
28/11/2024
⭐ যে সাহাবি #নবীজিকে হুবহু অনুসরণ করতেন ⭐
আবু মুসা (রা.)-এর জীবন ছিল রসুলুল্লাহ (স.)-এর জীবনের প্রতিচ্ছবি। সব সময় তিনি চেষ্টা করতেন নবীজির (স.) প্রতিটি কাজ ও আচরণ হুবহু অনুসরণ করতে। রমজানের রোজা ছাড়াও তিনি নফল রোজা রাখতেন। এ ছাড়া তিনি আশুরার রোজা রাখতেন এবং মানুষকে তা রাখতে বলতেন।
তিনি ছিলেন ইয়েমেনের অধিবাসী। সেখানকার আল আশয়ার গোত্রের সন্তান হওয়ায় তিনি আল আশয়ারি হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেন। প্রচণ্ড গরমের সময়ও তাকে রোজা রাখতে দেখা যেত।
👉 তিনি বলতেন, ‘হয়ত দুপুরের গরমের তৃষ্ণা কিয়ামতের দিনে আমাদের জন্য প্রশমিত হবে।’
মুস্তাহাবের প্রতিও তিনি ছিলেন খুবই যত্নবান। কোরবানির পশু নিজ হাতে জবাই করা মুস্তাহাব। এ কারণে তিনি তার কন্যাদেরও হুকুম দিতেন নিজ হাতে পশু জবাই করার জন্য।
হজরত আবু মুসা (রা.) জীবনের শেষ পর্যন্ত রসুলুল্লাহ (স.)-এর আদেশ ও নিষেধ পালনে অত্যন্ত সচেতন ছিলেন। জীবনের শেষ দিকে তার অবস্থা যখন সংকটজনক হয়ে পড়ে এবং তিনি চেতনা হারিয়ে ফেলেন, তখন নারীরা কান্নাকাটি শুরু করেন। সেই কঠিন মুহূর্তেও ক্ষণিকের জন্য চেতনা ফিরে পেলে তিনি বলেন, ‘রসুলুল্লাহ (স.) এভাবে বিলাপ করতে নিষেধ করেছেন’।
নবীজির বিখ্যাত এই সাহাবির মধ্যে এ গুণ পরিপূর্ণরূপে ছিল। রাতে ঘুমানোর সময়ও তিনি বিশেষ ধরনের পোশাক পরে নিতেন, যাতে সতর (শরীরের সেসব অংশ অপরের সামনে ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক) উন্মুক্ত না হয়ে যায়। আবু মুসা (রা.) ছিলেন অত্যন্ত সরল ও সাদাসিধে প্রকৃতির। প্রথম জীবনে দারিদ্রতা ছিল তার নিত্যসঙ্গী। তবে পরবর্তী জীবন সচ্ছলতায় কেটেছে তার।
তিনি ছিলেন সাহাবিদের মধ্যে সম্মানিত ও বিশেষ মর্যাদা সম্পন্ন। যে ছয়জন সাহাবি রসুলুল্লাহ (স.)-এর জীবদ্দশায় ফতোয়া দানের অনুমতি পেয়েছিলেন, আবু মুসা আল আশয়ারি (রা.) ছিলেন তাদেরই একজন। 👉 রসুলুল্লাহ (স.) তার সম্পর্কে বলতেন,
‘আবু মুসা (রা.) অশ্বারোহীদের নেতা।’
হজরত আবু মুসা (রা.) ইসলামের পরিচয় পেয়ে ইয়েমেন থেকে মক্কায় আসেন এবং রসুলুল্লাহ (স.)-এর হাতে বাইয়াত নেন। কিছুদিন মক্কায় অবস্থানের পর স্বদেশবাসীকে ইসলামের দাওয়াত দেয়ার উদ্দেশ্যে আবার ইয়েমেনে ফিরে যান। আবু মুসা (রা.) ছিলেন তার বংশের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা। তাই খান্দানের লোকেরা দ্রুত এবং ব্যাপকভাবে তার দাওয়াতে সাড়া দেন।
রসুলুল্লাহ (স.)-এর মদিনায় হিজরতের কয়েক বছর পর প্রায় ৫০ জন মুসলিমের একটি দলকে সঙ্গে নিয়ে আবু মুসা (রা.) মদিনায় যাওয়ার জন্য ইয়েমেন থেকে সমুদ্রপথে যাত্রা করেন। তারা যখন মদিনায় পৌঁছান, সে সময় রসুলুল্লাহ (স.)-এর নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনীও খাইবার বিজয় শেষ করে মদিনায় ফেরেন। নবীজি (স.) আবু মুসা (রা.) ও তার সঙ্গীদের সবাইকে খাইবারের গনিমতের অংশ দান করেছিলেন।