31/05/2025
স্বাধীনতার পর আর্মির অভ্যন্তরীন বেশ কিছু গ্রুপিং চলছিলো। তৎকালীন আর্মির সবাইই ছিলো পাকিস্তানের রিক্রুটমেন্ট, এদের মধ্যে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের যারা দেশে ছিলেন তারা এবং পাকিস্তান থেকে পালিয়ে আসা তাহের, ডালিম, নূর, শাহরিয়ার ,মঞ্জুররা বাদে বাকি বাঙ্গালী আর্মি সদস্যরা পাকিস্তানেই আটক/নজরবন্দী ছিলেন। যুদ্ধ শেষ হবার পর তারা দেশে ফেরত আসেন।
শেখ মুজিব আমলে (১৯৭২-৭৫) আর্মি সুযোগ সুবিধা পাওয়ার দিক থেকে রক্ষিবাহীনির তুলনায় বৈষম্যের শিকার হলেও একটা সুবিধা পায় - *মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া সদস্যরা দুই রেংক প্রমোশন পেয়ে বসে। যেই দুই রেংক প্রমোশনে পাকিস্তান ফেরত বাকি আর্মি অফিসারদের সাথে একটা বিরোধ, গ্রুপিং তৈরী করে।
আর্মির মধ্যকার এই বিরোধ পরবর্তীতে অনেক বাকবদলে ভূমিকা রাখলেও বর্তমানে তা খুব কমই আলোচনা হয়।
,
এছাড়া যারা যুদ্ধে অংশ নেন তাদের অনেকে যুদ্ধের পর শেখ মুজিবর রহমান ও আওয়ামীলীগের অনেকের কাছে গিয়ে তদবির শুরু করেন, একে অপরের নামে কানভারি ও করতে থাকেন। ২৬ই শে মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষনা, এবং প্রথমবার নিজেকে প্রভিডেন্সিয়াল প্রেসিডেন্ট ঘোষনা - আওয়ামীলীগ এটাকে পজিটিভলি নিতে পারে নাই। জিয়াউর রহমান তাই সেসময় এবং যুদ্ধের পর থেকে সাইডলাইনে সড়ে যেতে থাকেন।
স্বাধীন দেশের নতুন সেনাবাহীনির চীফ হওয়ার দৌড়ে যোগ্যতা অনুসারে এগিয়ে ছিলেন জিয়াউর রহমান, কিন্তু আওয়ামীলীগের সুনজরে না থাকায় চীফ হন শফিউল্লাহ। এবং জিয়াকে আর্মি থেকে সড়িয়ে বিদেশি দূতাবাসে পাঠানোর ও পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
মেজর ডালির শেখ মুজিবর রহমানের কাছে গিয়ে জিয়ার নামে সুপারিশ করেন, তোফায়েল আহমেদ ও জিয়ার আর্মি থেকে বদলি আটকান।
,
শফিউল্লাহ, খালেদ মোশাররফদের থেকে পিছিয়ে পড়লেও এবং তাদের হিংসার কারন হলেও জিয়াউর রহমান তার পরিশ্রম ও সততার জন্যে আর্মি জুনিয়রদের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন। যুদ্ধের পরপর আর্মির অভ্যন্তরে মেজর ডালিমদের একটা গ্রুপ সংগঠিত হতে থাকে "সেনা পরিষদ" নামে। জিয়া রাজনৈতিক সুদৃষ্টির দিক দিয়ে সাইড হয়ে গেলেও ডালিমদের সেনা পরিষদ তাকে সামনে রেখেই নিজদের সংগঠিত করে রাখে।
এবং একিসাথে আর্মি থেকে অব্যাহতি পেয়ে জাসদে যোগ দেওয়া কর্নেল তাহেরের সাথেও জিয়ার যোগাযোগ ছিলো ভালো, জাসদের থিংকট্যাংকের সাথে না থাকলেও। কর্নেল তাহের ও আওয়ামীলীগ, রক্ষীবাহীনির বিপক্ষে আর্মির অভ্যন্তরে বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা ও বাইরে জাসদ গনবাহিনীকে সংগঠিত করছিলেন।
