Talha Babu

Talha Babu I Am Sadikul Haque Talha Sobai Valobase Talha Babu Dake.

27/08/2024

অত্যাচারী শাসকের সামনে
সত্য কথা বলা-
সবচেয়ে বড় জিহাদ।

– তিরমিযী

27/08/2024

কপালে সুখ লেখা না থাকলে
সে কপাল পাথরে ঠুকেও লাভ নেই।
এতে কপাল যথেষ্টই ফোলে,
but ভাগ্য একটুও ফোলে না !

- কাজী নজরুল ইসলাম

স্ত্রী: স্বামীর সাথে ঝগড়া করে বাবার বাড়ি আসার আগেই স্বামীকে বললাম,❝কোন কিছুর জন্যে যদি নির্লজ্জের মতো আমাকে ফোন করো তাহ...
11/06/2024

স্ত্রী: স্বামীর সাথে ঝগড়া করে বাবার বাড়ি আসার আগেই স্বামীকে বললাম,
❝কোন কিছুর জন্যে যদি নির্লজ্জের মতো আমাকে ফোন করো তাহলে তোমাকে আমি গুন্ডা দিয়ে পেটাবো।❞
স্বামী: হিহ! শখ কতো। তোমাকে ফোন করবো আমি? তোমার কোন প্রয়োজনই নেই আমার।❞
বাবার বাড়ি আসার ২০ মিনিটের মধ্যেই স্বামীর ফোন! ফোন রিসিভ করতেই সে বলে,
স্বামী: এই শুনো আমার জুতাগুলো কই রাখো তুমি? অফিসের সময় হয়ে যাচ্ছে কিন্তু এখনো জুতা খুঁজে পাচ্ছি না।❞
স্ত্রী: আলনার নিচে বক্স করে রাখা আছে দেখো এবং তাড়াতাড়ি অফিসের জন্যে বের হও।
ঘন্টাখানেক পর আবার স্বামীর ফোন,
❝এই শুনো, অফিসের এসাইনমেন্টের ফাইল কোনটা?
লাল নাকি নীলটা?❞
স্ত্রী: বাসা থেকে সব ঠিক করে যাওনি কেন?
লালটাই তোমার অফিস এসাইনমেন্টের ফাইল।
রাতে আবার স্বামীর ফোন,
❝এই শুনো, আমি ভাত রান্না করতে এসে না ভাত পুড়ে ফেলছি! ডিমভাজি করতে গিয়ে হাতে গরম তেলের ছিটকে পড়েছে। শর্টকাটে কি রান্না করে খাওয়া যায় একটু টিপস দাওনা।❞
স্ত্রী: উফ! তোমাকে রান্নাঘরে যেতে বলেছে কে?
নিজের হাতটাই জ্বালিয়েছো আর পুরো রান্নাঘরটাই তুমি উলটপালট করে ফেলেছো তা আমি বুঝে গেছি। আজকের জন্যে বাইরে থেকে খাবার অর্ডার করে খাও।
রাত ১২টার দিকে ঘুমের মধ্যে ফোনের আওয়াজে বিরক্ত হয়ে জাগলাম! খুবই রেগে গিয়ে স্বামীর ফোনটা রিসিভ করলাম,
স্বামী: এই শুনো, আমার কম্বলটা কোথায় রাখছো?
খুবই ঠান্ডা লাগছে আজ।
স্ত্রী: আলমারির দ্বিতীয় ড্রয়েরটাতে দেখো পেয়ে যাবে! আমাকে তো তোমার নাকি কোন প্রয়োজন নাই তবুও কেন এতো ফোন দাও?
এই মধ্যরাতেও ফোন দিয়ে আমার ঘুমটা ভাঙলে। স্বীকার করো আমাকে ছাড়া তুমি চলতেই পারো না।
স্বামী: হুহ! নিজেকে কি মনে করো?
তোমাকে ছাড়া আমি দিব্যি চলতে পারি। তোমাকে আমার প্রয়োজন নেই।
এই বলে তাওসিফ ফোনটা কেটে দেয়!
কিছুক্ষণ পরেই আবার স্বামীর ফোন,
❝এই শুনো, মশা মারার স্প্রেটা কই বলো তো?
মশার কামড়ে পুরো শরীর জ্বলে যাচ্ছে।❞
প্রয়োজন
🤣🤣
#অভিমানি_জীবনের_গল্প

