06/08/2025
২২শে শ্রাবণ
গুরুদেবের তিরোধান দিবসে শ্রদ্ধার্ঘ্য!
পাঠকের হৃদয়ে অন্তত একবার হলেও এমন অনুভব জাগবে, যেন সে ছুটে গিয়ে তার প্রেমিকার চোখে চোখ রেখে বলে ওঠে— “For God's Sake, Please hold your tongue and let me love.”
পুরো উপন্যাস জুড়ে লাবণ্য ছিল সাবলীল, আদর্শ প্রেমিকা। কিছুতেই অমিতকে প্রলোভিত করেনি; বরং অমিতই ছিল বড্ড চালু প্রকৃতির। যে কোনো মানুষকে সে নিমেষেই ভোলাতে পারে। তাই ঠাহর করতে কষ্ট হয়, কেন গুরুদেব বলেছিলেন:
“যে পক্ষের দখলে শিকল আছে, সে শিকল দিয়েই বাঁধে—অর্থাৎ জোর দিয়ে। শিকল নেই যার, সে বাঁধে আফিম খাইয়ে—অর্থাৎ মায়া দিয়ে। শিকলওয়ালা বাঁধে বটে, কিন্তু ভোলায় না; আফিমওয়ালি বাঁধেও, ভোলায়ও। মেয়েদের কৌটো আফিমে ভরা—প্রকৃতি-শয়তানী তার যোগান দেয়।”
কিন্তু পুরো উপন্যাস জুড়েই যেন আফিম ছড়িয়েছে অমিত নিজেই। সে-ই চেয়েছে লাবণ্যের ভালোবাসাকে জাগিয়ে তুলতে।
ফলাফল? অমিত ব্যর্থ।
শোভনলালকে দেখে শুরুতে পাঠকের মনে জাগবে দুঃখ, আর শেষে জাগবে হিংসে। এমন নীরবে ভালোবেসেও ভালোবাসার মানুষকে পাওয়া তো হিংসে করার মতোই বিষয়।
লাবণ্য দেখিয়েছে—শ্রেষ্ঠ বা যোগ্য নয়, জীবনের সঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করতে হয় ‘শ্রেয়’কে।
“রামগড় পর্বতে তোমার বিয়েতে আমি আসব, লাবণ্য।”
"যাকে খুবই ভালোবাসা যেতে পারত তাকে ভালোবাসবার অবসর যদি কোন-একটা বাধায় ঠেকে ফসকে যায়, তখন সেটি না-ভালোবাসায় দাঁড়ায় না, সেটা দাঁড়ায় একটা অন্ধ বিদ্বেষে, ভালোবাসারই উলটো পিঠে।"
উপন্যাস: শেষের কবিতা
লেখক: শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (গুরুদেব)