22/09/2025
প্রবাস জীবন বাইরে থেকে দেখতে যতটা ঝলমলে মনে হয়, ভেতর থেকে তার পুরোটাই আসলে অনেক কষ্টের আর ত্যাগের। পরিবার, বন্ধু-বান্ধব আর পরিচিত পরিবেশ ছেড়ে সম্পূর্ণ অচেনা একটা জায়গায় নতুন করে সবকিছু শুরু করা সহজ নয়। এই কষ্টের বিভিন্ন দিক আছে, যা একজন প্রবাসীকেই সবচেয়ে বেশি অনুভব করতে হয়।
১. প্রিয়জন থেকে দূরে থাকা
প্রবাস জীবনের সবচেয়ে বড় কষ্ট হলো প্রিয়জনদের থেকে দূরে থাকা। বাবা-মায়ের পাশে থাকতে না পারা, সন্তানের বেড়ে ওঠা দেখতে না পারা, স্ত্রীর সঙ্গে দৈনন্দিন সুখ-দুঃখ ভাগ করে নিতে না পারা—এই সব অনুভূতি প্রবাসীকে ভেতর থেকে একা করে দেয়। অনেক সময় বছরে একবার বা তারও বেশি সময় ধরে দেশে ফেরা সম্ভব হয় না, ফলে পারিবারিক বন্ধন আর সামাজিক উৎসবগুলো থেকে তারা দূরে থাকে। প্রযুক্তির মাধ্যমে যোগাযোগ সম্ভব হলেও, সরাসরি উপস্থিতির শূন্যতা কখনো পূরণ হয় না।
২. মানসিক চাপ ও একাকিত্ব
অচেনা সংস্কৃতি, ভিন্ন ভাষা, আর নতুন পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেওয়াটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। অনেক প্রবাসীকেই চরম একাকিত্বের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তাদের মনের কথা খুলে বলার মতো কেউ থাকে না। কঠোর পরিশ্রমের পর রুমে ফিরে যখন তারা একা থাকে, তখন এই একাকিত্ব তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। হতাশা, বিষণ্নতা এবং দুশ্চিন্তা তাদের নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়ায়।
৩. আর্থিক ও শারীরিক চাপ
পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য প্রবাসীরা বিদেশে যান। কিন্তু এই হাসির পেছনে থাকে তাঁদের কঠোর পরিশ্রম। দিনের পর দিন প্রচণ্ড গরম বা ঠান্ডার মধ্যে শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করতে হয়। মাসের শেষে যখন বেতন আসে, তার বেশিরভাগ অংশই চলে যায় দেশে থাকা পরিবারের কাছে। নিজের জন্য সামান্য কিছু রেখে বাকিটা সঞ্চয় করার চেষ্টা করেন, যাতে ভবিষ্যতে কোনো বিপদ হলে কাজে আসে। এর ফলে, নিজেদের ব্যক্তিগত খরচ আর শখ-আহ্লাদ বিসর্জন দিতে হয়। অনেক সময় অতিরিক্ত কাজ আর দুশ্চিন্তার কারণে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন, যার যথাযথ চিকিৎসার সুযোগও তারা পান না।
৪. সামাজিক অবহেলা ও ভুল বোঝাবুঝি
অনেক সময় প্রবাসীরা দেশে ফিরে সামাজিকভাবে ভুল বোঝাবুঝির শিকার হন। পরিবারের সদস্যরা অনেক সময় তাদের কষ্ট না বুঝে আরও বেশি প্রত্যাশা করে। 'টাকা পাঠাচ্ছো মানে ভালো আছো'—এই ধরনের ধারণা তাদের মানসিক কষ্টকে আরও বাড়িয়ে তোলে। অনেক প্রবাসী ঋণ করে বিদেশে যান