দেশের স্বনামধন্য দ্রত অগ্রসরমান নতুন ধারায় একটি অন্যতম কৃষি ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। “এগ্রোটেক ক্রপ সাইন্স” ব্যতিক্রমধর্মী পণ...
28/02/2024

দেশের স্বনামধন্য দ্রত অগ্রসরমান নতুন ধারায় একটি অন্যতম কৃষি ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। “এগ্রোটেক ক্রপ সাইন্স” ব্যতিক্রমধর্মী পণ্য ও মার্কেটিং পলিসি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। উক্ত প্রতিষ্ঠানে মাঠ পর্যায়ে কিছু সংখ্যক উদ্যমী মেধাবী পরিশ্রমী অভিজ্ঞ মার্কেটিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হবে।

আমার বিয়ের পাঁচ বছর হতে চলল। কোনো বাচ্চা কাচ্চা এলো না। খুব শখ করেই বাবা দুই বোনকে একই পরিবারে দুই ভাইয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে...
25/02/2024

আমার বিয়ের পাঁচ বছর হতে চলল। কোনো বাচ্চা কাচ্চা এলো না। খুব শখ করেই বাবা দুই বোনকে একই পরিবারে দুই ভাইয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে ছিলেন।
আমার বিয়ের তিন বছর পর আমার দেবরের সঙ্গে ছোট বোনের বিয়ে হয়। শাশুড়িমা আমাকে প্রথম প্রথম ভালোবাসলেও বাচ্চাকাচ্চা না হ‌ওয়ায় এখন উনি সব সময় আমার উপরে রেগে থাকেন, সব জিনিসে ভুল ধরেন।
বাধ্য হয়েই স্বামীকে নিয়ে হাসপাতালে গেলাম টেস্ট করাতে। রিপোর্টে এলো আমি বন্ধ্যা। আমার কখনো বাচ্চা হবেনা। আমার স্বামীও এখন আর আমায় তেমন গুরুত্ব দেয় না।
রিপোর্টের কথা জানার পর আমার শাশুড়িমা আমায় বললেন , আমার বড় ছেলেকে আবার বিয়ে দেবো, সংসারের তো একটা আলোর প্রয়োজন আছে। তুমি থাকতে পারো এই বাড়িতে সমস্যা নাই।
আমি জানি আমার স্বামীও তাই চায়, তাই মেনে নিলাম। কারণ আমার আদরের ছোট বোন যে দেবরের বউ। আমি কিছু বললে যদি তার সংসার ভেঙ্গে যায়।
বিয়েটা হয়ে গেল। এখন আমার স্বামী ওর নতুন বউকে নিয়ে ব্যস্ত। আমি একটা ছোটো জব করতে লাগলাম নিজের জন্য।
দু'বছরের মাথায়, আমার বোনকেও শাশুড়িমা যা তা বলে কথায় কথায় অপমান করতে লাগলেন। আমার বোন আমার কাছে এসে কাদঁতো।
একদিন আমার শাশুড়িমা বোনকে বললেন, তোর বোনও বাচ্চা দিতে পারেনি আমার বড় ছেলেকে, তুইও তোর বোনের মতোই বন্ধ্যা নাকি।
আমার শাশুড়িমার এই কথা আমার গায়ে জ্বালা ধরানোর জন্য যথেষ্ঠ ছিল।
আমার দেবরও আমার বোনকে নিয়ে পরীক্ষা করাতে গেল।
রিপোর্টে এলো,
আমার ছোটো দেবর কোনোদিন বাবা হতে পারবে না, হয়তো ভাগ্যের চাকা এভাবেই ঘুরে যায়,
আমার শাশুড়িমাকে ওইদিন বলতে শুনেছিলাম,
দেখো মা তুমি মেয়ে মানুষ, আমার ছেলে তো তোমায় ভালোবেসে বিয়ে করেছিল তাইনা.? তুমিও তাকে অনেক ভালোবাসো, জীবনে তো বাচ্চাই সব না, আমরা ক'দিনই বা বাঁচবো।
কষ্ট করে থেকে যাও আমার ছেলের ভালোবাসায়, সে তোমায় আগলে রাখতে চায়। তুমি ছেড়ে গেলে সে ভেঙে পড়বে।
আমার বোন আমার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হেসে আমার শাশুড়িমার হাত ছেড়ে দিয়ে বলল,
মা একদিন আমার বোনকে আপনি বলেছিলেন মেয়েদের জীবনে বাচ্চাই সব। মা না হলে তাদের জীবনের কোনো মুল্য নেই।
সেদিন আমার বোনটা খুব ভেঙে পড়েছিল, আমার বোনের ভালোবাসার মানুষটাকে আপনি অন্যের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।
তখন কোথায় ছিল আপনার এই ন্যায় কথা?
শাশুড়ি লজ্জায় চোখ নামিয়ে নেয়, সাথে থাকা আমার স্বামীও।
আমি ওইদিন আমার বোনকে অবাক হয়ে দেখেছিলাম। ও আমার হাত ধরেই ওবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এলো।
আজ আমার বোনের দু'টো ছেলে আর একটা মেয়ে আছে। ওর সুখের সংসারে।
আর আমার দুটো যমজ মেয়ে। আমি একজনকে বিয়ে করেছিলাম বাবার পছন্দে, তাঁর ব‌উ ডেলিভারির সময় মারা যায়।
আমি তার মেয়েদের নিজের মেয়ের মতোই ভালোবাসি, তারা জানেই না আমি তাদের মা নই।
আমিও জানায় নি।
হোক না তারা আমার‌ই।
জন্ম না দিলে কি মা হওয়া যায়না...!!!!!
সংগৃহীত
পোস্ট ভালো লাগলে পেজটি Follow করে রাখুন।

