
25/09/2024
আমরা প্রায়ই আফসোস করি- ‘ইশ! কাজটা করতে ভুলে গেলাম। একদমই মনে ছিলো না।’ 🤦🏼♂️🙆♂️
আমরা সাধারণত যেসব কাজ করতে ভুলে যাই সেগুলো হলো ছোটো কাজ। পরে করবো ভেবে আর করা হয় না। এসব কাজ করার জন্য একটা নিয়ম আছে। এটাকে বলে ‘টু মিনিটস রুল’।
যে কাজ করতে দুই মিনিট লাগে, সেই কাজ ফেলে না রাখা। সাথে সাথে করে ফেলা। এতে করে ঐ কাজ ভুলে যাবার সম্ভাবনা নেই।
✅‘২ মিনিটের কাজ’ নিয়মটি কাজে লাগিয়ে আমরা যেসব কাজ করতে পারি:
১. কাউকে ফোন দেবার কথা। দেবো দেবো বলেও দেয়া হয় না। হঠাৎ যখন মনে পড়বে তাকে ফোন দেয়া দরকার, তখন সময় বিবেচনা করে সাথে সাথেই ফোন দিলে আর ভুলে যাবার সম্ভবনা নেই।
২. মা-বোন-স্ত্রী ফোন দিয়ে বলেছেন তার মোবাইলে রিচার্জ করে দিতে। ফোন রেখে চিন্তা করছেন একটু পর দিবেন বা রাতে দিবেন। পরে দেখা গেলো ভুলে গেছেন। এই কাজটাও ফেলে না রাখা। ফোন রাখার পরপরই বিকাশ/রকেটে ঢুকে রিচার্জ করে দিন।
৩. কেউ আপনাকে ম্যাসেজ দিলো। সিন করেছেন। পরে রিপ্লাই দিবেন বলে রেখে দিয়েছেন। ৩-৪ দিন পর হঠাৎ মনে পড়বে- আরে রিপ্লাই দেয়া হলো না! স্বাভাবিক কথোপকথন বা কাউকে কিছু জানানো, জিজ্ঞেস করার জন্য ম্যাসেজ দিলে সাথে সাথে রিপ্লাই দিন। ফেলে রাখলে পরবর্তীতে ভুলে যেতে পারেন কী বলতে চেয়েছিলেন।
৪. প্রতিদিন ভাবেন এক্সারসাইজ করবেন, খাওয়া শেষে হাঁটবেন। কিন্তু, ‘সময়ের অভাবে’ হাঁটা হয় না। আপনি ২ মিনিটের কাজ হিশেবে এটা মাথায় নিন। খাওয়া শেষে ২ মিনিট হাঁটবো। এভাবে যখন চিন্তা করবেন, তখন সেটাকে আর ‘চাপ’ মনে হবে না। ২ মিনিট হেঁটে হয়তো কিছুই হবে না, কিন্তু অভ্যাস গড়ে তুলতে পারবেন। আস্তে আস্তে সেটা বাড়াতে পারেন।
৫. অনেকেই জামায়াতে নামাজ মিস করেন বা এক/দুই রাকআত নামাজ ছুটে যায়। এসব ক্ষেত্রে চিন্তা করুন, আজ অন্যদিনের চেয়ে ২ মিনিট আগে বাসা থেকে বের হবো। ৫/১০ মিনিট আগে বের হবার প্ল্যান করলে হয়তো বাস্তবায়ন করতে অনেক কষ্টকর মনে হতে পারে। কিন্তু, ২ মিনিট আগে চিন্তা করলে সহজ হবে।
৬. অনেকেই রমযান মাস ছাড়া কুরআন পড়ার ‘সময়’ (!) পান না। সারাবছর এতো এতো কাজ করেন, আল্লাহর কালাম পড়ে দেখার সুযোগ হয় না। এমন ব্যস্ত মানুষজন চাইলে প্ল্যান করতে পারেন- “আজ ২ মিনিট কুরআন পড়বো।”
দুই মিনিটে কী পড়তে পারেন? কুরআনের ছোট্ট একটা সূরা, আয়াতুল কুরসি বা অর্থসহ একটা আয়াত।
দিনের ১৪৪০ মিনিটের মধ্যে মাত্র ২ মিনিট কুরআন পড়ার জন্য সময় বের করা কোনো ব্যাপার না। কিন্তু, একটানা এক সপ্তাহ এভাবে ২ মিনিট সময় বের করলে দেখবেন একসময় ২ মিনিট ২০ মিনিটে রূপ নিবে।
৭. কারেন্টের বিল এখন অনেকেই ‘অটো পে’ করে রাখে। ব্যাংকে গিয়ে দেয় না, অতিরিক্ত সময় লাগে না। আলসেমির কারণে অনেকেই অটো পে অন করে রাখতে পারে না। একদিন সময় নিয়ে এই ধরনের কাজগুলো শিখে নিন। ২ মিনিটের শিক্ষা প্রতি মাসে আপনার ২০ মিনিট সময় বাঁচাবে।
৮. যারা শিক্ষার্থী, তাদেরকে শব্দার্থ, ভকাবুলারি শিখতে হয়। এছাড়াও মুখস্থ করতে হয় কিছু কিছু জিনিস। পড়ার সময়ের বাইরে চিন্তা করুন- আমি আজ ডিকশনারি বের করে ২ মিনিট চোখ বুলাবো। দ্যাটস ইট।
৯. অনেকের বই পড়ার অভ্যাস নেই। প্রতিদিন বই পড়ার সুযোগ হয় না। টেবিলের ওপর, কাজের জায়গায়, কলেজ ব্যাগে একটা বই রাখুন। প্রতিদিন চেষ্টা করুন পড়ি বা না পড়ি ২ মিনিট বইটি উল্টেপাল্টে দেখবো। তখন দেখবেন হঠাৎ মজার কোনো চ্যাপ্টার চোখে পড়বে, পড়তে ইচ্ছে করবে।
১০. আমরা এতো ব্যস্ত, নিজেকে সময় দিতে পারি না। চিন্তার জন্য সময় দেই না, সারাক্ষণ কাজ করে যাই। অফিসে বসে আছেন বা পড়ার টেবিলে বসে আছেন, অনেকক্ষণ কাজ করার পর ২ মিনিটের জন্য চোখ বন্ধ করুন। নির্দিষ্ট কিছু চিন্তা করার দরকার নেই। চোখ বন্ধ করলে কিছু দেখতে পারবেন না, কিন্তু চিন্তার জগৎ তখন খুলে যায়। নিজেকে রিভিউ করার সুযোগ আসে, নতুন প্ল্যান মাথায় আসে।
‘২ মিনিটের কাজ’ –এর দশটা উদাহরণ দেয়া হলো। কিন্তু, আপনার কাছে এরকম অনেক উদাহরণ আছে যার আলোকে নিজের জীবন সুন্দর করতে পারেন, নিজের সময় বাঁচাতে পারেন। আপনি আপনার মতো করে ২ মিনিট কাজে লাগান। দেখবেন জীবনটা সুন্দর হবে।
লেখাটি পড়ে উপকৃত হলে অন্যদেরকেও উপকৃত হবার সুযোগ দিন। Share করুন। ❤️