*ডালিম/সেনা পরিষদের সাথে তাহের/বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার কানেকশন সাথে ছিলোই।
,
১৯৭৫'র অগাস্ট-নভেম্বরে ক্ষমতার পালাবদল ঘটে মোট ৩ বার, এবং ৩ বারেই এই সবগুলি পক্ষ আলাদাভাবে একশনে যায় এবং দেশের ইতিহাস পাল্টে দেয়।
,
১৫ই অগাস্টের মাস্টারমাইন্ড ছিলো কর্নেল ফারুক ও রশীদ, তারা তাদের ইউনিটের পাশাপাশি হেল্প নেয় মেজর ডালিমদের সেনা পরিষদের। কর্নেল তাহের এই প্ল্যান জানলেও তাকে ছাড়াই রশীদ, ফারুকরা অপারেশনে যায়। কর্নেল তাহের ও তার বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার উদ্দেশ্য ১৫ই অগাস্টের ক্যু তে পুরন হয়নাই।
*কর্নেল রশিদের মতে ধানমন্ডি ৩২ এ যেই টিমটা যায়, তারা ছিলো যুদ্ধের সময় মেজর জলিলের ইউনিটের লোক, মানে সেসময় জাসদের অনুগত এবং তারা বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার সদস্য হতে পারেন। যেই জাসদের সাথে তখন লীগের রক্তারক্তি সম্পর্ক আর যেই জাসদ তাদের সব একশনেই ম্যাসাকার করে আসতো।
*প্রেসিডেন্ট ও তার পরিবারকে এভাবে নির্মম ভাবে হত্যার ঘটনা এবং বংগভবনে ভসে খবরদারি করা আর্মি জুনিয়রদের ক্যান্টনমেন্টে বসে থাকা অনেক সিনিয়র অফিসাররা নিতে পারেন নাই - মুক্তিযোদ্ধা হোক কিংবা পাকিস্তান ফেরত হোক।
,
৩ নভেম্বর পাল্টা ক্যু করে খালেদ মোশাররফ গ্রুপ, যারা মূলত এন্টি জিয়া এবং আওয়ামীলীগের সাথে যাদের সম্পর্ক ভালো ছিলো। ওসমানি ও খালেদ মোশাররফের কল্যানে ১৫ই অগাস্টের কুশীলবরা দেশত্যাগ করে নিরাপদেই।
*তবে তারা আশায় ছিলেন যে শীঘ্রই তারা দেশে ফিরতে পারবেন পরিস্থিতি পরিবর্তন হলে - কেননা তাদের সেনাপরিষদ এবং সুসম্পর্ম থাকা কর্নেল তাহের ও তার বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা তখনো ফ্রী ই আছে।
,
১৫ অগাস্টে কোনো একশনে যেতে না পারলেও কর্নেল তাহের ৭ই নভেম্বর একশনে যাওয়ার সুযোগ পান তার বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা ও জাসদ গনবাহিনীকে নিয়ে। ক্যান্টনমেন্টে সিপাহীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে অফিসারদের স্বার্থান্বেষী, ক্ষমতালোভী আচরনে। সাধারন সৈনিকদের কিছু দাবী ছিলো, তার সাথে কর্নেল তাহের নিয়ে আসেন তার শ্রেনীহীন সেনাবাহিনীর তত্ত্ব। ৭ই নভেম্বরের সিপাহী বিপ্লবের অংশ ছিলো আর্মির ভিতরে থাকা সেনাপরিষদ, বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা, সিভিল ড্রেসে ঢুকে যাওয়া গণবাহিনী ও জিয়ার অনুসারী সাধারন সৈন্যরা।
জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করার মাধ্যমে মিশন কমপ্লিট হলেও বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা ১২ দফার দাবীতে রক্তপিপাসু হয়ে উঠে। ১২ জন অফিসার প্রান হারায়, অনেক অফিসার লাঞ্চিত হয়, অনেক অফিসার অল্পের জন্যে প্রান হারানো থেকে বাচে, অনেকে ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালিয়ে যান। জিয়াউর রহমান নিজেও অস্ত্রের মুখে থেকে প্রান হারানোর ঝুকি থেকে এই বিশৃংখলা সামলাচ্ছিলেন।
জিয়া এই বিশৃংখল অবস্থা থেকে মুক্তি পান অন্যান্য ক্যান্টনমেন্ট থেকে অফিসাররা তাদের ইউনিট নিয়ে হাজির হলে। *এরকম একটা সিচুয়েশনে যেই আর্মি অফিসাররা জিয়াকে উদ্ধার করেন তারাই পরবর্তীতে জিয়ার কাছের লোক হয়ে উঠেন এবং এদের বেশিরভাগ ছিলেন পাকিস্তান ফেরত আর্মি অফিসার।
,
সিপাহীদের বিদ্রোহ শান্ত হলে আর্মি অফিসাররা ক্যান্টনমেন্টে ফিরতে শুরু করেন। সিপাহীরা তাদের কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকে, পরিবেশ ঠান্ডা হতে থাকে। পরিস্থিতি ঠান্ডা হলেও জিয়াকে বিদ্রোহী সিপাহীদের বিপক্ষে একশন নিতে উস্কানি দিতে থাকে জিয়ার কাছের পাত্র হয়ে উঠা সেই আর্মি অফিসাররা - যাদের মধ্যে ছিলেন বিগ্রেডিয়ার মীর শওকত, এরশাদ।
জিয়া বিদ্রোহী ইউনিটগুলিকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের বাইরে বদলি করার সিদ্ধান্ত নেন, এতে করে সেই ইউনিট গুলিতে আবার অসন্তোষ দেখা দিতে থাকে।
আবার একিসাথে পাল্টা ক্যু র প্ল্যান করতে থাকায় কর্নেল তাহের, মেজর জলিল, আসব আব্দুর রবের মতোন জাসদ নেতারা গ্রেফতার হয়ে যান। যা সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীন জাসদ, গণবাহিনী, বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার সদস্যদের ও ক্ষেপিয়ে দেয়।
৩ই নভেম্ভর থাইল্যান্ড চলে যাওয়া ডালিম, রশিদ, ফারুকদের অনুগত সেনাপরিষদ ও জিয়ার বিপক্ষে চলে যায় কারন তাদের নেতাদেরকে দেশে ফেরত আসার গ্রীন সিগন্যাল দেওয়া হচ্ছিলোনা। এবং তাদেরকে দেশে ফেরাতে আগ্রহী ছিলোনা জিয়ার কাছের মানুষ হয়ে উঠা অফিসাররা।
(রশিদ, ফারুক, ডালিমরা পরবর্তীতে দেশে আসলেও রশিদ বাদে কারোর সাথে জিয়া কাজ করার আগ্রহ দেখান নাই। ফারুক, রশিদ জিয়াকে না জানিয়ে তাদের ইউনিটের সাথে দেখা করলে জিয়া আরোও ক্ষিপ্ত হন)
*সো, জিয়া একদিকে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠলেন, তাকে তার ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠা অফিসাররা তাকে দেশ ও রাজনীতিতে মনোযোগ দিতে বললেন, আর্মির দেখভাল তাদের উপর ছেড়ে দিতে বলে। কিন্ত তাকে সাপোর্ট দেওয়া সেনা পরিষদ, বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার পাশাপাশি সাধারন সৈনিকদের সাথে তার দূরত্ব বাড়তে থাকে।
*জিয়া রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে তার ক্যারিশমা দিয়ে দেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হতে থাকলেন, কিন্তু তার উত্থানের মূল - সেই সেনাবাহীনিতে তার জনপ্রিয়তা তিনি তখন হারাচ্ছিলেন, যেটা তিনি বুঝতে পারছিলেন না ৭ ই নভেম্বর পরবর্তী সুসময়ের বন্ধুদের কথায়।
