি। দেখতে তো তুমি একটা বোম তোমাকেই তো ধরতে ইচ্ছে করছে।

- "তাই নাকি?

এ কথা শুনে ছেলেটা মেয়েটার হাত ছেড়ে দিয়ে আয়াতের হাত ধরতে এলো। ছেলেটা হাত ধরবে এমন সময় আয়াত ছেলেটার গালে একটা চড় মেরে দিল। ছেলেটা গালে হাত দিয়ে রেগে আয়াতের দিকে আবারো আসতে লাগলো তা দেখে আয়াত আরেকটা চড় দিল। আর এই চড়টা এতোই জোরে ছিল যে ছেলেটা নিচে পরে গেল। তারপর আয়াত মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,

-"এই চরটা আমার নয় তোমার মারা উচিৎ ছিল। তোমরা মেয়েরা নরম হলে তো ছেলেরা এরকমই তোমাদের ওপর জুলুম করবে। আজকের সমাজে দাঁড়িয়ে কেউ কাউকে হেল্প করবে না।সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মজা নেবে তবুও তোমাকে সাহায্য করবে না। যেমনটা তোমার চারপাশের ছেলেমেয়েরা নিচ্ছে। অথচ তোমাকে সাহায্য করতে কেউ এগিয়ে এলো না।

এ কথা শুনে ওখানেই থাকা সকলেই মাথা নিচু করে ফেলল। আসলে যে ছেলেটা মেয়েটার হাত ধরে ছিল ও ভার্সিটির এক বড় ভাইয়ের বন্ধু ছিল। ওকে কিছু বলার সাহস কারো নেই শুধু একজন আর ওর বন্ধুরা ছাড়া কিন্তু সে তো একমাস ধরে ভার্সিটি আসছে না। তার জন্যই তো এতো সাহস পেয়েছে। তার বোনকেই আজ অপমান করছে। সবাইকে চুপ করে থাকতে দেখে আয়াত মেয়েটাকে আবার বলল,,,

-"অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারো না আবার এসোছো ভার্সিটি পরতে। এখনো ছোট আছো যে ছোট বাচ্চাদের মতো ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদছো! এতোটুকুতেই যখন এতো কান্না আসছে তাহলে ভার্সিটি আসার কি দরকার, বাসায় মায়ের আঁচলের তলায় আর বাবার পাপা কি পারি হয়ে থাকলেই তো পারো। কান্না থামাও স্টুপিড!

মেয়েটি সব শুনে আরো জোরে কাঁদতে লাগলো।নিচে পরে থাকা ছেলেটা ওঠে কিছু বলবে তার আগেই ছেলেটা গেটের দিকে কিছু একটা দেখে সেখান থেকে দৌড়ে পালালো।

__________________

আয়াজ ইমদাদ আজ একমাস পর ভার্সিটিতে এসেছে। কিন্তু নিজের প্রানপ্রিয় বোনকে কাঁদতে দেখে ওর কলিজায় মোচড় দিয়ে উঠলো। ও দেখলো কোন একটা মেয়ে ওর বোনকে কিছু একটা বলছে আর ওর বোন কাঁদছে। ও ভেবে নিল মেয়েটাই নিশ্চয়ই ওর বোনের সাথে কিছু করেছে।

ও গিয়েই আয়াতের বাহু ধরে টান দিয়ে ওর দিকে ঘুরিয়ে বলল,,,

-"তোমার সাহস হলো কি করে আমার বোনকে কাঁদানোর। এই আয়াজ ইমদাদ খানের বোনকে তুমি কথা শোনাচ্ছো। তুমি জানো না আমি কি করতে পারি ,,,,,

আর কিছু বলতে পারলো না তার আগেই,,আয়াতের বাহু ধরার জন্য আয়াত খুব রেগে গিয়ে আয়াজ কে একটা ধাক্কা মারলো। আয়াজ আকশ্মিক ধাক্কায় কিছুটা পিছিয়ে গেল। আর অবাক চোখে আয়াতের দিকে তাকালো। তখনি আয়াজের বন্ধু আফিয়া আয়াতকে চড় মারতে আসলে আয়াত আফিয়ার হাত ঘুরিয়ে পিছনে নিয়ে ধরে বলল,,,

-"অকারণে গায়ে হাত দেওয়া একদম পছন্দ করে না আয়াত!!,,,,,

-চলবে,,,,, ইনশাআল্লাহ!

#আলগোছে_ভালোবাসি
#পর্ব_১

গল্প ভালো লাগলে একটি লাইক দিবেন তাহলে পরবর্তী পর্ব লেখার উৎসাহ পাব

বিঃদ্রঃ আসসালামু আলাইকুম সবাইকে। নতুন গল্প নিয়ে হাজির হলাম আপনাদের মাঝে। প্রথম পর্ব টা কেমন হয়েছে অবশ্যই জানাবেন। ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন। জাযাকাল্লাহ খইরান।

-(এক অচেনা মানুষ)পার্টঃ___03 & End.নিমিষেই তার হাসিখুশি চেহারার মাঝে এক অস্ফুটমলিন আভা ফুটে ওঠলো।। যা কিছুতেই আমার কাছেআ...
08/07/2025

-(এক অচেনা মানুষ)
পার্টঃ___03 & End.

