01/07/2024
শহীদ আরমান দিবস
ভূলে গেলাম কিশোরগঞ্জের সেই শহীদ কিশোর আরমানকে!
নাম তার আরমান, বয়স মাত্র ১৪ বছর।
সে আজীমুদ্দিন হাইস্কুলের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র।
আরমানের বাসা কিশোরগঞ্জ শহীদী মসজিদের পাশেই।
ছোটবেলা থেকেই সে শহিদী মসজিদে নিয়মিত নামাজ পড়তো।
স্কুলে নামাজের জায়গা ছিল না তাই কয়েকজন সহপাঠীকে নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নামাজের জন্য নির্ধারিত স্থানের ব্যবস্থা করিয়ে নেয়।
আরমান স্কুলে পড়লেও তার বন্ধুদের অধিকাংশ ছিল জামিয়া ইমদাদিয়ার ছাত্র।
তখন ১৯৯৪ সাল,বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন পবিত্র কোরআন ও ইসলাম সহ হযরত মুহাম্মদ সাঃ কে সে বিভিন্নভাবে কটুক্তি করছিল।ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের প্রতিবাদে সারা বাংলাদেশের আলেম উলামারা প্রতিবাদে জ্বলে উঠে, এর ব্যতিক্রম কিশোরগঞ্জও ছিল না।
তাসলিমার বিচার দাবিতে ৩০ জুন সারা দেশের মত কিশোরগঞ্জেও হরতাল ছিল।
৩০ জুন সকালে আরমান ফজরের আজান শুনেই সবাইকে ডেকে তুলে।
তার ডাক শোনে তার বাবা,মা ঘুম থেকে ওঠে নামাজ পড়ে।
নামাজ পড়ে আরমান বাসায় এসে মাকে বলল, আম্মু, মিছিল যাবো, কিছু খেতে দাও।
মা ভয় পেয়ে বললেন, বাবা মিছিলে যাসনে। মিছিলে মারামারি হতে পারে। তুই ছোট! তোর যাওয়া লাগবে না।’
‘আরমান বলে, মা আমি যাবোই। গতকাল সালাহউদ্দিন (জামিয়া ইমদাদিয়ার মুহাদ্দিস) হুজুরের কাছে জেনেছি, কুরআনের সম্মান রক্ষার জন্য মিছিলে গিয়ে কেউ মারা গেলে সে জান্নাতে যাবে।
সে মিছিলে চলে যায়, এবং সে মিছিলেই তার জীবনের শেষ মিছিল।
সকালে সুস্থ মানুষ মিছিলে গেল, দুপুরে ফিরে আসে লাশ হয়ে।
পরদিন সারা কিশোরগঞ্জে তার লাশ নিয়ে মিছিল হয়।
তার জানাজা নামাজে দেশ বিখ্যাত আলেমরা শরিক হয়েছিল। যেমনঃ
১. আল্লামা ফজলুল হক আমিনী রহঃ।
২. আল্লামা মহিউদ্দিন খান রহঃ।
৩. মাওলানা আতাউর রহমান খান রহঃ।
শহীদ আরমানের জানাজা নামাজে ইমামতি করেন আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ।
শহীদ আরমানের লাশ রক্ত মাখা শরিরেই দাফন করা হয়েছিল, লাশ গোসল করা হয়নি।
আজ তার ২৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকি।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরমানকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন আমীন!