
29/08/2025
সরকার প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের কোন ব্যাবস্থা রাখেনি, বরং সঙ্গীতের ( গানের মাস্টার) এবং শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগের বিরাট আয়োজন করেছে, অথচ দেশের মানুষ চায় তাদের সন্তান দুনিয়াবী শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা অর্জন করুক।
ধর্মীয় শিক্ষার একটা বই সিলেবাসে থাকলেও সেটা যেই শিক্ষকের ভাগে পড়ে , হয়তোবা তিনি ধর্মীয় শিক্ষায় কোন সময় শিক্ষা অর্জন করেন নি।
ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের গুরুত্ব
১. নৈতিকতা ও চারিত্রিক উন্নয়নে
ধর্মীয় শিক্ষার অভাব নৈতিক অবক্ষয়কে ত্বরান্বিত করে। শিশুরা যদি ছোটবেলা থেকেই ন্যায়-নীতি আল্লাহভীতি, সততা, মানবিকতা ও নৈতিকতা শিখে, তবে সমাজে অপরাধ প্রবণতা অনেকাংশে কমে আসবে।
২. জাতীয় পরিচয় ও সংস্কৃতি রক্ষা
বাংলাদেশি মুসলিম সমাজের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো ধর্মীয় চেতনা। প্রাথমিক পর্যায়ে ধর্মীয় শিক্ষকের অভাব জাতীয় পরিচয়কে ক্ষয়িষ্ণু করে তুলছে। সুশিক্ষা হতে বঞ্চিত হচ্ছে ভবিষ্যৎ জাতি।
৩. শিক্ষাক্ষেত্রে ভারসাম্য
সঙ্গীত, চারুকলা ও শারীরিক শিক্ষার পদ থাকলেও ধর্মীয় শিক্ষকের পদ না থাকা শিক্ষাক্ষেত্রে স্পষ্ট বৈষম্য।
অধিকাংশ প্রাইমারি স্কুলে ইসলাম ধর্ম শিক্ষা দেয় হিন্দু শিক্ষক। যে শিক্ষক নিজে অগ্নি উপাসনা করে, মূর্তি পূজা করে সে কিভাবে ইসলাম ধর্মের শিক্ষা দিবে? এটা চরম বৈষম্য এবং ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি বিমাতা সূলভ আচরণ।
পরিশেষে বলা যায় যে,:
বাংলাদেশে ধর্মীয় শিক্ষকের পদ সৃষ্টি না হওয়া কেবল শিক্ষাগত বৈষম্য নয়, বরং মুসলিম জাতিসত্তাকে দুর্বল করার একটি অপকৌশল। সরকারের পাশাপাশি, রাজনৈতিক দল ও মুসলিম সচেতন মহলকে এই ব্যর্থতার দায় এড়ানো সম্ভব নয়। কারণ তারা জনগণের আস্থা অর্জন করেও এই মৌলিক ইস্যুকে জাতীয় আন্দোলনে রূপ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই এখন প্রয়োজন—
সকল রাজনৈতিক দল বিশেষ করে ইসলামী দলগুলোকে ইসলামী শিক্ষা বিষয়ে এক প্ল্যাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাবী আদায়ে সোচ্চার হতে হবে।
সংসদ, রাজপথ ও মিডিয়াতে একযোগে এই দাবিকে উত্থাপন করতে হবে।
সাধারণ জনগণ তথা সচেতন মুসলিম সমাজকে সংগঠিত করে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। যৌক্তিক আলোচনার মাধ্যমে দাবী আদায় করতে হবে।
মনে রাখতে হবে, ধর্মীয় শিক্ষা থেকে প্রজন্মকে বঞ্চিত করা মানেই একটি জাতিকে ভবিষ্যতে নৈতিক দেউলিয়ার দিকে ঠেলে দেওয়া। ইসলামী তথা সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো যদি এ বিষয়েও কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়, তবে কেবল সরকার নয়—তারাও ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে বাধ্য হবে। কাজেই এখনই সময়, পরিকল্পিতভাবে দলমত নির্বিশেষে সচেতন মুসলিম সমাজ এক হয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অন্যান্য বিষয়ের ন্যায় ইসলামী শিক্ষা বিষয়ের পদ সৃষ্টি ও নিয়োগ দানে সফল হতে হবে। অন্যথায় ভবিষ্যতে সুশিক্ষিত জাতি গঠন সম্ভব নয়। দেশে ৯২% মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ জাতি হয়েও ব্যর্থতায় মুখথুবড়ে পরবে। দুনিয়া ও পরকালে জবাবদিহিতার কঠিন কাঠগড়ায় দাড়াতে হবে। কাজেই এখনো সময় আছে, সচেতন ও দায়িত্বশীল মহল চেষ্টা করলে খুব সহজেই এটা বাস্তবায়ন সম্ভব ইনশাআল্লাহ।