বড় আপার যখন তৃতীয় সন্তানটিও মেয়ে হলো তখন আপা খুব ভেঙে পড়লো। হসপিটালের বিছানায় শুয়ে থেকে সদ‍্য জন্ম নেয়া মেয়েটির ...
25/02/2024

বড় আপার যখন তৃতীয় সন্তানটিও মেয়ে হলো তখন আপা খুব ভেঙে পড়লো। হসপিটালের বিছানায় শুয়ে থেকে সদ‍্য জন্ম নেয়া মেয়েটির কপালে আলতো চুমু এঁকে দিয়ে আপা কান্নায় ভেঙে পড়লো।এ কান্না নিরব এবং নিভৃতের কান্না।এ কান্নার আওয়াজ আর কেউ শুনতে পায় না। কিন্তু টপটপ করে গড়িয়ে পড়া চোখের জল কণা দেখলেই অনুভব করা যায় কতটা দুঃখের কান্না এটা।আপা মেয়ের দিকে বড় মায়াময় চোখে তাকিয়ে ভেজা গলায় বললো,'মারে, তুই তো দুনিয়ায় আসছস ঠিকই কিন্তু আমার জন্য যে কতটুক দুঃখ নিয়ে আসছস তা আল্লাহই ভালো জানেন!'
বলে ডুকরে কেঁদে উঠলো আপা।পাশে থাকা আম্মা তখন আপার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,'বিপাশা,কান্দস কেরে মা,আর কি সব অলক্ষুইনা কথাবার্তা কস!এই মাইয়া তোর লাইগা দুঃখ নিয়া আসবো কিসের লাইগা?এই মাইয়া তোর লাইগা সুখ নিয়াই আসছে।দেখ তাকাইয়া দেখ,তোর মাইয়া কেমন কইরা হাসে!'
বড় আপা তার মেয়ের দিকে তাকিয়ে দেখলো তার মেয়েটার দু ঠোঁটে হাসি হাসি ভাব। মাত্র ঘন্টা খানেক আগে জন্ম নেয়া শিশুর মুখে এমন হাসি ভাব থাকবে কেন?বড় আপা আম্মার কাছে কেঁদে কেঁদে বললো,'এইটা হাসি না আম্মা,এইটা আমার দুঃখের লক্ষন। মাইয়ার বাপের কত শখ ছিল এইবার ছেলে সন্তান হবে।সে মনে মনে নামও ঠিক করে রেখেছিল।ওমর।সে রোজ দিন রাতে ঘুমানোর আগে আমার পাশে শুয়ে তার অনাগত সন্তান নিয়ে কথা বলতো।সে বলতো,' বিপাশা, আমাদের ওমর ঠিক খলিফা ওমরের মতো সাহসী আর নেকবান্দা হইবো।বাপ মার খুব ইচ্ছে ছিল আমি আলেম হবো। সেই ইচ্ছে আমি পূরণ করতে পারলাম না। কিন্তু আমার ছেলে ঠিক আলেম হবে। ওরে আমি মাদ্রাসায় পড়াবো।'
আম্মাগো, মাইয়ার বাপে খবর পাইয়া বোধহয় ভীষণ রাগ করছে! সেই রাগের কারনে বোধহয় এখনও হসপিটালে আসে নাই।আর আসবোও না মনে হয়।'
কথাগুলো বলে ফের কান্নায় ভেঙে পড়লো আপা। নার্স এসে নিষেধ করে গেলো কান্না করতে। কিন্তু বড় আপা কান্না থামাতে পারলো না মোটেও। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও যখন দুলাভাই কিংবা তাদের বাড়ির কেউ হসপিটালে এলো না তখন আমরাও ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়লাম। আম্মাকে দেখলাম একেবারে চুপ হয়ে যেতে। মাগরিবের নামাজ পড়ে আমি মসজিদ থেকে এসে দেখলাম আম্মার চোখও কেমন ভেজা।