18/06/2025
লেখক জীবনের সুখ-দুঃখ
লিখতে না পারার কষ্ট লেখককে অস্থির করে তুলে, লেখকের সুন্দর চিন্তাগুলো যখন শৃঙ্খলিত হয়ে পড়ে তখন লেখকের আর লেখকসত্ত্বা বেঁচে থাকে না, বেঁচে থাকা মানে তো শুধু একটা শারীরিক বিষয় না, বেঁচে থাকাটা আসলে আত্মার বিষয়ও বটে। লেখক যখন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, যাকে প্রতিনিয়ত মেনে চলতে হয় বিধি, প্রজ্ঞাপন, সার্ভিস রুল, সেইসঙ্গে লেখক যখন শতভাগ গৃহকর্তা পারিবারিক ও সামাজিক গণ্ডীতে আবদ্ধ কিংবা লেখক যখন নারী অর্থাৎ লেখিকা তাকে তো মেনে চলতে হয় আরো কঠোর সামাজিক অনুশাসন, দায়িত্ব পালন করতে হয় স্বামী-সংসার-সন্তানদের রান্নাবান্নাসহ যাবতীয় কাজ তার পক্ষে মুক্তভাবে সাহিত্য চর্চা করা কতটুকু সম্ভব?
লেখকদের প্রতিনিয়ত কিছু অপ্রত্যাশিত প্রশ্নেরও মুখোমুখি হতে হয়। যেকোনো গল্প, উপন্যাস বা কবিতা প্রকাশের পর পাঠকদের অতি সাধারণ কিন্তু অপ্রত্যাশিত কিছু প্রশ্ন থাকে যেমনঃ ধরা যাক আমার লেখা ছায়াপুরুষ উপন্যাসের কথা, উপন্যাসটা বইমেলায় প্রকাশের পর থেকে পাঠকদের প্রশ্ন, তন্দ্রা আপনার কে হয়? শেষ অবধি কি তন্দ্রার সঙ্গে তার ছায়াপুরুষের মিলন হয়েছিল। পাঠক বন্ধুদের কীভাবে বুঝাই তন্দ্রা নামে এমনকি এরকম কাউকে আমি চিনিও না। হয়তো লেখিকাদের এর চেয়ে আরো অনেক ব্যক্তিগত প্রশ্নেরও মুখোমুখী হতে হয়।
দাগ উপন্যাস প্রকাশিত হওয়ার পর পাঠকদের প্রশ্ন, ‘’স্যার মায়ার কি শেষ অবধি বিয়ে হয়েছিল? যদি না হয়ে থাকে তাহলে কেনো না? আপনি হলে কী করতেন?’’ কী করে বুঝাই আমার উপন্যাস, কিশোর উপন্যাস, গল্পগ্রন্থ এবং ধারাবাহিক উপন্যাসসহ মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ২৫ টি। প্রতিটি গ্রন্থে কমপক্ষে দু’টি করে নারী চরিত্র আছে। সে হিসেবে আমার তন্দ্রার মতো নায়িকা আছে ৪৮ জন, যা অবিশ্বাস্য ও হাস্যকরও বটে। লেখকের লেখা যে প্রতিটাই তার জীবনের ঘটে যাওয়া ঘটনা না এটা বোঝানই অনেক কঠিন।
একথা সত্যি লেখক লেখিকাদের প্রতিদিন অসংখ্য ভক্তর সঙ্গে কথা বলতে হয়, বেশিরভাগ ভক্তই নিজেকে সবচেয়ে বেশি দুঃখী, বঞ্চিত, অবহেলিত এবং দূর্ভাগ্যবান বলে মনে করে, তাই তাদের অনুরোধ থাকে, ’’স্যার আমার জীবনী নিয়ে একটা গল্প লিখেন।’’
কারো জীবনী থেকে লেখার কোনো বিষয়বস্তু পাওয়া যাক কিংবা না যাক মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শুনতে হয়, আশ্বাস দিতে হয় এবং সহানুভূতিশীল হতে হয়। কারো জীবনী থেকে পরিপূর্ণ গল্প বা উপন্যাস পাওয়া যায় না, কারো প্রেম, কারো বিরহ, কারো বঞ্চনা নিয়ে অনেক চিন্তা করে, রং, রস, মাধুরি মিশ