নিমিষেই তার হাসিখুশি চেহারার মাঝে এক অস্ফুট
মলিন আভা ফুটে ওঠলো।। যা কিছুতেই আমার কাছে
আড়াল করতে পারলো না সে .............
তাকে একটু চিন্তিত দেখাচ্ছিল।। তাই হঠাৎ ই আমি
বলে উঠলাম --
-- কিছু হয়েছে কি?? সব ঠিক আছে তো?? (আমি)
আমার কথায় এক অমায়িক হাসি দিয়ে বললো ---
-- আরে নাহ্ ।। কি ভাবছো তুমি?? কিছুই হয়নি।। সব ঠিক
আছে।। (আবির)
-- না মানে এতরাতে ফোন ....!!তাই বলছিলাম আর
কি??? (আমি)
আমার কথা শুনে ও শব্দকরে হেসে ওঠলো আর ওর দুহাত
দিয়ে আমার দুই গালে হাত দিয়ে শান্ত লাজুক গলায়
বললো ----
--- বাহ্ ১ম রাতেই বরকে সন্দেহ করছো?? তোমার বর শুধু
তোমারই।।
বলে আবারও আমার কপালে আলতো করে চুমো একে
দিলো।।
শেষরাতের স্নিগ্ধ চাদের আলো, একটু দখিনা
বাতাসের ছোয়া আর আবিরের এই ভালোবাসার স্পর্শ
আমাকে মাতাল করে তুলছিলো।। এক মুহুর্তে মনে
হচ্ছিল আবিরকে ও জড়িয়ে নিই আমার পরম
স্নায়ুস্রোতে।।
আবির এবার আমাকে বললো চলো সামনের দিকটাতে
একটু হাটা যাক।। ওর কথায় আমার ঘোর কাটলো।। মাথা
নাড়িয়ে ওর সাথে আমিও হাটতে লাগলাম।।
ছাদের ওপরে সাজানো ফুলবাগান দেখে আমার
শেষরাতের ভালোবাসা যেনো আরেকবার পূর্নতা
পেলো।। আমি বিস্ময়ে আবিরের দিকে ফিরে
তাকালাম।। চাদের স্নিগ্ধ আলোয় আমি স্পষ্ট দেখলাম
আবির চোখ নেড়ে এক অজানা অনুভুতি প্রকাশ করলো।।
যাতে স্পষ্ট আবিরের মনের কথা পড়তে পারছিলাম
আমি।। ওর চোখদুটো একটা কথায় শুধু বলছিলো ----
-- হ্যা মিরা আজ থেকে এই ফুল, ফুলের সুভাস সবই
তোমার।। প্লিজ যত্ন করে আগলে রেখো এই
ভালোবাসার প্রতীকী গুলোকে।।। তবে একটা কথা শুধু
তোমারই,,,, এই প্রতীকী ভালোবাসার মাঝে সবচেয়ে
সৌন্দর্যময় প্রতীক কিন্তু আমার এই লক্ষি বউয়ের লক্ষি
চাহনিই।।!!!
নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারলাম না।। নিজের
মনের সাথে কিছুতেই আপোষ করতে পারলাম না।।
পারলাম না প্রকৃতির এই বাস্তব মায়াকে কাটিয়ে
ওঠতে,,,
দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম এই হ্যাংলা, বদমাইশ,
পচা, বাদড় ছেলে মিঃ আবির কে।।।
এক মুহুর্তে মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে দামী, সবচেয়ে
বিশাল, সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা এইটায়।।যা
আস্টেপিস্টে বেধে রেখেছে আমাকে।।।

নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে কয়েকফোটা জল
গড়িয়ে পড়ছিলো।। কিন্তু অদ্ভুত ছেলে আবির এইটাও
বুঝে যাচ্ছিল।। বলে ওঠলো ---
--ঝরতে দাও চোখের পানি।। তাকে আটকিও না।।
তাহলে আমাদের ভালোবাসার মাঝে ঘাটতি থেকে
যাবে।।
বলেই আরো শক্তকরে আমাকে জড়িয়ে নিলো।।
জানিনা কতক্ষণ দুজনে এভাবেই ছিলাম।। শুধু মনে
হচ্ছিল যে সময়টাই ছিলাম,, সেটা যেনো অতি
তাড়াতাড়িই শেষ হয়ে গেলো।।।

