20/05/2022
দুমকিতে সংখ্যালগুর কান্ড ওসির নিষেধ অমান্য করে রাতের আঁধারে জমি দখল তৃতীয় পক্ষের নামে মামলা।
পটুয়াখালীর দুমকিতে রাতের আঁধারে তালা কেটে জায়গা ও দোকান ঘর দখল। এ নিয়ে দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সামনে হিন্দুদের ধস্তাধস্তি ও জাবরদস্তির ঘটনায় জমির ক্রেতা তৃতীয় পক্ষের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ মে) দুমকি থানায় জমির বৈধ ক্রেতা তৃতীয় পক্ষ জসীম উদ্দিন বাদলসহ ১২ জনের নামে মামলা দায়ের করে প্রথম পক্ষ ত্রিনাথ চন্দ্র শীল।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়,পটুয়াখালী দুমকি উপজেলায় হল পট্টি এলাকায় বাদল মৃধার ক্রয় সূত্রে মালিকানা প্রাপ্ত দোকান ঘরের প্রায় ১০টি তালা ভেঙ্গে দখল করে স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বী সংখ্যা লঘু প্রথম পক্ষ অনীল চন্দ্র ও বিরেন চন্দ্র শীলের গংরা।
গত শুক্রবার (১৩ মে) রাতের আঁধারে দোকান ঘরের তালা ভেঙ্গে প্রবেশ করে অভিনব কায়দায় বসবাস শুরু করে প্রতিপক্ষ অনিল চন্দ্র শীলের ছেলে তৃনাত চন্দ্র শিল ও লিটন চন্দ্র শিল এবং বিরেন চন্দ্র শীলের ছেলে গৌতম চন্দ্র শিল, বিপ্লব চন্দ্র শিল, রিপন চন্দ্র শিল ও বিশ্ব জিত শিল।
তবে জমির মালিক বাদল মৃধা পটুয়াখালী পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেলে পুলিশ সুপার, দুমকি থানা অফিসার ইনচার্জ আবদুস সালামকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। সাতদিন দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও ওসি কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি। ওসির দায়িত্ব অবহেলা এবং গড়ি মসির কারণে এই ঘটনা এপর্যন্ত পৌঁছায় বলেও দাবি করেন স্থানীয়রা সহ জমির মালিক।
এদিকে ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় গত কাল বুধবার (১৮ মে) দিবাগত রাতের সন্ধ্যায় দুমকি থানার ওসি আব্দুস সালাম ও তার সঙ্গীয় ফোর্সের সামনে সনাতন ধর্মাবলম্বী দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়ে একপর্যায়ে ধস্তাধস্তি হয়।পরে পুলিশ লাঠি চার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরে এই ঘটনার দখলদার সনাতন ধর্মাবলম্বীর একপক্ষ জমির ক্রেতা তৃতীয় পক্ষের নামে থানায় মামলা দায়ের করে।
ঘটনার সূত্রপাত; ২০১৭ সালের ২৭ আগস্ট ১০২০ নং দলিল মূলে পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলার ২৫ নং জেএল এর ১২ নং খতিয়ানের ১২৫ নং দাগে ১ দশমিক ৮০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন একই এলাকার কেতাব আলী আকনের ছেলে জসিম উদ্দিন বাদল।
জমির ক্রয়ের পরেই সরকারি বিধি মোতাবেক খাজনা পরিশোধ করে জসিম উদ্দিন বাদল ভোগ দখল করে আসছিলো। এর আগে ২০১৮ সালে সনাতন ধর্মাবলম্বী প্রথম পক্ষ অনীল চন্দ্র ও বিরেন চন্দ্র শীলের গং বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু মামলা চলমান অবস্থায় তারা গভীর রাতে বন্ধ দোকানের তালা ভেঙে নারী ও কিশোরীদের নিয়ে প্রায় ৮/১০ জন জরাজীর্ণ ঘড়ে বসবাস শুরু করে।
স্থানীয় থানা ও ব্যক্তিবর্গের কথায় কান না দিয়ে ধর্মাবলম্বী প্রথম পক্ষ অনীল চন্দ্র ও বিরেন চন্দ্র শীলের গংরা দোকানের ভিতরেই বসবাস করে আসছিলো। গতকাল সন্ধ্যায় সনাতন ধর্মাবলম্বী ও জমির মূল অংশীদার সুশীল চন্দ্র শীল ও কালীদাস চন্দ্র শীল বিরোধীয় সম্পত্তিতে প্রবেশ করতে চাইলে ঐ স্থানেই হট্টগোল বাঁধে। এসময় স্থানীয়রাও শান্তি ভঙ্গ ও উশৃংখল পরিবেশ সৃষ্টি করায় অনীল চন্দ্র ও বিরেন চন্দ্র শীলের গংদের বিরুদ্ধে চড়াও হয়। পরে পুলিশ লাঠি চার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে দুমকি থানার ওসি আব্দুস সালাম বলেন, আমরা এই বিরোধের সব কিছু জানি। আমরা ত্রিনাথ বাবুকে একাধিক বার ডেকেছি, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পক্ষ আসলেও প্রথম পক্ষ তার ডাকে তারা থানায় আসেনি। তবে রাতের আঁধারে তালা ভেঙে দোকান দখল করছেন এই অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, টিনের দোকানের মধ্যে ঘরে নারী, বৃদ্ধ ও কিশোরীদের নিয়ে উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে অবস্থান করে শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
বিজ্ঞ আদালতে মামলা চলমান থাকায় আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারছিনা। দোকান বা জায়গায় কারা থাকবে, এবিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন আমরা নয়।
তবে এখানে যাতে শান্তি ভঙ্গ না হয় সে বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিবো, ইতিপূর্বে যে ঘটনা ঘটেছে তাতে একপক্ষ মামলা দায়ের করেছেন, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।