01/08/2025
💥আদর্শ তালিবে ইলমের আদর্শ ছুটি।
( আবু তাহের মিসবাহ)
💟 আমাদের কথা 💟
আলহামদুলিল্লাহ । কাওমী মাদরাসার জন্য সংশােধিত নিছাব প্রণয়নের যে মহতি পদক্ষেপ মাদরাসাতুল - মাদীনাহ গ্রহণ করেছে তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ।
“ আদর্শ তালিবে ইলমের আদর্শ ছুটি ”
তৈরী হয়ে প্রকাশিত হলো । প্রতিবছর আমাদের তালিবে ইলম ভাইয়েরা বিভিন্ন পর্বে বেশ কিছুদিন বাড়ীতে ছুটি ভােগ করে থাকে । যতদিন তারা মাদরাসায় অবস্থান করে ততদিন মােটামুটি তা'লিম ও তারবিয়াতের নূরানী পরিবেশেই তাদের সময় কাটে এবং আসাতিযায়ে কিরামের সযত্ন তত্ত্বাবধানে তাদের জীবনের মূল্যবান সময়গুলাে কাজে লাগানাের চেষ্টা করা হয় ।
কিন্তু দুঃখের বিষয় যে , তাদের ছুটির দিনগুলাে এক রকম অপচয়ই হয়ে যায় । যদিও বা মৌখিক কিছু প্রয়ােজনীয় উপদেশ দিয়ে দেয়া হয় কিন্তু বাড়ীর ভিন্ন পরিবেশে এবং ছুটির আনন্দ কোলাহলের মাঝে স্বাভাবিক ভাবেই তা হারিয়ে যায় । আমরা মনে করি , এ অবস্থার পিছনে বড় কারণ হলাে মাদরাসার আসাতিযায়ে কিরামের সাথে অভিভাকদের ঘনিষ্ঠ যােগাযােগ এবং উভয় পক্ষের সমন্বিত প্রচেষ্টার অভাব । যদি আমরা অভিভাবকদের প্রত্যক্ষ সহযােগিতায় ছুটির দিনগুলােতে ছাত্রদেরকে জীবনগঠনমূলক কিছু সুনির্দিষ্ট কর্মসূচী দিয়ে দিতে পারি । তাহলে আল্লাহর রহমতের কাছে আশা করা যায় যে , এই ছুটির সময়টাই তখন তালিবে ইলমদের ইলম ও আমল এবং জীবন ও চিন্তা সব কিছুতে গুণগত পরিবর্তন আনয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে ইনশাআল্লাহ !
এ চিন্তা থেকেই “ আদর্শ তালিবে ইলমের আদর্শ ছুটি ” কর্মসূচীটি প্রণীত হয়েছে । প্রতিটি দ্বীনী মাদরাসাই আমাদের জন্য প্রাণতুল্য সম্পদ এবং প্রত্যেক তালিবে ইলমই আমাদের আখেরাতের সঞ্চয় । সুতরাং সকল মাদরাসার সকল তালিবে ইলমের কল্যাণে এ কর্মসূচী কাজে লাগুক এটাই আমাদের আন্তরিক কামনা ।
আশা করি আমাদের সম্মানিত আরবাবে মাদারিসে কাওমিয়া বিষয়টি গভীরভাবে বিবেচনা করে দেখবেন । আল্লাহই উত্তম তাওফিকদাতা ।
আরজগুয়ার:
💖আবু তাহের মিছবাহ💖
💗💗💗💗💗💗💗💗💗💗💗💗💗
সম্মানিত অভিভাবক !