মনের অজান্তেই বাবা মার সিদ্ধান্ত কে আরেকবার
স্যালুট দিতে ইচ্ছে করছে।। হয়তো তাদের জন্যই মাত্র
কয়েক ঘন্টার পরিচয়ের অচেনা একজনের বুক কে আজ
সর্বশ্রেষ্ঠ জায়গা মনে হচ্ছে, হয়তো তাদের জন্যই
আমার ভালোবাসার শূন্যের কোটা আজকে পূর্ণ মনে
হচ্ছে।।
ভাবনাগুলো ভাবতেই রাতের একমুঠো চাদকে গ্রাস
করে নিলো এক টুকরো মেঘমালা। অন্ধকার গারো হয়ে
আসছিলো।। তাই আবির আমাকে বললো
-- চাদ আমাদের সাথে লুকোচুরি খেলছে,, চলো রুমে
যায়।।
বলেই আবারও কোলে নিয়ে রুমে আসলো।। তারপর
আমাকে ঘুমোতে বলে সে বেলকুনিতে গিয়ে
দাড়ালো।।
আবির,,,,,!!!!! সত্যিই আবির,,,,!!! প্রতিটা মুহুর্ত তাকে নতুন
করে চিনছি,, নতুন করে দেখছি, নতুন করে ভাবনাতে
আটকে রাখছি।। আমি জানি ও কিছু একটা নিয়ে
চিন্তায় আছে, তবুও আমাকে একফোটা বুঝতে না দিয়ে
নিজেকে সামলে আমাকেও সামলে নিলো।। এ যেনো
আমার জীবনের নতুন শিক্ষা।
কেননা আমি একটু বিষয়েই ঘাবরে যেতাম, অথচ
আবিরের বোধশক্তি আমাকে নতুন করে জাগ্রত করলো।।।
যাইহোক সারাদিনের ব্যস্ততার কারনে একটুতেই
চোখজোড়া ধরে আসলো।। আমি ঘুমিয়ে গেলাম,
আবিরকে রেখেই।। এতটুকু সময়ে ওকে যতটা জানলাম
তাতে এটা আমি ঠিকই বুজেছিলাম যে আজকের রাতে
ওর চোখের পাতা কিছুতেই এক হবে না।।।....
রংধনুর রং.....

রোদ্রের স্নিগ্ধ আলো চোখে এসে পড়তেই, ঘুমটা
ভেঙে যায় আমার।। চোখ খুলে একটুও অবাক হলাম না
আজকে,, আমি জানতাম আবির এখানেই থাকবে।।
হ্যা সত্যিই!!! আবির তার মায়াবি চোখদুটো দিয়ে
আমাকে দেখছিলো।। প্রতুষ বেলার চাহনিতে যতটুকু
বুঝেছি আমি
---ছিলনা সেই চোখে কোনো বিশেষ অঙ্গের প্রতি
আকর্ষন, ছিলনা সামান্যতম কোনো ললুপ দৃষ্টি।।
শুধু ছিলো পরম ভালোবাসায় জড়ানো কিছু স্নিগ্ধ
আবেশ।।।
---
---গুড মর্নিং বউ।( আবির)
--হুম গুড মর্নিং (আমি)
বলেই চায়ের কাপ এগিয়ে দিলো আমার দিকে।। আমার
কেনো জানিনা ভীষন লজ্জা লাগছে ওর দিকে
তাকাতে।। বুঝলাম বিষয়টা লক্ষ্য করে মিঃ মুচকি
মুচকি হাসছে।।
তারপর চায়ের কাপ টা হাতে নিয়ে আবারও অবাক
হলাম আমি।। একি চা কোথায়???
-- কিহ! চা নেই তো .....??থাকবে কি করে বলো আমি
তো আর চা করতে পারি না। শুধু দেখালাম যদি
পারতাম তবে এভাবেই এনে খাওয়াতাম।। (আবির)
আমার আর বুঝতে বাকি রইল না যে, সারাজীবন সালা
বদজাতটা আমার পিন্ডি চটকে দিবে।। তবুও খুব ভালো
লাগছিলো তার ভালোবাসার খুনসুটি গুলো।। জানিনা
কোনো মেয়ে কখনও বাসর রাত থেকে এত
ভালোবাসা পেয়েছে কিনা?? তবে আমি
ভালোবাসায় পূর্ণ।।
আমার ভাবনার মাঝেই আমিও একটু মুচকে হেসে
ওঠলাম।। তারপর ও বললো --
-- খুব ইচ্ছে হয় প্রতিদিন সকালে বউয়ের হাতে মিষ্টি
চায়ের সাথে ঘুমটা ভাঙাতে।। (আবির)
ওর কথা শুনে মুচকি হেসে বিছানা থেকে নেমে
আসলাম।। বললাম
--রান্না ঘরটা কোথায়?? (আমি)
বলেই বাহিরে যেতে চাইছিলাম।। ভালোবাসার
মানুষের আবদার টা পূরন করতে।। আমার অজান্তেই আমার
মন বলে ওঠলো প্রত্যেকটা সকাল তোমার বউয়ের
হাতের মিষ্টি চায়েই শুরু হবে তোমার মিঃ আবির।।
কিন্তু আবির আমার হাতটা ধরে কাছে টেনে বললো-
--এখন লাগবে না পাগলী। যাও ফ্রেশ হয়ে এসো।।
বাহিরে মা তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।।।
কথাটি শুনেই ঘড়ির কাটার দিকে তাকালাম।।।। ইস্স
সাতটা বেজে গেছে।। বাহিরে মা অপেক্ষা করছে।।
আর কথা না বাড়িয়ে ওকেও কিছু বলার সুযোগ না
দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।।।

