15/12/2024
১৪ই ডিসেম্বর, ১৯৭১ যেই বুদ্ধিজীবীরা খু*ন হয়েছিলেন, তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ কি ছিলো?
এই প্রশ্নের উত্তর এই ২০২৪ এ বসে পাওয়া কঠিন। নেটে সার্চ দিয়ে এই প্রশ্নের উত্তর মিলবেনা। সেসময়কার সংবাদপত্র গুলি ঘাটলে কিছু হয়তোবা পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু তাতেও যে উত্তর স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে তা না।
,
উত্তরটা অজানা রেখে এর আগে পড়ের গল্পে যাই -
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আওয়ামীলীগ ও শেখ মুজিবের সাথে বামপন্থী দের বৈরীতার ইতিহাস সবচেয়ে কম আলোচিত ইতিহাসগুলির একটা। আওয়ামীলীগের সাথে কমিউনিস্টদের গন্ডগোল স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক আগে থেকেই।
কমিউনিস্ট দের একটা কমন অভিযোগ ছিলো যে শেখ মুজিব ও আওয়ামীলীগ হচ্ছে আমেরিকার দালাল! আওয়ামীলীগের রাজনীতি হচ্ছে পুঁজিবাদী, ধনী শ্রেনীর রাজনীতি - ধনীদের জন্যে রাজনীতি করে যাতে আওয়ামীলীগ ও একিসাথে নিজেরা ধনী হতে পারে। আইয়ুব খানকে কাপিয়ে দেওয়া ৬ দফা নিয়েও বামপন্থীদের অভিযোগ ছিলো যে এই ৬ দফায় দিনমজুর, শ্রমিক শ্রেনীর অধিকার আদায় নিয়ে কোনো দাবী নাই - এই ৬ দফায় কেবল পুঁজিবাদী ধনীদের ই উন্নতি হবে, গরিবদের না!
*বর্তমান সময়ের সাথেও এই স্টেটমেন্টের একটা মিল পেতে পারেন - এদেশের ধনী, এলিট শ্রেনীর ম্যাক্সিমামই কিন্তু আওয়ামীলীগ সাপোর্টার
,
আওয়ামীলীগের সাথে বামদের এই আদর্শিক পার্থক্য কেবলমাত্র যুক্তিতর্কর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতোনা, আক্রমণাত্মক স্লোগানের পাশাপাশি সংঘাতেও মোড় নিতো। এ প্রসংগে ছাত্র ইউনিওনকে উদ্দেশ্য করে ছাত্রলীগের জনপ্রিয় একটি স্লোগানকে মেনশন করা যায় -
"হো হো, মাও মাও - চীনে যাও, ব্যাঙ খাও"
ফরাসী পত্রিকা Le Monde কে দেওয়া শেখ মুজিবের এক সাক্ষাতকার, যা উনি গ্রেফতার হওয়ার পর ৩১ শে মার্চ ১৯৭১ এ প্রকাশিত হয়, সেখানে তিনি বলেন - "পশ্চিম পাকিস্তান সরকার কি বুঝতে পারছেনা যে আমি ছাড়া কেউ পূর্ব পাকিস্তানে এই কমিউনিস্টদের শায়েস্তা করতে পারবেনা?"