একজন তালিবে ইলমের আদর্শ জীবন গড়ার ক্ষেত্রে শিক্ষক ও অভিভাবক উভয়েরই দায়িত্ব অপরিসীম ।
আপনার সন্তান যতদিন মাদরাসার পরিবেশে ছিলাে , আমরা তার তালীম ও তারবিয়াতের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করেছি।
এখন ছুটিতে সে বাড়ীর পরিবেশে আপনাদের কাছে ফিরে যাচ্ছে ।
এ সময়টাও যাতে সে আদর্শ তালিবে ইলমের মতাে তা'লিম ও তারবিয়াতের মধ্যে কাটাতে পারে সেজন্য কিছু সুনির্দিষ্ট কর্মসূচী তাকে দেয়া হলাে ।
আশা করি আপনি ও আপনারা সকলে ছুটির দিনগুলােতে আপনার সন্তানের জন্য পর্যাপ্ত সময় ব্যয় করবেন এবং প্রদত্ত কর্মসূচী সঠিকভাবে পালন করার ব্যাপারে প্রয়ােজনীয় সহযােগিতা দান করবেন।
এবং প্রতিটি কাজ প্রতিদিন পালিত হচ্ছে কিনা তা তদারক করবেন ।
আশা করি এভাবে একটা নির্দিষ্ট কর্মসূচীভিত্তিক সুশৃংখল ছুটি কাটানাের মাধ্যমে আপনার সন্তানের মূল্যবান সময়গুলাে তার উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ার কাজে সার্থক ভাবে কাজে লাগবে ।
ছুটির কর্মসূচীটির শেষ দিকে আপনার জন্য সংরক্ষিত ঘরগুলাে অনুগ্রহপূর্বক আপনার সুচিন্তিত মতামত দ্বারা পূর্ণ করুন ।
মেহেরবান আল্লাহ আমাদের এ সামান্য মিহনত কবুল করুন । তিনিই উত্তম তাওফিক দাতা ।
💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟
প্রিয় ছাত্র ! আল্লাহ তােমাকে তালিবুল ইলম হওয়ার সুযােগ দিয়েছেন । দ্বীনের ইলম হাছিল করার সৌভাগ্য দান করেছেন এবং দ্বীনের উপর যথাসম্ভব আমল করার তাওফিক দিয়েছেন । তােমার জীবন ধন্য । তুমি বড় ভাগ্যবান । তােমার সমবয়সী অন্য ছেলেদের দিকে তাকিয়ে দেখাে ; ওরাও লেখাপড়া করে হয়ত ।
কিন্তু ওরা কি কোরআন বুঝতে পারে ? আল্লাহর কালাম এবং তাঁর প্রিয় রাসূলের হাদীছ বুঝতে পারে ? ওরা কি আল্লাহর হুকুম আহকাম মেনে চলে ? তাহলে তুমি নিশ্চয় বুঝতে পারছাে যে , আল্লাহ কত বড় সৌভাগ্য তােমাকে দান করেছেন । আর কত বড় সৌভাগ্য থেকে ওরা বঞ্চিত হয়েছে । সুতরাং অন্তরের অন্তস্থল থেকে তুমি আল্লাহর শােকর আদায় করাে ।
বলো
حمدا لك يا رب وشكرا
আর আল্লাহর কাছে দু'আ করাে ।
মনপ্রাণ ঢেলে দু'আ করাে , আল্লাহ যেন , ওদেরকে তােমার মতাে বানিয়ে দেন । যে মহাসৌভাগ্য তুমি পেয়েছে ওরাও যেন তা লাভ করতে পারে । তােমার কোন বে - কদরির কারণে আল্লাহ তােমাকে যেন ওদের মতাে না করে দেন । ওদের মতাে তােমাকেও যেন ইলম থেকে , আমল থেকে মাহরূম না করেন । আমীন।
এতদিন তুমি মাদরাসার ঈমানী ও দ্বীনী পরিবেশে ছিলে । তালিবুল ইলম হিসাবে জীবন যাপন করা তােমার জন্য সহজ ছিলাে । দ্বীনের উপর এবং আমলের উপর চলা তােমার জন্য আসান ছিলাে । এখন তুমি ছুটিতে বাড়ী যাচ্ছো ।
কিছুদিনের জন্য মা বাবার কাছে ফিরে যাচ্ছে । বেশ কিছুদিন সমাজের পরিবেশে , সমাজের মানুষের মাঝে তুমি থাকবে । সে প্রতিকূল পরিবেশে দ্বীনের উপর চলা হয়ত কঠিন । কিন্তু আল্লাহর মদদ ও তাওফীক হলে কিছুই অসম্ভব নয় ।💟
আশা করি সমাজ - পরিবেশে যে ক'দিন তুমি থাকবে আদর্শ তালিবে ইলমের মতাে থাকবে ।
তােমাকে দেখে যেন তােমার মা বাবার মন জুড়ায় । চোখ শীতল হয় , আর তােমার সমবয়সীরা যেন ভাবতে বাধ্য হয় ; আহা , আমরা যদি ওর মতাে হতাম !