ফ্রেশ হয়ে বাহিরে এলাম। দেখি আমার শ্বাশরী মা
বসে অপেক্ষা করছে।। আমাকে দেখেই আমার দিকে
এগিয়ে এসে বললো ---
--আয় মা, আমার কাছে বস।।
বলেই আমাকে বসিয়ে দিয়ে দু কাপ চা নিয়ে হাজির
হলো।। তারপর আমার পাশে বসে বলল
-- নে মা চা টা নে,, নইলে ঠান্ডা হয়ে যাবে।।
আমি চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে খাওয়া শুরু করলাম।।
তারপর শ্বাশরী মা বললেন
--কি রে মা কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো তোর??
(মা)
--জি না মা, আমার কোনো অসুবিধে হচ্ছে না।। (আমি))
আমি মায়ের সাথে চা খাচ্ছিলাম আর এদিক সেদিক
তাকিয়ে আবির কে খুজছিলাম।। হয়ত ব্যাপারটা
শ্বাশরী লক্ষ্য করছিলো। তাই বললো
--কিরে মা কাউকে খুজছিস?? জানি তো আবির কে
খুজছিস??
আমি লজ্জা পেয়ে গেলাম।। মুখ ফুটে কিছু বলতেও
পারছিলাম না।। শুধু লজ্জার মাথা খেয়ে মাথা
নাড়ালাম।। উনি বললেন --
--কেনো তুই জানিস না। ও তো একটু মিলে গেছে।। কাল
শেষরাতের দিকে আমাদের মিলে আগুন ধরে
গিয়েছিলো।। শুনলাম অনেকটাই নাকি ক্ষতি হয়ে
গেছে।।
কথাটি শুনে আমি অবাক ও নিস্তব্ধ হয়ে যায়।।
তারমানে আবির কে তখন সে জন্যই ওমন দেখাচ্ছিল।।
আমার ভেতরটা মুচরে ওঠে।। নিমিষেই মলিন হয়ে যায়
আমার মুখ।।
আমার অবস্থা টা বুঝতে পেরে শ্বাশরী মা বললেন --
--কিরে তুই জানতিস না,,, নাহ??
আমি বললাম না মা।। আপনার ছেলে তেমন কিছু
বলেনি।। তারপর উনি বললেন
--আবির এমনই।। তুই কোনো টেনশন করিস না সব ঠিক হয়ে
যাবে।।
আমি আমার শ্বাশরী কে দেখেও অবাক হচ্ছি ।। দুই মা
ছেলে সত্যিই অন্যরকম ধাতুতে গড়া।। যা আমাদের আট
দশটা পরিবারের চেয়েও অনন্য।।। তারপর আবারও
শ্বাশরী মা বলে ওঠলেন --
--শোন, তোকে কিছু কথা বলি মা।। জানিস তো
আবিরের বাবা নেই।। আবিরের ছোটবেলাতেই উনি
মারা যান।। খুব কষ্ট আর ধৈর্য নিয়ে সাধনার ফলে
আজকে আবির নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।। তার
বাবার ফেলে যাওয়া ব্যবসাকে একার হাতে দাড়
করিয়েছে।। যদিও আবির কে ছোটবেলা থেকে একটা
কথা শিখিয়েছিলাম যে, নিজে চেষ্টা করো,
নিজের পথকে নিজেই তৈরি কর, যেকাজ দশজনে
পারে না সেকাজ তুমি চেষ্টা করবে, কোনো বিষয়ে
টেনশন করবে না, যেটা হওয়ার সেটা শ্বাশত নিয়মেই
হবে। তুমি চাইলেও আটকাতে পারবে না।। তার চেয়ে
ভালো দুর্দিনে ধৈর্য ধারন করে তার মোকাবেলা
করবে।।।
হয়ত আবির ছোটবেলা থেকে আমার কথাগুলো মেনে
আসছিলো।।
মা রে আমার ছেলে বলে বলছি না, ও সত্যিই একজন
খাটি ছেলে।।।।
বলেই আমার হাতটি জড়িয়ে ধরে বললো ------
--কথা দে মা কখনও আমার ছেলেকে কষ্ট দিবি না।।
দেখলাম কথাগুলো বলতে ওনার চোখের কোনে পানি
জমলো, কিন্তু গড়িয়ে পড়লো না।। বুঝলাম --উনারা
অন্যজাতের মানুষ।।।
আমিও কেদে দিলাম। কিছু বলার ভাষা হারিয়ে
ফেলছিলাম।। আমি শ্বাশরী মাকে জড়িয়ে ধরলাম।।
মনে হলো আমার মায়ের জেরোস্ক্রপি।। কেননা তার
বুকেও একই রকম শান্তি।।।
তারপর মা আমাকে বললো, চল মা তোকে পুরো
বাড়িটা চিনিয়ে দেই।। আজ থেকে সব দায়িত্ব তোর।।
আমার রেস্ট।।
শোন মা,,,, এই শহরে আমাদের আপন বলতে তেমন কেউ
নেই, তাই তোদের বিয়েটাও ঘরোয়া পরিবেশে শেষ
করেছি।। তাই এখানে আমি ছাড়া কিছু বলার মতো
কাউকে পাবি না।। তাই কিছু লাগলে অবশ্যই আমাকে
বলিস মা।।।
আমার বিস্মিত হওয়ার মাত্রা বুঝি অতিক্রম করলো।। এত
অমায়িক পরিবার একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ভাগ্যে
রাখলেই সম্ভব।।

