21/05/2025
এক ঈদে ১০ সিনেমা — কতটা যুক্তিসঙ্গত?
বাংলাদেশে বর্তমানে হাতে গোনা প্রায় ১৫০টি সিনেমা হল রয়েছে—সিঙ্গেল স্ক্রিন ও মাল্টিপ্লেক্স মিলিয়ে। এই সীমিত সংখ্যক হলে এবার কোরবানির ঈদে মুক্তির জন্য উঠে পড়ে লেগেছে মোট ১০টি সিনেমা! বাস্তবতা হলো, এত কম সংখ্যক হলে একসাথে ১০টি সিনেমা রিলিজ মানেই বেশিরভাগ সিনেমার জন্যই ব্যাপারটা সুখকর হবে না।
🔳 তাণ্ডব :- মেগাস্টার শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’ অনেক আগেই ঈদের ডেট লক করেছে। ঈদের মতো উৎসবমুখর পরিবেশে এমন একটি বড় বাজেটের কমার্শিয়াল মুভিই দর্শকদের চাহিদা পূরণ করতে পারে। টিজারেই যে হাইপ তৈরি হয়েছে, তাতে এই সিনেমাই ১৩০+ হল নিয়ে নিবে।
🔳 ইনসাফ :- তাণ্ডবের পর দর্শকদের কৌতূহলের কেন্দ্রে রয়েছে ‘ইনসাফ’। পোস্টার এবং প্রোমোশনাল কনটেন্ট ইতিবাচক রেসপন্স পেয়েছে। যদিও শুরুতে হাতেগোনা কিছু হলে জায়গা পাবে, তবে কন্টেন্ট ভালো হলে ‘জংলি’র মতো লং রানও করতে পারে।
🔳 নীলচক্র :- আরিফিন শুভ অভিনীত এই সিনেমা থেকেও আশার আলো দেখা গিয়েছিল, কিন্তু এক বিশেষ কারণে সিনেমাটি নিয়ে দর্শকের আগ্রহ খুবই কম। শুভ থাকা সত্ত্বেও কেন সিনেমাটি আলোচনায় নেই, তা দর্শকরা নিজেই ভালো করে জানেন।
🔳 উৎসব ও নাদান :- এই দুই সিনেমার পোস্টার ও কাস্টিং মানসম্মত হলেও, সিঙ্গেল স্ক্রিনে জায়গা পাওয়া কঠিন। সম্ভবত কিছু সিনেপ্লেক্সে সীমিত শো নিয়েই থাকতে হবে। শুধুমাত্র ক্লাস শ্রেণির দর্শকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে এই দুটি সিনেমা।
🔳 বাকি পাঁচটা সিনেমা—ঈদের জন্য আদৌ উপযুক্ত?
আদর আজাদের ‘টগর’, বাঁধনের ‘এশা মার্ডার’, নিরবের ‘শিরোনাম’, রোশানের ‘সর্দারবাড়ির খেলা’ সহ আরও কয়েকটি সিনেমা ঈদে মুক্তির জন্য মরিয়া হলেও, এদের মধ্যে অনেক সিনেমা হল-ই পাবে না। কারণ, বাস্তবতা হলো—তাণ্ডব কিংবা ইনসাফের মতো সিনেমা ফেলে দর্শক ‘টগর’ বা ‘শিরোনাম’ দেখতে হলে যাবে না। ঈদের সময় এমনিতেই দর্শক চায় বিনোদন এবং বড় ক্যানভাসের অভিজ্ঞতা। এটা বলছিনা যে এই সিনেমাগুলোর মান খারাপ। হয়তো এই সিনেমাগুলোর কন্টেন্ট অনেক ভালো তবে এখন রিলিজ দেয়া মানে নিজের পায়ে নিজেরই কুড়াল মারা।
✍️CrackedFlix
😅 সুপারস্টার রাসেলের ‘গোয়ার’ :- সবশেষে বলতে হয়, ঈদে আরও একটি সিনেমা আসছে—‘গোয়ার’। এই সিনেমা নিয়ে বলতে গেলে বলতে হয়, এটি হয়তো বানানোই হয়েছে "গো**য়া" মারানোর উদ্দেশ্যে! এমন সিনেমা দেখানোর মতো হলও দেশে বিরল।
🔳 একটা বাস্তবতা বুঝতে হবে :- যেখানে আমাদের দেশের হল সংখ্যা মাত্র ১৫০, সেখানে একসাথে ১০টি সিনেমা মুক্তির কোনো যুক্তি নেই। আমাদের ইন্ডাস্ট্রির স্কেল ছোট, তাই সিনেমা রিলিজের ক্ষেত্রেও পরিকল্পিত এবং স্ট্র্যাটেজিক অ্যাপ্রোচ নেওয়া জরুরি।
বিশ্বের অন্য কোনো বড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও ঈদ বা উৎসবকেন্দ্রিক সময়ে ১০ সিনেমার মেগা ক্ল্যাশ হয় না। বড়জোর ৩-৪টা সিনেমা রিলিজ হয় যাতে প্রত্যেকটির একটা ন্যায্য জায়গা থাকে, ব্যবসার সম্ভাবনাও থাকে।
ওভারঅল ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচাতে হলে কন্টেন্টের পাশাপাশি মুক্তির ক্যালেন্ডারেও সচেতনতা দরকার। না হলে, এতগুলো সিনেমা বানিয়ে শেষমেশ হল না পেয়ে ‘মেমে মেটারিয়াল’ হয়েই থেকে যাবে সিনেমাগুলো।
✍️CrackedFlix