,
জিয়ার শাসনকালে এই অসন্তুষ্ট গ্রুপটা বারবার ক্যু করতে থাকে। তারা সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরের সেনা পরিষদ/জাসদ/রক্ষিবাহিনী যাদের অংশই হোক না কেনো তারা ৭১'র মুক্তিযোদ্ধাই ছিলো সিংহভাগ। প্রতিটা ব্যার্থ ক্যুর লর তাদের কোর্ট মার্শালে মৃত্যুদন্ড হতো। কর্নেল রশীদের মতে ১৫ই অগাস্ট ধানমন্ডি-৩২ এ যারা ম্যাসাকার করে, তাদের অনেকেই জিয়া ফাসি দেন ক্যু র বিচার হিসেবে।
*জিয়ার নামে মুক্তিযোদ্ধা হত্যার অভিযোগ আনা হলেও আসল কথা হচ্ছে জিয়া মূলত সেনা পরিষদ/বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার সদস্যদেরকেই ফাঁসি দিচ্ছিলেন, যারা কিনা ১৫ই অগাস্টের অপারেশনে জড়িত ছিলেন বা তাদের অংশ ছিলেন
*জিয়া ক্ষমতার মসনদে, বাট এট দ্যা সেইম টাইম আর্মি থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা/শক্তি কমছিলো - লাভটা কাদের হচ্ছিলো তাহলে হিসাব মতে?
,
,
সবগুলি ক্যু অসফল হলেও ১৮ নাম্বার ক্যু তে জিয়া হার মানেন!
৬৫'র পাক-ভারত যুদ্ধে লাহোরকে রক্ষা করা, ৭১ এ চিটাগং এ পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর অফিসার হয়ে বিদ্রোহ করা, ৭ই নভেম্বর অস্ত্রের মুখে থেকে বিদ্রোহীদের শান্ত করা, এতোগুলা ক্যু প্রতিরোধ করার পর ফাইনালি জিয়া ১৯৮১ সালের ৩০ই মে, চিটাগং সার্কিট হাউজে এসে হার মানেন!
বাইরে থেকে সার্কিট হাউজের মাঠে রকেট লাঞ্চার মারা, পরবর্তীতে ওপেন ফায়ারিং র মাধ্যমে অভ্যুত্থানকারী সেনা সদস্যরা ঢুকে পড়ে সার্কিট হাউজে। জিয়া নিজেই বের হয়ে এসেছিলেন ঘটনা সামলাতে, তাকে প্রথম দেখাতেই বুকে গুলি করেন কর্নেল মতি। জিয়া মাটিতে পড়ে গেলে তার মুখেও বেশ কয়েকটা গুলি করা হয়।
,
জিয়া হত্যার রিয়েকশন হিসেবে জেনারেল মঞ্জুরকে গ্রেফতার ও হত্যা করা হয়, মঞ্জুর নিজেও একজন পাকিস্তান থেকে পালিয়ে আসা মুক্তিযুদ্ধ করা একজন অফিসার। যিনি শুরুতে জিয়ার প্রিয়পাত্র হলেও পরবর্তীতে এরশাদের প্ররোচনায় জিয়া তাকে সাইড করে দেন। কর্নেল হামিদের মতে মঞ্জুর আদলে জিয়ার বিপক্ষে কিছু করতে চাচ্ছিলেন না, তার উদ্দেশ্য ছিলো জিয়াকে বাধ্য করা এরশাদকে সেনাপ্রধান থেকে সড়িয়ে দিতে।
সেনাপ্রধান এরশাদের ও থাকার কথা ছিলো জিয়ার সাথে সার্কিট হাউজে, কিন্তু শেষ মুহুর্তে কি এক কারন দেখিয়ে তিনি যান নাই! জিয়াকে গুলি করা কর্নেল মতির সাথেও নাকি এরশাদ কয়দিন আগে শিডিউলের বাইরে গিয়ে কি নিয়ে নাকি অনেক আলাপ করেছিলেন।