আমি আর আমার শ্বাশরী মা মিলে পুরো বাড়িটা
বেড়ালাম।। এরমধ্যে আরো অনেক গল্প হলো আমাদের।।
তিনি আবিরের সকল পছন্দ অপছন্দ আমাকে জানালেন।।।
এক মুহুর্তে আমি ভুলেই গেছি যে, আমি এক অচেনা
পরিবারের নতুন সদস্য।।
আমি শ্বাশরী কে আরেকবার বললাম ....
--মা, মিলের অবস্থা টা কি হলো একবার জানলে হতো
না??
--নারে মা।। তোকে বললাম না কোনো টেনশন করবি
না।। আবির সব সামলে নিবে।। চল আমরা দুপুরের
রান্নাটা শেষ করি।। তোকে সব দেখিয়ে দেই।। (মা)
আমি মাথা নেড়ে তার সাথে হাটা দিলাম রান্না
ঘরে।।।।

প্রায় দুই ঘন্টা পর রান্না শেষ করে ফ্রেশ হয়ে রুমে
আসলাম।। পুরো রান্নার সময়ে শ্বাশরী মায়ের মুখের
মজাদার সেই গল্প আমাকে ভুলিয়েই দিয়েছে যে,
আমি কখনও রান্না ঘরের ছায়াই মারাড় নি।। মনে
হচ্ছিল এই রান্নার কাজ আমার কত বছরের অভ্যাস।।
যাইহোক ঘরে বসে আবিরের কথা মনে পড়ছিলো।
সালা হ্যাংলা সেই কখন গেছে এখনও আসার নাম গন্ধ
নেই।। জীবনে এই প্রথম কোনো ছেলেকে এত মিস
করছি।।
ঘরের ভেতর একাই ঘোরাঘরি করছিলাম। ঘরটিকে
তেমন করে গুছিয়ে না রাখলে, পুরো ঘরটিতে এক
সৌন্দর্য বিদ্যমান ছিলো।। রাতের ধকলে তেমন একটা
দেখা হয়নি।।ভেতরের সবচেয়ে সুন্দর করে সাজানো
ছিলো বুকসেল্ফটা।। তাই একটু এগিয়ে সেখানে
গেলাম।। বইগুলো দেখছিলাম। বেশ কয়েকটি বই আমার
পছন্দের ছিলো।। হঠাৎ ই আমার চোখ গেলো এক নীল
রংয়ের ডায়েরীর দিকে।। ধুলো পড়া ডায়েরীর কিছু
জায়গায় হাতের ছোয়া দেখা যাচ্ছিল।। মনে হয়
অনেকদিন পর কেউ ডায়েরী টিতে হাত দিয়েছে।।
মোটামোটি আগ্রহ নিয়েই ডায়েরী টা খুললাম।।
ডায়েরীর ১ম পনের পাতায় কোনো লেখা ছিলনা।।
তারপর থেকে লেখা----
--------
---------পনের দিন মিরার ছবি দেখে আসছি।। কিভাবে
তার সৌন্দর্যের বর্ণনা দেবো ভেবে পাচ্ছিনা।। খুব
কাছ থেকে আজকে তাকে দেখলাম।। আগেই বললাম
তার সৌন্দর্য আমার কাছে বর্ণাতীত।। তাই কি
মায়াবীই যে তাকে লাগছিলো তা শুধু আমিই
জেনেছিলাম।।
প্রথম দেখাতেই মিরা একটু অবাক হয়েছিলো আমাকে
দেখে। কেননা রাতে বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে
ভিজে খুব কষ্টে তারজন্য একগুচ্ছ গোলাপ আর প্যাড
নিয়ে এসেছিলাম।। তার হাতে দেওয়ায় সে যে ভীষন
রকম অবাক হয়েছিলো তা আমি বুঝেছিলাম।।ওর চোখ
আমাকে প্রশ্ন করছিলো আমি কিভাবে জানলাম তার
পিরিয়ডের কথা।।
আসলে বিয়ের পর থেকে গাড়িতে বসে আড়চোখে
দেখছিলাম তাকে। কিন্তু সে জানালা দিয়ে
বাহিরের দিকেই চেয়ে ছিলো।। আমার দিকে এখটুও
নজর ছিলো না ওর। অবশ্য এর ফাকেই ওকে কয়েকবার
পেট চেপে ধরতে দেখেছি।। আমি বুঝছিলাম ওর খুব কষ্ট
হচ্ছিল।। কিন্তু আমি কিছুই বলতে পারছিলাম না।।
যাইহোক বাসায় আসার পর আমার পকেটে থাকা
কাবিনের নকল কপিটা বের করতে গিয়ে হঠাৎ ই আমার
চোখ পড়ে তার জন্ম তারিখের ওপর।। আমি ভীষন খুশি
হয়েছিলাম,,, কেননা আজকের রাতে ওকে একটা হলেও
সারপ্রাইজ দিতে পারবো।। আর কিছু না ভেবেই আমার
বন্ধু ...রংধনুর_রং....কে সব ম্যানেজ করতে বললাম।। আমার
সবচেয়ে কাছের আর প্রিয় বন্ধু হলো ...রংধনুর_রং...।আর
সেই সব ব্যবস্থা করেছিলো।।। ধন্যবাদ বন্ধু তোকে..রংধনুর_রং...।
বিয়ের দিনের আমার কাছের সবচেয়ে খুশির মুহুর্ত
ছিলো মিরার সারপ্রাইজ হওয়া।। যা ছিলো বিয়ের
রাতের সবচেয়ে বড় পাওয়া আমার কাছে।।

