21/06/2025
শিউলি ফুল। চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য্যের এই ফুলটি রোজ সন্ধ্যায় ফোটে, আবার সকাল হতেই ঝরে যায়।
শিউলিকে বলা হয় ‘ট্রি অব সরো’ বা বিরহের গাছ। বৈজ্ঞানিক নাম ‘নিক্টান্থেস আরবর-ট্রিসটিস’। এই নামটিকে ভাঙলেও কেমন বেদনার সুর বেজে ওঠে। লাতিন শব্দ ‘নিক্টান্থেস’ অর্থ সন্ধ্যায় ফোটা। আর ‘আরবর-ট্রিসটিস’ অর্থ হচ্ছে বিষণ্ণ গাছ।
এমনকি কবি নজরুলও শিউলি ফুলের ঘ্রাণে কান্না ধরে রাখতে পারেননি। লিখেছেন–
"শিশির-ভেজা শিউলি ফুলের গন্ধে কেন কান্না পায়..."
হিন্দু মিথলজিতেও শিউলির জন্ম নিয়ে একটা বেদনাবিধুর গল্প আছে। বলা হয়, নাগরাজের অসম্ভব সুন্দরী কন্যা ছিল পারিজাতিকা। তার রূপে মুগ্ধ সবাই। কিন্তু সে মুগ্ধ সূর্যতে! সূর্যের প্রেমে পাগলপ্রায়।
কিন্তু সূর্যদেব কোন ভাবেই সেই ভালোবাসা গ্রহণ করলো না। মন ভেঙ্গে খান খান হয় পারিজাতিকার। বেদনার ভার সইতে না পেরে আত্মাহূতি দিলো সে। হিন্দু শাস্ত্র মেনে তাকে দাহ করা হয়। কিন্তু আগুনে পুড়ে যে ছাই, তাতেও শেষ হলো না সব।
রাজকন্যার দেহভস্ম থেকে জন্ম নেয় একটি গাছ। সেই গাছে ফুল ফোটে। রাজকন্যার নামে রাখা ফুলের নাম- পারিজাতিকা। হ্যাঁ, শিউলির আরেক নাম পারিজাতিকা। একই ফুল শেফালি নামে পরিচিত।
আজও সেই অপূর্ণ প্রেমের বেদনা সে বয়েই চলেছে। আর তাই সূর্যের মুখ দেখতে চায় না বলেই রোজ সকালে সূর্য উঠার আগেই সে ঝরে পড়ে।
তথ্যসূত্রঃ
"শিশির ভেজা শিউলি ফুলের গন্ধে কেন কান্না পায়...", দৈনিক জনকণ্ঠ (সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৬)
লেখা: ফোকলোর এক্সপেডেশন বাংলাদেশ।