27/03/2025
আসেন এক জমিদারের নাতির পারিবারিক কাহিনী শুনি।
সেই কথিত জমিদারের নাম তজির উদ্দিন, বাড়ি পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারি উপজেলার ৩ নং আলোয়াখোয়া ইউনিয়নে। এলাকার মানুষজন তাকে চিনতো “জুয়ারি তজির” নামে। তার নেশাই ছিলো জুয়া খেইলা বেড়ানো। তবে সেই জুয়া খেইলাও ভাগ্যের কোন খুব বেশি পরিবর্তন করতে পারেন নাই। ভিটে বাড়ি আর সাকুল্যে ৩/৪ বিঘা কৃষি জমিই ছিলো তার মোট সহায় সম্পত্তি। শেষ বয়সে অনেক কস্টে জীবন কাটাইসেন, কেননা তার ছয় সন্তানের কেউই তার দেখভাল করে নাই।
তজির উদ্দিন ও তার স্ত্রী আকেদার তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। ছেলেদের নাম রাজু, সাজু এবং শাহজাহান। মাশাল্লাহ তিনজনের একজনেরও স্থায়ী আয় উপার্জনের কোন বন্দোবস্ত নাই। টুকটাকা কৃষিকাজ আর এদিক সেদিক দালালি করে জীবন ধারণ করতো। মান্ধাতার আমলের টিনের ঘরে ছিলো তাদের বসবাস। মেঝ পোলা সাজু মিয়ার ঘরেই জন্ম নেয় আমাদের আলোচিত জমিদারের নাতি সারজিস আলম।
সারজিসের নানাবাড়ি নোয়াখালী। স্বভাবতই প্রশ্ন আসতে পারে সাজু মিয়া লক্ষীপুর থেকে নোয়াখালী গিয়ে কিভাবে বিয়ে করলো? আসলে সাজু মিয়া যায় নাই। সারজিসের নানা মক্তবের হুজুর হিসেবে সারজিসদের এলাকাতেই থাকতো। উনার মেয়ে বাকেরাকে বিয়ে করে সারজিসের বাবা। তবে বিয়েটা সাধারণ বিয়ে ছিলো না, ছিলো সালিশী বিয়া। কারণ সারজিস তখন তার মায়ের পেটে। আর গভীরে গেলাম না, বুদ্ধিমানের জন্য ইশারাই কাফি!
সারজিসের বাবা চলতো মূলত দালালি করে। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, ভিজিএফ কার্ড, আশ্রয়ন প্রকল্পের বাড়ি এসব পাইয়ে দিবে বলে এলাকার নিরীহ লোকজনের থেকে টাকা নিয়ে মেরে দেয়াই ছিল তার মূল পেশা। ভুক্তভোগী অনেকে উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ইউএনও এর কাছে লিখিত অভিযোগও করসে এটা নিয়ে। এর পাশাপাশি লুচ্চামি এবং লাম্পট্যের জন্যও উনি বিখ্যাত। বছর দুয়েক আগেও ক্লাস নাইনের এক মেয়েকে চাপে পড়ে বিয়ে করে ঘরে তুলসিলো, কিছুদিন পর আবার তাড়িয়েও দিসে।
সারজিস পড়াশোনা করসে পাল্টাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। বাপের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ক্লাস নাইনে থাকতেই এক মেয়ের সাথে ইটিশ পিটিশ করার কারণে সালিশ-দরবার তার বিরুদ্ধেও হইসিলো। এসএসসি পাশ করার পর মানুষজনের অনুদানের টাকায় বিএএফ শাহীন কলেজে পড়তে ঢাকায় আসে। কলেজে পড়াকালীন থাকতো মেসে, চারজন মিলে এক রুম শেয়ার করে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ৫ই আগস্ট পরবর্তী সেই জমিদারের নাতি সারজিসকে আপনারা সবাই চিনেন এবং জানেন।
এবার সারজিসের বর্তমান হাল হকিকত নিয়ে কিছু বলি। ৫ই আগস্টের পর আলাদিনের চেরাগ পাওয়া সারজিসকে আর ঠেকায় কে? তার পরিবারকে পঞ্চগড় থেকে ঢাকায় নিয়ে আসছে। তাদের ঢাকায় এখন দুইটা বাসা। একটা এলিফ্যান্ট রোডের তেলের পাম্পের পাশে এবং আরেকটা সেগুন বাগিচায়। কিছুদিন আগে বিয়ে করসে স্কুল পড়ুয়া এক মেয়েকে, স্বভাবতই যেটা বাল্যবিবাহ হবার কথা। এর আগে অবশ্য ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া এক মেয়ের (সঙ্গত কারণেই নাম গোপন রাখলাম) সাথে দীর্ঘ প্রেমের সম্পর্ক ছিলো, মেয়ের বাবার নাম হামিদুল। হাতে টাকা কড়ি আসার পর সেই মেয়েকে বাদ দিয়ে বাচ্চা এক মেয়েকে বিয়ে করসে। সার্বক্ষনিক চলাচল করে হাইব্রিড এস্কোয়ার ব্রান্ডনিউ গাড়িতে। মাঝে মাঝে ল্যান্ডক্রুজারেও চড়তে দেখা যায়।
সারজিসের বাপ ও চাচাদের দাপটে এলাকার মানুষজনের নাভিশ্বাস উঠার অবস্থা। বিশেষত যারা অভিযোগ করসিলো সেই ভুক্তভোগীরা এলাকাছাড়া। সারজিসের বাপ তো এখন বড় লেভেলের দালাল। পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সচিবালয়ে নানান তদ্বির, টেন্ডারবাজি, কমিশন আর বদলি বাণিজ্য করেই দিন কাটে তার। সারজিসের দুই মামা সুজন আর সুমনও সারজিসের কল্যাণে করে পিঠে খাচ্ছে। আর নিজে কি পরিমান কামাইসে সেটার হিসাব বের হইতে বেশিদিন সময় লাগবে না। দেখা যাবে তাদের কেউই প্রকাশ কইরা দিল ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে!
এই হইলো আমাদের জমিদারের নাতি সারজিস আলমের আমলনামা। আর সে কিনা ফেসবুকে বক্তব্য দেয় তার দাদা যে পরিমাণ সম্পদ রেখে গেসে তা দিয়ে একটা ইলেকশনও করে ফেলতে পারবে! অল্প বয়সে একটা পোলা এতো বড় বাটপার কেমনে হয় সেটা নিয়ে কিছুটা দ্বিধায় ছিলাম। বাপের ঠিকুজি পাওয়ার পর সেই দ্বিধা ভঙ্গ হইসে। এ তো এক্কেরে বাপকা বেটা, সিপাইকা ঘোড়া। ভন্ডামি আর বাটপারি জন্মগত ভাবেই নিয়ে আসছে, বাকিটা ডাস্টবিন শফিকের ট্রেনিং!
(আপনি যা বলসেন তার প্রমাণ কি? উপরে ঠিকানা ঠিকুজি সব দেয়া আছে, ইচ্ছা থাকলেই খোঁজ নিতে পারবেন। আর নাইলে জমিদারের নাতিকে বলেন তার বাপ-দাদার ইনকাম ট্যাক্স ফাইলটা প্রকাশ করতে)