03/06/2025
গ্রামের এক কোণে ছোট্ট কুঁড়েঘরে থাকে রহমান চাচা। বয়স পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই, পেশায় দিনমজুর। তিন ছেলে-মেয়েকে নিয়ে তার ছোট্ট পরিবার। ঈদ আসছে, চারদিকে সাজ সাজ রব। প্রতিদিন বাজারে গরু কিনতে যাচ্ছে লোকজন, কেউ বড় গরু, কেউ মাঝারি। শিশুদের চোখে আনন্দের ঝিলিক।
রহমান চাচার ঘরে ঈদের খুশি ঢুকতে পারেনি। সারাদিন কাজ করলেও দুই বেলার খাবারই জোটে কষ্টে। কুরবানীর মতো খরচ তো কল্পনার বাইরে।
ঈদের দিন সকালে রহমান চাচার ছোট মেয়ে লাবণী লাল ফ্রক পরে উঠানে দাঁড়িয়ে ছিল। পাশের বাড়ির আমজাদ সাহেবের গরু জবাই করা হচ্ছে। লাবণী বিস্ময় আর ঈর্ষাভরা চোখে তাকিয়ে থাকে – "বাবা, ঐ গরুর মাংস আমাদের ঘরে আসবে না?"
রহমান চাচা চুপচাপ চোখ মুছে বলেন, "আল্লাহ চায় তো, কেউ যদি দেয়..."
ঐ দৃশ্য পাশের বাড়ির ছাদ থেকে দেখছিল আমজাদ সাহেবের ছেলে রাফি। গরীবের সেই চাহনি তার মনে গেঁথে যায়। দুপুরবেলা সে বাবাকে বলে, "বাবা, আমরা এত মাংস দিয়ে কী করব? চলেন, একটু মাংস প্যাকেট করে রহমান চাচাদের বাড়িতে দেই।"
সেদিন ঈদের দুপুরে রহমান চাচার ঘরে এক থালা গরুর মাংস আসে, সাথে এক বাটি সেমাই আর শিশুর হাসি।
লাবণী লাফিয়ে উঠে বলে, "বাবা! আমাদের ঘরেও ঈদ এসেছে!"
রহমান চাচা চোখ ভিজিয়ে ফেলে বলেন, "আল্লাহ ভালো করুক ওদের।"
শিক্ষণীয় কথা:
ঈদ শুধু নিজের আনন্দের নাম নয়, ঈদের খুশি তখনই পূর্ণ হয়, যখন তা ভাগ করে নেওয়া যায় সমাজের সকল স্তরের মানুষের সাথে। আসুন, আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করি – যেন কোনো শিশুর চোখ ঈদের দিনে মাংসের দিকে ‘তাকিয়ে না’ থাকে, বরং ‘খেয়ে হাসে’।
ঈদ মোবারক।