তারপর ডায়েরীর পাতাটায় আর কিছু লেখা ছিলো
না।। শুধু তার চারপৃষ্টা পর লেখা ছিলো,,,, যদি মন
খারাপ হয়, তবে বই পড়।।।।
সালা বুদ্ধ!!!লেখার কি ছিড়ি ....?? আয় না বাসায় আয়
আজকে???
ভাবতে ভাবতেই মহারাজ হ্যাংলা এসে হাজির।।
আমি তাড়াহুড়ো করে ডায়েরী টা রেখে দেই।।।
তারপর খুব সাহস নিয়ে তার কাছে গিয়ে বললাম
----- কি মিঃ আবির খুব টেনশন দিতে ভালো লাগে
নাহ তোমার??
এই কি ভাবো কি নিজেকে হ্যা?সব তুমিই বুঝবে??
তুমিই সব টেনশন নিবে?? আমি কি কেউ নই তোমার??
বলেই ওর বুকে ঝাপিয়ে পড়লাম।। হয়তো ও সব বুজতে
পারছিলো, তাই আমাকেও পরম আদরে বুকে আগলে
নিলো।।। তারপর বললো ---
খুব ভালোবাসো আমায়??? এবার আমি কেদেই দিলাম।
তারপর তার বুক থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম।।
দেখলাম বুদ্ধুর মুখটা মলিন হয়ে গেলো।। তাই আমি
বললাম ---
-------মন খারাপ হলে, বই পড়তে হয় ...........
আর খুব খারাপ হলে, বউকে জড়িয়ে ধরতে হয়।।।
বুজছেন মিঃ হ্যাংলা?????
ও বিস্ময়ে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে
অবুঝের মতো মাথা নেড়ে আমাকে জড়িয়ে ধরলো
তার বুকে।। বুজতে পারছিলাম ইহা পরম ভালোবাসার
পরম দেয়াল।।।।
(সমাপ্ত)

গল্পটা কেমন লাগছে কমেন্ট করে জানাবেন

(একজন অচেনা মানুষ)পার্টঃ--02আবারও সে ন্যাপকিনের প্যাকটা একটু নেড়ে আমারদিকে এগিয়ে দিলো ....আমার প্রশ্নগুলো অস্বাভাবিক ভাব...
08/07/2025

(একজন অচেনা মানুষ)
পার্টঃ--02

আবারও সে ন্যাপকিনের প্যাকটা একটু নেড়ে আমার
দিকে এগিয়ে দিলো ....
আমার প্রশ্নগুলো অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে লাগলো....
নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।। আমি সত্যিই বিস্ময়ে
হতবাক হয়ে ভাবছি যে মিঃ আবির কিভাবে জানলো
আমার পিরিয়ড সম্পর্কে..?? আর তাকে কেনোই বা
এতটা শান্ত দেখাচ্ছে?? তাহলে কি আমার ভাবা
চিরায়ত ভাবনাগুলো আসলেই মিথ্যা?? তাহলে কি
আমিই ভুল ভাবছিলাম?? তাহলে কি ও অন্য আট দশটা
(আমার চেনা অন্য মনমানসিকতার?) ছেলেদের মতো
না?? নাকি শুধুমাত্র ক্ষনি কের ভালো মানুষী
দেখানো??
কিছুই ভাবতে পারছিলাম না?? অনেক প্রশ্ন এখন
আমাকে দাপিয়ে বেরাচ্ছে!!!
যাইহোক একটু লজ্জা লাগলেও নতুন একজনের কাছ থেকে
প্যাকটা আমি নিলাম।। প্যাকটা হাতে নিয়েই যেই
মাথা তুলেছি, দেখি হ্যাংলা টা আমার দিকে হা
হয়ে থাকিয়ে আছে,,,,
ভীষন লজ্জা পেলাম আমি।। কি বদজাত ছেলে,,,,!!!
লজ্জা শরমের মাথা খেয়েছে মনে হয়। মনে হয় জীবনে
মেয়ে দেখেনি।।
আমি বাথরুমের দিকে যাওয়ার জন্য একটু নড়ে ওঠলাম,
তখনি সে সজাগ হয়ে আমার রাস্তা ছেড়ে দিলো।
যেনো এতক্ষণ ঘোরের ভেতর ছিলো।। তারপর আর কিছু
না ভেবে আমি বাথরুমে চলে গেলাম।।।

