22/03/2024
প্রায় প্রত্যেক মুসলমানকে যদি প্রশ্ন করা হয় যে, ইবলিসকে আল্লাহ্ কেন বিতাড়িত শয়তান করেছিল, তাহলে দেখবেন সবাই একটাই কথা বলবেঃ ইবলিস আল্লাহর হুকুম অমান্য করেছিল।
কিন্তু একটু মাথা খাটিয়ে দেখেন, আল্লাহর হুকুম আমাদের আদি পিতা হযরত আদম (আঃ)-ও অমান্য করে নিষিদ্ধ ফল খেয়েছিলেন। আমরাও প্রতিদিনই আল্লাহর হুকুম অমান্য করে যাচ্ছি! কিন্তু আল্লাহ্ শুধু ইবলিসকেই শয়তান করেছেন। কেন জানেন? সব প্রশ্নের উত্তর যে বইয়ে আছে আমাদেরকেও সেই বইয়েই ফিরে যেতে হবে এর উত্তর জানার জন্য। সেই বই হলো কুর’আন। খেয়াল করে পড়েনঃ
1. “এবং যখন আমি ফেরেশতাগণকে বলেছিলাম যে, তোমরা আদমকে সিজদা কর, তখন ইবলিস ব্যতীত সকলে সিজদা করেছিল; সে অগ্রাহ্য করলো ও অহংকার করলো এবং কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।” [সূরা বাকারাহ (২), আয়াত ৩৪]
2. “আল্লাহ্ বললেনঃ এ স্থান থেকে নেমে যাও, এখানে থেকে তুমি অহংকার করবে তা হতে পারে না; সুতরাং বের হয়ে যাও, নিশ্চয়ই তুমি নীচ ও লাঞ্ছিতদের অন্তর্ভুক্ত।” [সূরা ‘আরাফ (৭), আয়াত ১৩]
একটা খুব সাধারণ ব্যাপার খেয়াল করেছেন কি যে, আল্লাহ্ যখন ইবলিসকে বিতাড়িত শয়তান করলেন, তখন কি বলে করেছিলেন? আল্লাহর কথা অমান্য করেছেন বলে ইবলিসকে শয়তান করেননি, তাকে শয়তান করেছেন অহংকার করার জন্য। কুর’আন ভালমত পড়ে দেখেন, দাম্ভিকতা, অহংকার, নিজেকে বড় মনে করা এসব আল্লাহর খুবই অপছন্দের জিনিস।
কত অপছন্দের জানেন? আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ "সরিষার দানা সমপরিমাণ অহংকারও (সামান্যতম) যার অন্তরে আছে সে জান্নাতে যেতে পারবে না। আর সরিষার দানা সমপরিমান ঈমানও যার অন্তরে আছে সে জাহান্নামে যাবে না।” (জামে তিরমিযী ১৯৯৮)
তখন একজন বলল, "আমার নিকট এটা তো খুবই পছন্দনীয় যে, আমার জামা-কাপড় সুন্দর হোক এবং আমার জুতা জোড়াও সুন্দর হোক”।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ "আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। কোন ব্যক্তির সদৰ্পে সত্যকে প্রত্যাখ্যান করা এবং মানুষকে তুচ্ছজান করাই হলো অহংকার”। (জামে তিরমিযী ১৯৯৯)
এই হাদিসের একটা ব্যাপার মনে হয় ধরতে পেরেছেন যে, সত্যিকারের ঈমানদার যারা, তাদের কোন অহংকার থাকে না।