কার কাছে নাকি সংবাদ পেয়েছেন দুলাভাই এই সন্তানের মুখ দেখবেন না।কথাটা কে বলেছে কে জানে। এইসব কথাকে উড়া কথাও বলা যায়। কিন্তু দুলাভাই কিংবা তাদের বাড়ি থেকে যেহেতু মেয়ে জন্মাবার পাঁচ -ছয় ঘন্টা পরেও কেউ এলো না তখন এই কথাকে অনেকটা সত‍্যিই ধরে নেয়া যায়। আম্মা বড় অস্হির হয়ে আমার কাছে এসে ফিসফিস করে বললেন,'আসলাম, ভালো ঠেকতাছেনারে বাপ, আমার মাইয়ার কপালে কী কলঙ্কই লাগলো নাকি আল্লাহ জানে!'
আম্মার কথা শেষ হতে পারলো না এর মাঝেই দুলাভাই এসে উপস্থিত হলেন।তার চোখ মুখ কেমন লাল হয়ে আছে।তার উপস্থিতি আমাদের আরো ভয় পাইয়ে দিলো।আমরা আশঙ্কা করতে লাগলাম না জানি দুলাভাই কী না কী বলেন এখন!বড় আপাকেও দেখলাম শুকনো মুখে এলোমেলো হয়ে তাকিয়ে থাকতে। এইসময় দুলাভাই বড় আপার দিকে এগিয়ে গেলেন দ্রুত পায়ে।আমরা ভীত সন্ত্রস্ত চোখে তাকিয়ে থাকলাম শুধু। দুলাভাই গিয়েই বিছানা থেকে একটানে মেয়েকে কোলে তুলে নিলেন। আমার বুকটা যেন মুহূর্তের জন্য কেঁপে উঠলো ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌হঠাৎ। ভাবলাম কী জানি কী ঘটে এখন। কিন্তু দুলাভাই এক অদ্ভুত কান্ড করলেন। মেয়ের কপালে আলতো করে চুমু খেয়ে দুলাভাই তার পকেট থেকে একটা সোনার চেইন বের করলেন। সেই চেইন নিয়ে হুট করে বড় আপার গলায় পড়িয়ে দিয়ে মৃদু হেসে বললেন,'এটা গড়াতে অনেকটা সময় চলে গেল। তাছাড়া আমার কাছে টাকাও ছিল না।টাকা ম‍্যানেজ করতে অনেক দেরি হয়ে গেল।আমার দেরি করে আসার জন্য সরি!'
আপা বড় অবাক হয়ে বললো,'আপনি হঠাৎ এটা গড়াতে গেলেন কেন? আচ্ছা আপনি কী রাগ করেননি?'
দুলাভাই হু হু করে হেসে উঠে বলেন,'ধুর বোকা।রাগ করবো কেন আমি।এতো বড় পুরস্কার পাওয়ার পরেও যে রাগ করে সে তো আহাম্মক!'
আপা বললো,'আপনার যে ছেলে সন্তানের খুব শখ ছিল!ছেলে তো হলো না। হয়েছে মেয়ে!'
দুলাভাই তার মেয়ের কপালে আবার একটা চুমু খেয়ে বললেন,'এটাই তো আমার পুরষ্কার। আমার জান্নাত। আমাদের নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,যার তিন মেয়ে আছে তার জন্য জান্নাতের দরজা খোলা। আমি জান্নাত পেয়েও রাগ করবো কেন?'
বড় আপা দুলাভাইর এমন সুন্দর কথাগুলো শুনে ফের কেঁদে উঠলো।আম্মাকেও দেখলাম আঁচল দিয়ে চোখ মুছতে।আর আমি জানলা দিয়ে তাকিয়ে দূরের পথচারীদের হাঁটাচলা দেখতে দেখতে ভাবলাম, পৃথিবীর সকল পিতাগুলো যদি এমন করে ভাবতে পারতো তবে সমাজ সুন্দর না হয়ে কী করে এমন নোংরা থাকতে পারতো!
'
ুকরো_ভাবনা
#অনন্য_শফিক