জিয়া হত্যার পর এরশাদ অনেক কুইক বেশ কিছু একশন নেন, মঞ্জুরকে গ্রেফতার করে ক্যান্টনমেন্টে এনে তার মৃত্যদন্ড কার্যকর করা হয়। মঞ্জুর পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে থানাতেই তাকে রাখার অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু তার সেই অনুরোধ শুনা হয়নাই। বরং মঞ্জুর প্রেসিডেন্টকে হত্যার কালপ্রিট হিসেবেই মৃত্যুদন্ড পান।
,
,
প্রেসিডেন্ট জিয়া ও জেনারেল মঞ্জুর হত্যাকান্ডের পর আর্মিতে প্রভাবশালী মুক্তিযোদ্ধা সিনিয়র অফিসার কেউ আর থাকলেন না! জেনারেল মইনুল হোসেনকেও ষড়যন্ত্র করে বের হয়ে যেতে বাধ্য করা হয়। জেনারেল মইনুল হোসেন ও কর্নেল এম এ হামিদ (রানী হামিদের স্বামী ও কায়সার হামিদের বাবা) এই দুই আর্মি অফিসার পুরো সময়টায় নিরপেক্ষই ছিলেন। আওয়ামীলীগ, খন্দকার মোস্তাক এবং ডালিন গং, খালেদ মোশাররফ, তাহের, জিয়া - কারোর প্রতিই উনাদের অন্ধ অনুগত্য ছিলোনা। কিন্তু দুজনেই স্বীকার করেন যে আর্মিতে মুক্তিযোদ্ধা ও অ-মুক্তিযোদ্ধা দ্বন্দটা শেষমেশ তাদেরকে আর্মি থেকে সড়ে যেতে বাধ্য করে।
জিয়া, মঞ্জুরকে সড়ানোর মাধ্যমে আর্মিতে অ-মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপটা তাদের পূর্ন কতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে, যার লিডার ছিলেন হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ।
*জিয়া হত্যাকান্ডের আগে দেশে আসে শেখ মুজিবর রহমান কন্যা শেখ হাসিনা। জাসদ নেতা, রাজনীতির রহস্যপুরুষ সিরাজুল আলম খানের সাথেও জিয়ার দেখা হয় এই সময়ের মধ্যেই। দুইটা ঘটনার এক মাসের মাথাতেই জিয়া মৃত্যুবরন করেন।
,
,
আর্মি অফিসার থেকে প্রেসিডেন্ট - জিয়ার ক্ষমতার শীর্ষে আরোহনের গল্পতে বিতর্ক থাকতে পারে, কিন্তু যুদ্ধবিদ্ধস্থ দেশের সঠিক পথে আসতে জিয়ার দূরদর্শিতা এদেশের দরকার ছিলো। যুদ্ধ পরবর্তী দেশে যখন লীগের দুর্নীতির পাশাপাশি রক্ষীবাহিনী, গনবাহীনি, সর্বহারাদের গৃহযুদ্ধ চলে - তখন একজন সৎ, পরিশ্রমী, দুরদৃষ্টিসম্পন্ন শাসকই দরকার ছিলো।
ডালিম, তাহেরদের সাথে সম্পর্ক নষ্টের মাধ্যমে সেনাবাহীনিতেই জনপ্রিয়তা হারানো কিংবা সেনাবাহিনীর মধ্যকার মুক্তিযোদ্ধা বনাম অ-মুক্তিযোদ্ধা দ্বন্দের কারনে সৃষ্ট জটিল অবস্থার কারনেই হোক - জিয়াকে সড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ পেয়ে যায় RAW। এই ভূখন্ড যাতে কখনোই শান্তিতে এগিয়ে যেতে না পারে সেটাই RAW র লক্ষ্য, এবং সেই লক্ষ্য পুরনে অভ্যন্তরীন যেকোনো অসন্তুষ্টি কে কাজে লাগিয়ে তারা স্বার্থ হাসিল করে আসছে এদেশে সেই শুরু থেকেই।
,
,
তথ্যসূত্র:
*তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা - কর্নেল এম এ হামিদ
*এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য - মইনুল হোসেন
*কর্নেল রশীদের সাক্ষাৎকার (২০০৮)