19/07/2025
পুঠিয়ায় অনুষ্ঠিত হলো ‘লস্কর’ সিনেমার শুভ মহরত
ইমাম হোসেন, ডিজিটাল-
বাংলাদেশের বাংলা সিনেমার জগতে নতুন আলো জ্বালাতে যাত্রা শুরু করলো সামাজিক সচেতনতামূলক চলচ্চিত্র "লস্কর"। লস্কর সিনেমার ক্যামেরার সামনে ও পেছনের সকল কলাকৌশলী দের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় লস্কর সিনেমার শুভ মহরত।
১৮ জুলাই, শুক্রবার, বিকেলে রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার পচামাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ প্রাঙ্গণে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো এই সিনেমার শুভ মহরত অনুষ্ঠান। এটি শুধু একটি সিনেমার সূচনা নয়—এটি একটি সম্ভাবনার বার্তা, সচেতনতার আহ্বান এবং ইতিহাসের মিশেল নিয়ে সমাজের পরিবর্তনের প্রত্যাশা। ইলমাস মুভিজের কর্ণধার ইলিয়াস হোসাইন প্রযোজিত ও তরুণ নির্মাতা আসাদুজ্জামান জনি পরিচালিত “লস্কর” সিনেমাটি বাংলাদেশের বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত সামাজিক বিষয়গুলো তুলে ধরবে বলেই আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।মহরত উপলক্ষে পচামাড়িয়া ডিগ্রি কলেজে পরিণত হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশে।বিকেল থেকেই জমে ওঠে অনুষ্ঠানস্থল। বর্ণাঢ্য সাজে সুসজ্জিত মঞ্চে হাজির হন প্রযোজক, পরিচালক, অভিনেতা, কলাকুশলী, সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই লস্কর সিনেমার মূল পোস্টার উন্মোচন করা হয়। এরপর একে একে বক্তব্য রাখেন সিনেমার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, যেখানে উঠে আসে সিনেমার কনসেপ্ট, উদ্দেশ্য ও সমাজে এর প্রভাব নিয়ে নানা গুরুত্বপূর্ণ দিক।
প্রযোজক ইলিয়াস হোসাইন বলেন,লস্কর শুধু একটি সিনেমা নয়, এটি আমাদের সমাজের প্রতিচ্ছবি। আমরা চেষ্টা করব এমন কিছু উপহার দিতে, যা দর্শকদের শুধু আনন্দ দেবে না, বরং ভাবতে শেখাবে, শিখতে উৎসাহ দেবে।”
পরিচালক আসাদুজ্জামান জনি জানান,লস্কর আমাদের মনের অনেক না বলা গল্প। আমরা চেয়েছি রাজশাহীর প্রতিভাবান শিল্পীদের নিয়ে একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে, যেখানে ইতিহাস, বাস্তবতা আর কল্পনা মিলেমিশে গড়ে উঠবে এক ব্যতিক্রমধর্মী চলচ্চিত্র।
তিনি আরও বলেন, “এই সিনেমায় অংশ নেবেন এক হাজারেরও বেশি সিনেমায় অভিনয়কারি অভিনয়শিল্পী, যার মধ্যে রয়েছেন নামকরা অভিনেতা গুলজার খান সহ আরও অনেকেই। রাজশাহীর মাটিতেই গড়ে উঠবে একটি নতুন সিনেমার ইতিহাস।
কারিগরি সহায়ক হাসমত হাসু জানান, লস্কর সিনেমা শুটিং করার জন্য আমাদের সকল প্রস্তুতি শেষ, আগামীকাল সকাল থেকে লস্কর সিনেমার শুটিং শুরু করবো আমরা। এবং খুব শিগগিরই শুটিংয়ের কাজ শেষ করে উপহার দেবো আপনাদের লস্কর সিনেমা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান সহকারী পরিচালক রাসেল আহমেদ, চিত্রনাট্যকার গিয়াস উদ্দিন, কারিগরি সহায়ক হাসমত হাসু, অভিনেতা আনসার, সাংবাদিক বজলুর রশিদ, আরজে রাকিব, ইমাম হোসেন, মিঠন হোসেন, ইমন হোসেন, বারফি, ইমন আলী, নাইমুর হায়দার ইমন সহ অনেকেই।
তারা সবাই জানান, “লস্কর” একটি সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এটি শুধু বিনোদন নয়, বরং একটি সামাজিক বার্তা হয়ে দর্শকদের হৃদয়ে দাগ কাটবে।
পচামাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য “লস্কর” সিনেমা একটি গর্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে। স্থানীয় সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পরিচালক জনি ও কারিগরি সহায়ক হাসু আমাদের গ্রামের সন্তান। তাদের এই প্রয়াস আমাদের জন্য গর্বের। আমরা তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করব এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের উদ্যোগে আরও সম্পৃক্ত হব।
অনুষ্ঠানস্থলে দর্শকদের মধ্যে ছিলো ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা, উচ্ছ্বাস এবং প্রত্যাশা। অনেকেই বলছিলেন, এমন আয়োজন যেন নিয়মিত হয়, রাজশাহীর মাটি থেকে উঠে আসুক আরও অনেক সচেতনতামূলক সিনেমা। পরিচালক ও নির্মাতা দলের পক্ষ থেকে জানা গেছে, “লস্কর” একটি ইতিহাসনির্ভর সামাজিক নাট্যচলচ্চিত্র। এতে স্থান পাবে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, সামাজিক অবক্ষয়, মানবাধিকার, নারী-পুরুষ বৈষম্য, এবং জাতীয় ইতিহাসের ছায়া।
এই সিনেমায় কল্পনার রঙে রাঙানো হলেও তার ভিত্তি গড়ে উঠেছে আমাদের বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা ও সচেতনতার জরুরী বার্তা নিয়ে।
রাজশাহীর মাটিতে দাঁড়িয়ে শুরু হলো এক নতুন সিনেমার স্বপ্নযাত্রা। “লস্কর” শুধু একটি চলচ্চিত্র নয়, এটি একটি চেতনা, একটি আন্দোলন, যা সিনেমার ভাষায় সমাজকে নতুন বার্তা দেবে। এই উদ্যোগকে ঘিরে যেমন স্থানীয় মানুষের মধ্যে গর্ব কাজ করছে, তেমনি সিনেমাপ্রেমীদের মাঝে জন্ম নিয়েছে এক নতুন প্রত্যাশা।
এখন সবার চোখ সিনেমার মূল কাজের দিকে। দর্শকরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, কবে পর্দায় আসবে "লস্কর", কবে তারা দেখতে পাবে সেই গল্প—যা শুধু দেখাবে নয়, ভাবাবে, শেখাবে, ও জাগাবে। অনুষ্ঠান শেষে সকলের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।