একদিন রাতে অফিস থেকে বাড়ি ফিরে দেখি, অতিথি রুমে আলো জ্বলছে। আমি আমার স্ত্রীকে বলি,- 'কে এসেছে, আলো জ্বলছে যে ঐ ঘরে।'আমা...
24/02/2024

একদিন রাতে অফিস থেকে বাড়ি ফিরে দেখি, অতিথি রুমে আলো জ্বলছে। আমি আমার স্ত্রীকে বলি,
- 'কে এসেছে, আলো জ্বলছে যে ঐ ঘরে।'
আমার স্ত্রী বলে,
- 'তোমার দেশের বাড়ি থেকে দুজন মানুষ এসেছে। সম্ভবত ওনারা স্বামী স্ত্রী।'
- 'তাই। তুমি কী ওনাদের আগে দেখনি?'
- 'না। মহিলা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল, ‘আমি তোমার কী হই?’ আমি যখন বলি, ‘আমি তোমার স্ত্রী হই।’ তখন সে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে, ‘তুমি আমাদের রঞ্জনের বউ! ও মা, কত সুন্দর তুমি!’ তারপর আমাকে যত সব আদর করা শুরু করেছিল।'
আমি আমার স্ত্রীকে নিয়েই অতিথি রুমে যাই। দেখি, পঞ্চাশোর্ধ একজন মহিলা ও একজন পুরুষ বিছানায় জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে। আমি চিনতে পারছিলাম না। আমার মুখ ভ্যাবাচ্যাকা হয়ে ওঠে। ওনারও আমাকে চিনতে পারছিল না।
আমার স্ত্রী মহিলাকে বলে,
- 'ইনি হচ্ছেন আপনাদের রঞ্জন, আপনাদের ছেলে।'
মহিলা আমার পরিচয় পেয়ে বিছানা থেকে উঠে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে এবং বলে,
- 'তুমি এত বড় হয়ে গেছ!'
মহিলা বলেন,
- 'তুমি আমাকে চিনতে পারবে না। সেই ছোট বেলায় আমাকে দেখেছ। আমি তোমার ‘জহুরা বুবু’ , মনে পড়ছে আমার কথা? মনে পড়ে কী আমাকে? সেই কত বছর আগের কথা।'
----
------------
পঁচিশ বছর আগে,
ক্লাস ফোরে পড়ি তখন। স্কুল থেকে বাড়িতে
ফিরলে আমাকে খেতে দিতো হয় মা, না হয় জহুরা বুবু। জহুরা বুবু আমার জন্মের আগে আমাদের বাড়িতে কাজ করতে এসেছিল। সেই নাকি কোলে পিঠে আমাকে লালন পালন করেছে। আমাকে দেখে শুনে রেখেছে।
একদিন স্কুল থেকে এসে দেখি, জোহরা বুবু চোখে মোটা করে কাজল পরে আছে। আমি তার চোখের দিকে বিস্ময়ে পিট পিট করে তাকিয়ে থাকি।
জহুরা বুবু আমাকে বলে,
- 'কী দেখছ তুমি?'
আমি আঙুল দিয়ে জহুরা বুবুর চোখ দুটো দেখাই।
জহুরা বুবু বলে ওঠে,
- 'ওরে আমার ভাইটা।'
বলেই তার চোখ থেকে আঙ্গুল দিয়ে কাজল মুছে মুছে আমার চোখে পরিয়ে দেয়। জহুরা বুবুর দেওয়া তার চোখের কাজল আমার চোখে এখন আর নেই। তা মুছে গেছে কবে।
একদিনের কথা মনে আছে। আমার খুব জ্বর এসেছিল। দু-তিন দিনেও জ্বর নামছিল না। এই জহুরা বুবু মাকে কিছুতেই রাত জাগতে দেয়নি। সেই একটানা চার রাত আমার সিয়রে বসে জেগে থেকেছে। মাথায় জলপট্টি দিয়েছে। দুচোখের পাতা একটু সময়ের জন্য সে বন্ধ করেনি।