মনে রেখাে , তুমি হলে ভবিষ্যতের আলিম ।
হিদায়াতের বাতি জ্বেলে সমাজের অন্ধকার তুমি দূর করবে ।
আল্লাহর যমিনে তুমি আল্লাহর দ্বীন কায়েমের মিহনত ও জিহাদ করবে । ছুটির এ দিনগুলাে যেন হয় তােমার ভবিষ্যত জীবনের সেই মহান সংগ্রাম সাধনার পূর্বপ্রস্তুতি ।
ছুটির দিনগুলো কিভাবে কাটালে তােমার জীবনের এ মহান উদ্দেশ্য সফল হবে , সে বিষয়ে তােমাকে সাহায্য করার জন্য এ সংক্ষিপ্ত কর্মসূচী তােমার হাতে তুলে দেয়া হলাে ।
আশা করি ছুটির প্রত্যেকটা দিন এ কর্মসূচী অনুসরণ করেই তুমি কাটাবে । তাহলে ইনশাআল্লাহ তােমার জীবন হবে আদর্শ জীবন ।
আর বিশ্বাস করাে ভাই ! তােমার সর্বাঙ্গীন কল্যাণই আমাদের আন্তরিক কামনা। তােমার দুনিয়ার সংক্ষিপ্ত জীবন এবং আখিরাতের অনন্ত জীবন সুখ শান্তিময় হােক এই আমাদের লক্ষ্য । আল্লাহুম্মা আমীন ।
💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟
মৃত্যু চিন্তা:
মৃত্যু চিন্তা হলো শয়তানের বিরুদ্ধে মুমিনের প্রধান হাতিয়ার । প্রতিদিন যে মৃত্যুর কথা ভাবে , কবরের জিন্দেগীর কথা চিন্তা করে , তার দ্বারা কোন গােনাহ হতে পারে না । কেননা তার অন্তরে সর্বদা আল্লাহর ভয় জাগ্রত থাকে । সুতরাং নেক আমল করা তার জন্য সহজ হয় । তাই নবী আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি বলেছেন
أكثروا ذكر هاذم اللذات الموت
এ হাদীছের উপর আমল করে তুমি কি আজ মৃত্যুর কথা চিন্তা করেছে ? চিন্তা করাে, দিনের বিভিন্ন সময় এবং রাত্রে শয়নকালে মৃত্যুর কথা চিন্তা করে মৃত্যুর যে বিবরণ এবং কবর , হাশর ও জান্নাত জাহান্নামের যে বয়ান হাদীছ শরীফে এসেছে তা স্মরণ করাে । মৃত্যুর ফিরিশতা একদিন তােমার সামনে হাজির হবেন । মওতের বড় কঠিন যন্ত্রনা হবে । অন্ধকার কবরে সবাই তােমাকে ফেলে আসবে । ফিরিশতা আসবেন । ছুওয়াল জওয়াব হবে । তারপর কবর হয় জান্নাতের বাগিচা হবে নয়ত জাহান্নামের গর্ত হবে । এভাবে একে একে সব কথা চিন্তা করাে এবং নীচের ঘরে / চিহ্ন দাও ।
🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕
কোরআন তেলাওয়াত:
কোরআন তিলাওয়াত দ্বারা কলবের মরচে দূর হয় । কলৰ পবিত্র হয় । আল্লাহর মুহব্বত বাড়ে ।
হাদীছ শরীফে কোরআন তিলাওয়াতের বহু ফযীলত বর্ণিত আছে ; সেগুলাে স্মরণ করাে এবং প্রতিদিন উল্লেখযােগ্য পরিমাণ তিলাওয়াত করাে।
আল্লাহর কালাম আল্লাহকে শােনাচ্ছাে । আল্লাহ খুশী হয়ে তােমার তিলাওয়াত শুনছেন । একথা চিন্তা করে ভক্তি মুহব্বতের সাথে তিলাওয়াত করাে এবং নির্দিষ্ট ঘরে চিহ্ন দাও ।
🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕
নামায় :