,
৬০'র দশকে ছাত্র ইউনিওন এবং বামপন্থীদের কর্মী, সমর্থক এখনকার মতোন কম ছিলোনা - বেশ ভালোভাবেই ছিলো। কমিউনিজম, সোশালিজম তখনকার দুনিয়ায় একপ্রকার ট্রেন্ড। গরিব ঘর থেকে উঠে আসা ছাত্রদের কমিউনিজমের শ্রেনীবিপ্লবের নেশায় পেয়ে বসাটা স্বাভাবিক ঘটনা ছিলো।
,
এই বামপন্থীদের দুইটা ধারা ছিলো - ১. রুশপন্থী বাম, ২. চীনপন্থি বাম অথবা মাওবাদী/নাকশাল
রুশপন্থী বামরা ১৯৭১ এ এসে আওয়ামীলীগের মিত্র হয়ে যায় রুশ-ভারত চুক্তি এবং সোভিয়েত ইউনিওন থেকে গ্রীন সিগন্যাল পাওয়ার পর।
তবে চীনপন্থি বামরা মিত্র হতে পারে নাই, তবে তারাও বসে ছিলোনা। রুশপন্থী দের তুলনায় চীনপন্থিরা অনেক আক্রমণাত্মক ছিলো, এরা সবসময় বিশ্বাস করতো সহিংস আন্দোলন ছাড়া মুক্তি আসবেনা। এদের ইতিহাস অনেক রক্তাক্ত - শ্রেনীসংগ্রাম সফল করতে পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা, ব্যাবসায়ী, অনেক সময় সাধারন মানুষ কে মেরে তারা তাদের বিপ্লব সফল করার চেষ্টা করতো।
তবে চীনপন্থি বামদের অনেকেই ১৯৭১ এ পাকিস্তানকেও শ্রেণীশত্রু চিহ্নিত করে তাদের বিপক্ষে যুদ্ধ শুরু করে। আর যুদ্ধের সামরিক প্রস্তুতি তাদের আগে থেকেই ছিলো।
,
স্বাধীনতা যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হয়ে গেলে যুদ্ধের নেতৃত্ব চলে যেতে পারে এই মাওবাদী/নকশাল পন্থীদের হাতে - এই আশংকা ছিলো আওয়ামীলীগের মধ্যে যুদ্ধের সময়ে। আবার মুক্তিবাহিনীতে এই নাকশালবাদীরা ঢুকে যাচ্ছে, এরা ট্রেইনিং সহ অস্ত্র পেয়ে গেলে তা তাদের নাকশালবাদ কায়েম করতে কাজে লাগাতে পারে - এই অভিযোগ ছিলো ছাত্রলীগের।
ছাত্রলীগের একটা বড় অংশ ৭১ এ মুক্তিবাহিনীর অধীনে থেকে ট্রেইনিং ও যুদ্ধ করার বদলে দেরাদুনে RAW র অধীনে ট্রেইনিং নেয় এবং মুজিব বাহিনী নাম ধারন করে। এই মুজিব বাহিনীর নিয়ন্ত্রন করে প্রবাসী সরকার ও ওসমানী অনেক চেষ্টা করেন, কিন্তু মুজিব বাহিনী নাছোড়বান্দা যে তারা তাজউদ্দীন এবং ওসমানীর অধীনে যাবেনা। এমনকি একটা পর্যায়ে তারা মুক্তিবাহিনী কেও তাদের অধীনে দেওয়ার দাবী জানায়!
মুজিব বাহিনীকে নিজদের অধীনে রাখতে না পেরে জগোজিত সিং অরোরা পর্যন্ত অসন্তুষ্ট ছিলো। পরবর্তীতে RAW জেনারেল উবান সিং র অধীনে থাকা মুজিব বাহিনী আর মুক্তিবাহিনী নিয়ে একটা সমঝোতা হয় যে মুক্তিবাহিনী সীমান্ত এলাকার ২০ মাইলের মধ্যেই কেবল অপারেশন চালাবে, আর মুজিব বাহিনী দেশের অভ্যন্তরে যাবে গোপন মিশন সাকসেসফুল করতে।
,
এই মুজিব বাহিনী পরবর্তীতে অগাস্ট থেকে দেশের অভ্যন্তরে পাকিস্তানিদের সাথে যুদ্ধ করা এই বামপন্থীদের বিপক্ষে অস্ত্র ধরে। গুপ্তহত্যা সম্ভব হলে গুপ্তহত্যা, নাহলে সম্মুখ যুদ্ধ। নকশালদের দমন করার পিছনে ছাত্রলীগের পূর্ব শত্রুতাই একমাত্র কারন ছিলোনা, ভারত এবং RAW থেকেও গ্রীন সিগন্যাল ছিলো - কেননা ভারত এবং পশ্চিমবঙ্গ তেও এদের উতপাত ছিলো। আর আসল কথা হচ্ছে - স্বাধীন বাংলাদেশের ক্ষমতা কোনোভবে এন্টি-ইন্ডিয়ান মেন্টালিটির চীনপন্থি বামদের হাতে চলে যায় তাহলে ভারত এবং RAW র বাংলাদেশকে পাকিস্তান থেকে আলাদা করা আসল উদ্দেশ্যই বৃথা যাবে!