প্রায় বিশ মিনিট পর ফ্রেশ হয়ে রুমে যাওয়ার জন্য
দরজা খুললাম।। সাথেই সাথেই কেউ একজন আমার
চোখদুটো ধরে আমাকে আড়াল করে নিলো,,,,
ভয়ে আমি চিৎকার দিয়ে ওঠলাম।। অমনি আরেক হাতে
আমার মুখটা চেপে ধরে বলে ওঠলো --- এই আমি
আমি........!!!প্লিজ চুপ করো, চুপ।।
ইস্স বদমাইশ ছেলেটা করছে কি?? ওকি আমাকে মেরে
ফেলবে নাকি??
ওর কথায় আমি চুপ হয়ে গেলাম।। তারপর ও আমাকে
এগিয়ে যাওয়ার জন্য বললো। আমি এগিয়ে যাচ্ছি লাম।।
হঠাৎ হ্যাংলা টা আমার কানের কাছে মুখ এনে
বললো ----
---যাক তুমি তাহলে বোবা না ...চিৎকার অন্তত দিতে
পারো?? (আবির)
--কিই,, কি বললেন আপনি?? আমি বোবা?? এই আমাকে
আপনার বোবা মনে হয়?? ছাড়ুন আমার চোখ ছাড়ুন
বলছি?? (আমি)
--এই সরি সরি সরি ....আমি বুঝে গেছি।। বুঝে গেছি।।
আরেকটু চলো না, তারপর চোখ ছাড়ি।। (আবির))
--কি বুঝেছেন আপনি, হ্যা??? (আমি)
--না মানে,,,, তু তু তুমি ,,, ঠিকি তো,, এই যে কথা বলতে
পারো।। আসলে সরি টা গ্রহন করে চলোনা আরেকটু ??
(আবির)
ইস্স কি সুন্দর করে কথা বলে হ্যাংলা টা!!!!! আসলে খুব
রাগে বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলাম, তাই একটু রাগ
ঝাড়লাম আর কি?? তাছাড়া বাসর রাত তো দূরের কথা
অন্যরাতেও আমি এমন করে কথা বলতাম না।। আসলে
হ্যাংলা টা কি চাইছে কি কিছুই বুঝে ওঠতে পারছি
না?? আজ সারারাত কি এভাবেই জ্বালাতন করবে
নাকি,, ধুরর ভাল্গানে,!!??

এবার মিঃ আবির সাহেব আমাকে নিয়ে থেমে
গেলেন।। তারপর আস্তে করে চোখটা ছেড়ে দিয়ে
বললেন --
-- এবার চোখটি খোলো।।। (আবির)
আমি চোখদুটো খুললাম।।
চোখদুটো খুলেই আমি নিস্তব্ধ হয়ে গেলাম।। কিভাবে
সম্ভব?? আমি বিস্ময়ে অস্থিরর হয়ে গেলাম।। তাহলে
কি এইটাই আবির।। এরকমই আবির!! আমাকে এত বড়
সারপ্রাইজ করবে বলে এরকম করছিলো।।
নাহ্ তার সম্পর্কে আমার ধারনাটা ঠিক নয়।। এক অদৃশ্য
ভালো লাগা কাজ করতে থাকে আমার, আবিরের
ওপর।।। আমি তার দিকে ফিরে তাকালাম।।।
-- আপনি এতসব জানেন কিভাবে?? আর এত তাড়াতাড়ি
কিভাবে করলেন এতকিছু?? কথাটি বলতেই আনন্দে
আমার চোখে পানি চলে এলো।। আবির কিছুর উত্তর না
দিয়েই আমাকে আলতো করে ধরে বললো --
-- চলো কেকটা কাটা যাক।।।
আসলে আজ আমার জন্মদিন।। এত ঝামেলার মাঝে
দিনটির কথা আমার খেয়ালই ছিলো না।। আবির বিশ
মিনিটের ভেতরে এক অমায়িক ভালো বাসা দিয়ে
ঘরটি সাজিয়েছে।।। আর ওয়াল ব্যানারে ছোট করে
লেখা --------------তোমার মন খারাপের দেশে
------------------------
---------------------তোমায় রাখবো ভালোবেশে
----------------------------
আর বড় করে লেখা ------
হ্যাপী বার্থডে টু ইউ মিরা
উইশ অনলি ফর ইউ বাই মি.
মনে হচ্ছিল জন্মদিনে এর চেয়ে বড় গিফট কেউ কাউকে
কোনোদিন দিতে পারে না।। নিমিষেই আমার মনটি
আনন্দময় হয়ে ওঠলো।।। তারপর শুধুমাত্র আমি আর আবির
মিলেই কেকটা কাটলাম।। ও হালকা ভাবে আমাকে
মুখে উইশ করলো।। তারপর কেকটা আমাকে খাইয়ে
দিতে লাগলো।। আমার চোখদুটো হঠাৎ ই ছলছল হয়ে
আসছিলো।। আমি কোনোমতো নিজেকে সামলে
ওকেও কেকটা খাইয়ে দিলাম।। দেখলাম ওর চোখে
মুখে এক প্রাপ্তির নেশা।।
হঠাৎ ই আবির আমাকে জড়িয়ে ধরলো।। আমি কিছুই
বললাম না।। জানিনা কেনো কিছু বলতে পারলাম না।।
শুধু নিজের মনকে আস্টপিষ্টে বাধতে চাইছিলাম
আমি।। কিন্তু কেনো,,,,,,,,???
এর উত্তর এই মুহুর্তে হয়তো কারো পক্ষেই দেয়া সম্ভব
নয়।।।।