নামায় আল্লাহর কত বড় হুকুম তা তুমি জানো।
ইহতিমামের সাথে নামায আদায় করলে কি বিরাট পুরস্কার এবং নামাযে অবহেলা করলে কি কঠিন শাস্তি তাও তুমি জানো।
জামাতের সাথে নামায পড়ার ফযীলতও তােমার জানা আছে ।
মাদরাসায় থাকা অবস্থায় আলহামদুলিল্লাহ এগুলাের উপর মােটামুটি আমলও তুমি করেছে ।
আশা করি ছুটির দিনগুলােতেও নামাযের আমলে তােমার কোন ত্রুটি হবে না । এমনভাবে নামায পড়ো যেন আল্লাহকে তুমি দেখতে পাচ্ছে , যদি তুমি তাকে দেখতে না পাও তাহলে তিনি তাে তােমাকে দেখছেন । এমনভাবে নামায় পড়া যেন আজকের এ নামাযই তােমার জীবনের শেষ নামায । প্রতিদিন তােমার খাতায় নামাযের একটি হাদীছ লেখো এবং তােমার প্রতিদিনের নামাযের অবস্থা হিসাবে নীচের ঘরগুলাে পূর্ণ করাে ।
সময় মতাে নামায় কত ওয়াক্ত
🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕
জামাতের সাথে কত ওয়াক্ত
🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕
মিসওয়াকসহ অযু কত ওয়াক্ত
🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕
💟 মা বাবার খিদমত:💟
আমাদের প্রত্যেকের জীবনে আম্মা আব্বার ত্যাগ ও কোরবানী এবং দান ও অবদান অপরিসীম ।
জন্মের পর থেকে আজ এতাে বড় তুমি কিভাবে হয়েছে ভেবে দেখাে । কার দুধ খেয়ে জীবন ধারণ করেছাে ? কে তােমার পেসাব পায়খানা পরিষ্কার করেছেন ? কার উপার্জনের ওছিলায় তােমার ক্ষুধার আহার ও লজ্জার বস্ত্র জোগার হচ্ছে আর তুমি নিশ্চিন্ত মনে ইলম হাছিল করতে পারছাে ?
এ জন্যই কোরআন শরীফে আল্লাহ বারবার আম্মা আব্বার সাথে সদ্ব্যবহার করার আদেশ দিয়েছেন এবং তাদের সামনে ' উফ ' পর্যন্ত বলতে নিষেধ করেছেন ।
হাদীছ শরীফে এসেছে
-الجنة تحت أقدام الأمهات
আম্মা আব্বার খিদমত ছাড়া মানুষের জীবন সুখের হতে পারে না । আম্মা আব্বাকে যারা কষ্ট দেয় দুনিয়া আখিরাতে তাদের দুঃখ কষ্ট অনিবার্য । এমন কি মৃত্যুর সময় কালিমা নছীব না হওয়ার ভয় আছে ।
তাছাড়া ইলম হাছিল হওয়ার জন্যও আম্মা আব্বার নেক দু'আ অপরিহার্য । যে ভাবেই পার প্রতিদিন আম্মা আব্বার কিছু কিছু খিদমত করাে । তাদের দিকে মুহব্বতের দৃষ্টিতে তাকাও ( একটা মকবুল হজ্জের ছাওয়াব হবে । )
তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আচরণ দ্বারা , উচ্চারণ দ্বারা তাদেরকে খুশী করাে এবং তাদের নেক দু'আ লভ করার চেষ্টা করে ।
প্রতিদিন এটা করাে এবং নীচের নির্দিষ্ট ঘরে
🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕
চিহ্ন দাও ।
এবং যখন নীচে -
رب ارحمها كما ربياني صغيرا
আম্মা আব্বার জন্য এ দু'আ করার হুকুম দিয়েছেন আল্লাহ । আজ তুমি এ দু'আ করেছে কিনা ?
🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕
আত্মীয়তা রক্ষা ( ছিলাতুর রিহমি ):
আত্মীয়তা রক্ষার ফজিলত আত্মীয়তা কর্তনের কি শাস্তি তা তুমি পড়েছে , শুনেছে । সেই হাদীছগুলাে স্মরণ করাে । একটি হাদীছ এখানে লেখাে
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
আত্মীয়তা কর্তনকারীর দু'আ কবুল না হওয়া সম্পর্কিত হাদীছটি স্মরণ করাে । ছুটির দিনগুলােতে আশেপাশের নিকটাত্মীয়দের সাথে দেখা করতে যাও । শুধু বেড়াতে যাওয়া নয় , আল্লাহর হুকুম হিসাবে আত্মীয়তা রক্ষা করার নিয়তে যাও ।
কথায় ও ব্যবহারে তাদের প্রতি মুহব্বত প্রকাশ করে । মুরব্বী আত্মীয়দের তাযীম করাে এবং ছােট আত্মীয়দের আদর করে ।
এতে সবাই তােমার প্রতি খুশী হবে এবং তােমার জন্য দু'আ করবে আর আল্লাহ খুশী হবেন এবং কিয়ামতের দিন যখন কোন ছায়া থাকবে না তখন তিনি তােমাকে আরশের নীচে ছায়া দেবেন । নীচের ঘরে লেখাে ,এ বন্ধে কোন কোন আত্মীয়ের সাথে দেখা করেছে ।
আত্মীয়তা রক্ষার আমল করে তুমিও মনে আনন্দ পেয়েছে কিনা ?বলাে ।
💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟
দা'ওয়াত:
দাওয়াতের আমল , অর্থাৎ আল্লাহর বান্দাদেরকে আল্লাহর পথে ডাকা , ভালাে কাজের আদেশ করা এবং মন্দকাজ হতে নিষেধ করা- এটা মুমিনের জিন্দেগীর আসল কাজ ।
রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ,
لأن يهدى اللهبك رجال خير لك من حمر النعم
দাওয়াতের ফায়দা দুটি :
তােমার ঈমান ও আমল মজবুত হওয়া এবং আল্লাহর বান্দাদের হিদায়াত লাভের মাধ্যমে সমাজ ভালো হওয়া।
ইনশাআল্লাহ ! অদূর ভবিষ্যতে তুমি হবে উম্মতের দাঈ ইলাল্লাহ ।
অন্যায় , অনাচার ও পাপাচারের বিরুদ্ধে এবং ন্যায়, কলাণ ও সত্যের পক্ষে তুমি জিহাদ করবে ।
আর এ কথাতাে তুমি জানাে যে , মানুষের মন জয় করা যায় শক্তি দিয়ে নয় ,আদর্শ ও চরিত্র দিয়ে ।
আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিভাবে দাওয়াত দিতেন এবং তার আছর কেমন হতাে স্মরণ কর ।
অদূর ভবিষ্যতের সেই মহান সংগ্রামের প্রস্তুতি হিসাবে এ ছুটিতে তুমিও দা'ওয়াতের কিছু কিছু আমল করাে । নামাযের সময় বড়দেরকে আদবের সাথে এবং ছােটদেরকে স্নেহের সাথে মসজিদে ডাকো ।
পাড়ার সমবয়সীদেরকে নামাযের জন্য তারগীব করাে ।
তাদেরকে মৃত্যুর কথা বলাে । আখিরাতের কথা , জান্নাত জাহান্নামের কথা বলাে । প্রতিদিন অন্তত একজনকে নিজের কালিমা শুনাও এবং তার কালিমা শােনাে । ভুল হলে ইকরামের সাথে শুদ্ধ করে দাও ।
এলাকায় তাবলীগী জামাত আসলে তাদেরকে নােসরত করাে । গাশতের আমলে শরীক হও । তা'লীমের মজলিসে বসাে ।
এভাবে অতি সহজে বর্তমান যুগের সবচে ' মুবরাক দ্বীনী মিহনতের সাথে নিজেকে জুড়ে রাখার সৌভাগ্য লাভ হবে তােমার ।
মােটকথা প্রতিদিন কিছু কিছু দাওয়াতের আমল করাে এবং নীচের নির্দিষ্ট ঘরে
🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕
চিহ্ন দাও চিহ্ন দাও।
ইনফাক ফী ছাবীলিল্লাহ :