বামপন্থীদের পাশাপাশি কিছু এলাকায় মুক্তিবাহিনীর সাথেও সরাসরি সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এই মুজিব বাহিনী, মুক্তিবাহিনীর অস্ত্র লুট ও করে, মুক্তিবাহিনীর সদস্যরাও তাদের হাতে প্রান হারায়। উবান সিং এর মতে পাক বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করা এদের মিশন ছিলোনা, কিন্তু সামনে পড়লে যুদ্ধ করতে হতো (Phantos of Chittagong)।
,
বামপন্থী মুক্তিযোদ্ধা কিলিং মিশনে থাকা মুজিব বাহিনীর এই অংশটা ছিলো মূলত ছাত্রলীগের শেখ মনি গ্রুপ। মুজিব বাহিনীর অপর অংশ, ছাত্রলীগের সিরাজপন্থী গ্রুপ এই বামপন্থী কিলিং এ বাধা দিয়ে শেষদিকে কিছু সংঘর্ষ থামায়। তবে মুজিব বাহিনীর মধ্যেও ছাত্রলীগের এই দুই গ্রুপের সংঘর্ষ সেই যুদ্ধের সময়েও হয়! শেখ মনিপন্থী মুজিব বাহিনী যেখানে বামপন্থী কিলিং এ ছিলো, সিরাজপন্থী মুজিব বাহিনী নভেম্বর মাস পর্যন্ত শুধু ট্রেইনিং ই নিয়ে যায়, এদের যুদ্ধে অংশ নেওয়াটা মুক্তিবাহিনীর তুলনায় কিছুই না! এরা যুদ্ধের ট্রেইনিং নেওয়ার পাশাপাশি মুজিব বাহিনীর সদস্যদের সমাজতন্ত্রের দীক্ষা দিতো!
*১৬ই ডিসেম্বর যখন যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে তখন ঢাকা ও এর আশেপাশে মুজিব বাহিনীর সংখ্যাই ছিলো বেশি, কেননা মুক্তিবাহিনীর অপারেশন এরিয়া ছিলো সীমান্তের কাছে, আর মুজিব বাহিনী ছিলো সেন্টারে।
যুদ্ধের পর মুজিব বাহিনীর সবাই অস্ত্র জমা দেয়নাই, ছাত্রলীগের দুইভাগ হয়ে যায়, সিরাজপন্থী সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী ভাগটা জাসদ তৈরী করে বিরোধী বামপন্থী দল হিসেবে আবির্ভূত হয়। ১৯৭২-৭৫ এ রক্ষীবাহিনী, আওয়ামীলীগের সব সংঘর্ষ হয় এই জাসদ আর সর্বহারা পার্টির সাথে। এই দুই প্রধান বাম শক্তিকেই দমন-পীড়ন করা হয় ১৯৭২-৭৫ এ।
,
,
প্রতিটি বড় রাজনৈতিক দলের বুদ্ধিজীবী উইং থাকে - দলের ফিলোসফির প্রমোশন, ডিফেন্ডিং আর বাকিদের ছোট করার দায়িত্বে। এই বুদ্ধিজীবী উইং এ যারা থাকেন তারা সমাজের উচ্চশিক্ষিত কিংবা গণ্যমান্য ব্যাক্তি। এরা হয় জনপ্রিয় শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কবি, গায়ক, পরিচালক, চিত্রশিল্পী, অভিনয়শিল্পী। এরা সবসময় রাজনৈতিক দলের পদে থাকেনা, সদস্য ও হয়না। কিন্তু এদের বক্তব্যে সেই দলের ফিলোসফি প্রমোট হয় (সরাসরি তাদের দলের প্রশংসা কম হয়), এক্টিভিটি ডিফেন্ড হয়, প্রতিপক্ষকে সমালোচনা করা হয়। এরা যেহেতু নিজ ফিল্ডে সফল এবং জনপ্রিয়, এদের কথার একটা ভালো দাম থাকে।