আমি আবিরের বুক থেকে মুখটা উঠিয়ে ওর দিকে
চেয়ে বললাম
-- আপনি এতকিছু জানলেন কিভাবে?? আমার জন্মদিন,
আমার ভালোলাগা আর অন্যান্য বিষয়গুলি??
এবার কোনো কথা না বলেই আবির আমার কপালে
চুমো একে দিলো।। আমি কিছুটা শিওরে ওঠলাম।
তারপর সে বললো ...
-- খুব ঘুম পাচ্ছিলো না তোমার?? দেখছিলাম তখন ঘুমে
একদম নুইয়ে পড়ছিলে।। চলো ঘুমাবো এখন।। আমারও খুব ঘুম
পাচ্ছে।।
তারপর সুন্দর করে বিছানা করতে গেলো সে। আমাকে
আর কোনো কথার সুযোগ দিলো না।। আমিও বাধ্য
মেয়ের মতো সুইয়ে পড়লাম ওর পাশে।। মনে মনে
ভাবলাম এবার তাকে কথাগুলো আবার জিজ্ঞেস
করবো।। তাই তাকে আলতোভাবে ধাক্কা দিলাম।।
এ কি,,,, হ্যাংলা টা এই পাচ মিনিটের ভেতর ঘুমিয়ে
গেলো।। আমি খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলাম।
কিন্তু না,,, সে তো ঘুমিয়েই গেছে।।
ধুরর ভাল্গানে,,,,!!! ফাযিল ছেলে একটা এরিরমধ্যে
ঘুমিয়ে গেলো।।
রাগে নিজের মাথার চুলগুলো ছিড়তে ইচ্ছে করছে।।
কিন্তু কি আর করার, আমার এখন ঘুমাতে হবে।।
তবে সকল কিছুর মাঝে একটা বিষয় ভেবে ভালো
লাগছে যে,, বিয়ে নিয়ে আমার ভাবা সকল বিষয়গুলি
আস্তে আস্তে মিথ্যে প্রমানিত হচ্ছে।। আমার ভাবনার
উল্টো বিষয়গুলিই আমার সাথে ঘটে চলেছে।। চোখ
বুজে কেনো জানিনা মা -বাবাকে একটা ধন্যবাদ
দিতে ইচ্ছে করছে।।।।

ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছিলাম বুঝতে
পারিনি।। হঠাৎ ই আমার ঘুমটা ভেঙে গেলো।। ঘুম
ভেঙে আবারও বিস্ময়ের সম্মুখীন হলাম।। দেখি অবাক
চাহনি নিয়ে আবির আমার দিকে তাকিয়ে আছে??
চোখে চোখ পড়তেই ও চোখ সরিয়ে নিলো।।
তারমানে এত ক্ষণ ধরে আবির আমার দিকেই চেয়ে
ছিলো।। ভীষন অবাক হলাম আমি।। আমার জেগে ওঠা
দেখে আবির অপ্রস্তুতে পড়ে যায়,, যেনো আমার
চোখে কিছুতেই ধরা দিতে চায় না।। তারপর বলে
ওঠলো ----
সবার আগে গল্প পড়তে আমাদের, #আমার_গল্প, পেজের সাথেই থাকুন,ধন্যবাদ
----ছাদে যাবে মিরা?? (আবির)
ওর প্রশ্নে অবাক হলাম আবারও।। এতরাতে ছাদে যেতে
চাইছে, বুজলাম খুব রোমান্টিকতা ভর করেছে তার
ওপর।। কথাটি শুনে আমি কোনো প্রতিক্রিয়া
জানায়নি, শুধু চেয়ে ছিলাম তারদিকে।।
হঠাৎ ই আমাকে চমকে দিয়ে কোলে তুলে নিলো সে।।
তারপর হাটা আরম্ভ করলো ছাদের দিকে।।। আমি শুধুই
তার চোখের দিকে তাকিয়ে, তাকে জানার চেষ্টা
করছিলাম----
আমি কেনো যেকোনো মেয়েই তোমার সেই
মায়াবি চোখে হারিয়ে যাবে এক নিমিষেই।। এখন
পর্যন্ত প্রতিটা মুহুর্ত, তোমার সাথে কাটাতে আমার
নতুন করে ভাবতে হয়েছে,, কি আছে তোমার মাঝে,,,,!!!
আমি যেনো যুগ যুগান্তর ধরে তার সাথে পরিচিত
আছি।। যদিও সে ছিলো অনেকটা অপরিচিত আমার
কাছে মাত্র কয়েক ঘন্টা আগেও।।
কথাগুলো ভাবতে ভাবতে ছাদে চলে এলাম।। ছাদে
এসে ও আমাকে কোল থেকে নামিয়ে দিলো।। এরপর
কিছু বলার জন্য আমার কাছাকাছি আসতে
চাচ্ছিলো,,,,,,,,
কিন্তু হঠাৎ ই ওর ফোনটা বেজে ওঠে,,,,। তারপর
ফোনের ওপাশ থেকে কেউ একজন তাকে কিছু একটা
বললো,,,,,
নিমিষেই তার হাসিখুশি চেহারার মাঝে এক অস্ফুট
মলিন আভা ফুটে ওঠলো।। যা কিছুতেই আমার কাছে
আড়াল করতে পারলো না সে ...............
(চলবে)
গল্প ভালো লাগবে একটি লাইক দিবেন প্লিজ

Address

Narsingdi

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Rubel posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share