19/08/2024
#নীলমেঘ
#পর্ব_৯
[কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ ]
শরতের আকাশে শারদীয়ার আগমনী বার্তা জানিয়ে দিচ্ছে। শঙ্ক ধ্বনির আওয়াজ বাতাসের সাথে বারি খেয়ে যাচ্ছে। বাতাসে শিউলি ফুলের সুবাস ছড়িয়ে পড়েছে। বাতাসের তালে তালে মাঠের ধানগাছ গুলো দুলে দুলে নাচতে আরম্ভ করেছে। নীলা আকাশে ভাসমান সাদা মেঘগুলো পেঁজা তুলোর মতো উড়ে যাচ্ছে।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বারো মাসে তেরো পার্বণ।
উৎসব যেন তাদের লেগেই থাকে। শরৎকালে তাদের সবচেয়ে বড় উৎসবটি পালন করা হয়। যাকে বলা হয় দুর্গাপুজা। হিন্দুধর্ম অনুসারীরা এসময় নানা কাজে ব্যস্ত থাকে। হিন্দু রমনীরা বিভিন্ন খাবার তৈরি করে থাকেন। যেমন: নারকেলের নাড়ু , তিলের নাড়ু, চিড়ের নাড়ু, মুড়ির মোয়া, খইয়ের মোয়া ইত্যাদি খাবার তৈরি করে থাকেন।
টানা দশদিন সময় ধরে এ পূজা চলতে থাকে।
বকুলতলা গ্রামে হিন্দুপাড়ায় পূজা শুরু হয়ে গেছে। আর তিনদিন পর দশমী। হিন্দুপাড়ার নরেন বকুলতলা হাইস্কুলের পিওন। সেই সুবাদে হাইস্কুলের সকল স্যার ম্যাডামদের জন্য নাড়ু ও মোয়া নিয়ে এসেছে সে। এদিকে শিক্ষকেরা সবাই মিলে চাঁদা দিয়ে নরেনের পরিবারের সবার জন্য জামা কাপড় ও বাজার করে দিয়েছেন। যাতে নরেনের পূজো ভালোভাবে কাটে। নরেন জিনিসপত্র পেয়ে অনেক খুশি হয় এবং সবাইকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। সবাইকে পূজায় আসার জন্য নিমন্ত্রণ করে।
তরীদের কাল থেকে ইয়ার চেঞ্জ পরীক্ষা শুরু হবে। এজন্য পড়ালেখা নিয়ে অনেক ব্যস্ত তরী। মিলিও ব্যস্ত পড়ালেখা নিয়ে। এজন্য দুই বান্ধবীর দেখা হয়না বেশি একটা। তরী পড়া শেষ করে রেহেনা বেগমের কাছে গেলো।
মা আমি একটু মিলিদের বাড়ি যাব।
রেহেনা বেগম বলে, তোর পড়া শেষ করছিস।
হ্যাঁ মা পড়া প্রায় শেষের দিকে। যেটুকু বাকি আছে
সেটা রাতে কমপ্লিট করব।
ঠিক আছে যা তাহলে।
তরী বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় রেহেনা বেগম তরীকে ডাক দেয়।
হাতের মধ্যে একটা বক্স দিয়ে বলে,এটা তোর বড়আম্মার হাতে দিবি। বলবি পুকুর থেকে মাছ তুলেছিল তোর বাবা। সেই মাছ আমি বেশি করে কষিয়েছি ওদের জন্য।
ঠিক আছে মা বলেই তরী সরকার বাড়ির দিকে চলে যায়।
তরী রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় মোড়ের আমগাছের নিচে নাফেরের সাথে দেখা হয়।
তরী নাফেরকে সালাম দেয়। নাফের সালামের জবাব দিয়ে তরীকে জিজ্ঞেস করে কোথায় যাচ্ছো ?
তরী বলে, মিলির সাথে দেখা করার জন্য যাচ্ছি।
নাফের বলে, হাতে ওটা কিসের বক্স?
তরী বলে, এই বক্সে মা মাছ পাঠিয়েছে আপনাদের জন্য; সেইটা দিতে যাচ্ছি।
নাফের তরীকে বলে চলো যাই। আমিও বাড়িতে যাব। তরী আচ্ছা বলে হাঁটতে থাকে।
নাফের বলে, পরিক্ষার প্রস্তুতি কেমন তোমার?
তরী বলে, জ্বী ভালো।
আর কোনো কথা হয়না দুজনের মধ্যে।
ময়না বিবি মিলি ও শরিফের সাথে উঠোনের সামনে আম গাছের নিচে টুলের উপর বসে গল্প করছে। সামনে তাকিয়ে দেখে তরী ও নাফের একসাথে আসছে। ময়না বিবি হঠাৎ করে বলে উঠে, তরীকে আমাদের নাফের দাদুভাইয়ের বউ করলে কেমন হয় বলতো তোরা?
ওদের দুজন রে কি সুন্দর লাগছে?
দাদীর কথা শুনে মিলি হুড়রে,,, বলে চিৎকার দিয়ে উঠে।
মিলির চিৎকারে ময়না বিবি বিরক্ত হয়।
এত বড় দামড়ি মাইয়া হইয়া লাফাইতেছোস ক্যান?
দাদী গো তুমি যে কথা কইলা সেইটা শুনে তো আমার নাচতে মন চাইতেছে। ওদের দুইজনকে অনেক মানাবে দাদী।
আপনি কি বলেন শরিফ ভাই?
শরিফ বলে, মিলি কিন্তু ঠিকই বলেছে নানী। তরীর সাথে নাফের ভাইয়ের অনেক মানাবে। তুমি তাড়াতাড়ি ভাইয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করো । তরী ও নাফের কাছাকাছি আসলে ওরা চুপ হয়ে যায়।
তরী বলে, কি নিয়ে আলোচনা করছিলে দাদী? আমাদের দেখে বন্ধ করলে যে।
ময়না বিবি বলে, এইডা গোপন কথা তরী রাণী। কওন যাইবোনা এখন। পরে কমু তোরে আর দাদুভাইরে।
মিলি তরীকে বলে, এই বক্সে করে কি এনেছিস সই?
তরী বলে, মা তোদের সবার জন্য কষানি মাছ পাঠিয়েছে এই বক্সের মধ্যে। দাঁড়া বড়আম্মা কে এইটা দিয়ে আসি।
মিলি বলে, দাদী আমরাও যাই চলো। এখানে আর বসে না থেকে ঘরে চলো।
ময়না বিবি বলে, ঠিক আছে চল যাই।
সবাই লাইক কমেন্ট শেয়ার করে পাশে থাকবেন। বেশি বেশি রিয়াক্ট দিবেন 😁 আপনাদের মন্তব্য প্রকাশ করবেন। রাতে আরেকটা বোনাস পার্ট দিব। ইনশাআল্লাহ
#চলবে
#কাব্যকথাচাঁপাই
#কাব্যকথাচাঁপাই
#কাব্যকথাচাঁপাই
#কাব্যকথাচাঁপাই
#কাব্যকথাচাঁপাই