09/09/2025
বর্তমানে ঢাকা শহরের নতুন প্রেমিক প্রেমিকা বা কাপোল কাপোলীরা সবচেয়ে বেশি যে সমস্যায় ভোগে সেটা হলো ডেটিং প্লেসের সংকট। রেস্টুরেন্টে গেলে প্রচুর টাকা খরচ হয়, ক্যাম্পাস, মাঠ-ঘাট, পার্কে নিরাপত্তা সংকট৷ তাহলে কোথায় যাবে তারা? এই তিন কোটি মানুষের ঢাকা শহরে প্রেম করার স্বাধীনতাও কি নেই? সেইসব কাপলদের কথা ভেবেই আমি আজ নিয়ে এসেছি নিরাপদে প্রেম করার কয়েকটি অসাধারণ প্লেসের ঠিকানা।
১. আগারগাও পাসপোর্ট অফিসে চলে যাবেন দুজন মিলে সকাল সকাল। একটু ঘুরলেই দেখতে পাবেন এনআইডি ভেরিফিকেশনের বিশাল লাইন। লাইনে আবার দাঁড়িয়ে থাকা লাগে না, বসার ব্যবস্থা আছে আলহামদুলিল্লাহ। একদম লাইনের শেষে গিয়ে দুজন বসে পড়ুন আর যতক্ষণ ইচ্ছা গল্প করুন। হাত ধরে কচলাকচলি বা কাধে মাথাও রাখতে পারেন৷ কেউ কিছু মনে করবে না৷ সবাই ভাববে হাজবেন্ড ওয়াইফ। কারণ পাগল না হলে কোন প্রেমিক প্রেমিকা পাসপোর্ট অফিসে প্রেম করতে যাবে?
লাইন শেষ হতে দুই ঘন্টা লাগবে কমপক্ষে। আপনাদের সিরিয়াল আসার আগে উঠে চলে আসুন বা আবার পেছনে গিয়ে বসুন।
২. সোহরাওয়ার্দী, পঙ্গু, পিজি হসপিটালের বহির্বিভাগে গিয়ে ১০ টাকার টিকেট কেটে ভালো কোনো কর্ণারের বেঞ্চ দেখে বসে পড়ুন। এখানে চাইলে কাঁধে মাথা রাখার পাশাপাশি একজন আরেকজনকে জড়িয়েও ধরতে পারেন, একজনের কোলে আরেকজন শুয়েও থাকতে পারেন৷ কেউ দেখলে ভাববে খুব অসুস্থ, এজন্য বসতে পারছে না। কেউ কোনো সন্দেহই করবে না। মনের আনন্দে চিল করুন৷
৩. মিরপুর বা মোহাম্মদপুর থেকে গুলিস্তানগামী বাসে উঠে পড়ুন সন্ধ্যার আগে আগে। এই টাইমেই প্রচন্ড জ্যাম পাবেন ইনশাআল্লাহ। অন্তত তিন চারঘন্টা আরামে পাশাপাশি বসে প্রেম করতে পারবেন কোনো ঝামেলা ছাড়াই। মাঝে বিজয় সরনী বা নীলক্ষেত পড়লে তো আরো ভালো৷ ভাড়াও লাগবে সিএনজি উবার থেকে অনেক কম।
৪. একটু আরামদায়কভাবে বা এসিতে প্রেম করতে চাইলে চলে যাবেন নিকটস্থ পপুলার, ইবনেসিনা বা ল্যাবএইডের মত কোনো প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। দেখবেন কোন ডাক্তারের কাছে রোগী সবচেয়ে বেশি। সেই ডাক্তারের সিরিয়াল দিবেন। (কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে যাতে ঝামেলা এড়াতে পারেন)
তারপর পেছনের দিকে বা কর্ণারে বসে পড়ুন আর এসির বাতাস খেতে খেতে প্রেম করুন নিশ্চিন্তে। বিকালে গেলে আপনাদের সিরিয়াল আসতে আসতে কমপক্ষে রাত আটটা নয়টা বাজবে। নাম ডাকার আগেই কেটে পড়ুন।
৫. শাহবাগ, নির্বাচন অফিস, রাজু ভাস্কর্য কিংবা সচিবালয়ের সামনে চলে যান৷ দেখবেন কোনো না কোনো দল মানববন্ধন, মিছিল, মিটিং কিছু না কিছু করছেই। সেইসব আন্দোলনে দুইজন শামিল হয়ে যান। একসাথে সময় কাটান যতক্ষণ ইচ্ছা। মানববন্ধন বা অনশন হলে সবচেয়ে ভালো। একটা প্লাকার্ড নিয়ে বসে যান। আর বেশিরভাগ সময়ই সিঙ্গারা, খিচুড়ি, কোক, বিরিয়ানি কিছু না কিছু পাবেন। খাওয়ার টেনশনও সলভ হয়ে যাবে । তবে অনশন হলে কিন্তু খাবার পাবেন না।
৬. এভাবেই বি আর টি এ ভবনে গিয়ে গাড়ির লাইসেন্স করানোর ট্রাই করতে পারেন, নির্বাচন অফিসে গিয়ে এন আই ডি কার্ড সংশোধন করতে পারেন, ভূমি অফিসে খাজনা দেয়ার লাইনে দাঁড়াতে পারেন, ভ্যাট অফিসে গিয়ে বলতে পারেন ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিবেন, সিটি কর্পোরেশনে যেতে পারেন জন্মনিবন্ধন ঠিক করার অজুহাতে। এসব জায়গায় প্রেম করলে কেউ ভুলেও সন্দেহ করবে না। একদমই রিস্ক ফ্রি ব্যবস্থা। পরিচিত কেউ দেখে ফেললেও ভাববে কাজে এসেছেন। রাগ করার বদলে উল্টা প্রশংসা করবে।
এগুলো ছাড়াও আর কোথায় কোথায় যাওয়া যায় প্রেম করতে? কমেন্টে জানান, এবং বেকার আর অভাগা কাপোল কাপোলীদেরকে আইডিয়া দিয়ে সহায়তা করুন।