আল্লাহর রাস্তায় দান ও দানশীলতা অতি বড় এক গুণ । রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন শ্রেষ্ঠ দানশীল । তাঁর দানশীলতার অনন্য ঘটনাবলী নিশ্চয় তুমি জানাে । ছাহাবা কিরাম , তাবিঈন , তাবয়ে তাবিঈন ও হক্কানী ওলামায়ে কিরাম এই উসওয়ায়ে রাসূলের উপর কেমন আমল করেছেন তাও তােমার অজানা নয় ।
একজন তালিবে ইলমকে আবশ্যই দানশীল হতে হবে এবং যুগ যুগের হক্কানী ওলামায়ে কিরামের ন্যায় ইনফাক ফী ছাবীলিল্লাহর মহৎগুণ অর্জন করতে হবে । আল্লাহর রাস্তায় যে দান করে , অভাবী মানুষকে যে সাহায্য করে তার ইলমে বরকত হয়। কলবে ইলমের নূর পয়দা হয়।
সমাজে ‘ আলিম ওলামার ইজ্জত ও
মর্যাদা বাড়ে । ফলে দ্বীনের কাজ করা সহজ হয় । তাছাড়া দানশীলতা দ্বারা রিযিকে প্রশস্ততা আসে । বরকত হয় । অবশ্য দানের পরিমাণ বেশী হওয়া জরুরী নয় । কর্তব্য হলাে সাধ্য মােতাবেক দান করা এবং সুনাম সুখ্যাতি লাভের পরিবর্তে শুধু আল্লাহকে রাজী খুশী করার নিয়ত করা । ভিক্ষুককে এক মুঠ চাল দাও । দশটা পয়সা দাও । গরীব প্রতিবেশীর ঘরে ছােটখাটো হাদিয়া পাঠাও । ক্ষুধার্তকে তােমার অর্ধেক খাবার দান করাে । এভাবে দানশীলতার মশক করাে ।
দান ছদকা দ্বারা জাহান্নামের আগুন নিভে যায় এ হাদীছটি স্মরণ করাে
ادفعوا النار ولو بشق تمر
প্রতিদিন দানশীলতার কিছু কিছু ‘ আমল করাে এবং নীচের নির্দিষ্ট ঘরে চিহ্ন দাও ।
🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕🌕
খিদমতে খালক:
খিদমতে খালক বা আল্লাহর বান্দা হিসাবে মানুষের সেবা করা ইসলামের অতি বড় এক শিক্ষা । মানুষের সেবার মাধ্যমেই আমাদের পূর্বপুরুষগণ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইসলাম প্রচার করেছেন । কিন্তু দুঃখের বিষয় যে , আমরা খিদমতে খালকের আদর্শ একেবারেই ভুলে গেছি । ফলে সমাজের মানুষের সাথে আমাদের সম্পর্ক একেবারেই শিথিল হয়ে গেছে । অন্যদিকে সুচতুর খৃষ্টান মিশনারীরা মানুষের সেবার নামে বিভিন্ন উপায়ে প্রতারণা করে মুসলমানদের ঈমান বরবাদ করছে । শুধু ফতােয়া জারি করার দ্বারা কিন্তু ইসলামের বিরুদ্ধে ইহুদি নাছারা ও কাফির মুশরিকদের এসব ষড়যন্ত্র বন্ধ করা যাবে না । বরং ইসলামের শিক্ষা হিসাবে আমাদেরকে খিদমতে খালকের আদর্শ গ্রহণ করতে হবে । আশা করি অদূর ভবিষ্যতে তােমরাই আদর্শ মানবসেবক ও সমাজসেবকরূপে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।
এবং মানুষের সেবার মাধ্যমে মানুষকে দ্বীনের পথে আনবে এবং মানব সেবার নামে ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী মিশনারীদের দাত ভাংগা দিতে পারবে । ছুটির দিনগুলােতে খিদমতে খালকের কিছু কিছু আমল করতে পারাে । যেমন মানুষের বােঝা বহন করে দেয়া , পানি এনে দেয়া , রােগীর খোঁজ খবর নেয়া মানুষের উপকারের নিয়তে গাছ রােপন করা ইত্যাদি । এমনকি পথের কষ্টদায়ক জিনিস সরানাে মানুষের সেবা । তবে তােমার সব কাজই হতে হবে আল্লাহকে খুশী করার জন্য । মানুষকে দেখানাের জন্য নয় । এ বন্ধে কি কি ধরণের খিদমতে খালক করেছো উল্লেখ করাে ।
💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟
প্রিয় ছাত্র!