আমার শিশুকালে জহুরা বুবু কতো যে সেবা যত্ন করেছে, কত যে বিরক্তি ও যন্ত্রণা সহ্য করেছে। সে সব কথা আমার মনে নেই। আমি শুধু আমার মার কাছে থেকে সে সব কথা পরে শুনেছি।
আমি যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি, এক বর্ষার দিনে জহুরা বুবুর বিয়ে হয়ে যায়। মা বাবাই সমস্ত বন্দোবস্ত করে তাকে বিয়ে দিয়ে দেয় দূরের এক গ্রামে। আমার শুধু মনে আছে, শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার সময় জহুরা বুবু আমাকে বুকে টেনে নিয়ে ফূঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে। নৌকায় উঠে সারা পথ নাকি সে কাঁদতে কাঁদতে চলে গিয়েছিল।
বিয়ে হয়ে যাবার পর জহুরা বুবু মাঝে মাঝে আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসত। তারপর তার সংসার ব্যস্ততায় খুব বেশি আসত না। তারপর একদম না। তারপর চলে গেছে অনেক বছর। জহুরা বুবু আস্তে আস্তে সবার কাছে বিস্মৃত হয়ে যায়।
এই বিস্মৃত জহুরা বুবু কে দেখে যতটুকু খুশি হলাম, তার চেয়ে বেশি বিষাদে মনটি ভরে উঠল। জহুরা বুবু কেমন শীর্ণকায় হয়ে গেছে। চোখের নীচে কালো দাগ পড়ে গেছে। মনে হল, সে বড় ধরণের কোনো রোগে দুঃখে ভুগছে।
জহুরা বুবুই বলছিল,
- 'আমি তোমাদের বাড়ি থেকে ঠিকানা নিয়ে তোমার এখানে এসেছি। আমার অনেক বড় অসুখ হয়েছে মনে হয়। ওখানে এই রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। তাই অসহায় হয়ে তোমার এখানে চলে এলাম। এই ঢাকা শহরে আমাদের আপন কেউ নেই। তোমার কথা মনে হল। তাই তোমার কাছে চলে আসলাম।'
আমি জহুরা বুবু কে বলি,
- 'তুমি কোনো চিন্তা করবে না। তোমাকে ভাল ডাক্তার দেখাবো। তুমি ভাল হয়ে যাবে। তুমি সত্যিই ভালো হয়ে যাবে।'
জহুরা বুবু কিছু টাকা বের করে আমার হাতে দেয়। বলে,
- 'জানি না, কত খরচ হবে। তুমি এখান থেকে খরচ করবে।'
আমি ঐ মুহুর্তে জহুরা বুবু কে কোনো করুণা করতে চাইনি। আমি তার হাত থেকে টাকা নিয়ে নেই।
রুমে এসে আমি আমার স্ত্রীকে বলি,
- 'জানি, তোমাকে না বললেও তুমি ওনাদের জন্য অনেক করবে। তবুও বলছি, তুমি বিরক্ত হবে না।'
তোমাকে একটা কথা বলি,
- 'এই জহুরা বুবু আমার বড় বোনের মতন, আমার মায়ের মতন। আমার সর্ব শরীরে ওনার মায়া, মমতা, আদর স্নেহ লেগে আছে।'
আমার ছলো ছলো চোখ দেখে, ও শুধু বললো,
- 'ওনাদের কোনও অসম্মান ও অবহেলা হবে না। তুমি দেখ।'