মুক্তিযুদ্ধের আগেপড়ে শুধুমাত্র আওয়ামীলীগ না, এই বামপন্থীদের ও বুদ্ধিজীবী উইং ছিলো। বামদের মধ্যে পড়াশুনার প্রবনতা বেশি, সেসময়ের ভালো পড়াশুনা করা বুদ্ধিজীবী দের বামপন্থী হবার সংখ্যাটাও বেশি হবার কথা! এখনো অনেক উচ্চশিক্ষিত বুদ্ধিজীবী আছে যারা বামধারার অনুসারি। স্বাধীনতা পরবর্তী সিরাজ শিকদারের সর্বহারা পার্টি আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকলেও এদের বুদ্ধিজীবী উইং প্রকাশ্যে ছিলো। আহমদ ছফা, অধ্যাপক আহমেদ শরীফ এর অন্যতম।
এই বামপন্থী বুদ্ধিজীবীরা সংস্কৃতিমনা হন, ধর্ম থেকে দূরে থাকেন, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক/অরাজনৈতিক সংগঠন ও এদের কর্মীদের সাথে বৈরীতা থাকে।
,
১৪ই ডিসেম্বর নিহত হওয়া বুদ্ধিজীবীরা কি চীনপন্থি কমিউনিস্ট/বুদ্ধিজীবী ছিলেন?
-উত্তরটা আমি জানি না, এই সময়ে বসে জানার উপায় ও কম!
১৪ই ডিসেম্বর নিহত হওয়া বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে শহীদুল্লাহ কায়সারের রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে ধারনা, প্রুভ পাওয়া যায়। উনি কমিউনিস্ট ছিলেন, এবং ১৯৭০ সালে আওয়ামীলীগের সমালোচনাও করেন যে তাদের ৬ দফাতে দিনমজুর শ্রেনীর রুটিরুজির নিশ্চয়তা প্রদান সম্পর্কে কোনো দাবী নাই!
২ বছর আগে চ্যানেল ২৪ কে এক ইন্টার্ভিউতে শহিদুল্লাহ কায়সারের বোন বলেন তার ভাইকে ধরে নিয়ে মুখ ঢাকা সশ্রস্ত লোকগুলি এদেশিই ছিলেন। তবে এই ঘটনা ঘটনার সময় তার পরিবারের সবাই মিলে তাদেরকে বাধা দিচ্ছিলেন তখন আলমারির সামনে তাদের পরিবারের/বাসার/কাছের একজন মানুষকে সন্দেহজনক ভাবে নির্লিপ্ত দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অথবা অন্য কিছু করতে দেখে তিনি অনেক বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান! সেই মানুষটা কে তিনি তা কখনোই কাউকে বলেন নাই।
,
যাইহোক, ১৪ই ডিসেম্বরের জেনোসাইড একটা ওয়েল প্ল্যানড জেনোসাইড, এবং লিস্ট ধরে ধরে করা জেনোসাইড। যেই উচ্চশিক্ষিত, মেধাবী ও সফল ব্যাক্তিদের হত্যা করা হয় তাদেরকে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়টার কথা ভেবেই হত্যা করা হয় এখানে কোনো সন্দেহ নাই!
এখন তাদেরকে মারার জন্যে যেই লিস্টটা করা হইসিলো -
*সেই লিস্টটা কি তখনো দেশে এবং নিজ বাসায় থাকা সব সেক্টরে সফলদের সফলতা/মেধার ভিত্তিতে বানানো নাকি রাজনৈতিক মতাদর্শ অনুযায়ী বানানো?
*সফলতা/মেধার ভিত্তিতে বানানো হলে এদেরকে মারতে এতো দেড়ি করা হলো কেনো? মেধাবী/সফলদের মারার জন্যে ৯ মাস তো অনেক সময়ই ছিলো!
*তখনো শহরে থাকা মেধাবী/সফল ব্যাক্তিত্ব সবাই যদি একিসাথে ভিক্টিম নাহয়ে থাকে তাহলে বাকিরা সবাই কি আগেভাগেই দেশ ছেড়েছিলো অথবা আত্বগোপনে ছিলো?
*রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিত্তিতেই যদি এই লিস্ট করা হয়ে থাকে, তাহলে স্বাধীনতার আগে থেকেই যারা স্বাধীনতার পক্ষে কলম ধরতো তাদের সবাইই কি এদিন আক্রমনের শিকার ছিলো?
*এবং এই লিস্টের বাইরে যারা ছিলো অথবা সারভাইভিং বুদ্ধিজীবী যারা ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের আগে অথবা পরে তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ কোনদিকে ছিলো?
,
৫৩ বছর চলে গেলেও এই জেনোসাইডের সেই টার্গেট লিস্টটা বের করা সম্ভব হয়নাই। তবে একজন মানুষের কাছে সেই লিস্ট নাহলেও সেই প্ল্যানের তথ্য এসেছিলো - তিনি জহির রায়হান, এবং তিনিও এক্টিভ কমিউনিস্ট ছিলেন।
জহির রায়হান তার ভাইকে খুজতে গিয়ে নিখোজ হন বলে সর্বাধিক প্রচারিত, কিন্তু তার বোন দাবী করেন যে জহিরই নাকি বসার সবাইকে বোঝাতেন যে বড়দা (শহিদুল্লাহ কায়সার) কে মেরে ফেলা হয়েছে, সে আর ফিরবেনা!
প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্যমতে মিরপুরে বিহারিদের সাথে সংঘর্ষ চলার সময়ে জহির রায়হানকে মারা হয়। ঘটনা অখানেই শেষ হয়ে যেতো, যদিনা ১৯৯২ সালে সত্যজিৎ রায়ের সেই ইন্টার্ভিউটা প্রকাশিত হতো - সত্যজিৎ রায় ও শাহরিয়ার কবিরের আলাপের পর নতুন করে আবার সন্দেহের উদ্রেক হয়।
,
তবে নির্মম সত্য হলো যে জহির রায়হানের মৃত্যুর সাথে সাথে তার সংগ্রহ করা প্রমাণাদিও চিরতরে হারিয়ে যায়, প্ল্যানড জেনোসাইডের সেই লিস্টটা পাওয়ার সম্ভাবনাও হারিয়ে যায়।
এই প্ল্যানড জেনোসাইডের পিছনে কারা? পাকিস্তান বাহিনীর দোসর আলবদর বাহিনী নাকি যুদ্ধের সময়েও বামপন্থী মুক্তিবাহিনী মারা মুজিব বাহিনী?
- যুক্তি আলবদর বাহিনীর দিকে যাবে বেশি, মুজিব বাহিনীর দিকে নেওয়া কঠিন কারন আলবদর বাহিনীর কার্যক্রম তার আগে যা ছিলো তাদের দিকে আংগুল বেশি যায়। কিন্তু তারা আগে কেনো এই অপারেশন চালায় নাই সেটা প্রশ্ন থাকবে, যে তার শত্রু ছিলো সে তো আগেও শত্রু ছিলো।
অপরদিকে মুজিব বাহিনীর বামপন্থী মুক্তিযোদ্ধা মারার ইতিহাস অনেকেরই অজানা এবং কারোও কাছে ডাহা মিথ্যাচার!
,
,
যেই প্রশ্ন দিয়ে পোস্ট শুরু করেছি, সেটার উত্তর যেহেতু পাওয়া যাবেনা - এই বিতর্কের উত্তর তাই যার যেই সত্যটা গ্রহণযোগ্য মনে হয় সেটাই। তারা রাজনৈতিক মতাদর্শে যাই হোক না কেনো, তাদের পরিবার ও অনুসারিদের কাছে অনেক কিছু ছিলেন। সেই মেধাবীদের হত্যা করাটা আমাদের সেসময়ে পিছিয়ে দিয়েছিলো ঠিক, আমরা এরপর নিজেরা কতোটা মেধার আর মেধাবীদের মূল্যায়ন করতে পেরেছি সেটা হচ্ছে প্রশ্ন!!!
মেধাবীদের মেরে ভবিষ্যতের মেধাবীদের আটকানো যায়না, কিন্তু মেধাবীদের মূল্যায়ন না করলে মেধার বিকাশই তো ঘটেনা জাতিগত ভাবে . . . .