তোমার ছুটির দিনগুলাে প্রায় শেষ হয়ে এসেছে । এবার মাদরাসায় ফেরার পালা । আশা করি একজন আদর্শ তালিবে ইলম হিসাবে তুমি আদর্শ ছুটি কাটিয়েছো এবং আমাদের পরামর্শগুলো যথাসাধ্য পালনের চেষ্টা করেছো । মাদরাসায় আসার আগে নির্জনে একবার মসজিদে যাও এবং নির্জনে আল্লাহর দরবারে মােনাজাত করাে । বলল , হে আল্লাহ ! এ বন্ধে আমার দ্বারা যত নেক কাজ হয়েছে সব তােমারই মেহেরবানীতে হয়েছে । আমার কোন যােগ্যতা ছিলাে না । তুমিই অনুগ্রহ করে তাওফীক দান করেছে । এজন্য অন্তরের অন্তস্তল হতে আমি তােমার শােকর আদায় করি । আর যত ত্রুটি বিচ্যুতি আমার দ্বারা হয়েছে সে জন সর্বাংশে আমিই দায়ী। তুমি তুমি মেহেরবানী করে আমাকে মাফ করে দাও মেহেরবানী করে আমাকে মাফ করে দাও ।
হে আল্লাহ ! তাওফিক দাও যেন গােটা জীবন তােমার এবং তােমার হাবীব ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পছন্দ অনুযায়ী গড়ে তুলতে পারি । মাদরাসায় গিয়ে যেন ইলমের হক আদায় করে ইলম হাছিল করতে পারি । আমীন ।
এবার ছুটির দিনগুলাে সম্পর্কে তােমার অনুভূতি লেখাে :
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
এবার বইটা তােমার অভিভাবকের হাতে দাও ।
💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟
সম্মানিত অভিভাবক !
আশা করি মানুষ তার মূল্যবান সম্পদ যেভাবে হিফাযত করে আপনার সন্তানকে আপনি সেভাবে সার্বক্ষণিক হিফাযত ও পর্যবেক্ষণে রেখেছেন । এবং আদর্শ ছুটির কর্মসূচীগুলাে পূর্ণাঙ্গরূপে পালনের জন্য তার পিছনে পর্যাপ্ত সময় ব্যয় করেছেন এবং এ বিষয়ে তাকে সর্বোৎভাবে উৎসাহ যুগিয়েছেন ।
এবার আপনার সন্তানের ছুটির দিনগুলাে সম্পর্কে আপনার মতামত ও মন্তব্য আমরা জানতে চাই ।
আপনার সন্তানের তারবিয়াত ও সংশােধনের জন্য এর গুরুত্ব অপরিসীম । আগামীতে তার কল্যাণের লক্ষ্যে প্রয়ােজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে এটা আমাদের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক হবে ইনশাআল্লাহ ।
১। আপনি কি ছুটির কর্মসূচী পালনের বিষয়টি প্রতিদিন তদারক করেছেন ?
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
২। আপনার সন্তানকে প্রতিদিন কতটা সময় দিয়েছেন ?
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
৩। এব্যাপারে তাকে কি কি ধরণের সহযােগিতা করেছেন ?
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
৪। নামাযের ও জামাতের প্রতি সে কতটা যত্নবান ছিলাে ?
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
৫। আম্মা আব্বার সাথে তার আচরণ কেমন ছিলাে ?
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
৬। ছিলাতুর রিহম ( আত্মীয়তা রক্ষা ) এর জন্য সে কি কি করেছে ?
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
৭। প্রতিদিন দাওয়াতি আমল কেমন করেছে ?
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
৮। ছুটির দিনগুলােতে সে কাদের সাথে উঠাবসা করেছে ।
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
৯। খিদমতে খালকের প্রতি তাকে কিভাবে উৎসাহিত করেছেন এবং সে কি করেছে ?
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
১০। আপনার সন্তানের আগের ও বর্তমান অবস্থা তুলনামূলক বিচার করে মন্তব্য লিখুন । বইটি খামে ভরে মুখ বন্ধ করে আমাদের কাছে দেওয়ার জন্য আপনার সন্তানের হাওয়ালা করুন ।
💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟💟
সিপি