শহরের সবচেয়ে ভাল বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে জহুরা বুবু কে দেখাই। ওনার সমস্ত কিছু চেক আপ করানো হয়। সব গুলো রিপোর্ট পেতে দুই তিন লেগে যায়। ইতোমধ্যে ঔষধ ও খেতে থাকে। সুন্দর চিকিৎসা পেয়ে জহুরা বুবুর মুখে হাসি ফুটে ওঠে।
একদিন রাতে টেবিলে বসে খাচ্ছিলাম, আমার খাওয়া দেখে জহুরা বুবু আমার স্ত্রীকে বলছিলো,
- 'বউ মা, তুমি রঞ্জনকে এত ঝাল ভাত খাওয়াও কেন? ও তো ছোটবেলায় ঝালভাত খেত না। দুধ আর সর্বিকলা দিয়ে ভাত খেত। ও কোনো সময় নিজ হাত দিয়ে ভাত খেত না। চাচি আম্মা, না হয়‌ আমি তুলে খাওয়াতাম।'
আর একদিন আমার মাথার চুলে তেল নাই দেখে, আমার স্ত্রীকে বলছিলো,
- 'বউ মা, তুমি ওর মাথায় তেল দিয়ে দাও না কেন? সরিষার তেল নিয়ে আসো, আমি ওর মাথায় তেল দিয়ে দেই।'
এ রকম আরও অনেক কিছু ঐ অল্প কয়দিনে আমাকে পেতে হয়েছে।
ইতোমধ্যে সমস্ত রিপোর্ট গুলো পেয়ে যাই। জহুরা বুবু কে আবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। ডাক্তার সাহেব রিপোর্ট সব দেখলেন। রিপোর্ট দেখে তাঁর মুখটি বিমর্ষ হয়ে উঠে। তিনি নতুন করে আরও ঔষুধ দিলেন। এবং ইংরেজিতে আমাকে বললেন, ‘'আপনি ওনাদের বাইরে রেখে এসে আমার সাথে দেখা করুন।’ আমি জহুরা বুবুকে বাইরে রেখে ডাক্তার সাহেবের সাথে দেখা করি।
ডাক্তার বললেন, ‘ওনার লিউকেমিয়া ধরা পড়েছে। রক্তের ক্যান্সার। খুব বেশি হলে উনি তিন মাস বাঁচতে পারে। এই চিকিৎসা এখানে এখনও ঐ রকম নেই। খুব ব্যায়বহুল। আর করেও লাভ হবে না।’
জহুরা বুবু তার স্বামীসহ আমার বাসায় আরো তিন দিন ছিল। আমি জহুরা বুবুকে বলি,
- 'ডাক্তার সাহেব তোমাকে তিন মাসের ঔষধ দিয়ে দিয়েছে। তুমি যদি ভালো না হও, তিন মাস পর আবার এসো।'
যেদিন জহুরা বুবু চলে যাবে, সেদিন বুবুকে বলি,
- 'বুবু তুমি আমার চোখে একটু কাজল পরিয়ে দাও না!'
আমার স্ত্রীর কাছে কাজল ছিলো। সপ কাজল নিয়ে আসে। জহুরা বুবু আমার চোখে কাজল পরিয়ে দেয়। আমি তার চোখের দিকে তাকাই। দেখি, জহুরা বুবু অঝোরে কাঁদছে।
তারপর আরও কত বছর চলে গেছে। শুনেছি অনেক আগেই জহুরা বুবু চলে গিয়েছেন জীবন নদীর ওপারে। তার দেওয়া সেই কাজল এখন আর আমার চোখে নেই। তা কবে মুছে গিয়েছে!
(সমাপ্ত)...
#ছোটগল্প
#তার_দেওয়া_কাজল
#কোয়েল_তালুকদা

12/12/2023

Talha Babu Some Special Moments

Address

Pabna Sadar
Pabna

Telephone

+8801312581555

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Talha Babu posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Talha Babu:

Share